নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমি মাঝে মাঝে হেল্প পোস্ট করি। কারোর ক্যান্সার হয়েছে, কারোর হার্টে ছিদ্র, কারোর বা স্বাবলম্বী হতে কিছু টাকা প্রয়োজন - আমি তাঁদের সাধ্য মতন সাহায্য করি, আবার তাঁদের জন্য মানুষের কাছেও হাত পাতি। দেখা যায় হাজারে হাজারে লাইক ও শেয়ার হওয়া পোস্টের জন্য খুবই কম টাকা ওঠে। সবাই দোয়া ও শুভকামনা জানাতে ভুলেন না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হেল্প পোস্ট চাওয়া লোকজনদেরও একই অভিজ্ঞতা। শেয়ার ও লাইকের অভাব হয়না, কিন্তু সাহায্যের নামে যা উঠে, তাতে কিছুই হয়না।
কিছুদিন আগেই আসামে বন্যা হওয়ায় আসাম রাজ্যের পেইড প্রতিনিধি প্রিয়াংকা চোপড়া টুইটারে তেমনই দায়সারা টুইট করেছেন, "ফিলিং ফর ইউ। মে গড হেল্প ইউ। মাই থটস এন্ড প্রেয়ার্স! ব্লা ব্লা ব্লা।"
অক্ষয়কুমারের এই আল্লাদিপনা ভাল লাগেনি। তিনি নিজে এক কোটি টাকা দিয়ে বলেছেন "এইসব শুভকামনা, থটস এন্ড প্রেয়ার্সে কিছুই হয়না। যার যা সামর্থ্য আছে, সে যেন তা নিয়ে এগিয়ে আসেন। সেটা এক টাকা হোক, কিংবা এককোটি।"
আমাদের বুঝতে হবে যে লাইক ও শেয়ার দিয়ে আসলে ক্যান্সারের চিকিৎসা হয়না। কেমোথেরাপি শেষে ডাক্তার কখনই বলবেন না আমাকে "দশহাজার লাইক ও শেয়ার দিলেই চলবে।"
তিনি যেহেতু ক্যাশ টাকা চান, তাই আমাদেরও উচিৎ ক্যাশ নিয়েই এগিয়ে আসা। এক টাকা হোক, দুই টাকা হোক কিংবা দশ।
মোবাইল ইস্তেমাল করা কোন বাঙালি এই কথা বলতে পারবেনা যে তাঁর একটাকা দেয়ার সামর্থ্য নেই। তাঁর যা নেই, তা হচ্ছে সাহায্যের ইচ্ছা। একটা মুমূর্ষু শিশুর অসুস্থতার খবর চোখে পড়লে তাঁর হাত পকেটে যাবার আগে তাঁর মাথায় এই চিন্তা আসে "ভন্ড নাতো? আমার টাকা মেরে দিবে নাতো?"
জেনুইন চিন্তা। এই চিন্তার জন্য আমি কোনভাবেই তাঁদের দোষ দিব না। গতরাতেই নিজের বন্ধুর কাছে একটা ঘটনা শুনে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। আপনাদেরও শোনাই, আপনারাও একটু মর্মাহত হন।
পড়াশোনা ও কাজের জন্য বন্ধু জাপানে থাকতো। প্রবাসীদের দেশপ্রেম একটু বেশিতো, তাই সেখানে একটি সংস্থার সাথে কথা বলে বাংলাদেশের জন্য সামান্য ফান্ডের ব্যবস্থা করতে পেরেছে। শর্ত হচ্ছে, "একটি স্কুলের প্রতিটা ক্লাসের এতিম শিশুদের মধ্যে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় হওয়া ছাত্র ছাত্রীদের এক বছরের লেখাপড়ার খরচ সেই ফান্ড দিবে।"
বন্ধুর গ্রামের স্কুলের সাথে যোগাযোগ করা হলো। বন্ধুর বাবা নিজ উদ্যোগে গিয়ে ছাত্রছাত্রীর হাতে টাকা তুলে দিয়ে আসেন। খুবই আনন্দ!
