নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাহেলী আরবদের মতন আমাদের গোত্রপ্রীতি

১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:০১

আইয়ামে জাহেলিয়া বা ইসলামপূর্ব অন্ধকার যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল গোত্রভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। মানে হচ্ছে, সমাজে আইন শৃঙ্খলা কিছুই ছিল না। মানুষ গোত্র ভিত্তিক নিরাপত্তা উপভোগ করতো। যে যাই করুক না কেন, গোত্রের কাজ ছিল নিজের গোত্রের লোকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
তাই দেখা যেত, অন্যায় করেও অনেকেই পার পেয়ে যেত কেবলমাত্র নিজের গোত্র শক্তিশালী ছিল বলেই।
এই নীতির ব্যাপারে আরবরা কতটা কট্টর ছিল কিছু উদাহরণ দিলেই টের পাবেন।
মুহাম্মদ (সঃ) যখন ধর্মপ্রচার শুরু করেন, তাঁর বিরোধিতা করে উঠে পুরো মক্কা সমাজ। কিন্তু কেউ তাঁকে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারেনি, কারন তাঁর গোত্রের নাম "বনু হাশেম," মক্কার সবচেয়ে প্রভাবশালী ও শক্তিশালী গোত্র।
অথচ বিলাল, খাব্বাব ইব্ন আরাদ প্রমুখ সাহাবী দাস হওয়ায় তাঁদের উপর নেমে আসে অকথ্য নির্যাতন। ইয়াসির, সুমাইয়া, আম্মার তাঁরা যদিও দাস ছিলেন না - স্বাধীন "মাওলা" ছিলেন, কিন্তু যেহেতু তাঁদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য শক্তিশালী কোন গোত্র ছিল না, তাই বনু মাখযুমের আবু জাহেল তাঁদের জীবন নরক বানিয়ে ফেলে।
এবং পুরো মক্কার সমাজ চেয়ে চেয়ে দেখেন তাঁদের মৃত্যুকোলে ঢলে পড়তে। একটা শব্দ উচ্চারণ করতে পারেনি কেউ।
মুহাম্মদ (সঃ) ও তাঁর অনুসারীদের যখন সামাজিকভাবে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন মুসলিমদের সাথে বনু হাশেমী গোত্রের সবাই (কেবলমাত্র আবু লাহাব ছাড়া) মক্কা ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী উপত্যকায় গিয়ে আশ্রয় নেন। ইসলামের জন্য প্রেম ভালবাসা থেকে যে তাঁরা এই কাজটা করেছিল তা কিন্তু নয়, বরং নিজ পরিবারের ছেলের প্রতি ভালবাসা থেকে, দায়িত্ববোধ থেকে তাঁরা এই কাজটা করেছিলেন। তিনটা বছর না খেয়ে, না দেয়ে, অসম্ভব যন্ত্রনা সহ্য করে হলেও তাঁরা সবাই ছিলেন মুহাম্মদের (সঃ) পাশে।
মক্কায় ইসলামের বিরোধিতা করার এটিও একটি কারন ছিল। গোত্রভিত্তিক মক্কা সমাজে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল কে কার চেয়ে বড় সেটা প্রমানের। অথচ ইসলাম কিনা বলছে বাদশাহ ফকিরে কোনই পার্থক্য নেই। মানে, বনু মাখযুম গোত্রপ্রধান আবু জাহেল বা পুরো আরবের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি আল ওয়ালিদ ইব্ন মুগীরা এবং উমাইয়া ইবনে খালাফের আবীসিনিয়ান দূর্বল দাস বিলাল এক হয়ে গেল? জাত কুরাইশী এবং আফ্রিকার নিগ্রো জংলী - আল্লাহর দৃষ্টিতে কারোর মাঝে কোন পার্থক্য নেই? মানা যায়? তাই ইসলামের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলো!

