নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ওস্তাদ হুমায়ুন আহমেদ তাঁর কোন এক উপন্যাসে লিখেছিলেন, ঢাকা শহরের আকাশে মেঘ ডাকাডাকি করলেই শহরের রাস্তায় এক হাঁটু পানি জমে যায়। কথাটা একদমই ভুল না। সেই আদি যুগে যখন ইবলিস বাবা আদমকে গন্ধম ফল খাওয়ার জন্য ফুসমন্তর দিচ্ছিল - সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের রাস্তায় তখন থেকেই পানি জমতো।
প্রতিটা সিটিকর্পোরেশন নির্বাচনেই জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দেন নির্বাচিত হলেই তারা এই সমস্যার সমাধান করবেন। নিজের সমস্ত লোক লাগিয়ে দিবেন ড্রেন তৈরিতে। পারলে তিনি নিজে এসে ড্রেন পরিষ্কার করে যাবেন ইন শা আল্লাহ। কারও কারও আশ্বাস এমন হয় যে অফিসে বসে গদি গরম হবার আগেই ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু গদিতে বসার সাথে সাথেই তারা এর মজা পেতে শুরু করেন। তখন আর ক্রেন দিয়ে টেনেও তাদের উঠানো যায়না। ফল, পরবর্তী নির্বাচনে আবারও সবার একই আশ্বাস, "আমি নিজে পারলে এসে ড্রেন বানিয়ে দিয়ে যাব ইন শা আল্লাহ।"
এই কুরবানীর ঈদে "রক্তের বন্যা" বয়ে গেল ঢাকা শহরে। বিশ্বব্যাপী মিডিয়ায় প্রচারও পেল তা।
একদল নির্দ্বিধায় বলছেন ব্যাপারটা ফটোশপ। পাশাপাশি কয়েকটা ছবিও তুলে দেয়া হলো। মজার বিষয় হচ্ছে, ছবিগুলোতে বন্যার পানি একটু বেশিই পরিষ্কার। ঢাকার বন্যার পানিতে একটুও ময়লা আবর্জনা নেই! বাহ্! চমৎকার!
এইবার ভিডিও আপলোড করা হলো।
"ওটা স্প্রেশাল ইফেক্ট। যে যুগে এভাটার বানানো হয়, সেই যুগে সামান্য পানির রং বদলানো যাবেনা? Come on man!"
আরেকদল বলছেন, "ধর্মের নামে পশু হত্যা বন্ধ হোক! ইসলাম নিপাত যাক। মুসলিমরা বর্বর!"
ব্রো - বন্যায় ঢাকা শহরের অনেক রাস্তায় সলিড গু ভাসতে ভাসতে যায় - আমি নিজে দেখেছি বহুবার। এখন কী তাহলে দুনিয়া শুদ্ধ মানুষ পায়খানা করা বন্ধ করে দিবে? Chill. রিল্যাক্স। সমস্যা নিয়ে ভাব - সমস্যা বাড়িও না।
এবং তখনই কয়েকজনকে দেখলাম আসল ঘটনা নিয়ে মাথা ঘামাতে - আমাদের ড্রেনেজ সিস্টেমটা এখনই সমাধান না করলে আর কখনই হবেনা। কারন দিন দিন ঢাকা শহরে মানুষের সংখ্যা কেবল বেড়েই চলবে। এখন ড্রেন সংস্কারে যা ব্যয় হবে, ভবিষ্যতে সেটাও অসম্ভব বলে মনে হবে।
জ্বি, এই ঘটনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে আমাদের ড্রেনেজ সিস্টেম কতটা খারাপ। পরস্পরের দিকে আজাইরা আঙ্গুল ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে আমরা নাহয় আপাতত এখানে ফোকাস করি।
এইবার আসি মুসলিম ভাইদের সমালোচনায়।
আমাদের ধর্মে নামাজ হচ্ছে হাইয়েস্ট লেভেলের ইবাদত। সেই নামাজের প্রধান শর্ত হচ্ছে নিজের শরীর এবং পোশাক দুইটাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। যে কারনে ওযু করা। ওযু না করে আপনি কুরআন পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারবেন না। আপনি মারা গেলে গোসল না করিয়ে কবর দেয়া যাবেনা। এমনকি স্বামী-স্ত্রী বেশি রোমান্টিক হয়ে গেলেও গোসল করাটা ফরজ হয়ে যায়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আমাদের ইবাদতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পয়েন্ট টু বি নোটেড - এইসব নিয়ম সেই সমাজ থেকে এসেছে যে সমাজে পানির মূল্য ছিল সোনার চেয়ে দামি। কথায় কথায় গোসল/ওযু করে খরচ করার মতন পানির অপ্রতুলতা তাঁদের ছিল না। কাজেই, "এখানে রক্ত/ভুঁড়ি/আবর্জনা না ফেললে কোথায় ফেলবো?" - জাতীয় এক্সকিউজ আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়ার মতই ফালতু। আপনি যদি আল্লাহকে খুশি করার জন্য পশু কোরবান দিয়ে থাকেন, তবে সেই জবাই করা পশুর রক্ত-বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলে সেই আল্লাহকেই রাগিয়ে দিবেন না। নবীজি (সঃ) মদিনা সনদ গঠনের সময়ে স্পষ্ট করে বলেছিলেন, "সেই ব্যক্তি জাহান্নামী যে অপরের চলার পথে আবর্জনা ফেলে রাখে। এবং যে ব্যক্তি কেবল আল্লাহর কথা চিন্তা করে সেই আবর্জনা পরিষ্কার করে - সে জান্নাতি।"
ঢাকা শহরের রাস্তার পানিতে আপনার পশুর রক্ত মিশে "মানুষের চলার পথ"কে দূষিত করছে - সাথে নবীজির (সঃ) হাদিস যুক্ত করে নিন - বুঝতে পারছেন কী ভয়ংকর ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন?