একদিন মুখ ফসকে এক ছেলেকে তিনি জিজ্ঞেস করে ফেলেন, "তোমার বাবা কী করেন?"
ছেলেটিও উত্তর দেয়, "রিক্সা চালায়।"
বন্ধুর বাবা চমকে উঠেন। শর্ত ছিল এতিম বাচ্চার, এর বাবাতো জীবিত। হেডমাস্টার তেলতেলে হাসি হেসে বলেন, "গরিব ছাত্র স্যার। খুবই গরিব।"
আচ্ছা যাক। গরিব মেধাবী ছাত্র টাকা পেলেই হলো। বাপকে মারার দরকার নাই।
কিন্তু এর কিছুদিন পরেই হেডমাস্টার চাপ দিতে শুরু করলেন বন্ধুর বাবাকে শুধু শুধু কষ্ট করে স্কুলে আসার দরকার নাই। তাদের টাকা পাঠিয়ে দিলেই চলবে।
কথা প্রসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের একটি ঘটনা উল্লেখ করি। তখন তিনি সিলেটের কিশোরীমোহন পাঠশালায় পড়েন। সরকার দেশজুড়ে স্কুলের বাচ্চাকাচ্চাদের টিনের দুধ বিতরণ করছে। তাঁর স্কুলেও অনেক ডিব্বা গুঁড়ো দুধ এলো। তাঁর শিক্ষকরা কী করলো জানেন? সবকটা বাচ্চাকে একগ্লাস দুধ খাইয়ে নিজেরা রিকসাভর্তি কৌটার দুধ নিয়ে হৃষ্টচিত্তে বাড়ি চলে গেল। ছোট্ট হুমায়ূনের মাথায় সেই ঘটনাটি আজীবন গেঁথে ছিল। তিনি বলেন, তিনি এক জন্মে আইসক্রিমওয়ালা থেকে শুরু করে অনেককিছুই হতে চেয়েছিলেন, শুধু শিক্ষক হতে চাননি। কারন শিক্ষকদের ইমেজ তাঁর মানসপটে খুব একটা ভাল ছিল না।
আমাদের সিস্টেম সেই প্রাচীন যুগ থেকেই দুর্নীতিগ্রস্ত।
তাই বন্ধুর বাবা হেড্মাস্টারকে বিশ্বাস করলেন না। তিনি নিজ হাতেই টাকা দিবেন।
এরপর তাঁর কানে খবর এলো সেই স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে ফার্স্ট সেকেন্ড থার্ড পজিশন বিক্রি করছে। এই তিন পজিশন পেলেইতো ফান্ডের টাকা পকেটে আসবে। এরথেকে কিছু কমিশন শিক্ষকদের পেটে গেলে ক্ষতি কী?
এদিকে শিক্ষকরা মনে করছে বন্ধুর বাবাও টাকা খাচ্ছেন। কারন জাপানি সাহায্য নিশ্চই কোটিকোটি টাকার প্রজেক্ট। সেখান থেকে দুই চার পয়সা গরিবদের বিতরণের মাধ্যমে নিজে বিশাল কমিশন কেটে নিচ্ছেন। এইটাইতো নিয়ম। তাহলে কেননা সেই কমিশনে শিক্ষকরাও খানিকটা ভাগ বসান?
এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা।
বন্ধু হতাশ হয়ে বললো, "এমন একটা সংগঠন যদি থাকতো, যারা নিরপেক্ষভাবে আমাদের জন্য কাজটা করে দিবে। ওরাই চিহ্নিত করবে কে মেধাবী, কে এতিম ও কে জেনুইন গরিব ইত্যাদি।"
তারপরেই আমরা নিশ্চিত হলাম, এমন সংগঠন তৈরির কয়েকমাসের মধ্যেই সেই সংগঠনের লোকেরাও ঘুষ খাওয়া শুরু করবে। তারাও টাকা খেয়ে কাউকে জেনুইন গরিব বানাবে, কাউকে এতিম তালিকাভুক্ত করবে। কাকে বিশ্বাস করবেন?
