নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
সবার আগে একটা জোক।
শিক্ষা পরিদর্শক এক স্কুল পরিদর্শনে এলেন। তিনি দশম শ্রেণীর ফার্স্ট বয়কে প্রশ্ন করলেন, N A T U R E উচ্চারণ কী?
ছাত্র জবাবে বলল, "ন্যাটুরে।"
শিক্ষা পরিদর্শক ধমক দিয়ে বললেন, "কী বললে?"
ছাত্র ঘাবড়ে গিয়ে জবাব পাল্টালো, "নাটুরি!"
"তোমাদের প্রিন্সিপাল কোথায়? হেডমাস্টার সাহেব!"
হেডস্যার পাশেই ছিলেন। তিনি ভিড় থেকে বেরিয়ে এলেন।
"জ্বি স্যার?"
"কী শিক্ষা দেন ছাত্রদের? স্কুলের সেরা ছাত্র N A T U R E উচ্চারণে বলে নাটুরি! এত ফালতু আপনাদের টিচিং লেভেল?! জানেন, আমি ইচ্ছা করলেই আপনাদের স্কুল বন্ধ করে দিতে পারি?"
হেডস্যার তেলতেলা কণ্ঠে বললেন, "আমাদের টিচিং লেভেল ফালতু!? "আনপসিবল!" সামান্য "নাটুরির" উচ্চারণের ভুলে ওদের ফাটুরী (future) কেন নষ্ট করবেন?"
আমি কিছুদিন আগে একবার লিখেছিলাম বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় সর সমস্যা আছে। বলেছিলাম সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সিলেবাস চেক করতে এবং প্রয়োজনীয় অ্যাকশন নিতে। এবং অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে এক ঝাঁক আল্লাহর বান্দা লেগে গেলেন, আমি নাকি ইহুদি নাসারাদের মতন কথা বলছি। ওদের ভাষায় "মাদ্রাসার সিলেবাসে সমস্যা? আনপসিবল!"
আমি কিছুই বলিনি। এবং আল্লাহ আমার হয়ে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। দেশের এক "মুফতি" "হাফেজ" "মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল" নিজের মুখ খুলে আমার অশেষ উপকার সাধন করেছেন। সাথে দেশবাসীরও।
একদিন এক ছোটভাই ইনবক্সে ম্যাসেজ পাঠালো। "ভাই, মুফতি মাসুদের ভিডিও দেখেছেন?"
ভাবলাম মুফতি হান্নানের আত্মীয় মাত্মীয় হবে হয়তো। হয়তো জঙ্গিবাদী কোন ভিডিও দিয়েছে। এবং এইসব আজাইরা ভিডিও নিয়ে মাতামাতি করার মতন আজাইরা টাইম এখন অন্তত নাই।
"কে ইনি?"
ছোটভাই লিংক পাঠিয়ে দিল। এবং ক্লিক করেই বুঝলাম বিরাট ভুল করে ফেলেছি।
এইসমস্ত ভিডিওওয়ালারা ফেসবুকের "লাইকখোর" পোলাপানদের মতন। তবে, ইউটিউবে যতবেশি ভিউ আসে, তত টাকা পকেটে আসে। না জেনে তাদের একটা ভিউ বাড়িয়ে দিয়েছি! নিজের উপরই মেজাজ খারাপ হলো।
তবে ভিডিওতে ভাই সাহেবের ইন্টারভিউ শুনতে শুনতে হাসি এসেছে। এমনই হাসছিলাম যে আমার বৌ ভেবেছিল আমি হয়তো রাসেল পিটার্স শো দেখছি। উঁকি দিয়ে মনিটরে মুফতি সাহেবের চেহারা দেখে আমার দিকে অবাক একটা লুক দিয়ে চলে গেল।
ভাই সাহেবের প্রতিটা পয়েন্ট হাস্যকর রকমের মজা পেয়েছি।
সব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এই লেখা অনেক বিরাট হয়ে যাবে। তবে প্রথমটা নিয়ে বললেই বুঝে যাবেন কেন হাস্যকর বলছি।
ভাইসাহেব বললেন, "বনু কুরাইজার এত এত লোককে নবীজি (সঃ) মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন। এইটা কী নবীর (সঃ) কাজ?"
