নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রক্তের প্রতিটা ফোঁটায় তাঁর বাপ মায়েরই কলিজা ছিঁড়ে, বাকিরা স্রেফ গুজব বলেই উড়িয়ে দেয়।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৭:৩৯

লোকে বলছেন ছাত্রদের দাবিতো সরকার মেনেই নিয়েছেন, এখন ঘরে ফেরত যাওয়া উচিৎ।
এই পয়েন্টে বলতেই হয়, "আশ্বাস" দেয়া হয়েছে, "বাস্তবায়ন" হয়নি। এই আশ্বাস গত সাতচল্লিশ বছর ধরেই আমরা পেয়ে আসছি, আগামী একশো বছরও পেয়ে আসবো। বাস্তবতা হচ্ছে,
১. শাহজাহান এখনও মন্ত্রী পরিষদে আছে। তাকে অপসারণ করা হয়নি। হবে বলেও মনে হচ্ছে না। যদিও ৯ দফা দাবিতে ওর অপসারণের কথা নেই - কিন্তু সবাই জানে তার আস্কারাতেই এতসব একসিডেন্ট হয়ে এসেছে। ব্যাড এম্পলয়ীকে ফায়ার করাই ভাল কর্পোরেশনের নিয়ম। এই ভাই কতখানি ব্যাড এম্পলয়ী, সেটাতো প্রমাণিতই। কিন্তু দিনের শেষে ওর নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে, এবং সরকার গঠনে ভোটের চেয়ে দামি কিছু নেই।
২. অন্যায় করার পরেও দেশব্যাপী শ্রমিক দল ধর্মঘট ডেকেছে যার পেছনেও নৌপরিবহন মন্ত্রী জড়িত আছেন। কারন তিনিই শ্রমিকদের নেতা। এবং সরকার এই অন্যায় ধর্মঘট প্রতিহত করতে একটু টু শব্দটুকু পর্যন্ত করেনি। দলকানা, অবুঝ বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী না হলে বুঝতে পারার কথা যে সরকার বাচ্চাদের দাবি বাস্তবায়নে কতটা আন্তরিক। অন্যায়ভাবে ধর্মঘট ডেকে মানুষকে জিম্মি করে ফেলা শ্রমিকদের এক ধমকে ফেরত আনতে সরকারকে একটু চেষ্টা করতেও দেখলাম না।
৩. "বারবার জামাত-শিবির-বিএনপি ঢুকে যাচ্ছে" দাবি তুলে ওদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ লেলিয়ে না দিয়ে বরং এই আন্দোলনটাকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করায় মনোযোগ দিলেই কী ভাল হতো না? এত পুরানো আর অভিজ্ঞ রাজনৈতিক দল যদি সামান্য কয়েকটা স্টুডেন্টকে বুঝাতে ব্যর্থ হয় - তাহলে বুঝাই যায় দলটাকে ঘুন পোকায় খেয়ে ফেলেছে। জেনুইন দেশপ্রেমিকদের বাদ দিয়ে তৈলবাজ, চামচা আর ধান্ধাবাজদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দিয়ে আজকে এই ফল হয়েছে।
৪. ধান্ধাবাজ থেকে মনে পরে গেল, আজকে একটা ভিডিও দেখলাম কিভাবে "অছাত্ররা" ইউনিফর্ম পরে রাতারাতি ছাত্র বনে গেল। এইটা পদ্ধতিতে ধান্ধাবাজরাই দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে। জেনুইনলি ওদের সাপোর্ট করতে হলে নিজের পরিচয়ে নিজের লোকজনদের নিয়ে ছাত্রদের পাশে এসে "অহিংস" আন্দোলন করে দেখাতো। চোরের মতন চামে চিকনে মুখোশ পরে বিপক্ষ দলের অফিসে ইট পাটকেল ছুড়ে মারতো না। :)
৫. শুনলাম গুজব থামাতে দেশে ইন্টারনেট স্পিড কমিয়ে দিয়েছেন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার উপরও হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। এইটা আরও হাস্যকর পথ অবলম্বন। এতে গুজব গজব হয়ে ছড়াবে। যেমন রক্তমাখা শার্টের ছবি দেখে গুজব রটে গেল ছেলেটা মারা গেছে। এখন যদি সব মিডিয়া বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সত্যিই সবাই ধরে নিবে ছেলেটা মারা গেছে। কিন্তু মিডিয়া যদি ছেলেটির জীবিত ইন্টারভিউ প্রচার করে দেয়, তাহলে সব গুজবের আগুনে পানি ঢেলে যেত। কেউ যদি সত্যির পথে চলে, তাহলে তাঁর উচিৎ মিডিয়ার মাধ্যমে বরং সত্যটাই প্রকাশ করা। গুজব যখন মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায় - তখন যেই পক্ষ ছড়িয়েছে তার দশগুন ক্ষতি করে। মাঝে দিয়ে ব্যাপারটাকে একেবারে বিশ্রী বানিয়ে ফেলল।
৬. গুজব রটাতে গিয়ে এক নায়িকার গ্রেপ্তার হবার ঘটনা ঠিকই হয়েছে। যাই শুনবেন, তাই বিশ্বাস করে ফুল এক্সপ্রেশনের সাথে আগুন জ্বালিয়ে পার পেয়ে যাবেন - এইটা ঠিক না। অনেক খারাপ কিছু ঘটতে পারতো। সত্যিই সত্যিই কেউ কেউ মারা যেতে পারতো স্রেফ এই ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে কিছু একটা করতে গিয়ে। যার এত ফলোয়ার, তার এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীনের মতন আচরণ সত্যিই নিন্দনীয়। তবে আশা করি, এই ব্যাপারটিকে এক্সট্রিম পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবেনা। আমাদের দেশে একটা কথা আছে, বাঘে ধরলে আঠারো ঘা, পুলিশে ধরলে ছত্রিশ। এমনটা যেন না হয়। আশা করি মেয়েটি তাঁর শিক্ষা পেয়ে গেছে। জরিমানা দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দিলেই পারে।
৭. একটা ভিডিও শেয়ার করেছিলাম আজকে। একদল (পাঁচ ছয়জন হবে) "হেলমেট" মাথার ছেলেপিলে একটি কাঁধে ঝুলানো ব্যাগওয়ালা ছেলেকে লাঠি, লোহার ডান্ডা দিয়ে পিটাচ্ছে। সায়েন্স ল্যাব মোড়ে শ্যুট করা ভিডিও। মজার ব্যাপার হচ্ছে, পুরো দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছিল কমসে কম দুই আড়াইশো জন মানুষ। সবার হাতে মোবাইল, সবাই ভিডিও করাতে ব্যস্ত।
এটা দেখে লর্ড রবার্ট ক্লাইভের ডায়েরির কয়েকটি লাইন মনে পড়ে গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, "পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত নবাবকে যখন আমরা বন্দি করে নিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন রাস্তার দুপাশে দাঁড়ানো যতজন লোক আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখছিল, প্রত্যেকে একটি করে পাথর ছুঁড়ে মারলেও আমরা ধুলায় মিশে যেতাম।"
শালার বাঙালি কেবল মীর জাফরের উপর দোষ দিয়েই হাত ধুয়ে ফেলে।
আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় চলে গেছে, তামাশা দেখার স্বভাবটা আমাদের মজ্জা থেকে দূর হয়নি। আমাদের গাড়ির তলে চাপা খেয়ে মরাই নিয়তি।
কেউ কেউ বলবেন, "ওটা যে ছাত্র ছিল প্রমান কি? ওরতো ইউনিফর্ম ছিল না।"
উত্তর হচ্ছে, কোন সভ্য দেশে কোন সরকার দলীয় সমর্থক এইভাবে কাউকে মারধর করার লাইসেন্স পায় না। এর জন্য পুলিশ আছে। পুলিশ ধরে নিয়ে আদালতে দেয়, এবং আদালত বিচারের ব্যবস্থা করে। আমরা সভ্য না হলে সভ্য সরকারও ডিজার্ভ করি না।
আপাতত আর কিছু বলার মুড নেই। খুবই বিরক্ত এবং মন খারাপ লাগছে সবকিছু দেখে।
সরকারের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা বাস্তবায়ন করা। ছাত্রছাত্রীদের একমাত্র কাজ পড়াশোনা করা, তাঁদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করা মানায় না। আর কাদের জন্য শুধু শুধু মার খাচ্ছে? রক্তের প্রতিটা ফোঁটায় তাঁর বাপ মায়েরই কলিজা ছিঁড়ে, বাকিরা স্রেফ গুজব বলেই উড়িয়ে দেয়।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:৫৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সরকারের আচরণে মনে হচ্ছে জুজু আতংকে আছে!