জাপান সরকারের একটি চমৎকার বেনিফিটের কথা বলি। আপনার চিকিৎসার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থের উপরে যত খরচ পড়বে, সেটা যে দেশেই হোক না কেন, সরকার সেই ব্যয়ভার বহন করবে। অ্যামেরিকায় যেখানে ক্যান্সার হলে ইন্সুরেন্স কোম্পানি হাত গুটিয়ে ফেলে, সেখানে জাপান সরকারের এমন বেনিফিট নিঃসন্দেহে বিশ্বসেরা। কিন্তু প্রবাসী বাঙালি-জাপানিরা কী করেছে জানেন? তারা একটি গ্রূপ তৈরী করেছে। যারা নিজেদের অর্থায়নে ঢাকায় একটি ক্লিনিক তৈরী করেছে। যারা বছরে একবার করে হলেও এই ক্লিনিকে এসে "চিকিৎসা নেন" এবং বিশাল বিশাল বিল বানিয়ে জাপান সরকারের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন।
চোর কখন ধরা খায় বলেনতো? ঠিক যেই মুহূর্তে সে নিজেকে স্মার্ট ভাবতে শুরু করে। বলদগুলি ভেবেছিল ওদের এই চিকনবুদ্ধি জাপানিরা ধরতে পারবে না। ধরাতো খেলই, মাঝে দিয়ে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক প্রচারের ফলে দেশেরও বদনাম হলো।
যাই হোক, আমাদের এই খাচ্চোরামী স্বভাবের কারণেই জেনুইন ভুক্তভোগীরা সাহায্য পায়না। লোকজন বিশ্বাসই করতে পারেনা কাকে বিশ্বাস করবে, কাকে না।
গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে রাফা নামের একটি মেয়ে ইনবক্সে যোগাযোগ করেছিল। মেডিকেল ছাত্রী। ক্যান্সার হয়েছিল তাঁর। ইনবক্সে তাঁর বাঁচার আকুতি আমার এত খারাপ লেগেছিল! কোটি টাকা প্রয়োজন অপারেশন করতে। বাঙালি সাহায্য না করে তাঁর কাছে সেই টাকার হিসাব চাইতে শুরু করে। ডেসপারেট মেয়েটা হিসাবও দিচ্ছিল। সে ধরেই নিয়েছিল তাঁর সাহায্যের টাকা হয়তো উঠবে না। শেষমেশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পর্যন্ত সাহায্য চেয়ে বসলো। সেখানে একটা লাইন ছিল এমন, "আমি সেলিব্রেটি না বলে কী আমার বাঁচার অধিকার নেই?" আহারে!
আমি তাঁকে বলেছিলাম অনন্ত জলিলের কাছে যেতে। মেয়েটা গেল। সেখানে লিস্ট অনেক লম্বা। সবার সাহায্যের প্রয়োজন, কয়জনকে সাহায্য করবে তাঁরা?
