নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ইন্ডিয়া একটি বিশাল দেশ। ২৯টা রাজ্য আছে। আয়তনে বাংলাদেশের প্রায় ২২ গুন এবং জনসংখ্যায় কতগুণ সেটা হিসেব করে নিন। এক বিলিয়ন ছাড়িয়েছে সেটা বহু বছর আগেই।
এখন চিন্তা করে দেখুন তাঁদের জাতীয় ক্রিকেট দলের অবস্থা। এক বিলিয়ন মানুষের মধ্য থেকে হাফ বিলিয়ন যদি হয় পুরুষ, এবং এরও অর্ধেকের অর্ধেকও যদি জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলতে আগ্রহী হয় তাহলেও যে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে তাতে একটা কেওস লেগে যাবে। লাখে লাখে ছেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার যোগ্য, কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে মাত্র এগারোজন।
আইপিএল বা রঞ্জি বা ওদের অন্যান্য টুর্ণামেন্টগুলো প্রমান করে কতটা কাঠখড় পুড়িয়ে একটা ছেলের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়। বিরাট কোহলির মতন খেলোয়ারকেও একুশটা জন্মদিন জাতীয় দলের বাইরে কাটিয়ে আসতে হয়েছে। তারপরেও রেহাই নেই। বাজে খেললেই বিদায়। হাজারটা খেলোয়াড় মুখ হা করে বসে আছে তাঁর জায়গা নেবার জন্য। সুরেশ রাইনা নাকি একবার অভিযোগ করেছিল তাঁকে কী কেবল ফিল্ডিং করানোর জন্য দলের সাথে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে যেতে হয়? শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের কারনে সে ব্যাটিংই পায় না। স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলকে মনে আছে না? ওয়ার্নের সময়ে ওয়ার্নের সাথে টক্কর দেয়া স্পিনার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটাই গড়া হলো না বেচারার।
এখন এই কথা অতি নিন্দুকেও স্বীকার করতে বাধ্য যে শচীন টেন্ডুলকার হচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটে দেবতা স্বরূপ। কলিযুগ না হয়ে এটা যদি সত্যযুগ হতো, তাহলে অবশ্যই লোকে শচীনের পূজো শুরু করে দিত। in fact, আসলেই নাকি ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ কেউ শচীনের পূজা করে থাকেন। আমাদের এক ভারতীয় বন্ধু ছিল, যে বিশ্বাস করতো না শচীনকে কখনও কোন বোলার কম রানে আউট করতে পারে। ওসব নাকি শচীন ইচ্ছে করেই হয়। গডের পক্ষ্যে কিভাবে শূন্য রানে আউট হওয়া সম্ভব?
ছেলেটা কিন্তু অশিক্ষিত মূর্খ নয়। কম্পিউটার কোডিং মুখে মুখে করে দিতে পারে এমন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র।
তো যাই হোক, ধরা যাক টেন্ডুলকারের অবদানকে সম্মান জানাতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় জাতীয় দলে তাঁর ছেলে বিনা প্রতিযোগিতায় সুযোগ পাবে। ভারতমাতার এই মহান সেবকের প্রতি বোর্ডের পক্ষ থেকে এটি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
এতে অর্জুন টেন্ডুলকার কী relaxed হয়ে যাবেনা? যখন চিন্তা করবে তাঁকে আর বিরাট, রোহিত, শিখর, অজিঙ্কাদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছেনা?
এইটা শুনে সৌরভ গাঙ্গুলি দাবি করলেন তাঁর বাচ্চাকেও এইরকম সুযোগ দেয়া হোক। আজকের যে "টিম ইন্ডিয়া" - তার ভিত্তিতো তাঁর যুগেই শুরু হয়েছিল।
ওকে, সৌরভকেও দেয়া হলো।
এইবার শুরু হবে সুনীল গাভাস্কারের দাবি, এমএসধোনির দাবি, এবং দেখা যাবে এখানে ওখানে যেই ম্যান অফ দ্য ম্যাচ/টুর্নামেন্ট হয়েছে, সেই দাবি জানাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে বোর্ড ঘোষণা দিল, ঠিক আছে, খেলোয়াড়দের সন্তানদের জন্য এগারোজনের দল থেকে ৩টা কোটা বরাদ্দ দেয়া হলো।
তাহলে কী হবে? ইন্ডিয়ান দলটা দুর্বল হয়ে যাবে। তিনতিনটা খেলোয়াড়, যাদের যোগ্যতা নাই অন্যদের সাথে পাল্লা দিয়ে দলে সুযোগ করে নেয়ার, তারা দিব্বি দলের হয়ে দেশ বিদেশে খেলে বেড়াবে। বিপক্ষদলগুলো এই তিনটাকে টার্গেট করেই তাঁদের রণনীতি সাজাবে।
সাউথ আফ্রিকা ক্রিকেট দলে যেমন কালো কোটা চালু হয়েছিল। হ্যা, গিবস, মাখায়া এন্টিনির মতন খেলোয়াড় হয়তো এই কোটা সিস্টেমের ফায়দা তুলেই উঠে এসেছে, কিন্তু কত ডোনাল্ড পোলক এর বলি হয়েছেন তার হিসাব আছে?
