নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লাহকে ভয় পাওয়া বিষয়ের উল্টো দিক নিয়ে আলোচনা

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৩৫

গতদিন লিখেছিলাম আল্লাহকে ভয় পাওয়া বিষয় নিয়ে।
এইবার আসি এর উল্টো দিক নিয়ে কথাবার্তায়।
তার আগে কিছু কথা বলি, দেখুন মিল খুঁজে পান কিনা।
বাপ দাদার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ইসলাম সম্পর্কে আপনার প্রাথমিক পরিচয় কিভাবে হয়?
"এইটা করতে পারবা না, করলেই কবরে সাপ কামড়াবে! ওটা করতে পারব না, দোজখে পুড়তে হবে। দোজখের আগুন এই পৃথিবীর আগুন থেকে ৭০ গুন বেশি গরম।"
সূরা মুখস্ত করতে বসেছে পাঁচ ছয় বছরের শিশু। যে ঠিক মতন মাতৃভাষাতেই কথা বলতে পারেনা, সে কঠিন ক্লাসিক্যাল বিদেশী ভাষার রচনা মুখস্ত করতে বসেছে। একটু ভুল হলেই সপাং সপাং করে বেত আছড়ে পড়ছে তাঁর হাতে। নিজের অপকর্মকে জায়েজ করতে অশিক্ষিত হুজুর তখন জাল হাদিস আওড়াবে, "শিক্ষকের বেতের বাড়ি শরীরের যে অঙ্গে পরে, তা জাহান্নামে যায় না।"
এই বেকুবটাকে কে বোঝাবে যে যদি তাই হতো তাহলে সাহাবীরা হাসিমুখে নবীজির (সঃ) কাছে বেত নিয়ে এসে বলতেন মারতে। নবীজির চেয়ে বড় শিক্ষক কে ছিলেন?
যাই হোক, কোমলমতি শিশুর মনে এই যুক্তি আসার কথা না। বরং তখন ইসলাম সম্পর্কে তাঁর মনে বিতৃষ্ণার জন্ম নিবে। যে কারনে আমরা ছোট বেলায় হুজুরের কাছে পড়তে চাইতাম না। কারন আমাদের ধারণা ছিল এটি অত্যন্ত বর্বর ধর্ম।
ধীরে ধীরে বড় হলাম। হুজুররা আরও কিছু তথ্য আমাদের দিলেন, "চুরি করলেই ইসলামে শাস্তি হস্ত কর্তন। তলোয়ার দিয়ে খ্যাচাৎ, সব ঝামেলা শেষ! হাহাহা।"
এই ব্যাটাকে কে বোঝাবে যে সব দেশের দন্ডবিধির মতোই ইসলামেও চুরির ব্যাপারেও বিভিন্ন দন্ড বিধি আছে। রেস্টুরেন্ট থেকে কোন ক্ষুধার্ত ব্যক্তির সামান্য পাঁচ টাকা মূল্যের রুটি চুরির জন্য তাঁর হাত কাটা হয়না। অনেক যুক্তি তর্ক এবং বিচার সালিশির ব্যাপার স্যাপার আছে। তরুণদের মাথাতেও এসব প্রশ্ন আসেনা। তাঁরা ধরেই নেন টুপি মাথার দাড়িওয়ালা লোক যেহেতু এসব বলছেন - কাজেই ইসলাম আসলেই বর্বর একটি ধর্ম।
তারপরেও আপনি মাঝেমাঝে পিতার সাথে জুম্মাবারে মসজিদে যান। ঈমাম সাহেবের মুখে ইসলামের গৌরবময় ইতিহাস শোনেন। কিন্তু ওসব যে সবই ইতিহাস! আপনার মাথায় ঢুকে যায় ইসলামের যা গৌরব সব অতীতেই শেষ হয়ে গেছে। যা ভাল ছিল, ভাল মানুষ ছিল, সব এক হাজারেরও বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন খুবই জঘন্য সময়ে বাস করছি। এই যুগের সবাই জাহান্নামে যাচ্ছে - সাথে আমিও।
তা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে হলে কী করতে হবে? ঐতিহাসিক তরিকায় জীবন যাপন করতে হবে। সত্যি বলছি - এখনও দেখবেন একদল লোক টেবিলে বসে নাস্তা করবে না, মাটিতে বসে খাবে। কোট প্যান্ট পড়বে না। টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজবে না। কারন ওসব বেশরিয়তী, কাফির কুফফারদের কাজ। ওদের মনে একটাই আফসোস, কেন তাঁদের গাড়িতে চড়তে হয়, উটের পিঠে কেন নয়! মোট কথা - ইসলামের সাথে আধুনিকতার কোনই সম্পর্ক নেই।