অবশেষে মেয়েটির টাকার যোগান হয়েছিল। চিকিৎসা নিতে গিয়ে মেয়েটি মারাও যায়। কী যে খারাপ লেগেছিল সেদিন! কয়েকদিন আগেই যে মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক, কয়দিনের মধ্যেই সে কবরে চলে গেল। সর্বশান্ত হয়েও বাবা বাঁচাতে পারলেন না তাঁর মেয়েকে।
আরও বহুবার এমন ঘটেছে। আমার স্কুলের গণিত শিক্ষকের ছেলেকেও সাহায্য করেছিলাম। ক্যান্সারের কাছে তাঁকেও হারতে হয়েছিল। সেখানেও আমাদের স্কুলেরই একদল "বড় ভাই" নিজেদের ব্যাচ থেকে টাকা তুলবো দিব দিচ্ছি বলেও শেষ পর্যন্ত দেয়নি। ক্যান্সার কোন ছেলেখেলা না। প্রতিটা মুহূর্তে রোগীর প্রাণশক্তি খেয়ে ফেলে সে। আপনার দনোমোনো মন যতক্ষনে সিদ্ধান্ত নিবে, তার বহু আগেই যা ক্ষতি করার করে ফেলবে।
যাই হোক। বলছিলাম সাহায্যের কথা।
জ্বি ভাইয়েরা ও বোনেরা। যখন কোন হেল্প পোস্ট দেখবেন, আগে অবশ্যই যাচাই বাছাই করবেন কতটা জেনুইন। খোঁজ নেয়া খুব একটা জটিল কিছু না। যে ডাক্তারের ফোন নাম্বার দেয়া থাকবে, তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সেই এলাকায় নিজের পরিচিত বিশ্বস্ত কেউ থাকলে অবশ্যই সেটা সবচেয়ে বেস্ট উপায়। আরও অনেক উপায় আছে। জেনুইন হলে অবশ্যই দুই দশ টাকা হলেও দিবেন। তারপরে নাহয় লাইক, শেয়ার, দোয়া ইত্যাদি দিবেন।
যাচাই বাছাইয়ের নামে অযথা হয়রানি করবেন না। একটা মেয়ের হার্টে ছিদ্র ছিল। তাঁর চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইলাম। যে ভদ্রমহিলা দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তাঁকে গভীর রাতে ফোন করে খাজুরা আলাপ করার মতন অসভ্যতা কোন ভাবেই জাস্টিফাইড না। এইধরনের বর্বর আচরণ ত্যাগ করুন।
ডেঙ্গু মহামারীতে ঢাকা ছেয়ে গেছে। এই সময়ে আমাদের ফাজিল মেয়র স্যুট টাই গায়ে চোখে সানগ্লাস দিয়ে মেশিনগান স্টাইলে মশা নিধনে রাস্তায় নামলেন। সাথে ঝাঁকে ঝাঁকে ক্যামেরা। বদমাইশটার নায়ক হবার সাধ জেগেছে, তাই স্টান্টবাজি করছে। এই ধরনের ইতরকে জুতাপেটা করা উচিৎ। ফাজিলের আওলাদ, তোকে কী রাস্তায় নেমে মশা মারার জন্য মেয়র বানানো হয়েছে? সেজন্য বেতনভুক্ত কর্মচারী আছে। তোর কাজ হচ্ছে মশার ওষুধে যেন ভেজাল না মেশে সেটা নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক স্টান্টবাজির অপরাধে ফাজিলটাকে কানে ধরে উঠবস করাতে পারলে শান্তি পেতাম।
মেয়রের চেয়ে বড় নাটক মঞ্চস্থ করলো আমাদের এফডিসির শিল্পীরা। দামি পোশাকে ফুল মেকাপে পরিষ্কার রাস্তায় ঝাড়ু নিয়ে সোজা হেঁটে লং শট, ক্লোজাপে ভিডিও ধারণ করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করে ফেললো! বাহ্! এত ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি, যেখানে মারা যাচ্ছে নবজাতক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বৃদ্ধা পর্যন্ত সবাই, প্রতিদিন ফ্রেন্ডলিস্টের কেউ না কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন, এবং আল্লাহ আল্লাহ করছি যেন অবশ্যই তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠে, সেই রোগ নিয়ে এই ফাজলামির জন্য ওদের কী আমাদের সিলেটের বিখ্যাত "চুতরা পাতার বেত" (যা গায়ে ঘষলে প্রচন্ড চুলকানি উঠে) দিয়ে পেটানো উচিৎ না?
