নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ম বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে তর্ক করার আগে এটা পড়ুন

১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

১৯৯৫ সনের সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবর মাসে একবার বিরোধী দল টানা চারদিনের জন্য হরতালের ডাক দিয়েছিল। তখনকার দিনে হরতাল এত ঘন ঘন ডাকা হতো না, কাজেই আজকের মতন বহু ব্যবহারে তা ভোতা হয়ে যায়নি।
ছিয়ানব্বই ঘন্টার জন্য পুরো দেশ বন্ধ হয়ে থাকবে। গৃহবন্দী থাকার চেয়ে বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন শিলং ভ্রমনের। আমরা তখন সিলেটে, জাফলং বর্ডারের ওপারে পাহাড়ের উপরেই শিলং। সাথে মেঘালয় এবং আসাম রাজ্যগুলোও একটু ঘুরে আসা।
আমাদের জীবনে প্রথম বিদেশ ভ্রমন। খুবই উত্তেজিত। পরম উৎসাহে ব্যাগ গোছানো হলো। চার-পাঁচ দিনের জন্য যাচ্ছি, আসা যাওয়াতেই এক দুইদিন কেটে যাবে, তবু একেকজন যা কাপড় নিলাম পুরো দুই সপ্তাহ চালানো যাবে।
আরামসে তামাবিল বর্ডার পার হয়ে গেলাম। ডাউকি বাজারে অপেক্ষা করছি; যদি ট্যাক্সি বা মাইক্রোবাস বা কিছু একটা পাওয়া যায়! কিন্তু সেদিন ছিল রবিবার। ভারতের সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এইদিন ট্যাক্সি ড্রাইভাররা ঘরে বসে মদ্যপান করেন। জানা ছিল না।
দোকান থেকে "আঙ্কেল চিপস" কিনে খেলাম। তখন ডিশের বদৌলতে ভারতীয় প্রতিটা পণ্য অত্যন্ত লোভনীয় ঠেকত। খেয়ে বুঝলাম আমাদের মিস্টার টুইস্টের ধারে কাছে স্বাদ না। বিজ্ঞাপন দেখিয়া বেকুব না হইবার সেটাই প্রথম শিক্ষা।
হঠাৎ আমাদের জুনায়েদ চাচার সাথে দেখা হয়ে গেল। আমার বাবার খালাত ভাই। তাঁদের সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই শিলংয়ে চার পাঁচটা বাড়ি আছে। প্রতি বছর তিনি সেখানে যান, ভাড়া আদায় দেখভাল করে আবার নিচে নেমে আসেন।
আমাদের দেখে প্রথমেই মাকে বললেন, "ওদের জন্য স্যুয়েটার নিয়েছ?"
বাংলাদেশে তখন কাঠ ফাটা গরম। বাজারে ঝুড়িতে রাখা মুরগির ডিম ফেটে বাচ্চা বেরিয়ে যায় এমন অবস্থা। সেখানে মাত্র কয়েক মাইল দূরের শিলংয়ে কতই বা ঠান্ডা পরবে? আমরা একটাও গরম কাপড় নেইনি শুনে চাচা বললেন, "শিলং পৌছেই যত তারাতারি সম্ভব স্যুয়েটার কিনে নিবে। নাহলে প্রত্যেকের নিউমোনিয়া হয়ে যাবে।"
চাচা মাত্রই নেমে এসেছেন। তারপরেও তাঁর কথা বিশ্বাস করলাম না। এত গরমে গায়ে স্যুয়েটার চরায় কোন পাগলে?
এবং শিলং পৌছেই বুঝলাম জুনায়েদ চাচাই সত্য বচন করেছেন।
আমরা উঠেছিলাম শিলং ক্লাবে। রুমের ভিতর ফায়ার প্লেস, এতদিন কেবল সিনেমাতেই যা দেখে এসেছি। হিটারও চলছে, আমরা তারপরও লেপের ভিতরে। পুরো রাত সেভাবেই কাটল। স্যুয়েটার কেনা হলো পরের দিন সকালে। তাও আব্বু আম্মু গিয়ে কিনে এনেছেন। আমরা তিন ভাইবোনের কেউ লেপের বাইরেও বেরোতে পারিনি।
আগে জানা ছিল না, শিলংয়ের কোন হোটেলেরই ছাদে ফ্যান ঝুলে না। দরকার পরেনা। "আমুল বাটার" কিনেছিলাম, ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন হয়নি, এমনিতেই জমে শক্ত হয়ে ছিল। যতদিন ছিলাম, মনে হচ্ছিল ফ্রিজের ভিতরে আছি। কিন্তু জায়গাটা আসলেই সুন্দর। মানুষগুলোও দারুন!
এখন আসল কথায় আসি।
ধর্ম বিশ্বাসের পক্ষ্যে বিপক্ষে নানা জনে নানা কথা বলছেন। এইসব ব্যপারে আমি কোন তর্ক করিনা। আমার কাছে ব্যপারটা ছোটবেলার সেই বিদেশ ভ্রমনের মতই ঠেকে।
"শিলংয়ে সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসেও হাড় কাঁপানো ঠান্ডা পরের" মতন আমি পরকালে বিশ্বাস করি। কাজেই নিজের স্যুটকেসে দুই একটা গরম কাপড়ের মতন কিছু পুণ্য কর্ম নিয়ে যেতে চাই। কথা হচ্ছে, ধর্মে বিশ্বাস করি বা না করি, এমনিতেও আমাকে মরতে হবে ওমনিতেও হবে। এখন যদি আসলেই পরকাল বলে কিছু না থাকে, তাহলেও আমার কোন লস নেই। বাড়তি কিছু গরম কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম, এই যা।
কিন্তু যদি মেঘালয়ের তুষার হীম হাওয়ার মতন কবরে মুনকার নাকির এসে হাজির হয়, তখন আমি সহজেই ব্যাগ খুলে স্যুয়েটার পরে ফেলতে পারবো। আর যদি ব্যাগে কিছু না থাকে, তখন কিন্তু আমার খবর আছে। মনে রাখতে হবে, ওখানে কিন্তু কোন মার্কেট নাই যেখান থেকে আমি স্যুয়েটার কিনে গায়ে চরাতে পারবো। এক দুইটা গরম কাপড় সাথে রাখা তাই দোষের কিছু না।
সবাই যে যার বিশ্বাসে সুখী হোক। বেস্ট অফ লাক টু অল!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: আপনিও সংশয়বাদী নাকি এ জানে। তবে ধর্মের বা ঈশ্বরের ভয়ে হইলেও সংযত থাকা ভালো। আমি বিশ্বাস করি ধর্ম না মানলেই মানুষ বেশি স্বীচ্ছাচারী হইতে পারে, ধর্মে বিশ্বাস মানুষকে সংযত করে।