উদাহরণটা ক্রিকেট থেকে দিলাম যাতে সবাই বুঝতে পারেন।
দেশে সরকারি চাকরিতে এই ঐ কোটা নিয়ে অনেক তোলপাড় চলছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা ছিল। অবশ্যই দরকার আছে সেটার। তাঁরা দেশের জন্য যা করেছেন, তাঁর স্বীকৃতি স্বরূপ সামান্য একটা চাকরি না দেয়াটা নিমকহারামী হতো। এরপর এলো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান কোটা। আচ্ছা, ঠিক আছে। যদি যোগ্য হয়, তাহলে একটু ফায়দা না হয় তুললই। দেশের জন্মের পেছনে তাঁদের পিতার অবদানতো কম নয়। এই কোটা সিস্টেমের সদ্ব্যবহার করে আমারই কিছু বন্ধু পড়ালেখা করে ভাল চাকরি নিয়ে বসে আছে। হয়তো মেইনস্ট্রিম পোলাপানদের সাথে প্রতিযোগিতা হলে তাঁরা এত সহজে পেত না। একটু বেশিই পরিশ্রম করতে হতো।
এখন শুনলাম নাতিনাতনিদের জন্যও কোটা চালু আছে। বাহ্! এখন মনে হচ্ছে একটু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।
এই কথা কিন্তু প্রমাণিত সত্য যে পিতা গুণবান মানেই কিন্তু এই না যে পুত্রও গুণবান হবেন। নাতিনাতনীর গ্যারান্টিতো বহুদূর। অমিতাভ বচ্চনের ছেলে অভিষেক বচ্চন গত একযুগ ধরে কোন লিড রোল পাচ্ছেনা। সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সিনেমা লাইনে তেমন কিছুই করতে পারলেন না। কিন্তু তাই বলে বলিউড টলিউড কী থেমে আছে? প্রতিযোগিতা করে পোলাপান আসছে, নায়ক হচ্ছে, ডিরেক্টর হচ্ছে, ভাল ভাল ছবি বানাচ্ছে। যদি কোটা সিস্টেম ধরিয়ে দিত, তখন?
যেকোন কিছুর কোয়ালিটির উন্নয়নে প্রতিযোগিতার কোনই বিকল্প নেই। যখন কেউ বুঝবে তাঁর কোন প্রতিযোগীই নেই, সে কেন শুধু শুধু কঠিন পরিশ্রম করতে চাইবে? যে যোগ্য সে যদি সুযোগ পায় তখন দেখবেন কিভাবে সবাই গা ঝাড়া দিয়ে পরিশ্রম করে। প্রতিযোগিতায় যদি হেরেও যায় তারপরেও সে থেমে থাকবে না। নিজ যোগ্যতায় অন্য কোথাও ঠিকই কিছু একটা করে ফেলবে। কিন্তু যখন দেখবে স্রেফমাত্র বংশ মর্যাদার কারনে তাঁর সাথে বৈষম্য ঘটানো হয়েছে, তখন কিন্তু তাঁর সেই মোরাল বুস্ট আর থাকবে না। উল্টো সিস্টেমের প্রতি একটি ঘৃণার জন্ম নিবে।
শুনলাম কোটা সিস্টেম ধরে রাখার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিনাতনিগণ রাস্তায় নেমেছেন। মুক্তিযুদ্ধের যে প্রধান বৈশিষ্ট্য, সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের ঊর্ধে গিয়ে সকল মানুষের সমান অধিকারের মুক্তির জন্য যে সংগ্রাম, সেটারতো স্পষ্ট লঙ্ঘন এই কোটা সিস্টেম। আমার দাদু মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন বলেই আমি মহান হয়ে গেলাম পাশের বাড়ির ছেলেটির থেকে, যে নিজের পরিশ্রমে এবং যোগ্যতায় এতটা দূর এসেছে। হাস্যকর ঠেকছে না? এ যে একদম এমনটাই শোনায় যে ও পশ্চিম পাকিস্তানী বলে চাকরি পেয়ে গেছে আর আমি বাঙালি বলে বাদ পরে গেলাম!
