নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডাক্তার ও চিকিৎসকদের ধন্যবাদ

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:০৪

সাধারণ মানুষের সাথে ইসলামের সিস্টেমের পার্থক্য হচ্ছে, সাধারণ মানুষ পুরোটাই পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে থাকে। আমি যাকে পছন্দ করবো না, তার ভাল কিছু আমি কখনই গ্রহণ করতে পারবো না। ওর পান থেকে চুন খসলেও আমি তেড়ে আসবো। যদি কোন খুঁত নাও পাই, প্রয়োজনে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা সংবাদ বের করে "সহমত ভাই"দের সাথে মিলে সামগ্রিকভাবে তাঁর ক্ষতির চেষ্টা করবো।

আর এদিকে যাকে ভালবাসি, সে আট দশটা মার্ডার করে ফেললেও না দেখার ভান করবো। জানপ্রাণ দিয়ে ডিফেন্ড করবো।

"ও আসলে আত্মরক্ষার্থে এইটা করেছিল। ওর কোন দোষ নেই। ও পরিস্থিতির শিকার।" এই টাইপ আহ্লাদী কথাবার্তা বলতেও লজ্জা করবে না।

ইসলাম আপনাকে বলেছে ন্যায় বিচারের সময়ে কেবল আল্লাহকে মনে রাখতে। সামনে কে আছে, কার বিচার করা হচ্ছে, সে আমার বন্ধু নাকি চরম ক্ষতি করা শত্রু ইত্যাদি চিন্তা মাথায় না এনে আপনাকে সত্যের পক্ষে বিচার করতে হবে।

হতে পারে আমি যার বিচার করতে যাচ্ছি, সেই লোকটা আমার সাথে চরম খারাপ আচরণ করে, আমার বৌকে ইভটিজ করে, আমার বাচ্চাকে অকারনে মারধর, কিন্তু এই যে গয়না চুরির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, আমি স্পষ্ট দেখতে পারছি সে এতে কোন অবস্থাতেই দায়ী নয়। আমার বিচারে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, অভিমত ইত্যাদি আসতে পারবে না।

যদি সেটা আপনার নিজের আত্মীয়, ভাই বোন, স্ত্রী, সন্তান এমনকি নিজের বিরুদ্ধেও গিয়ে করতে হয় - তাহলেও আপনি কেবলই আল্লাহকে স্মরণে রেখে বিসমিল্লাহ বলে ন্যায়ের রায় দিবেন।

আমার বৌ হয়তো খেপে উঠে বলবে, "এই সুবর্ণ সুযোগটা তুমি কিভাবে ছাড়লে? ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিতে পারতে!"

আমার বাচ্চারা হয়তো আমার সাথে কথা বলাই বন্ধ করে দিবে।

আমি নিজেই হয়তো নিজের হাত কামড়ে বলবো, এ আমি কি করলাম!

তারপরেও আমাকে ন্যায় বিচার করতেই হবে। উপায় নেই। নাহলে উপরের একজন ন্যায় বিচারক আমার বিচার করবেন।



আল্লাহ কুরআনে সূরা নিসার ১৩৫ নম্বর আয়াতে সেটাই বলেছেন, "হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক; আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্নীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চাইতে বেশী। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত।"

কথাটা এর আগে বহুবার বলেছি, ভবিষ্যতেও বহুবার বলবো। কারন, আমরা বাঙালিরা প্রতিটা ইস্যুতেই অতি জাজমেন্টাল জাতি। সত্যমিথ্যা বিচার না করেই যে কোন এক পক্ষ নিয়ে বিচার করে ফেলি। সমস্যা হতো না যদি না সেটা নিজের মাথার ভিতরে রেখে দিতাম। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে করে সেগুলোকে ছড়িয়ে দেই। "গুজব" "হেট স্পীচ" ইত্যাদি যাবতীয় কুৎসা কোন ভাইরাসের চেয়ে বিন্দুমাত্র কম ভয়াবহ নয়। একটা আপনার শরীর নষ্ট করে, আরেকটা মন-মানসিকতা। অমানুষ হয়ে বেঁচে থাকার কোন মানে আছে? অথচ আমরা এই সিরিয়াস বিষয়টাকেই আমলে নেই না।

যে কারনে আজকে আবারও এই প্রসঙ্গ তুললাম, তা হচ্ছে, আমাদের দেশের অতি প্রাচীন কাল থেকেই গালি খাওয়া একটি সম্প্রদায়, ডাক্তারদের নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। কারন ডাক্তার দেখলেই লোকে আড়ালে বলে বেড়ায় "রক্তচোষা পিশাচের দল! পয়সা ছাড়া কিছু চিনে না।"