ইসলাম নিয়ে যদি কেউ পড়াশোনা করে, তাহলে a for apple b for ball এর চেয়ে যদি কেউ কিছু শিখে থাকে, তবে সে অবশ্যই জানে যে বনু কুরাইজার ইহুদিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় নবীজি (সঃ) ঘোষণা করেননি। বিচার করেছিলেন, সাআদ ইবনে মুয়াদ (রাঃ)।
ঘটনাটা এখানে সংক্ষেপে বলার প্রয়োজন আছে। বিস্তারিত জানতে চাইলে অন্য একদিন বলবো নে।
নবী(সঃ) মদিনায় আসবার পর রাতারাতি তাঁকে রাষ্ট্রপতি বানিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্র গঠন করা হলো। নতুন রাষ্ট্রে নতুন সংবিধান দরকার, তৈরী করা হলো মদিনা সনদ। সেখানে কিছু টার্ম ছিল, ইহুদি গোত্ররা তাঁদের ব্যাপার তাওরাত আইন অনুযায়ী তাঁরা তাঁরা মেটাবে, মুসলিমরা নিজেদের ব্যাপার কুরআন অনুযায়ী নিজেরা মেটাবে। কেউ কারোর ব্যাপারে নাক গলাবে না।
যদি বাইরের কোন শত্রু মদিনা আক্রমন করে, তাহলে মুসলিম এবং ইহুদিরা মিলে সেই শত্রুর মোকাবিলা করবে।
এই দুইটি মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মনে রাখুন।
বদর যুদ্ধের পর বনু কাইনুকা সামনা সামনিই বলে বেড়াতো, "কুরাইশদের সাথে জিতেই তোমরা এত আনন্দ করছো? এখনও আসল পুরুষদের সাথে তোমাদের মোকাবেলা হয়নি।" (মূল ভাব ঠিক রেখে নিজের ভাষায় বললাম।)
এছাড়া তারা কথায় কথায় বুঝিয়ে দিত মুসলিমদের সাথে তাদের ভালই সমস্যা আছে। এবং তারপর বাজারে মুসলিম নারীর শ্লীলতাহানি এবং তার ফলশ্রুতিতে এক সাহাবী হত্যার ঘটনায় নবী (সঃ) তাঁদের মদিনা থেকে বিতাড়িত করলেন।
উল্লেখ্য, তাওরাত অনুযায়ী, চুক্তি ভঙ্গের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। তখনকার আরব সমাজেও চুক্তি ভঙ্গের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। মুহাম্মদ (সঃ) সেটা না করে দেশত্যাগ করিয়েছেন। এটিও ইসলামিক শরিয়া অনুযায়ী একটি শাস্তি, কিন্তু মৃত্যুদন্ডতো নয়।
এবং তারপর মদিনার অবশিষ্ট দুই ইহুদি গোত্রের সাথে আবারও ভ্যারিফাই করে চুক্তিবদ্ধ হলেন। ওরা আশ্বাস দিল কোনই সমস্যা নেই।
এইবার বনু নাদিরের নেতা কাব বিন আশরাফ ঝামেলা পাকালো। মক্কায় গিয়ে আবু সুফিয়ানের সাথে গোপন মিটিং থেকে শুরু করে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কুরাইশদের খেপিয়ে তোলা, এবং ওহুদ যুদ্ধের জন্য প্রলুব্ধ করা, এবং নবী (সঃ) ও নাম ধরে ধরে মুসলিম নারীদের বিরুদ্ধে অশ্লীল প্রোপাগান্ডা - কিছুই বাকি রাখলো না। কাবকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলো। এবং বনু নাদিরকে তারপরেও কিছু করা হলো না। কিন্তু বনু নাদির ঠিকই মুহাম্মদকে (সঃ) হত্যার পরিকল্পনা করলো। এবং কোন দেশে রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যার ষড়যন্ত্রীর শাস্তি কী হয়ে থাকে? মৃত্যুদন্ড?