২| ১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৩০

বিবেক ও সত্য বলেছেন: ধর্ম বিশ্বাসের কারনে ধর্মের পথে অনেকে তার অর্থ, সম্পদ এমনকি জীবনটাও দিয়ে দিচ্ছে । ধর্ম মিথ্যা হল এটা কি বৃথায় যাবে না? আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক যদি সুন্দর পরিবেশে হয়, সেখানে পরস্পরের জ্ঞান শেয়ারের সুযোগ হয় যা জ্ঞান বুদ্ধি বিকাশে সহায়ক। সুতরাং আপনার ধারনা ভূল ।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

সাহসী সন্তান বলেছেন: ধর্ম নিয়া কোন কালেই আমার অত্যধিক চুলকানি নাই! বাপ দাদার থেকে উত্তরাধীকার সূত্রে যেটাকে পেয়েছি সেটাকেই মনের মধ্যে আঁকড়ে ধরে বসে আছি! কখনো অতিরিক্ত বোঝারও চেষ্টা করি না, আবার কমও বুঝি না! তবে যতটুকু জানি বা বুঝি মনে করি, একটা ধর্ম সম্পর্কে সেটুকুই এনাফ! বেশি জানতে গেলেই হয়তো পথভ্রষ্টদের কাতারে চলে যাবো!