ইসলামের মধ্যেই অনেক দ্বন্দ। আপনি এইভাবে ওযু করেননা, আপনি এইভাবে পর্দা করেন না, আপনি ঐভাবে নামাজ পড়েন, আপনি ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন/করেন না, আপনি কুরআনকে আল-কুরআন বলেন না...... - একজনের সাথে আরেকজনের অমিল হলেই আপনি কাফির, মুনাফেক, মুরতাদ, ছদ্মবেশী খ্রিষ্টান, ইহুদির গুপ্তচর, মালাউন!
প্রথমে গালাগালি, এবং তারপর মারামারি। আপনাকে মারিয়া অশেষ নাকি হাসিল করিয়া পরম করুনাময়ের সন্তুষ্টি লাভের প্রচেষ্টা!
এইসব দেখার পরে আপনি কী করবেন?
চিপা দিয়ে ইসলাম থেকে বেরিয়ে আসবেন।
এইটাই কী ঘটছে না চারিদিকে? ইসলামের নামে ফ্যানাটিজম দেখে একজন সুস্থ মাথার বিবেকবান মানুষ কেন ইসলাম ধরে রাখবে? গ্রহণ করাতো বহু দূর!
উপরে যা বললাম, কোনটাই কিন্তু "ইহুদি নাসারা ষড়যন্ত্র" নয়। আমাদের মুসলিম হুজুরদেরই কর্ম। কাজেই "ইসলামের বিরুদ্ধে সবাই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত" জাতীয় পাগলের পাগলামি না আওড়ে আমরা না হয় সর্ষের ভিতরের ভুতটাকেই বের করি - তাহলেই চলবে।
যে শিশু পিতা মাতার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ধর্মের সাথে পরিচিত হতে চলেছে - তাঁকে ভয় না দেখিয়ে সুসংবাদ দিন! নবীজি (সঃ) শিশুদের সাথে কেমন আচরণ করতেন সেই গল্প শোনান।
কোন বেনামাযী তরুণকে "সালাত (নামাজ) আদায় না করলে আল্লাহ কঠিন শাস্তি দিবেন" - না বলে বোঝান যিনি তাঁকে সৃষ্টি করেছেন, দিয়েছেন মা বাবার স্নেহ, ভালবাসা, দিয়েছেন আর্থিক নিরাপত্তা, যাঁর এত করুনা তাঁর উপর - সেই স্রষ্টাকে ধন্যবাদ দিতে সালাত আদায় করা উচিৎ। নিজের মনের যাবতীয় চাপ তাঁর হাতে সমর্পন করতে নামাজ আদায় করা উচিৎ। তাহলেই দেখবেন, এই তরুণ নিজের ইচ্ছাতেই, অন্তরের ভালবাসা থেকেই নামাজ আদায় করছে। দোজখের শাস্তি থেকে বাঁচতে নয়।
বেহেস্তের হুরের বর্ণনা দিয়ে একঝাঁক তরুনের মুখের লালা বের করে দিলে ইসলাম প্রচার হয়না। সেটা বরং ইসলামেরই অপমান। লোকের মুখে শুনতে হয়, "তোরাতো হুরপরীর লোভে নামাজ পড়িস।"
ব্যাপারটা এইভাবে ভেবে দেখুন।
আপনার যখন বাচ্চা হয়, বা হবে, আপনি সেই বাচ্চাকে পেলে পুষে বড় করবেন। রাতে ঘুমাতে দিবেনা, বাজারে শান্তি দিবে না, আপনি নিজের পাতের খাবার তাঁর মুখে তুলে দিবেন। নিজের কলিজা কেটে সেই বাচ্চাকে বড় করবেন। এই আশায় না যে আপনি বুড়ো হলে সে আপনার ভরসা হবে। বরং আপনি আপনার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য, তাঁকে ভালবাসেন বলেই নিজের সর্বস্ব উজাড় করে তাঁকে বড় করবেন। সে মানুষের মতন মানুষ হলেই আপনার সন্তুষ্টি।
এখন কেউ যদি বলে, "বাচ্চাকে বড় করছো কারন ছেলে ধনী হলেতো তোমার লাভ - ওর টাকায় আরাম করবা!" - তখন শুনতে কেমন লাগবে?
মুসলিমদের ধর্ম পালনটাও ঠিক তাই।
কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, আদম সৃষ্টির সময়ে ফেরেস্তারা বলেছিলেন, "পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করার প্রয়োজন কী? ওরাতো ওখানে দাঙ্গা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবে।"