নবী (সঃ) এইবারও ক্যাপিটাল পানিশমেন্টে না গিয়ে ওদের শুধু বললেন, তোমরা মদিনা ত্যাগ করে ভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপন করো।
এইবারও বনু কুরাইজার কাছে গিয়ে আবারও চুক্তি নবায়ন করা হলো। তারা আশ্বাস দিল তারা কোনই ঝামেলা করবে না।
কিন্তু খন্দকের যুদ্ধ সব পাল্টে দিল।
পুরো আরব সমাজ একত্র হয়ে মুসলিমদের ধ্বংস করতে এগিয়ে আসছে। সৈন্য সংখ্যা চোয়াল ঝুলিয়ে দেয়ার মতন বিশাল। মুসলিমরা যুদ্ধে জড়ালে এক পলকে সবাই নিঃশ্বেষ হয়ে যাবে। এবং বনু কুরাইজা এমন কঠিন পরিস্থিতিতে কুরাইশদের পক্ষ নিল। অবশ্য তাদের বিপথগামী করেছিল বনু নাদিরের বিতাড়িত সর্দার হুয়াই ইবনে আখতাব। প্রথম দিকে বনু কুরাইযা কারোরই পক্ষে ছিল না। এই ব্যাটাই এসে বুঝালো ওদের কুরাইশদের সমর্থন করা উচিৎ। মুসলিমদের পক্ষ নিলে এই যুদ্ধে শুধুশুধু হারবে, এবং এর ফলাফল কঠিন হবে। ইহুদি জাতীয়তাবাদ জাগিয়ে তুলেই ওদের মাথা নষ্ট করে দিল। এবং তাই দেখা গেল, রাতের আঁধারে, মুসলিম নারী ও শিশুরা যে দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিল - এরা সেই দুর্গে আক্রমণ করে বসলো।
মুসলিমদের ভাগ্য ভাল। কুরাইশ জোটের নুয়াম ইবনে মাসউদ (গাতাফানী) তখন ইসলাম গ্রহণ করলেন। এবং তিনি কিছু ছল করলেন যা কুরাইশ এবং বনু কুরাইযার মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করলো। আবু সুফিয়ান যুদ্ধের শেষ দিনে বনু কুরাইযা বেইমানি করেছে ভেবে রাগে ক্ষোভে স্থান ত্যাগ করলো, এবং মুসলিমরা এই যাত্রায় বেঁচে গেল।
তারপর প্রায় পঁচিশ দিনের মতন কেল্লা ঘেরাও করে রাখার পরে বনু কুরাইযা আত্মসমর্পণ করে। এবং এখানেই সবচেয়ে বড় টুইস্ট। পরপর তিনবার চুক্তিভঙ্গের দায়ে দোষী এবং সেই সাথে যুদ্ধের মাঝখানে নারী ও শিশুদের উপর আক্রমণের শাস্তি কী হবে - সেটার ভার মুহাম্মদ (সঃ) বনু কুরাইযার হাতেই সপে দিলেন। তিনি বললেন, তারাই যেন একজন বিচারক নির্বাচন করেন এবং সেই বিচারক যে শাস্তি দিবেন, তাই হবে নবীজির (সঃ) ভার্ডিক্ট।
এখন একটু আমরা নিজেদের পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে কল্পনা করি। রাজাকার শাস্তির দায় আমরা কী ওদের নিজেদের সিলেক্ট করা কোন বিচারকের হাতে তুলে দিতে পারবো? আমাদের কী মাথা নষ্ট? নাকি আমাদের মন এতই উদার?
