নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
৩১ বছর বয়সী ক্যালিফর্নিয়ার মেয়ে মেলিসা হ্যারিংটন মাত্র একদিনের বিজনেস মিটিংয়ের জন্য নিউইয়র্ক গিয়েছিল। সকালে মিটিং হবে, মিটিং শেষে ফ্লাইট ধরেই সে আবার ক্যালিফর্নিয়া ফিরে আসবে। মিটিংটা ছিল মঙ্গলবার সকালে, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নর্থ টাওয়ারের ১০১ তলায়।
মঙ্গলবার সকালে বাবাকে করা শেষ ফোন কলে তাঁর শেষ বাক্য ছিল, "I love you."
৩৫ বছর বয়সী জিম গটেনবার্গ মাত্রই নতুন সংসার শুরু করেছে। নতুন সংসারে শুভযাত্রা হিসেবে উচ্চ বেতন ও উচ্চ পদে নতুন চাকরিও পেয়েছে। পুরানো অফিসের ডেস্ক পরিষ্কার করতেই সে মঙ্গলবার সকালে নর্থ টাওয়ারের ৮৬ তলায় গিয়েছিল। বাড়ি থেকে বিদায় নেয়ার সময়ে স্ত্রীকে বলা তাঁর শেষ কথা, "I love you."
৩১ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার হেনলি ছিলেন বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। মঙ্গলবার সকালে তিনিই প্রথম কল করেন ইমার্জেন্সি নাম্বারে। বলেন যে "আমরা ১০৬ তলায় মিটিং করছিলাম, হঠাৎ নিচে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। এখন চারদিকে প্রচন্ড ধোঁয়া। আমরা বেরুতে পারছি না।"
ইমার্জেন্সি অপারেটর বলল, "আপনারা সেখানেই থাকুন। বেরুবার চেষ্টা করবেন না। আমরা এখুনি সাহায্য পাঠাচ্ছি।"
অমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও ক্রিস অতি শান্ত স্বরে বললো "প্লিজ হারি!"
নাইন ওয়ান ওয়ান পরবর্তীতে এই টেপ রিলিজ করে। ক্রিসের বাবা মা এখনও তাঁদের সন্তানের সাহসিকতায় গর্বিত।
মেলিসার জন্মের সময়ে তাঁর বাবা বাড়ির উঠানে একটি বৃক্ষ রোপন করেছিলেন। তখন সেটি একটি ছোট্ট চারা গাছ ছিল। দুই আঙ্গুল সমান পুরু। আজ সেটি মহিরুহ। বাবা সেই গাছটির দিকে তাকিয়ে নিজের মেয়ের কথা স্মরণ করেন। আজকে তাঁর বয়স ৪৯ হতো। প্রতি রাতেই তিনি ঘুমাতে যাবার সময়ে কানে কানে শুনতে পান, মেয়ে বলছে "I love you."
ভোর পাঁচটায় উঠে, কুকুরকে নিয়ে পার্কে একাকী হাঁটতে যাবার সময়ে সকালের প্রার্থনা শেষে তিনি নিজ মনেই মেয়ের সাথে কথা বলেন। তাঁর ধারণা, মেয়ে তাঁর কথা শুনতে পায়।
জিম গটেনবার্গের নতুন চাকরির সাথে নতুন সুসংবাদ ছিল তাঁর স্ত্রী তাঁর দ্বিতীয় সন্তান নিয়ে গর্ভবতী হয়েছে। জীবনের সবচেয়ে সুখের সময় পার করছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার ছিল তাঁর পুরানো অফিসের শেষ দিন। সকালে স্বামীকে বিদায় দিয়ে জিল নিজের অফিসে গিয়ে দেখে ফোনের ভয়েস ম্যাসেজ লাইট দপদপ করছে। চালু করতেই শোনে জিমের ভয়ার্ত স্বর, "আমি জানিনা আমার জীবনে কী ঘটতে চলেছে, শুধু এইটা বলতে চাই, তোমাকে ভালবাসি! নিকোলকে (তখন পর্যন্ত একমাত্র মেয়ে) বলো, তাঁর বাবা তাঁকে ভালবাসে!"
বেশ কিছুক্ষন জিল কিছুই বুঝতে পারছিল না কী ঘটছে। বারবার রিপিট করে একই ম্যাসেজ শুনছিল সে। জিম বলছিল, "I love you."
একই গল্প হাজারের বেশি মানুষের। সেদিন কেবল তিন হাজার মানুষই মারা যাননি, তিন হাজার পরিবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাস, রাজনীতি, মানচিত্র পাল্টে দিয়েছিল সেপ্টেম্বরের এগারো তারিখের একটি সকাল। কিছু মানুষের উন্মাদনার শিকার হয়েছিল বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ। আমার নিজেরই এক আত্মীয় সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন। স্বজন হারানোর বেদনা কী ভীষণ, কী ভয়াবহ হতে পারে, তা নিজের চোখে দেখা।
সেই দিনের সমস্ত ফোনকল, ভয়েস ম্যাসেজগুলো তাঁদের প্রিয়জনেরা আজও আগলে রেখেছেন। যখনই তাঁদের কথা মনে পড়ে, চালু করে শোনেন দেড় যুগ পুরানো সেই বিভীষিকাময় সকালের হাহাকারধ্বনি। সবারই শেষ বাক্য ছিল, "ভালবাসি!"
মৃত্যুর আগে শেষ সুযোগ পেয়ে প্রিয়জনদের জানিয়ে যাওয়া তাঁরা আসলেই কতটা প্রিয় ছিলেন।
জীবনকে কখনই গ্রান্টেড হিসেবে নিতে নেই। যা আজ আছে, কিছুক্ষন পরে থাকার নিশ্চয়তা নেই। বিশ্বজুড়ে ঘৃণার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। আমাদের নবী (সঃ) একবার ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, "এমন একদিন আসবে যখন খুনি নিজেও জানবে না সে কেন কাউকে হত্যা করছে, এবং
নিহতব্যক্তি জানবে না কেন তাঁকে খুন করা হলো।"
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই যুগ চলে এসেছে।
ভালবাসার মানুষদের জানিয়ে দিন আপনি তাঁদের কতটা ভালবাসেন। এই সুযোগ কাল নাও পেতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: আসলেই, মানুষের কোনো নিশ্চয়তা নেই।
কে বাঁচে, কে মরে!
তবে আমার ভালোবাসার কথা বলতে ইচ্ছা করে না। ছোটবেলা থেকেই লুকিয়ে রাখি।