পরকালকে আমিও মনে প্রাণে বিশ্বাস করি! আজ হোক কাল হোক, মরতে তো একদিন হবেই! তবে মরার মরে কি হবে না হবে সেইটা তখন দেখা যাবে! কিন্তু সেখানে যাতে ধরা না খাই সেজন্য আগেই কিছু সংগ্রহকরে রাখতে আমি অভ্যস্ত! কাজে লাগলে লাগবে, না লাগলে ক্ষতিও আছে বলে আমি মনে করি না!

পোস্টটা বেশ যুক্তিপূর্ণ বলেই মনে হলো! ভাল থাকবেন!

৪| ১১ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪

প্রন্তিক বাঙ্গালী বলেছেন: নাস্তিকরা জীবনকে যেভাবে খুশি সেভাবে চলাচলের জন্য তারা নাস্তিক সাঝে, এটা হলো তাদের এক ধরনের ভন্ডামী। আমি স্বগোশিত একজন নাস্তিক কে চিনি সে বিপদ দেখলে নামায পড়ে। এই হলো নাস্তিকদের নাস্তিকতা।

৫| ১১ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: "এখন যদি আসলেই পরকাল বলে কিছু না থাকে, তাহলেও আমার কোন লস নেই। " - আপনি ধর্মকে তেমন গুরুত্ব দেন না, বলা যায় সুবিধামতো নিয়েছেন তাই লস করেন না। কিন্তু যাঁরা এ বিষয়ে সিরিয়াস, তাঁরা ইহলৌকিক উন্নয়ন এবং সাফল্যকে উপেক্ষা এবং অস্বীকার করেন। তাঁরা সুটকেসে দুএটা সোয়েটার নয়, বরং ট্রাক ভর্তি করে সীমান্ত পাড়ি দিতে চান। - ফলাফল: মুসলিম বিশ্বের বর্তমান উন্নয়ন বিমুখতা ইহলৌকিক পশ্চাৎপদতা।

৬| ১১ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

সম্রাট৯০ বলেছেন: এই পৃথিবিতে যত গুলো জীবন আছে মানুষই হলো কৌশুলি,বুদ্ধিমান,এবং সেরা। পৃথিবীর সকল জীবের প্রতি দয়া ভালোবাসা সহমর্মিতা মানবিকতায় আমার ভুমিকা থাকবে আমি সেভাবেই আমাকে চালিত করবো, মরণের পর কি হবে জানিনা,সেখানে কি পাবো সেই আশায় থাকিনা,ভালো কিছু করে যাওয়ার নেশায় চেপেছে করে যাবো। প্রতিদানে কিছু পেলে উত্তম, না পেলে পঁচে গলে মাটিতে মিশে যাবো দুঃখ নেই ।এর চেয়ে বেশি বাড়াবাড়ি কিসের? সৃষ্টির পিছনে স্রষ্টা আছে সত্য। এবং সে একজনই।না হলে ওরা ওরা মারা মারি লেগে যেতো, একজন বলতো আজকে সুর্য্য উঠবেনা,আরেকজন বলতো চাঁদ সরিয়ে ফেলো, অন্যজন বলতো এই মানুষকে আজকে মেরে ফেলবো আরেকজন বলতো না ওকে বাঁচিয়ে রেখো,এই বাচা মরার মাঝেও দুনিয়াতে হাজার হাজার মানুষ ঝুলে থাকতো, এসবের কিছুই যখন হচ্ছেনা,পৃথিবী চলছে সমান তালে তাই সব হিসেব কষে দেখলাম স্রষ্টা একজনই,আর কি চাই?

৭| ১১ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৩১

ঢাকাবাসী বলেছেন: শিরোনামটা একরকম আর ভেতরে সুন্দর একটা ভ্রমন কাহিনী! ধর্ম নিয়ে কচকচানী ভাল্লাগেনা! কাহিনীটা ভাল লেগেছে। ভাল থাকুন।

৮| ১৪ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:৪৪

মহা সমন্বয় বলেছেন: শিরোনামটা একদমই মাননসই হয়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.