নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
মাঝে মাঝে মুভি রিভিউ লিখতে মজাই লাগে। যখন লেখালেখি করার জন্য সময় কম থাকে, চিন্তাভাবনারও কিছু থাকেনা। তখন ভাল লাগা কোন সিনেমা নিয়ে দুই চার লাইন লিখে ফেলাটা অনেক সহজ।
প্রচলিত অর্থে মুভি রিভিউ বলতে যা বুঝায়, যেখানে কাহিনীর অনেক কিছুই তুলে ধরতে হয় (কেউ কেউ স্পয়লারও দিয়ে দেন) আমার সেটা ভাল লাগেনা। আমি কাহিনীর কিছুই বলি না। যেকোন সিনেমার চমকই তাঁর কাহিনী। তাই মুভি রিভিউর নামে আতলামি ফলাতে গিয়ে সিনেমার টেস্ট ও টুইস্ট নষ্ট করার কোন মানে আমি খুঁজে পাই না। তাই আমার লেখায় মুভি রিভিউ লেখার গ্রামার কেউ খুঁজতে যাবেন না যেন।
ভৌতিক সিনেমার আমি খুবই বড় ভক্ত। সেই নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে যখন দেশে প্রথম ডিশ এন্টেনা এলো, এবং জি টিভিতে "জি হরর শো" নামের অতি অখাদ্য বস্তু দর্শকদের গেলেনো হতো, তখন প্রথমবারের মতন টিভিতে ভূত দেখে এমন ভয় পেয়েছিলাম যে এখনও তা মনে আছে।
তারপরে হরর শো দেখাটা নেশার মতন হয়ে গিয়েছিল। জি হরর শোর একটি পর্বও বাদ দিতাম না, সাথে সনি টিভিতে দেখানো হতো "আহাত।" আরও কিছু চ্যানেলে সস্তা বি গ্রেডের হিন্দি ভৌতিক সিনেমা দেখানো হতো। যেখানে ভূতের চেয়েও বেশি ফোকাস পেতো নায়িকার গোসল। নায়িকা কখনও বাথটাবে গোসল করতো, কখনও শাওয়ারে। প্রযোজকের বাজেটের উপর টাব বা শাওয়ার নির্ভর করতো। এবং তখন একটা পর্যায়ে লক্ষ্য করলাম, ভূতের সিনেমা বা নাটক দেখতে দেখতে ভয় পাওয়াতো দূরের কথা, হাসিও পায় না। বিরক্তি জাগে মনে। সব সস্তা হরর সিনেমা। কাহিনী কমন, প্রেডিক্টেবল, এবং হাস্যকর ও বিরক্তিকর।
ভাল কিছু ভূতের সিনেমা যে জীবনেও দেখিনি তা না। সেই নব্বইয়ের দশকের শুরুতে রাম গোপাল ভার্মার "রাত" বা পরবর্তীতে "ভূত", হলিউড এপিক "দ্য এক্সরসিস্ট" "রিং" বা জাপানিজ হরর ট্রিলজি "দ্য গ্রাজ ১-২-৩।"
তবে যে ভূতের সিনেমা দেখে প্রথম নড়েচড়ে বসি, তা হচ্ছে "প্যারানরমাল একটিভিটি।" সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে যা তা হচ্ছে এর বানানোর স্টাইলটা। অতি বুদ্ধিমান পরিচালনা, মনেই হয়নি কোন সিনেমা দেখছি। এমনকি সিনেমা দেখারও দুই তিন সপ্তাহ পর মনে হতো বাস্তবেই বুঝি ঘটনাগুলো ঘটেছে। নির্মাতা তাঁর দর্শকদের এতটাই মুগ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। এটিই আমার জীবনের একমাত্র সিনেমা যা সিনেমা হলে এইচডি, এক্সডি এবং থ্রিডিতে আলাদা আলাদা শোতে দেখেছি। টিকেটের দাম মোটেও সস্তা নয়, এবং আমার আয়ও তখন বলতে গেলে কিছুই ছিল না।
এতবার দেখার পরেও এর ব্লুরে কিনে চিরতরে আপনও করে নিয়েছি।
সিনেমাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এর সেট, এর সিনেমাটোগ্রাফি, এর অভিনয়, সংলাপ, লাইটিং ইত্যাদি। মনেই হবে না এটি কোন সিনেমা। হোম ভিডিও স্টাইলে নির্মিত সিনেমায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই দর্শক কাহিনীর মধ্যে ঢুকে যাবেন। পুরো সিনেমায় একবারও ভূত দেখানো হয়নি, ভূত দেখে ফেললেই ভূতের ভয়টা কেটে যেত। দর্শক হল ছেড়েছেন তাঁদের মনে ভূতের ভয়ের রেশ নিয়ে। এরপরে অবস্থা এমন হয়েছিল যে বাড়িতে ঠুকঠাক শব্দ হলেই পিলে চমকে উঠতো। বাতাসে দরজায় হালকা কাঁপন লাগলে, পর্দা নড়লে বা আমাদের কাঠের বাড়ির কাঠে আপনাতেই শব্দ তুললে মনে হতো অশরীরী কেউ যেন হেঁটে বেড়াচ্ছে। ভয়াবহ অবস্থা!