নবী (সঃ) তাই করলেন। এবং বেকুবরা এখানেই ভুল করে বসলো। তারা সাদ ইব্ন মুয়াদকে (রাঃ) নির্বাচন করলো। তাদের ধারণা ছিল সাদের সাথে যেহেতু তাদের অনেক দিনের পরিচয়, এবং বন্ধুত্ব। সাদ তাদের পক্ষে রায় দিবে।
সাদ তাওরাত অনুযায়ী শাস্তি দিল।
মার্টিন লিংসের বই থেকে সরাসরি উদ্ধৃতি, "Sa‘d's judgment was no doubt directed mainly against their treachery; but in fact it coincided exactly with Jewish law as regards the treatment of a besieged city, even if it were innocent of treachery: When the Lord thy God hath delivered it unto thy hands, thou shalt smite every male therein with the edge of the sword: but the women, and the little ones, and the cattle, and all that is in the city, even all the spoil thereof, shalt thou take unto thyself. Deuteronomy 20: 12."
নবী (সঃ) তখন বললেন, "তুমি ন্যায় বিচার করেছো।"
ইসলামে এইধরণের ইস্যুতে দুই রকম বিধান আছে। মৃত্যুদন্ড, অথবা ক্ষমা। নবীর (সাঃ) কাছে যদি ওরা ক্ষমা চাইতো, তাহলে হয়তো মাফ পেয়ে যেত। কারন কুরাইশরা সেটাই করেছিল। এমনকি ওয়াহ্শী, যে নবীজির (সঃ) চাচা হামজার হত্যাকারী, তাঁকে পর্যন্ত তিনি ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
আরেকটা পয়েন্ট, নবী (সঃ) যদি "ইহুদি" হবার অপরাধে তাঁদের হত্যা করতেন, তাহলে জেরুসালেম দখলের পর উমার (রাঃ) কেন ইহুদিদের তাড়িয়ে দিলেন না? আমার বিশ্বাস, আমাদের বাংলাদেশী মাদ্রাসার হুজুরদের থেকে উমার (রাঃ) ইসলাম একটু বেশি জানেন।
এবং মৃত্যুর সময়ে নবীর (সাঃ) যুদ্ধবর্ম একজন "ইহুদীর" কাছে বন্ধক ছিল। শুনলে কী মনে হয়?
তো যাই হোক। ভাই সাহেবের ভিডিওর প্রতিটা পয়েন্টই এই রকম। প্রতিটা তথ্য ফাঁকা। উঁইপোকা খেয়ে ফেলেছে। টোকা দিলেই ঝুরঝুর করে ঝরে। এবং বোঝা যায় তিনি কেমন মুফতি!
আমি একজন "কাফির নাসারাদের" দেশের "একাউন্ট্যান্ট" হয়ে যা জানি, তা একটি মুসলিম দেশের কওমি মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি হাফেজে কুরআন হয়ে জানেন না, এইটা কিভাবে সম্ভব?