এখন যে ঘটনা বলবো, তা ঘটে নব্যুয়াতি প্রাপ্তির বেশ কিছু বছর আগে। নবীর (সঃ) যৌবনে।
বাৎসরিক হজ্ব মৌসুমে এক ইয়েমেনি আরব হজ্ব করতে মক্কায় আসেন। আল আস ইবনে ওয়ায়েল নামের এক মক্কী প্রভাবশালী গোত্র নেতা সেই ইয়েমেনি ভদ্রলোকের সাথে ব্যবসা করেন, এবং তাঁর টাকা মেরে দেন। ইয়েমেনি ভদ্রলোক যখন নিশ্চিত হলেন এই ব্যাটা তাঁর টাকা ফেরত দিবে না, তখন সে কাবার পাশে সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে এক মর্মস্পর্শী ও একই সাথে জ্বালাময়ী কবিতা পাঠ করেন। যেখানে তিনি ফুটিয়ে তোলেন কিভাবে তাঁর কষ্টার্জিত টাকা একজন মক্কী নেতা চুরি করেছে। অথচ তারা কিনা কাবা ঘরের সেবাকারী দাবি করে!!
কবিতাটা পুরো মক্কী সমাজকে নাড়া দেয়। বলে রাখি, তখনকার যুগের নিউজ মিডিয়া, ব্লগ, বা ফেসবুক পোস্ট যাই বলেন না কেন - সেটাই ছিল কবিতা। আজকে যেমন লেখক, ব্লগাররা সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলিব্রেটি মর্যাদা পান, তাঁদের পোস্ট ভাইরাল হয় - সেযুগে ভাল কবি ও কবিতার ক্ষেত্রেও সেটি হতো।
মুহূর্তে তাঁর কবিতা ভাইরাল হয়ে গেল। কিন্তু কেউই আল আস ইবনে ওয়ায়েলের বিরুদ্ধে টু শব্দটি পর্যন্ত করলো না। কারণ, আল আসের পরিবার বনু সা'ম অতি শক্তিশালী গোত্র, একই সাথে সে অনেক টাকাওয়ালা প্রভাবশালী ব্যক্তি। মক্কার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়গুলোও আল আস ইবনে ওয়ায়েলই দেখাশোনা করতো। এযুগের মতন সেই যুগেও পয়সাওয়ালা প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে কথা বলার কলিজা খুব বেশি মানুষের ছিল না।
যাদের ছিল, তাঁদের একজন ছিলেন বনু হাশিম গোত্রের এক এতিম যুবক, মক্কার মানুষ যাকে "আল-আমিন" নামে ডাকতো, যার নাম ছিল মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ, ইবনে আব্দুল মুত্তালিব।
যুবক মুহাম্মদ (সঃ) ও তাঁর সমমনারা তৎক্ষণাৎ মিলিত হয়ে একটি সংগঠন তৈরী করলেন, যাদের কাজ হবে অত্যাচারী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে গিয়ে অত্যাচারিতের হয়ে লড়া, ও সুবিচার নিশ্চিত করা।
এই ক্ষেত্রে যেমন তাঁরা পাঁচ ছয়জন মিলে আল আসের বাড়ির দরজা ধাক্কা দিয়ে বললেন, "নিজের ভাল চাওতো এখুনি এর পাওনা টাকা পরিশোধ করো।"
আল আস ওদের দৃঢ়চেতা মনোবল দেখে একটা কথা না বাড়িয়ে সাথে সাথে টাকা ফেরত দিলেন।
আরেকবার এক মক্কী নেতা এক দুর্বল গোত্রের মেয়েকে তুলে নিয়ে এলে এই দলটিই সেই মেয়েটিকে অক্ষত উদ্ধার করে তাঁর মা বাবার হাতে তুলে দেন।
এই দলটিই হিলফুল ফুদুল নামে পরিচিত।