সত্যি বলতে, আরও অন্যান্য হাজারো মানুষের মতন, আমার নিজেরও অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার ব্যাপারে। আমার ভাগ্য ভাল আমার নিজের ক্ষেত্রে তেমন একটা ঘটার সুযোগ পায়নি। তবে, আমার বাবা মারা যেতে বসেছিলেন ভুল চিকিৎসার জন্য। মারা যেতে বসেছিলেন আমার মেজো চাচাও। দুইজনকেই হার্টের রোগী বানিয়ে ভুল চিকিৎসা করে অর্ধমৃত করে ফেলা হয়েছিল। বিদেশী ডাক্তারের হস্তক্ষেপে দুইজনই সেযাত্রা রক্ষা পেয়েছিলেন। বর্তমানে দুইজনই পরপারে আছেন। আল্লাহ তাঁদের বেহেস্ত দান করুন।

আমার বৌয়েরও আছে বিশাল কাহিনী। দীর্ঘ বাইশ বছর তাঁর ভুল চিকিৎসা চলেছে। আমেরিকায় আসার পরে তিন সপ্তাহের মাথায় সে জানতে পারে কেন তাঁর ক্রনিক রোগটি হয়, এবং সেটার প্রতিকার কি। ওরা বলেছিল, শৈশবেই এই ব্যাপারটা ধরতে পারলে এত কষ্ট করতে হতো না। অথচ শৈশবে তাঁকে মৃগী রোগের চিকিৎসা করেছে, আরও যত রোগ আছে, যা কখনই তাঁর ছিল না, সবগুলোর চিকিৎসা করা হয়েছে।

এছাড়া ডেন্টাল ও অন্যান্য ইস্যুতো আছেই। আমি গীবত করতে চাইছি না। এর পিছনের শুধু কারনটা বলি।

এবং প্রথম কারণটি হচ্ছে, আমার ধারণা আমাদের দেশে পুরানো মেডিকেল সিলেবাস পড়ানো হয়। এইটা সবাই জানেন যে মেডিকেল সায়েন্স অতিদ্রুত ভবিষ্যতের দিকে ধাবমান। এখানে এক বছর পুরানো চিকিৎসা পদ্ধতিও "মান্ধাতা আমলের" খেতাব পায় যদি সেটার আরও উন্নত ও কার্যকরী পদ্ধতি আবিষ্কার হয়ে যায়। আজকে যা নিয়ে গবেষণা চলছে, তা হয়তো কালকে আবিষ্কার হয়ে যাবে, এবং পরশু থেকে সেটা মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচিয়ে তুলতে পারবে। আমাদের ডাক্তারদের এই আবিষ্কার সম্পর্কে পড়তে পড়তেই বছর পেরিয়ে যায়। রোগী দেখতেই দেখতেই তাঁদের নাভিশ্বাস অবস্থা। দিন রাত হাসপাতাল, চেম্বার ইত্যাদিতে ছোটাছুটি করতে হয়, পড়াশোনা করবেন কখন? পরিবারকে সময় দিবেন কখন? টাকা পয়সাই বা উপার্জন করবেন কখন?

সরকারের উচিৎ এই বিষয়টার উপর বিশেষ জোর দেয়া। বিদেশী ডাক্তার -প্রফেসরদের নিয়মিত দেশে আনিয়ে কনফারেন্সের আয়োজন করা। সেই কনফারেন্সের ভিডিও বিভিন্ন মেডিকেল স্কুলে শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে দেখানো। মেডিক্যাল জার্নাল পাঠ বাধ্যতামূলক করা, এবং সেইসবের উপর কুইজের ব্যবস্থা করা। ইত্যাদি ইত্যাদি আরও বহু কিছু, যা ডাক্তারদের স্কিল বাড়াতে সাহায্য করবে। আমি সেই প্রফেশনের না বলে বলতে পারছি না। তাঁরা নিজেরাই তাঁদের সমস্যার কথা ভাল জানেন।

এখানে কিছু অভিযোগ ভিত্তিহীন।

যেমন, আপনি রোগী নিয়ে যাবেন অন্তিম মুহূর্তে। ডাক্তার বাঁচাতে পারবে না। আপনি গালাগালী, ভাংচুর ইত্যাদি শুরু করে দিবেন। "পাঁচ মিনিট আগেও রোগী সুস্থ ছিল, এখানে আনার পরে মেরে ফেলেছে!"