কোটা সিস্টেমের পক্ষে কেবল মুক্তিযোদ্ধাগণ বা তাঁদের বংশধরগণ বা তাঁদের বন্ধুবান্ধবগণ ছাড়া আমার মনে হয়না কেউ দাবি নিয়ে পথে নামছেন। এমনকি যারা নামছেন, তাঁরাও অন্তর থেকে জানেন এই দাবি অন্যায় দাবি। কেবল নিজেদের স্বার্থের জন্যই এই পথে নামা।
বরং আসেন, আপনাদের পূর্বপুরুষগণ সেই সময়ে যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন, সেই পরিচয় আপনারাও দিন। সংগ্রাম করেই নাহয় নিজের বিজয় ছিনিয়ে আনুন। দেখবেন, সেই ফলের স্বাদ দারুন!
* ডিসক্লেইমার, আমার বন্ধুবান্ধব এবং ঘনিষ্ট আত্মীয়স্বজন গিজগিজ করছেন মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরে। এই লেখা তাঁদের কারোরই পছন্দ হবেনা। তাছাড়া সবার মাথায় রাখা উচিৎ কে চাকরি পেল না পেল আমার কিছুই যায় আসেনা। আমি নিজেও "কোটা সিস্টেমের জব মার্কেটে" চাকরিপ্রার্থী নই। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালোই আছি। তারপরেও আমার কাছে উপরে যা বললাম সেটাই মনে হয়েছে সঠিক। বিদেশে থাকার কারনে আমি দেশকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ পাচ্ছি যেটা দেশে থেকে অনেকেই দেখতে পারছেন না।
শেষ কথা, "আমার আমার" না করে আমরা যেদিন "আমাদের আমাদের" করে ভাবতে শিখবো - সেদিন হয়তো আমাদের কিছু একটা হবে।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ফাতরা পোলাপান। পাত্তা দেই না, তারপরেও সামনে এসে ঘেউ ঘেউ ঘেউ।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:১৭
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: স্বাধীনতার বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার পিছনে অবশ্যই জোরালো যুক্তি ছিল | কিন্তু তাদের নাতিপুতিদের কোটার আওতায় আনার পিছনে কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না - বরং এর মাধ্যমে যোগ্যতর প্রার্থীদের উপহাস করা হয় | বাংলাদেশে শুধুমাত্র সরকারি চাকুরিতেই কোটার যন্ত্রনা নয়, রাজনীতিতেও কোটা ব্যবস্থা বেশ শক্তভাবে গেড়ে বসে আছে | এই কোটা ব্যবস্থার সুযোগ নিয়েই দুই বৃহৎ দলে দুই জন (এবং তাদের বংশধররা ) শীর্ষ পদে দখল করে সারাক্ষন ঝগড়া/বিবাদ/কাজিয়া/ফ্যাসাদে লিপ্ত থেকে জনগণকে প্রচুর হার্ডটাইম দিচ্ছেন |
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন
৩| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৭
খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল বলেছেন
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সহমত।
৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩০
সোহানী বলেছেন: সহমত।
কোটা সিস্টেম দেশকে ক্রমাগত পিছনের সারিতে নিয়ে যাচ্ছে। এবার এসব বন্ধ করা উচিত।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন
৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫৬
রাজীব নুর বলেছেন: ঐক্য নাই আমাদের মাঝে।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সত্য উপলব্ধি।
৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: যেহেতু কোন সরকারই কোটা উইথড্র করবে না, সেখানে একটা সমাধান হতে পারে যে, জীবনে একবার মা্ত্র কোটার সুবিধা নিতে দেওয়া, হয় চাকুরি নয় পড়াশুনা।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কী জানি ভাই, কিন্তু জানি যে সিস্টেমে গলদ আছে ভালই।
৭| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪
শামছুল ইসলাম বলেছেন: সহমত । সুন্দর বলেছেন, ভাবনাটা হোক 'আমাদের' ।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:২৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
ম্যাঁওপ্যাঁও ধরণের ভাবনা