নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের সামাজিক নিয়ম হচ্ছে এক পতি, সাত জন্মের সঙ্গী।
কোন মেয়ের স্বামী যদি তাঁর যুবতী অবস্থায়ও মারা যায়, তারপরেও সমাজের চাপে তাঁকে সারা জীবন একা কাটিয়ে দিতে হবে। সেই স্বামীকে সে ভালবাসুক, অথবা না বাসুক, লোকে যেন বুঝে সেই স্বামীর শোকে একটি জীবন সে কাটিয়ে দিয়েছে।
ছেলেমেয়েরাও সেভাবেই বেড়ে উঠে। যেসব ছেলেমেয়ের মায়েরা একাধিক বিয়ে করেন, যাদের "সৎ বাবা" থাকে, তাঁরা সমাজে কেমন মাথা নিচু করে চলে।
বিদেশে এইটা দেখা যায় না। "স্টেপ ড্যাড" "স্টেপ মম" কনসেপ্ট খুবই সাধারণ। বাবা মায়ের দ্বিতীয় তৃতীয় বিয়েতেও বাচ্চারা নিজেরা একসাইটেড থাকে।
এখানে "সিঙ্গেল" হওয়া অতি সহজ (ব্রেকআপ, ডিভোর্স ইত্যাদি) আবার মিঙ্গেল হওয়াটাও অতি সহজ। একই নারী পাঁচ ছয়টাও যদি বিয়ে করে, সমাজ এই নিয়ে বিন্দুমাত্র কথা বলে না। একই পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের হয়তো সবাই আলাদা আলাদা মা বাবার সন্তান। বর্তমান দম্পতির নিজের সন্তান এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি। এমন অহরহই ঘটে।
তো আমার এক বন্ধুর বাবা গত হয়েছেন বহু বছর আগে। মা তাঁর বয়সের হিসেবে যথেষ্ট রূপসী।
একদিন বাড়িতে বন্ধুবান্ধব অফিসের কলিগদের ডেকেছে। সাদা চামড়ার এক সিঙ্গেল ভদ্রলোকদের একজনের তাঁর মাকে বেশ পছন্দ হয়ে গেল। তিনি "সিঙ্গেল" জেনে ছেলেকেই প্রস্তাব দিয়ে বসলো, "তোমার মাকে কী আমি একদিন ডিনার এবং মুভিতে নিয়ে যেতে পারি?"
বাংলাদেশে বেড়ে ওঠা ছেলের জন্য "কালচারাল শক।"
দেশ হলে প্রথমেই ভদ্রলোকের কলার চেপে বাড়ির বাইরে টেনে আনা হতো। তারপরে পাড়া প্রতিবেশী ডেকে গণধোলাইয়ের ব্যবস্থা করা হতো। রাস্তায় হেঁটে যাওয়া পথচারী, যে দুইপক্ষের একটাকেও চিনে না, সেও দুই চারটা মার দিয়ে যেত।
দেশটা অ্যামেরিকা বলেই এবং ছেলেটা বহু বছর ধরে এখানে থাকে, ওদের কালচার সম্পর্কে জানে বলেই হাসিমুখে বললো, "নাহ, আমার মায়ের আপাতত মিঙ্গেলিংয়ের প্রতি আগ্রহ নেই।"
ভদ্রলোক বললেন, "তুমি জিজ্ঞেস করেছো?"
সে বলল, "হ্যা। সে এখনও আমার বাবাকে ভালবাসে। একটু টাইম লাগবে।"
ভদ্রলোক মুভ অন করলেন।
এখানে সমাজটাই এমন। কারোর যদি কোন সিঙ্গেল মেয়েকে ভাল লাগে, তাহলে সরাসরিই ask out করে। "আমি দূর হতে তোমাকেই দেখেছি" - স্বভাবটাকে খুবই creepy বিবেচনা করা হয়। ঐ যে একটা লোক কয়েকবছর আগে "নাবিলা জানো..." পোস্ট করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছিল মনে আছে? এই কাজ এই দেশে করলে ব্যাটাকে জেলের ভাত খাওয়ানো যেত। স্টকিং, সাইবার ক্রাইম ইত্যাদি অভিযোগে।
"তুমি কী লাঞ্চে ফ্রী আছো?"
মেয়েটি যদি ইন্টারেস্টেড না থাকে, সরাসরিই বলে, "স্যরি, যেতে পারছি না।"
ছেলেটাও ঝুলাঝুলি না করে পারলে পাশের মেয়েকেই জিজ্ঞেস করে, "how about you?"
আর লাঞ্চে যেতে রাজি হলেই যে শুয়ে যেতে রাজি হয়েছে, এমনটাও না।
এদেশের সবচেয়ে ভাল যে দিক তা হচ্ছে একজন আরেকজনের সাথে চোখাচোখি হলে হাসি বিনিময় ঘটে। ছেলে হোক মেয়ে হোক নিতান্ত অপরিচিতও হোক, এমনটা ঘটবেই। আমাদের দেশে একটি অপরিচিত মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেই আমি মনে করবো আমার প্রেমে পড়ে গেছে নিশ্চই। আমিও তখন হ্যাংলামি শুরু করে দিব।
আর যদি ভুল করেও আমি অন্য মেয়ের দিকে তাকিয়ে হাসি, তাহলে মেয়েটা অবশ্যই ধরে নিবে "লুইচ্চা ব্যাটা লাইন মারার চেষ্টা করছে।"
গতবার দেশে গিয়ে তেমনই মহা বিপদে পড়েছিলাম।
বাড়ির দারোয়ানের মেয়ে সিঁড়ি ঝাড়ু দিচ্ছে। আমি নিচে নামছি। আমার দিকে তাকালো, চোখাচোখি হলো, এবং আমি অভ্যাসবশত হেসে দিলাম। মেয়েটা এমনভাবে আতংকিত হলো যেন সামনে আমি না, ডিপজল দাঁড়িয়ে আছে!