তখন আমার সেই হেডস্যারের জোকটা মনে পড়ে গেল। "আমাদের মাদ্রাসার ছাত্র মূর্খ? আনপসিবল! এই মাদ্রাসায় যদি কেউ মূর্খতার দাবি রাখে, সেটা হচ্ছি আমি নিজে, হাফেজ মুফতি মাসুদ। এবং এই পদক আমি কাউকে কেড়ে নিতে দেব না।"
এরপর একজন বেচারার একটি চিঠি ফরোয়ার্ড করলো। নবীর (সঃ) কাছে লেখা চিঠিতে বোঝা যায় দেশের মাদ্রাসায় কী আকাম কুকাম ঘটে। জোকস সাইডে রেখে এই বিষয়ে সরকারি পর্যায়ে সিরিয়াস হওয়া উচিৎ। পুলিশ, Rab, যৌথ বাহিনী যেভাবে যে শক্তি প্রয়োজন সেই শক্তি প্রয়োগ করে এই সমস্যা সমাধান করতেই হবে।
মুফতি সাহেবের লেখার কিছু ছোট বড় পয়েন্ট;
১. "বাইরের বই পড়া হারাম," "কবিতা পড়া হারাম" - "ইক্বরা" শব্দটির মাধ্যমেই কুরআন নাযেল হয়েছে। দুইবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পড়ার। যা আল্লাহর তরফ থেকে নাযেল হবে, সাথে যা কলম দ্বারা প্রচার হবে। কোথাও বলা হয়নি "আউট বুক" পড়া নিষেধ। সাহাবীরা এই বাইরের জ্ঞান আহরণ করতেন বলেই একশো বছরের মধ্যে মক্কার অতি বর্বর সম্প্রদায় বিশ্বের সুপার পাওয়ার হয়ে গিয়েছিল।
এবং এখন এই আউটবুক পড়া বাদ দিয়েছে বলেই অতি সভ্য সম্প্রদায় বর্বর হয়ে যাচ্ছে।
২. "হুজুরের মার যেখানে পরে, সে স্থান দোজখে পুড়ে না।" কাজেই, সব মাদ্রাসায় গরু ছাগলের মতন ছাত্র পেটানো হয়। প্রথম কথা, এই হাদিস কোন হাদিস গ্রন্থেই নেই। একজন মুফতি যদি এই জ্ঞান না রাখে, তাইলে কিভাবে চলবে?
এটি কোন বদ্ধ উন্মাদের প্রলাপ হাদিস হিসেবে চালানো হয়েছে। এবং দ্বিতীয় কথা, যদি এই হাদিস সত্য হতো, তাহলে সাহাবীরা নিজেদের পিঠ পেতে দিয়ে বলতেন, "পেটান ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি এই বাহানায় দোজখের আগুন থেকে মুক্তি মেলে!" বুঝতে কমন সেন্স দরকার হয়। যা দেশের কাঠমোল্লাদের নেই।
৩. "মশারির ভিতর যাওয়া" - সেক্সুয়াল এবিউজের ঘটনা ঘটে। তা, মাদ্রাসায় সেক্সুয়াল এবিউজের ঘটনা রেগুলার শোনা যায়। শুধু মাদ্রাসাই নয়, ভ্যাটিকানেও এমনটা ঘটেছে। কিছুদিন আগেই বলেছিলাম, বাল্টিমোরের এক চার্চের ফাদার ছাত্রীদের নিজের রুমে ডেকে এনে নিজে ধর্ষণ করতো এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ লোকেদের দিয়েও করাতো। প্রতিটা ক্ষেত্রে একই বয়ান, "না করলে আল্লাহর গজব নাজেল হবে।"
এবং সর্বক্ষেত্রে "কমিটি" বদনাম ছড়াবার ভয়ে ঘটনাকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অতি শক্তিশালী আইনি পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
৪. "জিহাদি হুজুরের জিহাদি মন্তব্য" - এখানেও সরকারের অতি অতি অতিরিক্ত সিরিয়াস হওয়া উচিৎ। জিহাদ মানে "স্ট্রাগল, নিজের ন্যায় সঙ্গত অধিকার আদায়ের পথে যেকোন ধরণের স্ট্রাগল" কিন্তু দেশে মূর্খরা ছড়ায় জিহাদ মানে "ধর্ম যুদ্ধ। কাফের হত্যা না করলে জিহাদ হয় না।" মাদ্রাসায় সাধারণত স্মার্ট, বুদ্ধিমান এবং ব্রিলিয়ান্ট ছাত্ররা যায় না। এই মুফতিই তার প্রমান ও এটাই ফ্যাক্ট। উনার কথা মতে উনি ছিলেন মাদ্রাসার ফার্স্ট বয়! তাইলে লাস্ট বেঞ্চের পোলার অবস্থা কী!?