আবেগপ্রবণ ভাইয়েরা বোনেরা, দয়া করে এইটা মাথায় ঢুকানোর চেষ্টা করুন, আপনার রোগীকে মেরে ডাক্তারের কোন লাভ নেই। বরং বাঁচাতে পারলে তাঁর সুনাম বাড়বে। কাজেই এখানে অন্য ঘটনা ঘটেছে।

হার্টের রোগী, স্ট্রোকের রোগী ইত্যাদি অনেক রোগের রোগী পাঁচ মিনিট আগে সুস্থই থাকেন, এবং পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ে কলাপ্স করে মারা যান। এইটা মেডিক্যালি প্রমাণিত ঘটনা। অহরহই ঘটছে। আপনাকেও বুঝতে হবে।

আরেকটা ব্যাপার আছে। আপনি বুঝতে পারছেন শরীরের ভিতরে রোগ আছে। সেটাকে পেলে পুষে বড় করার কোন মানে কিন্তু হয় না। দুই মাস আগে আসলেও হয়তো সেটাকে স্রেফ একটি টিউমার হিসেবে চিকিৎসা করা যেত, বর্তমানে আপনি সেটাকে ক্যান্সার বাঁধিয়ে ফেলেছেন।

হাঁটতে চলতে বুক ব্যথা করতো, আপনি ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ভাবলেন গ্যাস হয়েছে। গ্যাসের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে যেতেন। ওটা যে আপনার হার্ট ব্লকের জন্য ব্যথা সেটা বুঝতেই চাননি। যতক্ষনে আপনি ডাক্তারের কাছে গেছেন, সব শেষ। আমার নিজের আত্মীয়দের মধ্যেই এমনটা ঘটেছে বলে বলছি। ডাক্তারের দোষ দেয়ার আগে এই বিষয়গুলো একটু মাথায় রাখবেন।

ডাক্তার চিকিৎসা শুরু করতেই ঘ্যান ঘ্যান শুরু করলেন "আসলে সব পয়সা খাবার ধান্দাবাজি। এইসব টেস্ট ফেস্ট ইত্যাদি সবই কমিশনের ব্যাপার।"

হ্যা, বাংলাদেশে অনেক অসাধু ডাক্তার, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব টেকনিশিয়ান ইত্যাদি আছে, যারা আসলেই রোগীদের পণ্য হিসেবে গণ্য করে টাকা কমানোর ধান্দা করে। হয়তো ওরা সংখ্যায়ও প্রচুর। কিন্তু যেহেতু "সবাই" এক না, কাজেই আস্ত সম্প্রদায়কে গালাগালি করে, মারধর করার কোনই যুক্তি দেখিনা। যদি কোন ডাক্তারের ব্যাপারে সন্দেহ জাগে, তাহলে ওর নামে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে বিচার দিন। যেমন প্রায়শঃই দেখি মেজিস্ট্রেট জাল সার্টিফিকেটধারী ডাক্তারদের ধরে ধরে জরিমানা করছেন। আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এদের ফাঁসি (যদি ওদের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গিয়ে থাকে) যাবজ্জীবন (রোগী মরেনি, কিন্তু পার্মান্যান্ট ক্ষতি হয়েছে) এবং মোটা অংকের জরিমানা (সর্বক্ষেত্রে) শাস্তি হওয়া উচিৎ। মানুষের জীবন কোন ফাজলামির বিষয় না যে জাল সার্টিফিকেট নিয়ে যে কেউ চেম্বার খুলে বসে যাবে।

আরেকটা ব্যাপার লক্ষ্যণীয়, কোন ডাক্তার যদি ক্রমাগত ভুল চিকিৎসা করেন, তবে তাঁর লাইসেন্স যেন বাতিল হয়। দুই পক্ষেরই এগিয়ে আসতে হবে দেশে সুন্দর, সুষ্ঠু স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে।

এবং তারপরেও, আমরা কবে যুক্তি মানা জাতি ছিলাম?

ডাক্তার ভাইয়েরা ও বোনেরা যদি বলে থাকেন, আপনাদের সম্প্রদায়ের "সবাই" সৎ, কারোরই কখনই ভুল ত্রুটি ইত্যাদি কিছুই হয়না, তাহলেতো বলার কিছুই নেই। আপনারা নিজেরা হয় মিথ্যা বলছেন, নাহয় একটা বাবলের ভিতর বাস করছেন।