আমাদের নবী (সঃ) পরিবর্তী জীবনে নিজের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অতি গর্বের সাথে বলেন, "আমাকে কোটি টাকা দিলেও আমি হিলফুল ফুদুলের সদস্যপদ ত্যাগ করবো না।" (ভাবানুবাদ)
লক্ষ্য করুন, নবীর শিক্ষা হচ্ছে, অন্যায়কারী যেই হোক না কেন, নিজের পরিবারের সদস্য হলেও তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।
যেমনটা উমার (রাঃ) খলিফা নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই নিজের ছেলেদের ডেকে এনে বলেন, "ভেবে বসো না যে তোমাদের পিতা খলিফা হওয়ায় তোমরা যা খুশি তাই করে পার পেয়ে যাবে। আল্লাহর কসম, আমি যদি তোমাদের কোন রকমের অন্যায় করতে দেখি, তাহলে তোমাদের জন্য দ্বিগুন শাস্তির ব্যবস্থা করবো। প্রথমটি অপরাধের জন্য, এবং দ্বিতীয়টি খলিফার পুত্র হয়ে অপরাধের জন্য। যাতে তোমরা আফসোস করো, যে তোমাদের পিতা কেন খলিফা নির্বাচিত হলেন।"
জাহেলী যুগে, যেখানে পারিবারিক টান অবিশ্বাস্য রকমের দৃঢ় ছিল, সেখানে এই কাজটা করা যে কী কঠিন ছিল সেটা কল্পনাও করতে পারবেন না। উপরে এই কারণেই বনু হাশিমের উদাহরণ দিলাম শুধু এইটা বুঝাতে যে প্রয়োজনে ওরা সম্মিলিতভাবে মরতে পছন্দ করবে, তবু পরিবারের লোককে রক্ষা করে ছাড়বে। তাঁর কাজ ভাল লাগুক অথবা না লাগুক।
একই কথা কুরআনে সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহও নির্দেশ দিয়েছেন।
"হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত।"
আল্লাহর নির্দেশ ভাল ভাবে খেয়াল করুন। প্রতিটা শব্দ আলাদা আলাদা করে পড়ুন। তিনি বলছেন, প্রয়োজনে নিজের বিরুদ্ধে যাও, প্রয়োজনে বাবা মায়ের বিরুদ্ধে যাও, কিংবা নিজের নিকটাত্মীয়ের বিরুদ্ধে যাও। যদি ন্যায় বিচার করতে গিয়ে নিজের ও তাঁদের ক্ষতি হয়, তারপরেও যাও।
আপনার শ্বশুরবাড়ির লোক অন্যায় করে ফেলেছে, আপনি ন্যায় বিচার করলে বৌর সাথে মনোমালিন্য ঘটবে, সম্পর্ক নষ্ট হবে, তবুও আপনাকে ন্যায় বিচার করতে হবে। আল্লাহর নির্দেশ, কিছু করার নেই।
যদি কেউ ধনী হয়, তাহলে তোমার হয়তো মনে হবে সমাজে ব্যাটার একটা ইজ্জত আছে, সেটা নষ্ট করা ঠিক হবেনা।
অথবা যদি সে গরিব হয়, তাহলে মনে হতে পারে, আহারে গরিব মানুষ! খামোকা ওকে এই বিপদে ফেলার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু আল্লাহ এই আলগা আল্লাদ দেখাতে কড়াভাবে নিষেধ করেছেন। বরং বলেছেন ন্যায় বিচার করতে। ধনী হলেও, গরিব হলেও। কোন ছাড় নেই। আল্লাহ বরং তোমার চেয়ে ওদের জন্য বেশি শুভাকাঙ্খী।