রাস্তা দিয়ে চলার সময়েও দুই একজনের সাথে এমনটা ঘটেছে।
তারপরে মনে মনে তওবা করে সিদ্ধান্ত নিলাম, দেশের রাস্তা দিয়ে চলার পথে আর কারোর দিকেই তাকাবো না। মাটির দিকে তাকিয়ে হাঁটবো, সেটাই নিরাপদ।
যাই হোক, ফেরা যাক ask out প্রসঙ্গে।
অফিস শেষে বাচ্চাকে নিতে মন্টিসরি গেছি।
বাচ্চার বন্ধু বান্ধবী সব এসে আমার বৌকে ঘিরে ধরলো। যে যার নাম বলছে, বাচ্চামি কথাবার্তা বলছে। একটা পিচ্চি ছেলে (আমারটার বয়সী হবে, বা বড়, তবে লম্বায় খাটো) মুগ্ধ গলায় বললো, "তুমি দেখতে অনেক সুন্দর।"
আমার বৌ অনেক খুশি গলায় বললো, "থ্যাঙ্ক ইউ! তুমিও অনেক হ্যান্ডসাম।"
সে একটা ছোট নুড়ি পাথর এগিয়ে দিয়ে বললো, "এইটা তোমার জন্য। এইটা একটা ম্যাজিক স্টোন। তুমি যা উইশ করবা, তাই পাবা। তোমাকে আমি গিফ্ট করছি।"
আমার বৌ হাসিমুখে গদগদ হয়ে বললো, "ওয়াও! থ্যাঙ্ক ইউ! তুমি কী রিসালাতের সাথে খেলো?"
পিচ্চিও গদগদে স্বরে বললো, "এখনও খেলিনা। কিন্তু কালকে থেকে খেলবো।"
এই সময়ে আমি আমার ছেলেকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে গেলাম।
কিসের পরিচিতি? আমার ছেলে, ঐ পিচ্চিদের ভিড়ের মধ্যে ঠিক ঐ ছেলেটাকেই গিয়ে ঠাশ করে চটকানা দিতে এগিয়ে গেল। ভাগ্য ভাল আমার হাত তাঁর চেয়ে দ্রুত চলে। নাহলে থাপ্পড়টা ঠিকই গাল বরাবর ল্যান্ড করতো।
আমি সাথে সাথে বললাম, "রিসালাত! এইসব কী? স্যরি বলো!"
কিসের স্যরি? কিসের "বাই ফ্রেন্ডস? সী ইউ টুমরো?" একটা কথা পর্যন্ত বলল না। বাঙালি বাপ হিসেবে exactly ওর মনে কী চলছে বুঝতে পারলাম।
"গিফ্ট মারাও? ম্যাজিক স্টোন? আয় ব্যাটা, তোরে দেখাই কত স্টোনে কত ম্যাজিক!"
আমার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ভাগ্না এরচেয়েও পাকনা ছিল।
আমার বোনকে নিজের বাপ ছাড়া অন্য কোন ছেলের সাথেই কথা বলতে দিত না। জোর করে টেনে নিয়ে আলাদা সরে যেত। আমার আম্মুকেও অন্য কোন পুরুষের সাথে কথা বলতে দেখলে সে "মুরুব্বি" হয়ে মাঝে গিয়ে বসতো। সারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করতো যেন ওকে নিয়ে অন্য কোথাও যায়।
হাজার হলেও বাঙালি রক্ত শরীরে বইছে।
"আমার মায়ের সাথে টাংকিবাজি করিস ব্যাটা? দেশে তোরে পাইলে সাইজ করে দিতাম!"
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৫৪
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: হাহাহা... এমন কালচার আমাদের দরকার নেই। তবে সবকিছুই ফ্রিলি নিতে হবে। আর ইসলাম অনুসারে যথাযথ শালীনতাও বজায় রাখতে হবে।
৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: পুরুষের একমাত্র দূর্বলতা হচ্ছে নারীর চোখের পানি।
এই নারীটি হতে পারে তার বোন, হতে পারে তার মা কিংবা হতে পারে স্ত্রী অথবা প্রেমিকা।
কিন্তু নারীর নির্দিষ্ট কোন দূর্বলতা নেই।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৪০
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: হা হা হা।
পড়লাম আর হাসলাম।
কোন মেয়ের স্বামী যদি তাঁর যুবতী অবস্থায়ও মারা যায়, তারপরেও সমাজের চাপে তাঁকে সারা জীবন একা কাটিয়ে দিতে হবে। সেই স্বামীকে সে ভালবাসুক, অথবা না বাসুক, লোকে যেন বুঝে সেই স্বামীর শোকে একটি জীবন সে কাটিয়ে দিয়েছে।
এই ব্যাপারটা অমানবিক।ইসলামে এতে সমর্থন করে না।
ভালো থাকবেন।