নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা সবাই এক হয়ে স্রেফ একবার জোরে NO বললেই এইসব বদমাইশ মন্ত্রী এমপিদের প্যান্ট ভিজে যাবে।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৩

নবী (সঃ) বলেছেন, সহীহ হাদিস, "পৃথিবীতে যারা এতিমের খেয়াল রাখবে, কেয়ামতের দিন তাঁদের সাথে আমার দূরত্ব এতটুকু হবে।" এবং তিনি তারপর তাঁর হাতের দুই আঙ্গুলের দূরত্ব দেখিয়ে বুঝিয়ে দেন নবীর কতটা কাছাকাছি হবেন তাঁরা।
ইসলাম ধর্মে এতিমদের দেখভাল করাকে হাইয়েস্ট প্রায়োরিটি দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে সহজে পুণ্যলাভের মাধ্যম এটি। এমনকি এও বলা হয়েছে যদি কেউ সাহায্য করার যোগ্যতা নাও রাখেন, তবু কোন এতিমের মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিতে - এতে সে যতটা খুশি হবে, আল্লাহ তারচেয়ে বহুগুন বেশি খুশি হবেন।
আমাদের দেশের একজন বিখ্যাত সংগীত শিল্পী গত বাইশ বছর ধরে একটি আস্ত এতিমখানা চালান। তাঁর নাম শুধু এই কারণেই বলছি না যে তিনি নিজেও এই বিষয়ে পাব্লিক্লি আলোচনা করেন না। তবে এটুকু পড়েই তাঁরা চিনে ফেলেছেন যারা তাঁকে চেনেন।
তা তিনি যেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশে একটি এতিমখানা খুলবেন, তিনি বেছে নিলেন এমন একটি অঞ্চল যেটি ডাকাতদের গ্রাম নামে পরিচিত। ভদ্রজনেরা সেই এলাকা এড়িয়ে চলে। তিনি দেখলেন সেই এলাকার রাস্তায় বেড়ে উঠছে এতিম শিশুর দল। একদিন এরাই বড় হয়ে ডাকাতি করবে। দেশের জন্য কিছু করতে হলে এদের জন্যই কিছু করতে হবে।
এখানে দ্রুত একটি মহাগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বলে ফেলা যাক। সাইকোলোজি এবং সোশ্যালজির গবেষণার ভিত্তিতে এই তত্ব প্রমাণিত যে, কোন সমাজের কোন সম্প্রদায় বা নির্দিষ্ট শ্রেণীর মানুষকে যদি "অচ্ছুৎ" গণ্য করা হয়ে থাকে, তবে সেই নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা শ্রেণীর লোকজন সেই তথাকথিত ভদ্রসমাজকে কখনই আপন করে নিবে না। ফলে, সেই সমাজের বিরুদ্ধে যেকোন অপরাধ করার ক্ষেত্রে তাদের বিবেক কোন বাঁধা দিবে না।
আরেকটু সহজ বাংলায় বলি।
ধরুন, এই যে ডাকাতদের গ্রামের কথা উপরে উল্লেখ করলাম, এদের গ্রামে জন্ম নেয়া কোন শিশু যখন বড় হবে, তখন সে হয়তো নিজের বাপ দাদার পেশাকে ঘৃণা করবে। কিন্তু যখন দেখবে সমাজের লোকেরাই উল্টো তাঁদের কপালে ডাকাতির সিল মেরে দিয়েছে, তাঁদের সাথে কেউ মেশে না, তাঁদের কেউ চাকরি দেয় না, কোন সামাজিকতা রক্ষা করেনা - তখন সে বাধ্য হয়েই নিজের বাপ দাদার পেশাকে আপন করে নিবে। নিজের জাতের লোকেরা অন্তত তাঁদের ছুড়ে ফেলে দেয় না। এবং যারা তাদের ঘৃণা করে, তাদের ক্ষতি করতেই বা সমস্যা কী?
যে কারনে আমাদের দেশে চোরের ছেলে চোর হয়, পতিতার মেয়ে পতিতা - এবং এইভাবে এই সামাজিক বর্ণ প্রথা হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের দেশে চলে আসছে।
তো আমাদের সেই গায়ক করলেন কী, ডাকাতদের গ্রামেই এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করলেন। একঝাঁক এতিম শিশুকে খাওয়ানো দাওয়ানো, শিক্ষা দীক্ষা দেয়া ইত্যাদি কিন্তু মোটেও সহজ কর্ম নয় - অনেক খরচের ব্যাপার। তিনি নিজেও অনেক ব্যস্ত মানুষ। দেখা যেত গভীর রাতে তিনি ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে সেই গ্রামে যাচ্ছেন। সেই সময়ে যদি তাঁকে হাইজ্যাক করা হতো - তাহলে অবশ্যই তাঁর ব্যাগে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ক্যাশ পাওয়া যেত। তিনি যাচ্ছেনও ডাকাত পাড়ায়, মানে তেলমশলা শরীরে মেখে সরাসরি সিংহের গুহায় ঢুকে যাওয়া। যদি তাঁকে ডাকাতি করে, তাহলে "সমাজ" উল্টো তাঁকেই দোষ দিয়ে বলবে, "কী শখ মেটাতে ওখানে গিয়েছিলি? খুব ভাল হয়েছে মার খেয়েছিস। এখন পস্তা!"
কিন্তু না, অতি আশ্চর্য্যের ব্যাপার হচ্ছে, তিনি কখনই কোন হামলার শিকার হননি। প্রশ্ন জাগতেই পারে, ডাকাতরা কী জানতো না তিনি কে? তাঁর কাছে কী আছে? অবশ্যই জানতো। কিন্তু সাথে এও জানতো যে তিনি কেন তাদের এলাকায় আসেন।