কোথাও জটলা দেখলেই তারা চমকে ওঠে! গণ বিচ্ছিন্ন বলেই বোধকরি এমন।

মূল কথা কেউ বলছেনা।
শুধু শাজাহান খান পদত্যাগ করলেই বা্চ্চারা বোধকরি খুশিতেই ক্লাশে ফিরে যেত!
অথচ আজ ৭দিন জনজীবনকে অচল করে রাখা পরিবহন মালিক শ্রমিক পক্ষকে কেউ প্রশ্নটাও করছে না-
কেন এই অঘোষিত ধর্মঘট। এই ধর্মঘট কি ইচ্ছেমত মৃত্যুর অধিকার পাবার নয়?
তাদের যেমন খূশি তেমন স্বেচ্ছাচারিতাকে সুরক্ষার জন্যেই!
তারা মানুষ মারবে তাদের বিচার করা যাবে না।
আদালতের শাস্তির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যে মন্ত্রী আন্দোলন করে- আদালত অবমাননার দায়ে তারতো বহু আগেই মন্ত্রীথ্ব চলে যাবার কথা!
মন্ত্রীত্বের মতো বড় সাংবিধানিক পদে বসে কিভঅবে শ্রমিক সংগঠনের সভাপতিত্ব ধরে রাখৈ!!!
তাদের মিথ্যা কথায়, অন্যায় দাবীতে সরকার টু শব্দটিও করছেনা। যত দোষ নন্দঘোষ!

আন্দোলনের মূল চেতনাকে পাশ কাটাতে তৃতীয় পক্ষ খুঁজতে ব্যস্ত!

২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪

সাইন বোর্ড বলেছেন: খুব পজিটিভ দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান অবস্থাকে বিশ্লেষণের চেষ্টা, এখন দেখা যাক কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে থামে...

৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: বনের ভেতর ভালুক পেলে
বন্ধু কে তা চেনা যায়
চিপা দিলে থলের বেড়াল
তড়াক করে বের হয়ে যায়

৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:০৮

হাঙ্গামা বলেছেন: সরকার যে জনবিচ্ছিন্ন তা তারা ও জানে, পরিস্কার করে বুঝাইয়া দিতে চায় তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকবে।

৫| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৩৬

ঢাবিয়ান বলেছেন: সব গুজব। লাল রং রাস্লাতায় ঢেলে , লাল লিপস্টিক টিশার্টে লাগাইয়া ফেসবুকে নাকি পোস্ট করা হয়েছে!!! এমন কাহিনীই এখন দেখানো হচ্ছে চ্যানেলগুলায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.