কাজেই ওদের অতিদ্রুত বিপথগামী করা সম্ভব। জিহাদি বক্তব্য ছড়িয়ে বেড়ানো ব্যাটাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় না আনলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশের খবর আছে।
৫. "আরবি/উর্দু পবিত্র ভাষা, এবং বাংলা হিন্দুদের ভাষা। কাজেই বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসা বেশি হওয়া যাবে না।" - এই বিষয়েও সরকারের পক্ষ থেকে মারধর পর্যায়ের পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ। বাংলাদেশে থেকে বাংলা ভাষার অপমান, রাষ্ট্রের প্রতিই অপমান করা। এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবং বেকুব ভাই জানেনা, কুরআনের ভাষা আরবি, কারন নবীর (সঃ) নিজের ভাষা ছিল আরবি। তিনি আরবে জন্মালেন, এবং আরবি ছাড়া কোন ভাষা জানেন না, এদিকে জিব্রাঈল বাংলা ভাষায় ওহী নিয়ে আসলেন, এমন ঘটলে কিছুই হতো না। নবীজি (সঃ) যদি বাংলাদেশী হতেন, তাহলে কুরআন বাংলায় নাজেল হতো। অথবা প্রাচীন ভারতীয় হলে ভাষা হতো সংস্কৃত। কোন ভাষায় সাথেই ইসলামের কোন রকমের দ্বন্দ নেই। যে কারনে যেকোন ভাষায় দোয়া করলে আল্লাহ দোয়া কবুল করেন।
৬. "ইহুদিদের টাকা পেয়ে অমুক তমুক ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে এইসব লেখা লিখে।" - খুবই বিরক্তিকর এবং ফালতু কথা। আমাদের দেশে কেউ কিছু লিখলেই অপর পক্ষ বলে বেড়ায় "জামাত শিবির থেকে টাকা খেয়ে এইটা লিখেছে।" কিংবা, "সে আওয়ামীলীগের পেইড এজেন্ট।" আমার মতে, মানুষের এত আজাইরা টাকা নেই যে টাকা খাইয়ে কাউকে লিখতে দেয়া হবে। যে সমস্ত বুদ্ধিজীবী পয়সা নিয়ে লেখেন, তাদের লেখা পড়লেই বোঝা যায়।
আর ইহুদি নাসারাদের এখন অনেক কাজ নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়। বাংলাদেশের মুসলিমদের ঈমান নষ্ট সেই প্রায়োরিটি লিস্টে নেই, আমি নিশ্চিত। শুধু শুধু মূর্খামি ছড়িয়ে বেড়ানো।
৭. "বিধর্মী কেউ ভাল মানুষ হতে পারবেনা।" - আমি কিছুদিন আগে মুতইম ইবনে আদি সম্পর্কে একটি বিশাল আর্টিকেল লিখেছিলাম। যিনি কাফির হয়েও মুসলিমদের কেমন সাহায্য করেছিলেন। এমন সাহায্য যে তিনি না থাকলে ইসলাম সেই মক্কার বাইরের উপত্যকাতেই মিলিয়ে যেত। এবং নবীজি (সঃ) এই লোককে প্রচন্ড সম্মান করতেন।
এবং আরেকটি উদাহরণ, রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস। নবীর (সঃ) ম্যাসেজ পেয়ে খসরুর মতন ছিঁড়ে না ফেলায় নবীজি (সঃ) বলেছিলেন, "আল্লাহ তাঁর সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখবেন।"
তো এইসমস্ত সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর অপরাধে এইসমস্ত মাদ্রাসার দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।
৮. পল্টনের মতন স্থানে এরা স্লোগান দেয় "আমরা সবাই তালেবান, বাংলা বানাবো আফগান!" এই স্লোগান আমিও শুনেছি। তাও সিলেটে। তার মানে এটি দেশব্যাপী ছড়ানো হয়েছে। এবং এটি ভয়াবহ ব্যাপার। এটি দেশ ধ্বংসের পরিকল্পনা। এটিও রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সরকার যদি এইসব ইস্যুতে চুপচাপ বসে থাকে, কিংবা হেফাজতিদের চাপে মৌনতা অবলম্বন করে, তাহলে বাংলাদেশ আগামী বিশ বছরে ধ্বংস হয়ে যাবে।