এই প্রথম তাদের জন্য "ভদ্র সমাজের" কেউ কিছু একটা করছে। তাদের সন্তানদের পড়ালেখা শেখাচ্ছে - ডাকাতের বাচ্চা বলে দূরে তাড়িয়ে দিচ্ছে না। তাদের কাছে এই ভালবাসার মূল্য লাখ টাকার চেয়েও অনেক বেশি।
তা বাইশ বছর ধরে নিরলস পরিশ্রমের ফল কী হয়েছে জানেন? গত সাত আট বছর ধরে সেই গ্রামের থানায় ওদের নামে কোন মামলা উঠছে না। একটা জেনারেশন ডাকাতি করে শেষ হয়ে গেছে, তারা নিজেরাও হয়তো চাইতো না তাদের সন্তানেরা তাদের পেশায় আসুক। বর্তমান প্রজন্মও সেই ঘৃণ্য পেশা থেকে সরে আসতে চাইছিল, কিন্তু তাঁদের সেই সুযোগ কেউ দিচ্ছিল না - সুযোগ পেতেই তাঁরা লুফে নিয়েছে।
বাংলাদেশকে নিয়ে আসলে আমরা প্রায়ই হতাশ হয়ে যাই। কিন্তু যারা বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ, যারা ইতিহাসের তিনটি ভিন্ন কালে বাংলাদেশকে দেখেছেন - তাঁরা কিন্তু কখনই হতাশা ব্যক্ত করেন না। একটা সময়ে মানুষ ভাত খেতে পারতো না, গায়ে দেয়ার কাপড় দেশের মানুষের ছিল না - রূপকথার মত শোনালেও কথাগুলো কিন্তু সত্যি। আজকে বাংলাদেশে মানুষ ভাতের কষ্টে মরে না, কাপড়ের কোনই অভাব নেই মাশাল্লাহ। তাহলে হিসেবে নিলে দেশতো অবশ্যই উন্নতি করেছে।
সেই গায়কটাই বলেছিলেন, "আমি কিন্তু দেশকে নিয়ে খুব আশাবাদী। আমি এইসব জিডিপি, পিডিপি বুঝিনা। আমি কেবল মানুষকে বুঝি। তা আমি যখন ছোট ছিলাম - দেখতাম যে রাস্তায় কুকুর ঘুমায় থাকলে লোকজন হুদাই লাত্থি দিয়া কুত্তাকে তাড়ায় দিত। কুকুরের ঐ কেউকেউ
চিৎকারেই তারা মজা নিত। এখন রাস্তায় একটা কুকুরকে লাত্থি দিয়ে দেখেন, চার পাঁচজন আপনার সামনে এসে দাঁড়ায়ে জিজ্ঞেস করবে, 'ভাই আপনি লাত্থি দিলেন ক্যান?' আমি আশাবাদী এইসব মানুষকে নিয়েই। দেশের মানুষ যখন পজিটিভ দিকে বদলায় - তখন দেশ আপনাতেই বদলে যায়।"
আমাদের দেশটা প্রায়ই ফালতু হুজুগে মেতে থাকে। কিন্তু এই যে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে এসেছে - দেখেছেন কত মানুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে? দলকানা কেউ এখানে এসে শয়তান মন্ত্রীর পক্ষে সাফাই গাইলে একদম ভুরি গেলে দিবে এরা। তোর দলকে তুই তোর বালিশের নিচে রেখে ঘুম - আমার বাচ্চা, আমার বাপ মা, আমি আজকে রাস্তায় নামবো - আমার নিরাপদ সড়ক চাই।
মন্ত্রীর ইন্টারভিউ শুনলাম কালকে, তিনি দাবি করছেন যেহেতু জননেত্রীর জন্য শ্রমিক দলের কেউ কেউ অতীতে প্রাণ দিয়েছিলেন, কাজেই বর্তমানে তারা এইরকম দুইচারটা লাশ ফেলে দিতেই পারেন। What a logic! এই নাহলে মন্ত্রী!
তেলবাজি করে গায়ের জোর খাটিয়ে যতদিন এরা ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এইভাবে আমাদের ছেলেমেয়েরা রাস্তায় পিষ্ট হবে। সহজ হিসাব। যত আগে বুঝবেন, নিজের বাচ্চাদের জন্যই তত মঙ্গল। মার্কা দেখে ভোট না দিয়ে আপনারা যদি মানুষ দেখে ভোট দিতেন, তাহলে আজকে আপনার স্কুলের বাচ্চাদের পড়ালেখা বাদ দিয়ে রাস্তায় নেমে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে হতো না। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ডক্টর মনীষার পরিণতি আমাকে চূড়ান্ত হতাশ করেছিল।
যাক, ধীরে ধীরে হলেও পজিটিভভাবে চিন্তা করতে শিখছে মানুষ। ধীরে ধীরে মানুষজন বুঝতে শিখছে কোনটা তাঁদের ভাল, কোনটা মন্দ এবং কিভাবে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে হয়। আশা করি আজকে যেটা সড়ক নিরাপত্তার আন্দোলন চলছে - কালকে সেটাই দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিবে। ভোট চুরি - প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজি বা যেকোন ধরনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এইভাবেই পুরো দেশের মানুষ এক হয়ে যাবেন। আমাদের কিন্তু অনেক ক্ষমতা, আমরা সবাই এক হয়ে স্রেফ একবার জোরে NO বললেই এইসব বদমাইশ মন্ত্রী এমপিদের প্যান্ট ভিজে যাবে। শুধু উপলব্ধিটা করতেই দেরি হচ্ছে এই আর কি।
আমার দেশের বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু বেঈমান নয়। যদি তাই হতো, তাহলে দেশটা কবেই মরে শেষ হয়ে যেত। যেহেতু এখনও বিশ্বের বুকে দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, কাজেই এই দেশকে নিয়ে আশা করাই যায়। :)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩৮

ইমরান আশফাক বলেছেন: আশাবাদীদের দলে আমিও নাম লেখালাম।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অভিনন্দন। :)

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: লেখক,
আপনার পোস্টগুলো বরাবরই পজিটিভ। তবে প্রতিউত্তরে টাইমিং না হওয়ায় মন্তব্য করা হয়ে ওঠে না।

পোস্টে সহমত। আমি চোর-ডাকাত, ঘুসখোর,...... হাফেজ, ইমাম সবার সাথে মিশি। সত্যি বলতে কি, মানুষ আসলে ততটা খারাপ নয়। চোর কখনো চায় না তার ছেলে বড় হয়ে চুরি করুক। যাদের আমার খারাপ বলি তারা পরিস্থিতির স্বীকার।(দু-একটার কথা আলাদা)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন। :)

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৪৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: no বলতে তো সবাই চায়। কিন্তু এই ব্যবস্থায় তো তাদের সরানো যায় না। যেখানে প্রধান নেতারাই এদের লালন পালন করে...

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আফসোস। :(

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: ঐ গাধাকে প্রধানমন্ত্রী এখনও বলছেন না কেন পদত্যাগ করতে।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্রয় আছে ভাই - রাজনীতি খুবই খারাপ জিনিস।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমিও আশাবাদী মানুষ ! তাই লিখাটা ভাল লাগলো ।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.