এবং বিচারের সময়ে জাজমেন্টাল হওয়া চলবে না। ধরা যাক, দায়ী ব্যক্তি একজন আলেম, এবং অত্যাচারিত ব্যক্তি একজন নাস্তিক, কাফের, মুশরিক - আমি কিন্তু কোন অবস্থাতেই বিচারের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা মাথায় আনতে পারবো না। আমাকে ন্যায় বিচার করতে হবে। খলিফা আলীর বিরুদ্ধে মুসলিম কাজীর রায়ের ঘটনা মনে আছে? আলীর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন এক ইহুদি ব্যক্তি।
এবং বিচার এড়াতে ইনানো বিনানো চলবে না। আল্লাহ আপনার মনের খবর রাখেন। তাই প্রকাশ্যেই অন্যায়কে অন্যায় বলতে হবে।
এতক্ষনে নিশ্চই বুঝে গেছেন আমি কেন এত প্যানপ্যান করছি। জ্বি, সদ্য মৃতা নুসরাতের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থাকারী ব্যক্তি একজন মাদ্রাসা অধ্যক্ষ - এবং শুধুমাত্র এই কারণেই আমাদের দেশের লোকেরা সামাজিকভাবে মিনমিন আওয়াজ করছেন। মাদ্রাসা শিক্ষক না হয়ে হিন্দু পন্ডিত হলে আজকে দেখতেন দেশের কমসেকম একশো মন্দির ভাংচুর হতো, পথে পথে রাজপথে মিটিং মিছিল, আল্টিমেটাম চলতো। "নাস্তিক হিন্দুবাদী সরকার" পতন আন্দোলনেও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেত। যদি আমি ভুল বলে থাকি, আমাকে গালাগালি করতে পারেন। তবে সত্য কথা হচ্ছে, আমরা অত্যন্ত হিপোক্রেট একটি জাতি। মনে নাই, গণহত্যাকারী রাজাকারের শাস্তি ঘোষণাকারী বিচারকের নাম "সিনহা" হওয়ায় একদল লোক প্রকাশ্যে হিন্দুদের গুষ্ঠি উদ্ধার করে একজন গণহত্যাকারীর পক্ষে আন্দোলন করেছিল?
একদল লোক ঘেউ ঘেউ করে বলে "পর্দা না করলে ধর্ষণতো হবেই।" এই চতুষ্পদদের জ্ঞাতার্থে, নুসরাত নেকাবি মুসলিম বোন ছিল। তনুও হিজাবি ছিল। যারা এইসব দাবি করে, তারা কী পেরেছে মেয়েগুলোকে রক্ষা করতে? ওরা যে ধর্ষণকারীর পক্ষে অবস্থান নেয় - সেটা কী ওরা বুঝে?
অথচ এই এরাই উপরে উল্লেখ করা হজরত আলীর কেস হারার ঘটনা শুনে সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহুআকবার আমিন বলে। আবার এই এরাই নিজের বোনকে লাঞ্ছনাকারী অধ্যক্ষ ও পুড়িয়ে মারা খুনিদের পক্ষে প্রকাশ্য অবস্থান নেয়।
এ যে কুরআনের, হাদিসের প্রকাশ্য বিরোধিতা, ইসলাম অবমাননা সেটা কী এই ইবলিসের চ্যালাদের মাথায় ঢুকে না?
আমার নবী (সঃ) খুবই আফসোসের সাথে বলেছিলেন, "কেয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতরা জাহেলী প্রথার এই গোত্রপ্রীতি থেকে মুক্তি পাবে না।" (ভাবানুবাদ)
নবীর প্রতিটা ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে এটিও নির্মমভাবে সত্য প্রমান হলো।
আফসোস।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
আপনি সুন্দর লিখেন সহজ সরল ভাষায়।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৪৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার কমেন্ট সবসময়েই ভাল লাগে। :)