"মুফতি" "হাফেজ" "প্রিন্সিপাল" মাসুদ নিয়ে টেনশনের কিছু নেই। অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী। এই আহাম্মক প্রিন্সিপাল থাকলে সব কটা স্টুডেন্ট নেচারকে নাটুরি শিখতে শিখতে নিজেদের ফাটুরির বারোটা বাজায় দিত। বরং ফোকাস করা উচিৎ সেই সব স্কুলের দিকে, যারা এইসব আহাম্মকদের প্রিন্সিপাল বানিয়ে রেখেছে। অবিলম্বে ওদের সিলেবাস চেক করা হোক। রিল্যাক্স থাকার টাইম নাই।
একটা জোক দিয়ে শুরু করেছিলাম, জোক দিয়েই শেষ করি।
এক বেসুরো গায়ক গান শুরু করতেই দর্শকসারিতে লোকজন জুতা স্যান্ডেল লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। গায়ক বেচারা ভীত হয়ে গান থামিয়ে দিল। দর্শকরা বললেন, "তুমি বাবাজি গাইতে থাকো। আমরাতো তাকে খুঁজছি যে তোমাকে স্টেজে উঠিয়েছে।"
আমি, একজন একাউন্ট্যান্ট তাকে খুঁজছি যে এই সমস্ত লোকদের "মুফতি" টাইটেল দেয়।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:১০
রাজীব নুর বলেছেন: বেশ ভালো লিখেছেন।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৮
আমপাবলিক বলেছেন: ভাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ির অবস্থা। আপনার প্রতিটা শব্দের সাথে সহমত। ধন্যবাদ।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৫৫
Nurullah Mashhur বলেছেন: সহমত ভাই
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!
৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০৪
হানিফঢাকা বলেছেন: একটা কমন প্রবণতা হচ্ছে মানুষ নিজে যা মনে করে তাই ধর্মের নামে চালিয়ে দেয়। মুফতিরাও এর ব্যাতিক্রম না। পার্থক্য হচ্ছে, সাধারণ মানুষ মনে করে তারা যা বলে তাই ধর্মীয় বিধান। এরা মুলত ধর্ম ব্যবসায়ী। যুগযুগ ধরে এরা ধর্মের নামে ব্যাবসা করে গেছে। এটা অনেক লাভজনক ব্যাবসা।
আপনার প্রতিটি কথার সাথেই একমত, শুধুমাত্র বানু কুরাইজা নামক তথাকথিত ইহুদী গোত্রের যে উদাহরণ দিয়েছেন সেটা ব্যাতীত। যদিও আপনি ট্র্যাডিশন থেকে এই ঘঠনা ব্যাখা করেছেন যা অনেকেই সত্য বলে জানে। আমার মতে এই গুলি সম্পূর্ণ রুপে বানানো ঘঠনা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আব্বসীয় খিলাফতের সময় এই ঘঠনাগুলি বানানো হয়েছে। আমার এই মনে হওয়ার পিছনে কারণ হচ্ছে ঐ সময়ের সমসাময়িক বিভিন্ন সোর্সের লিখিত বিবরণী থেকে জানা যায় আরব এবং ইহুদীদের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। এমনকি খলিফা উমরের সময়েও এই সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। সম্ভবত আব্বাসীয় খিলাফতের সময় আরব এবং ইহুদীদের সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হয় এবং সেই জন্য ইহুদীদের সম্পর্কে এই মিথ্যা গল্পগুলি বানানো হয়।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাই, যতদূর জানি হাদিস কুরআনের তথ্য মতেই বনু কুরাইজার ঘটনা সত্য।
এবং সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো, বনু কুরাইজার ঘটনা কিন্তু ইহুদি বিদ্বেষ ঘটনা নয়। বেঈমানীর শাস্তি নিয়ে ঘটনা। আহলে কিতাবীদের সাথে মুসলিমদের কিন্তু সমস্যা নেই।
৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:২২
বেকার যুবক বলেছেন: অনেক বছর পর, ব্লগে একটু ঢু মারলাম!
