নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারোর কোন দোষ ত্রুটি নিয়ে হুলুস্থুল বাঁধাবার আগে প্রশ্ন করুন - আপনি নিজে পারফেক্টতো? উত্তর হচ্ছে না।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:৩২

উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ছিলেন রাসূলের (সঃ) অতি নিকটাত্মীয়, আপন চাচাতো ভাই। তাঁর একটি ঘটনা দ্রুত বলে ফেলি।
রাসূলের (সঃ) ইন্তেকাল ততদিনে হয়ে গেছে। পুরো আরব অঞ্চলে তখন ইসলামের রাজত্ব। রাসূলের (সঃ) পরিবারের লোকজন আহলে বাইত, সমাজে সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। যদিও রাষ্ট্র পরিচালনায় খলিফা নিযুক্ত আছেন।
এই সময়ে উবায়দুল্লাহ (রাঃ) বেরুলেন সফরে। তখনকার দিনের সামাজিক রীতি ছিল এই যে মুসাফির ব্যক্তি যদি কারোর বাড়িতে আশ্রয় চায়, তাহলে গৃহকর্তা তাঁকে যথাসাধ্য আতিথেয়তা করবেন।
উবাদুল্লাহ (রাঃ) এক বেদুঈনের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন।
এবং বেদুঈন ব্যক্তিটি তাঁকে চিনতে পারলেন না।
তবে তাঁর পোশাক পরিচ্ছেদ, আচার ব্যবহার, এবং কথাবার্তা শুনেই বুঝতে পারলেন তিনি সমাজের সম্মানিত কোন ব্যক্তিই হবেন। কাজেই অতি গরিব বেদুঈন ভদ্রলোকটি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, "ঘরে কী খাবার আছে? এই অতিথির সম্মানে ভাল কিছু খাওয়াতে চাই।
স্ত্রী বললেন, "ঘরেতো কিছু নেই।"
বেদুঈন বললেন, "কিছুই নেই?"
স্ত্রী বললেন, "একটা ছোট ছাগল আছে। তবে আপনিতো জানেন আমাদের মেয়ে সেটিকে কতটুকু ভালবাসে। ওর মন ভেঙে যাবে যদি জানে যে আপনি সেটিকে জবাই করে ফেলেছেন।"
বেদুঈন বললেন, "কিন্তু আমাদেরতো কিছু একটা করতেই হবে। ঘরের এত সম্মানিত অতিথিকে কী না খাইয়ে রাখবো?"
তখনকার দিনের বাড়িঘরে এক ঘরে কথা বললে অনায়াসে অন্য ঘরেও সব শোনা যেত। উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবং তাঁর সাথের কাজের লোকটি সব কথা শুনলেন।
পরেরদিন তাঁরা যখন বাড়ি থেকে বিদায় নিবেন, তখন কৃতজ্ঞতা স্বরূপ কিছু একটা উপহার দিয়ে যাবার কথা ভাবলেন। উবায়দুল্লাহ (রাঃ) তাঁর কাজের লোককে (আধুনিক ভাষায় সেক্রেটারি/ম্যানেজার) জিজ্ঞেস করলেন, "আমাদের সাথে কত আছে?"
"পাঁচশো দিরহাম।" (স্বর্ণমুদ্রা।)
"পুরোটা তাঁকে দিয়ে দাও।"
কাজের লোক চোখ কপালে তুলে বললেন, "পুরোটা? একটি ছাগলের দাম খুব বেশি হলে দুই তিন মুদ্রা হবে, সেখানে পাঁচশো দিয়ে দিবেন? এত উদার হবার কী আছে?"
উবায়দুল্লাহ নিজের কাজের লোককে তিরষ্কার করে বললেন, "তুমি কী বুঝতে পারছো না, আমরা পাঁচশো স্বর্ণমুদ্রার সবকটা দান করে দেয়ার পরেও লোকটা উদারতায় আমাদের চেয়ে বহুগুন এগিয়ে থাকবে?"
আপনি কারোর বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গেছেন, গিয়ে দেখেন আয়োজন অতি সামান্য, ভাত, ডাল এবং সাথে ডিমের তরকারি - সেটা দেখে নাক সিঁটকানোর আগে শুধু ভেবে দেখবেন, হয়তো সেটার ব্যবস্থা করতে গিয়ে সেই পরিবারের লোকজন তাঁদের অনেক শখের বস্তুর গলায় ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন।
কিংবা খাবারে শর্ট পড়েছে, অথবা রান্নায় কোন কারনে গন্ডগোল হয়ে গেছে - হৈহুল্লোড় জুড়ে না দিয়ে ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করুন। বেচারা নিমন্ত্রণকারীর কাছে গিয়ে তাঁকে আস্বস্ত করুন। বিশ্বাস করতে শিখুন যে ইচ্ছা করে কেউ আপনাকে ডেকে এনে বাজে খাওয়া পরিবেশন করেনি। ওটা স্রেফ একটা দুর্ঘটনা।
গত বছরের আগের বছর মসজিদে গিয়েছিলাম ইফতার করতে। মাগরেবের নামাজ শেষ হয়ে গেল, ইফতারের কোন খোঁজ নেই। এক ঘন্টা পরে কিছু ডোনাট এনে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানালো একটা বিরাট ভুল বুঝাবুঝির কারনে আজকে ইফতার পরিবেশন করা সম্ভব হয়নি। তাঁদের যেন ক্ষমা করা হয়।
সারাদিনের না খাওয়া, তার উপর খেজুর পানি দিয়ে ইফতারের পর থেকে কিছুক্ষন পরপর বলা হচ্ছিল ইফতার আসছে। এখন হাতে ডোনাট ধরিয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে স্যরি! বাংলাদেশ হলে সেই মসজিদে আগুন জ্বেলে দিলেও অবাক হতাম না।
এই ক্ষেত্রে সবাই অসীম ধৈর্য্য এবং "ডিসিপ্লিনের" পরিচয় দিলেন। যে যার মতন আশেপাশের রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইফতার করে তারাবীহর সময়ে ঠিকই মসজিদে এসে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন।
"মসজিদে ইফতার করা হলোনা, তাও শুকরিয়া" - শুনতে অবাক লাগছে? তাহলে শিওর থাকুন, আপনার মনে সমস্যা আছে।
কারোর কোন দোষ ত্রুটি নিয়ে হুলুস্থুল বাঁধাবার আগে নিজের দিকটা নিয়ে চিন্তিত থাকুন। আপনি নিজে পারফেক্টতো? উত্তর হচ্ছে না। কাজেই নিজেকে পারফেক্ট করার চেষ্টা করুন। তাহলেই দেখবেন, জীবনে কোন সমস্যা নেই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৯:৩৫

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সুন্দর একটি লেখা পড়ে অনেক ভাল লাগল। আসলে আমাদের সমাজে এখন এমন ব্যাক্তির সংখ্যাই বেশি যারা অন্যের দোষ ধরতেই ব্যাস্ত।
নিজের দোষটা কি আর কারও চোখে সহজেই পড়ে।

২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৩৮

গারোপাহাড় বলেছেন: কথা সত্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.