আল্লাহ বললেন, "আমি যা জানি, তোমরা তা জানোনা।"
ইবলিশ বললো, "আমি আপনার বান্দাদের আপনার পথ থেকে বিপথে চালিত করতে থাকবো।"
আল্লাহ বললেন, "এবং ওরা যতবার আমার কাছে ক্ষমা চাইতে আসবে, আমি ক্ষমা করতে থাকবো।"
মোট কথা - মুসলিমের উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ তাঁর রব্বের সন্তুষ্টি অর্জন। ফেরেস্তাদের শংকা, এবং ইবলিসের হুমকিকে ভুল প্রমান করে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে নিজেকে প্রমান করা।
এর পুরস্কার হিসেবে তাঁর প্রভু হুর পরী দেন না পাখির মাংসের রোস্ট দেন, না দালান কোঠা বাগানবাড়ি দেন - সেটা পরের ব্যাপার। বুঝাতে পারছি?
অনেক বকবক করে ফেললাম।
কথা শেষ করি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে, সেটা হচ্ছে - পঁয়তাল্লিশ বছর আছে, একদল জানোয়ার ধর্মের লেবাস গায়ে চাপিয়ে আমাদের বাপ দাদাদের ঘর থেকে ধরে ধরে নিয়ে মেরেছে। তাদের সাহায্য করেছিল আরেকদল ইবলিশ। সবার এক যুক্তি। আমরা সহীহ মুসলিম নই।
আজকে আমরা স্বাধীন দেশে বাস করলেও সেই জানোয়ারদের মতোই ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষ হত্যা, সংখ্যালঘু অত্যাচার আমাদের দেশের একটি নিয়ম মাফিক ঘটনা হয়ে গেছে। আল্লাহর ওয়াস্তে এইবার একটু বুদ্ধি খাটান। অতীতে আগুনে হাত দিলে যেমন হাত পুড়তো - এখনও তেমনই পুড়বে। কাজেই ধর্মকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করা বন্ধ করুন, এবং নিজেও এর দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া থেকে বাঁচুন। যদি ধর্ম বিষয়ে কম জানেন, কোনই সমস্যা নেই। আল্লাহ কম জানার জন্য শাস্তি দিবেন না। কিন্তু না জেনে ধর্মের নামে উল্টাপাল্টা কাজ করা বন্ধ করুন। বিশেষ করে নিরীহ মানুষের উপর জুলুম করলে আমাদের নবীজি (সঃ) বলেছেন কেয়ামতের দিন তিনি সেই বিধর্মীর পক্ষ নিয়ে আপনার বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে সাক্ষ্য দিবেন।
নবীর এই হুমকি কিন্তু আসলেই ভয়ংকর ঘটনা। উপলব্ধি করুন। সাবধান হন।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এই বেকুবটাকে কে বোঝাবে যে যদি তাই হতো তাহলে সাহাবীরা হাসিমুখে নবীজির (সঃ) কাছে বেত নিয়ে এসে বলতেন মারতে। নবীজির চেয়ে বড় শিক্ষক কে ছিলেন?

মোট কথা - মুসলিমের উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ তাঁর রব্বের সন্তুষ্টি অর্জন। ফেরেস্তাদের শংকা, এবং ইবলিসের হুমকিকে ভুল প্রমান করে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে নিজেকে প্রমান করা।

সহমত।
আর সে জন্যে আগে দরকার নিজেকে জানা! আমি কে?
জানতে পারলেই বাকী কর্মপদ্ধতি পর্যাক্রমে এসে যায়! ধন্যবাদ সুন্দর আরোচনা অব্যহত রাখায়!!

বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা আপনাকেও :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.