মঞ্জুর ভাই আপনার লেখাটা খুব ভালো লাগলো! সুন্দর হয়েছে! অনেক! দ্বিমত করার মত কোন পয়েন্টই খুঁজে পেলাম না! লেখা উন্নত হয়েছে!
হানিফ ভাই! আপনার উত্তরও সুন্দর!
তবে বনু কুরাইজার ঘটনাটা মিথ্যা হওয়ার পেছনে আপনি আব্বাসীয় সময়ের যে কথাটা যেভাবে বললেন, সেইভাবে বললে, পৃথিবীতে ইতিহাস বলতে কিছু হয়তো কখনো পাওয়া যাবেনা!
আর যদি এইভাবে অসত্য হওয়ার সম্ভাবনা সামনে আনেন, তবে, সেইগুলোর কিছু কার্যকারণও সামনে আনবেন প্লিজ! নয়তো ঢালাওভাবে যদি বলেন, তবে ঢালাও কথা বলা কাদের স্বভাব সেটা নিশ্চয়ই আপনে ভালোই জানেন!
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৭| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫১
উদুম্ভূত বলেছেন: একজন মুফতির কিছু কথার উপরে পুরো কওমি মাদরাসাকে ঝেড়ে দিলেন? এবং মনের কূৎসিত কথাগুলোও প্রকাশ করে দিলেন?
কেয়ামতের ময়দানে কিন্তু নিয়তের উপর ফায়সালা হবে।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:১৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: পুরো কওমি মাদ্রাসাকে ঝাড়িনি, বরং তাঁদের সিলেবাস চেক করে প্রয়োজনীয় অ্যাকশন নিতে বলেছি। দুইটায় পার্থক্য আছে।
৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৬:৪৩
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: ভাল লিখেছেন। তবে ধর্মীয় বিষয়ে লিখতে গেলে আরও সতর্ক এবং গুছিয়ে লেখা দরকার।
২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ওকে।
৯| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০১
হানিফঢাকা বলেছেন: আপনি বলেছেনঃ যতদূর জানি হাদিস কুরআনের তথ্য মতেই বনু কুরাইজার ঘটনা সত্য।
আমি যতটুকু জানি এই ঘঠনা হাদিসে আছে, কোরআনে নেই।
@বেকার যুবক ঃ
আপনি মনে হয় আমার মন্তব্যটা ভাল করে পড়েননি। কারন আমার মন্তব্যের মধ্যে আমি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি এইরকম মনে হওয়ার কারন কি। স্পেসিফিক সোর্স দেইনি কারন এইটা নিয়ে আলোচনা করলে মুল পোস্টের চেয়ে মন্তব্য অনেক বড় হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
আজকের যুগে আমাদের কাছে অনেক ভেরিফায়েবল সায়েন্টিফিক প্রুফ আছে (যেমন আর্কিওলজিকাল, সমসাময়িক সময়ে লেখা বিভিন্ন ইনস্ক্রিপশন, গ্রীক, রোমান, সিরিইয়াক সোর্স) যা ট্র্যাডিশনে বর্ণিত এই সব ঘঠনা গুলিকে প্রশ্নবিদ্ব করে। ইতিহাস ক্ষমতাসীনদের দ্বারা লেখা হয়, এবং তারা সবসময় সত্য নাও বলতে পারেন।
ধন্যবাদ।
১০| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৬
বিজন রয় বলেছেন: হা হা......
কতই না সমস্যা!!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৫৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
আনপসিবল? ইংরেজরা দেখলে নিজের ভাষার জন্য কেঁদে ফেলবে!