একটা ভিডিও দেখলাম আন্দালিভ পার্থর। লোকটা গভীর রাতে ফুটপাথের নাগরিকদের মাঝে মশারি বিতরণ করছেন। হতে পারে এটিও রাজনৈতিক চাল। মানুষের ভোট পাবার কৌশল। কিন্তু এটলিস্ট, এই মশারি যেসব গরিবরা পাচ্ছে, তাঁদেরতো নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে। আমরা কী করছি? এফডিসি আর মেয়রের স্টান্টবাজি নিয়ে হাসাহাসি করছি। আর থটস এন্ড প্রেয়ার্স পাঠাচ্ছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা কী জেনুইন কিছু করেছি?
সাকিব আল হাসানের বৌ শিশির যখন ঢাকায় মেকাপের দোকান খুললো, তখন প্রচলিত পার্টি বা মিলাদের বদলে সাকিব একদল এতিম বাচ্চাকে দাওয়াত করে খাওয়ালো। খুবই ভাল কাজ। আমাদের নবী (সঃ) নিজে ছিলেন এতিম, তিনি ও আল্লাহ দুইজনই আমাদেরকে এতিমদের দেখভালের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তথাকথিত দুধের মাছিদের জন্য ল্যাভিস পার্টি থ্রো করার পরিবর্তে এতিম শিশুদের একবেলা ভালমন্দ খাওয়ানো কয়েককোটিগুন ভাল কাজ। অথচ আমার ফ্রেন্ড লিস্টের এক মহিলা কোন তথ্য প্রমান ও যুক্তি ছাড়াই কমেন্ট করে বসলেন সাকিব নাম কমানোর উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে। এইসব লোক দেখানো প্রোপাগান্ডা। এর মনের ভিতরে আছে সুক্ষ দুরভিসন্ধি। ইত্যাদি।
এইধরণের ফাজিলকে বন্ধু তালিকায় রাখা পছন্দ করিনা। নিজেরা কিছু করেইনা, উল্টো মানুষের ছিদ্র খুঁজে বেড়ায়।
আলহামদুলিল্লাহ, জীবনে নানান মানুষের সাথে মেলামেশার সৌভাগ্য হয়েছে। নানান অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়েছি। সহজেই বুঝতে পারি কে আসলেই মানুষের পাশে দাঁড়ায়, কে লোকদেখানো কাজ করে, আর কে ছিদ্রান্বেষী। ত্রাণ বিতরণের নামে দশ বারোজন নেতা মিলে আধামুঠ ত্রাণ যখন একজন দুস্থের হাতে তুলে দিতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে হাস্যমুখী পোজ দেয়, তখন ইচ্ছা করে থাবড়ায়ে সবগুলির দাঁত ফেলে দেই। মানুষের মারা যাচ্ছে, আর তোরা এসেছিস ধান্দাবাজি করতে।
অসহায় গরিবের উপকার হয় এমন কোন কাজ যখন কেউ করার উদ্যোগ নেয়, তখন তাঁকে সাহায্যের পরিবর্তে তাঁর নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বেড়ানো বদমাইশগুলিকেও জুতাপেটা করতে ইচ্ছে হয়। তুই নিজে কিছু করছিস না, এদিকে যে করছে, তাঁর রাস্তাতেও বাঁধা দিচ্ছিস।
মুসলিম হলে একটি বিষয় নিশ্চই জানেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন, "আমি তোমার কাছে খাদ্যের জন্য এসেছিলাম, তুমি আমাকে অভুক্ত ফিরিয়ে দিয়েছো। আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে পানি দাওনি।"
বান্দা তখন থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলবে, "ইয়া আল্লাহ! আপনি ছিলেন সবার রিজেক দাতা! আপনাকে কিভাবে আমি খাওয়াবো?"