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:২৭

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনার লেখাগুলো ভালো লাগে। যুক্তিগুলোও খারাপ না। কিন্তু কেন যেন মনে হয় পর্দার ব্যাপারে আপনার একটু স্পর্শকাতরতা আছে। দেখুন, আমি মানি যে পর্দা থাকলেও ধর্ষণের সম্ভাবনা নাই হয়ে যায় না কিন্তু তাই বলে এই যুক্তিতে আমরা পর্দা করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করাই ছেড়ে দেব? যে পশু সে পশুই, হাজার পর্দাও তাকে আটকাতে পারবে না; কিন্তু তাই বলে পর্দা করা ছেড়ে দেয়া নিশ্চয়ই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। হয়তবা পর্দা না করার কারণে ধর্ষণের সংখ্যা কিছুটা হলেও বেশি আর পর্দা করার কারণে তুলনামূলক কিছুটা কম, সুতরাং পর্দা করার মধ্যে কিছুটা নিরাপত্তা যে আছে নিশ্চয়ই আপনিও সেটা স্বীকার করবেন?

আর নুসরাত নেকাবি বোন ছিল আর তনুও হিজাবি ছিল বলে আপনি যে তুলনা দিলেন সেটা মানতে আমার একটু আপত্তি আছে। তারা দুজন পরিপূর্ণ পর্দার আওতায় ছিল বলে আমার মনে হয় না। কারণ, দুজনেরই খোলা মুখের ছবিই পত্রিকায় এসেছে। আর এটা তো অনস্বীকার্য যে মুখই হচ্ছে সকল সৌন্দর্যের আধার। মানুষ তো মুখের সৌন্দর্য দেখেই সবকিছু বিচার করে। তাই মুখ খোলা পর্দাকে পরিপূর্ণ পর্দা বলা যায় কি না সেটা নিয়ে যুক্তিতর্ক চলতেই পারে। কিন্তু যেখানে মুখটা ঢেকে রাখলে নিরাপত্তার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও বেড়ে যায় সেখানে কি মুখটা ঢেকে রাখাই যুক্তিযুক্ত নয়?

এখন কথা হল, যে লোকটা নুসরাত হত্যাকান্ডের মূল হোতা তাকে কি আমরা আলেম বলব? সে নামে আলেম হলেও তার কাজটা তো পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। এমন একজন নিকৃষ্ট লোকের জন্য তো আর পুরো আলেমসমাজকে খারাপ বলা যাবে না। আর তার মত নামধারি আলেমের জন্য কি কোন বিবেকবান মানুষের সহানুভূতি জাগতে পারে? তাকে যত বেশি শাস্তিই দেয়া হোক না কেন সেটা তার অপরাধের তুলনায় কমই হবে। তাকে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যেন ভবিষ্যতে এমন কান্ড করার ব্যাপারটা কেউ কল্পনাতেও না আনতে পারে।

সুন্দর পোস্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৫২

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: "আর নুসরাত নেকাবি বোন ছিল আর তনুও হিজাবি ছিল বলে আপনি যে তুলনা দিলেন সেটা মানতে আমার একটু আপত্তি আছে। তারা দুজন পরিপূর্ণ পর্দার আওতায় ছিল বলে আমার মনে হয় না। কারণ, দুজনেরই খোলা মুখের ছবিই পত্রিকায় এসেছে।"
ভাই, কিছু মনে করবেন না, আপনার সাথে কথা বলার রুচি হারিয়ে ফেলেছি। আল্লাহ মাফ করুক, আল্লাহ আপনার পরিবারের লোকজনেরও হেফাজত করুন। তাঁদের যেন এমন পরিস্থিতির শিকার না হতে হয়। কিন্তু যদি কখনও হন, তখন এই "পর্দা সহীহ ছিল না" থিওরি আওড়াবেন না। তখন দয়া করে ভিক্টিমের দোষ না খুঁজে অপরাধীর শাস্তির বিধান করবেন।

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:১৬

গোলাম রাব্বি রকি বলেছেন: লেখাটা ভালোই লাগছিল তবে একটা লাইনে এসে আটকে গেলাম ! ধর্ষক মাওলানা হওয়ায় নাকি আমরা মিনমিনে আওয়াজ করছি ! তা বলতে পারেন, বর্তমানে জাতি কোন কোন বিষয় নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ করছে ?? আমি যদি বলি, মেয়েটা মাদরাসায় পড়ার কারণে আওয়াজটা মিনমিনে হচ্ছে সেটাও কি ভুল বলা হবে আপনার মতে ?? শুধু মানববন্ধন আর বিচার চাই কয়েকবার বললেই প্রতিবাদ হয়না । প্রতিবাদের মত প্রতিবাদ যদি আগেই করতে পারতাম আমরা তবে আপনাকে হয়তো এই বিষয়টা নিয়ে লিখতেই হত না ...

১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:০৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাইকোর্টের মূর্তি অপসারণের জন্য হেফাজত না করেছিল, কিংবা মতিঝিলে একবার যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল - সেসব কী ভুলে গেলেন ভাই? আজকের পত্রিকার খবরে দেখলাম শফি হুজুর ওয়াজের পক্ষে জোর আওয়াজ তুললেন, একবারও এই মেয়েটির বা শিক্ষকের প্রসঙ্গ তুললেন না। মেয়েটির নিজের ক্লাসমেটরাই রাস্তায় নেমেছে বদমাইশ অধ্যক্ষের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে। ভাই, দেশটা মরে গেছে, বহু আগেই। এখন লাশে পচন ধরেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.