আমরা দেশি ডাক্তারদের "ডাকাত" গালাগালি করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য দৌড়াই। বিদেশেও কিন্তু খরচ সাংঘাতিক। আমার বাচ্চা হয়েছে সম্প্রতি। বিল কত এসেছে জানেন? তিরিশ হাজার মার্কিন ডলার। ছিয়াশি টাকা দিয়ে গুন দিন। এই টাকায় আমার দেশে আমি আস্ত ফুটবল টিম, ক্রিকেট টিম, ভলিভল টিম নামায় ফেলতে পারতাম। সাথে রেফারি, কোচ, ফিজিও বোনাস।

বাচ্চা ডেলিভারিতে এই টাকা নিচ্ছে, অন্যান্য চিকিসায় কত নিতে পারে চিন্তা করুন। ইমার্জেন্সিতে একবার গেলে পাঁচ ছয়হাজারের নিচে কোন কথা নাই। হেল্থ ইন্সুরেন্স থাকলেও ডিডাকটিবলতো আপনাকে দিতেই হবে। তিন থেকে ছয় হাজার ডলার যায় আপনার নিজের পকেট থেকে। আমেরিকান চিকিৎসা ও চিকিৎসক দুনিয়ায় অনেক উপরের দিকে হলেও এর খরচও এমনই। এইদেশে সবাই এইটাই দোয়া করে যেন কোন অবস্থাতেই অসুস্থ না হতে হয়।

যে কারনে আজকে ডাক্তারদের নিয়ে কথা তুললাম, তা হচ্ছে, এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ যন্ত্রনা করছে। চীনের সীমানা ছাড়িয়ে তা সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছে, দুইজন দুইজন করে শুনেছি চারজন বাঙালি আক্রান্ত হয়েছেন। চায়না থেকে এই রোগ আমাদের আমেরিকাতেও চলে এসেছে। এর মধ্যে উহানে একজন মার্কিন নাগরিক মারা গেছেন। প্রতিদিন মানুষ মরছেন। আরও কত মরবেন কে জানে। এর বিরুদ্ধে লড়ার মতন ক্ষমতা এখনও মানুষের তৈরী হয়নি। তবে নিরলস লড়াই চলছেই। এই লড়াই কারা করছেন? চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং ডাক্তার-নার্সরা। তাঁরা ভাল করেই জানেন চিকিৎসা করতে গেলে তাঁদের নিজেদেরই আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা প্রচুর। তারপরেও মানবতার স্বার্থে, পেশাগত এথিক্সের টানে, তাঁরা মৃত্যুকূপে ঝাঁপ দিচ্ছেন। ফিরবেন, এর কিন্তু কোন নিশ্চয়তা নেই। ইতিমধ্যেই বহু সহযোদ্ধাকে তাঁরা হারিয়েছেন। আরও হারাবেন। কিন্তু ভাইরাস নামের এই অতি ক্ষুদ্র, কিন্তু অতি নিকৃষ্ট জীবাণুর কাছে তাঁরা মানুষকে হারতে দিতে রাজি নন।

ইতিহাসে এর আগেও বহুবার এমনটা ঘটেছে। ইবোলার সময়ে আমেরিকা থেকে স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তার ও নার্সদের দল অন্ধকার মহাদেশ আফ্রিকায় গেছেন চিকিৎসা সেবা দিতে। এক দল কালো মানুষ মরছে, মরুক না। কার বাপের কি আসে যায়? আমরা থাকবো আমাদের মিলিয়ন ডলারের ম্যানশনে। সামারে ছুটি কাটাতে যাব বাহামা আইল্যান্ডে। কিন্তু এইসব তাঁদের কে বুঝাবে?

আমাদের দেশেও ডেঙ্গুর সময়ে আমরা কাদের কাছে ছুটি? ঐ ডাক্তারদের দরবারেই।

হ্যা, তাঁরা টাকা নেন, এবং টাকা নেয়াটা তাঁদের হক। তাঁরাই জানেন কী পরিমান অমানুষিক খাটুনি খেটে মেডিকেল স্কুল পাশ করতে হয়েছে। এইটা তাঁদের হক।

কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, "যে একটি মানুষের প্রাণ রক্ষা করলো, সে যেন পুরো মানবজাতির প্রাণ রক্ষা করলো।"

ইসলামের আরেকটি চমৎকার নিয়ম হচ্ছে, কেউ একটি ভাল কাজ করলে, সেই ভালকাজের ফলে আরও যা ভাল কাজ হবে, সব পুন্যও প্রথম ব্যক্তির খাতায় জমা হবে। আমি একটি লোকের চোখের চিকিৎসা করলাম, সে সেই সুস্থ চোখে কুরআন পাঠ করলো। সব আমার খাতায়ও জমা হবে। আর যদি পর্ন দেখে, তাহলে তার সমস্যা হলেও, আমার কোনই সমস্যা হবেনা। আল্লাহ মহান।