আল্লাহ তখন চোখের সামনে পৃথিবীর জীবনের একটি দৃশ্য তুলে ধরবেন। যেখানে এক ক্ষুধার্ত তাঁর কাছে খাদ্য চেয়েছিল, সামর্থ্য থাকার পরেও তাঁকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
লোকটির তখন কলিজা শুকিয়ে যাবে। বিশ্বজাহানের সমস্ত ঝর্ণা, নদীর বৃষ্টির জলেও সে তৃষ্ণা মিটবে না।
আপনি কী নিজেকে তার অবস্থানে কল্পনা করতে পারবেন? জেনে রাখুন, রাফা নামের মেয়েটি একদিন আপনার কাছে নিজের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছিল, আরও অনেকেই বিপদে আপনার কাছে এসেছিল। আপনার শহরে যখন ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে, আপনি সেটা প্রতিরোধে কিছুই করেননি। আপনি তাঁদের "থটস এন্ড প্রেয়ার্স" দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আপনার বাড়ির পাশেই অসহায় প্রতিবেশী বিপদে পড়ে মারা যাচ্ছে, আপনি তাঁর জন্যও "থটস এন্ড প্রেয়ার্স" পাঠিয়ে বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ করে নিশ্চিন্ত হয়েছেন। শেষ বিচারের দিন আপনার জন্যও "থটস এন্ড প্রেয়ার্স" রইলো।
২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:৩৫
কালো যাদুকর বলেছেন: ঠিক যেন আমার মনের কথাগলো বললেন। এদের উপর আমিও খুবই বিরক্ত। ভাল পোষ্ট ভাই।
২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: বিরক্তি ঠিক মতন প্রকাশ হয় নাই ভাই। মনের কথা ঠিক মতন ফুটিয়ে তুলতে পারলে কম্পিউটার স্ক্রিন বিস্ফোরিত হতো।
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৩:১৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: মঞ্জুর চৌধুরী,
যে সব উদাহরণ দিয়েছেন তেমন সব সম্ভাব্য-অসম্ভাব্য করনেই "বিশ্বাস" নামের বস্তুটির কিছুই করার নেই।
একটা গল্প আছে ---- এক লোক ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন ঐ ধারের এক গাঁয়ে। হঠাৎ জমির মালিকের উদয়।
ওই মিয়া ধান ক্ষেত পাড়াইয়া যাও কৈ ? ধানগাছ পাড়াইতেছো ক্যা ? যাইতে পারবানা।
ধান তো পাড়াইতেছি না। আইলে আইলে যাইতেছি।
আইলে আইলেও যাইতে পারবানা।
তয় কেম্মে যামু ?
কেম্মেও যাইতে পারবানা...
গল্পের মতোই এই "বিশ্বাস"টির ও এখন কোথাও যেতে পারার নেই। কেবল "থটস এন্ড প্রেয়ার্স" বস্তুটির যে কোনও জায়গায় যাওয়ার রাস্তা খোলা।
সুন্দর লেখা। টাচি ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৫
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনি অবশ্যই কাউকে না কাউকে চিনেন যার সাহায্যের প্রয়োজন। হতে পারে আত্মীয়, হতে পারে প্রতিবেশী। বন্ধু, বন্ধুর পরিবারের কেউ বা বাড়ির কাজের লোক। যাকে চিনেন, বিশ্বাস করতে পারেন, আপনি তাঁকে সাহায্যের মাধ্যমেই শুরু করুন।
৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: কয়েকদিন আগে আমাদের দেশের তথাকথিত কবি সাহিত্যিকরা বন্যাকবলিত মানূষদের জন্য টাকা সংগ্রহ করেছেন। দেশ বিদেশ থেকে বেশ ভালোই টাকা উঠিয়েছেন তারা। অথচ নিজেরা দশ টাকাও দেন নি।
২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২৭
শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: এই ধরণের মানুষের জন্যে 'থটস এন্ড প্রেয়ার্স' লিখতে যে সময় খরচ হয়, সেটাও বৃথা।