এক বন্ধু ভিন্ন স্টেট থেকে আমার বাড়িতে বেড়াতে এলে কমেডি সিনেমা দেখতে চায়। আমরা কমেডির নাম করে প্যারানরমাল একটিভিটি দেখিয়ে দেই। বেচারা ভয়ে সারারাত ঘুমাতে পারেনি।
বিয়ের পর বৌ দাবি করলো সে জীবনেও সিনেমা দেখে ভূতের ভয় পায়নি।
দুইজন মিলে দেখলাম প্যারানরমাল একটিভিটি। সিনেমা শেষে তাঁর এই দাবি এক ফুৎকারে উড়ে গেল। এখন কনজুরিং, ইনসাইডিয়াস দেখেও সে ভয়ে থরথর করে কাঁপে।
তো যা বলছিলাম, প্যারানরমাল একটিভিটির পরে এর দ্বিতীয় পর্ব মোটামুটি ভাল লেগেছিল। তারপরে তারা অসহ্যকরভাবে জঘন্য সিরিজ বানানো শুরু করলো। তাই ভূতের সিনেমার উপর থেকে আবারও ভক্তি শ্রদ্ধা উঠে গিয়েছিল। কনজুরিং সিরিজটা মোটামুটি ফিরিয়ে এনেছে। তবে ভয় পাওয়াতে পারেনি। একই সেটের "এনাবেল" বা "নান" দুইটিই জঘন্য লেগেছে।
সে রাতে হঠাৎ ভয় পেতে ইচ্ছা হলো। ভাবলাম প্যারানরমাল একটিভিটি দেখা যাক। নিচের তলায় বৌ বাচ্চা ঘুমে অচেতন। তাই উপরের তলায় একদম কোনার দিকের বেডরুমে গেলাম। প্রস্তুতি নিচ্ছি। তো বিশেষ কাজে রুম থেকে বেরিয়ে আবার ফিরে এসে দেখি আমার ঘরে একজন দাঁড়িয়ে আছে। খোলা চুল, কালো পোশাক, দেখে মনে হচ্ছে প্রেতাত্মা!
আমি ভয়ে দিলাম চিৎকার।
সামনের অবয়ব আমার চিৎকার শুনে দিল আরেক চিৎকার।
আমি রিয়েকশনেও দিলাম আরেক চিৎকার। জম্বিও জম্বি ভাব কাটিয়ে চিৎকার দিল। দেখি জম্বি আর কেউ না, আমারই বৌ। এই সময়ে অপ্রত্যাশিতভাবে তাঁকে এখানে দেখার চমকে আমার চিৎকার বেরিয়ে গেছে।
আমি গলার স্বর বিন্দুমাত্র না নামিয়ে বললাম, "তুমি চিৎকার করছো কেন?"
সেও একই স্বরে বললো, "কারন তুমি চিৎকার করছো!"
আমি বললাম, "তুমি এখানে কী করো?"
সে বললো, "তুমি এতরাতে এখানে কী?"
আমি বললাম "ভূতের সিনেমা দেখতে এসেছিলাম। ভয় পাওয়ার ইচ্ছা ছিল।"
ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেল। যা ভয় পাবার পেয়ে গেছি। প্যারানরমাল একটিভিটি পরের কোন দিনের জন্য তোলা থাকলো।
আপনারা যারা সিনেমা দেখে ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারেন না, তাঁরা ভুল করেও এই সিনেমাটি দেখবেন না। যারা ভয় পেতে ভালবাসেন, তাঁরা দেখতে পারেন।
১৯ শে জুন, ২০১৯ রাত ১০:১৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আমিও চেষ্টা করি
২| ১৯ শে জুন, ২০১৯ দুপুর ১:২৪
মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: আমি হরর জেনরার মুভি বলতে গেলে একেবারেই অপছন্দ করি। থ্রিলার, রোমান্স,এ্যাডভ্যানচার জনরার মুভি পছন্দ করি। তাই প্যারানরমাল দেখার ইচ্ছেও নেই।
১৯ শে জুন, ২০১৯ রাত ১০:১৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ১০০ টা হরর মুভির মধ্যে ৯৯.৯৫ মুভিই জঘন্য হয়। মাঝে মাঝে দুইএকটা বেরিয়ে আসে যা ভাল।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে জুন, ২০১৯ সকাল ৭:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: আমি তো প্রতিদিন ১/২ টা করে মুভি দেখি।