কুরবানী করা উচিৎ নির্দিষ্ট জায়গায়, যেখানে রক্ত/বর্জ্য ফেলার সুব্যবস্থা আছে। সৌদি আরবে পর্যন্ত তাই হচ্ছে।
শহরের নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে পশু কোরবানি দিয়ে ঠ্যালাগাড়ি, রিকশা, ভ্যানে করে মাংস নিয়ে আসাটা কী খুব কঠিন কিছু হবে? যেখানে সেখানে কুরবানী দেয়াটা জনস্বাস্থ্যের জন্যইতো ক্ষতিকর। কত রকমের রোগ হতে পারে - সেই খেয়াল আমরা কবে করবো?
সরকারের উচিৎ এখনই নিয়ম করা - যেখানে সেখানে পশু জবাই থেকে শুরু করে যেকোন রকমের আবর্জনা যত্রতত্র ফেললে মোটা অংকের জরিমানা। অনাদায়ে সশ্রম কারাদন্ড। তাহলেই বাঙালি লাইনে চলে আসবে।
উদাহরণ, আমার আগের বাড়ির সামনের রাস্তায় যেকোন ধরণের আবর্জনা ফেলার জন্য জরিমানা ছিল দুইশ থেকে শুরু করে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত। চিন্তা করতে পারেন, একটা চিপসের প্যাকেট ফেললে আপনাকে সরকার দশ হাজার ডলার জরিমানা করার অধিকার রাখে। সেই রাস্তায় হাঁটতে গেলেওতো ওযু করে হাঁটতে মন চায়। আমাদের দেশের সড়কগুলোকেও কী আমরা এমন বানাতে পারিনা?
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমাদের এখানে যত্রতত্র থুথু বা সিটারেট খেতে দেখলেও জরিমানা।।
আর মূল সমস্যাটার দিকে নজর না দিয়ে, শুধু পোষ্ট করলেই কি দায়িত্ব শেষ।। এবং এটাই আমরা জনপ্রিয় মাধ্যমগুলিতে অহরহ করে চলেছি।।
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৩
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: নিয়ম তো আছেই। এবারও তো কোরবানীর জন্য নির্দিষ্ট স্থান ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। মানেই তো নাই অনেকে।
আর, মানে নাই সেটাও সমস্যা না - বর্জ্যগুলো কেন যত্রতত্র ফেলে রাখলো? আসলে এই প্রজাতির মূর্খের দলকে কোন ভাবেই বুঝানো সম্ভব না। যদি না শক্তভাবে আইন প্রয়োগ করা না হয় - তাহলে এইভাবে নীতি বানিয়েও লাভ নেই। প্রকাশ্যে ধূমপানের জন্যও তো জরিমানার আইন ছিল। কতটাই বা মানা হয়েছে সেটা?
সব দিক থেকে সচেতনতা বাড়ানো উচিৎ।
আর, ছবির এডিটগুলো দেখে আমি চিন্তা করছি - বেশ দক্ষতা নিয়ে ছবিগুলোর কাজ করা হয়েছে। কাজটা যে করেছে - সে কেন আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের উন্নতি করতে যাচ্ছে না কেন???
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৩৪
নতুন বলেছেন: বাড়ির সামনের রাস্তায় যেকোন ধরণের আবর্জনা ফেলার জন্য জরিমানা ছিল দুইশ থেকে শুরু করে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত। চিন্তা করতে পারেন, একটা চিপসের প্যাকেট ফেললে আপনাকে সরকার দশ হাজার ডলার জরিমানা করার অধিকার রাখে। সেই রাস্তায় হাঁটতে গেলেওতো ওযু করে হাঁটতে মন চায়।
পন্ডিতে বোঝে আকারে ইঙ্গিতে মূখ` বোঝে গুতায়...
আমাদের দেশের মূখ`দের বোঝানোর জন্য অবশ্যই বড় রকমের জরিমানার ব্যবস্তা করতে হবে। তবেই জনগন লাইনে আসবে।
দেশের বাইরে গেলে কিন্তু সবাই নিয়ম/আইন ঠিকই মানে।