ডাক্তাররা মানুষের প্রাণ রক্ষার জন্য যে পুরস্কার উপরওয়ালার কাছ থেকে পাবেন, কেয়ামতের দিনে তাঁদের দেখে আমরা ঈর্ষায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাব। আফসোস করবো, কেন দুনিয়ার জীবনে ডাক্তারি পড়লাম না।

সাধারণ মানুষের প্রতি অনুরোধ, ধৈর্য্যশীল হন, সহনশীল হন, এবং আবেগপ্রবণ না হয়ে সঠিক ও লজিক্যাল কাজ করুন। এক ডাক্তারের চিকিৎসায় আপনার মন ভরছে না, ডাক্তার বদলান। প্রয়োজনে দেশের বাইরে চলে যান। হয়তো সেই ডাক্তার যা জানেনা, অন্য কোন ডাক্তার ভাল জানেন। না জানাটা কোন "অপরাধ" নয়। ল্যাক অফ স্কিলস এবং নলেজ - এর বেশি কিছু না।

চিকিৎসা পেশায় জড়িত প্রতিটা মানুষকে ধন্যবাদ। ডাক্তার থেকে শুরু করে নার্স, ওয়ার্ড বয় সবাইকে। যদিও বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলিতে শুনেছি চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীদের ইউনিয়নের কারনে ডাক্তাররাই জিম্মি থাকেন। তাদের ঔদ্ধত্ব এবং খোলামেলা ডাকাতির ঘটনায় সাধারণ রোগী ও তাঁদের পরিবারের জীবন অতিষ্ঠ! এইসব প্রশাসনিক ব্যাপার, প্রশাসনকেই শক্ত অবস্থান নিয়ে ঠিক করতে হবে। যেখানে চাবুক চালাতে হয়, সরকার যেন সেখানে চাবুক চালান, এই অনুরোধ রইলো।

এবং ডাক্তারদের প্রতি অনুরোধ, আমরা উপরে আল্লাহর উপর ভরসা করার পরে পৃথিবীতে আপনাদের হাতেই নিজেদের সঁপে দেই। তাই আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব একটু নিষ্ঠার সাথে আরেকটু সততার সাথে পালন করুন।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ডাক্তাররা আল্লাহ ভক্ত বেশি হোণ। তারা নামাজ পড়েন।
ডাক্তাররা ভগবান তুল্য।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ডাক্তার যেন মানবিক কাজে মানবিক থাকে। আল্লাহ সহায় হোন।

৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:০১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নিরপেক্ষা নির্মোহ সত্য।

সমস্যা হলো আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস অবিশ্বাসেও যে পাক।ষপাত করি!
তার বিধান মানা না মানার ক্ষেত্রেও যা প্রযোজ্য। তাই হয়তো এই সামাজিক ব্যাধি গুলো আনুষ্ঠানিক রুপ পেয়ে গেছে।

আবার এটা থেকে মূলে ফিরে যেতেও তাই আগে বিশ্বাসটাকেই সঠিক করতে হবে।

পোষ্টে ++++++

৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬

নতুন বলেছেন: আমাদের দেশের জনসংখ্যা অনেক। হাসপাতালে যেই পরিমান রোগী আসে তাদের ব্যবস্হা করে তাদের বিদেশীদের মতন সেবা দেওয়া কস্টকর।

কিছু খারাপ মানুষ সব খানেই আছে কিন্তু ভালোর সংখ্যাই বেশী।

গত সপ্তাহে ৩ বার বারডেমে গিয়েছি টেস্ট আর ডাক্তার দেখাতে।

এতো মানুষের সেবা দিতে যেই জনবল দরকার সেটা তাদের নেই। যদি সঠিক জনবল আর রিসোস থাকতো তবে তাদের সঠিক নিদেশ`না দিলে আমাদের দেশের মানুষও আরো অনেক ভালো সেবা পেতে পারে।

৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৪

অজ্ঞ বালক বলেছেন: ঘরে একজন ডাক্তার বর্তমান থাকায় এইটা যে কতখানি থ্যাংকলেস জব, তা ভালোই জানা আছে। আপনারে ধন্যবাদ এই লেখাটার জন্য।

৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৯

মীনক্ষোভাকুল কুবলয় বলেছেন: বাঙলাদেশী ডাক্তারদের আমার কসাই ছাড়া আর কিছু মনে হয়না ।প্রান্তিক জনগন এদের উচ্চ ফি এর কারনে এদের কাছ পৌছাতেই পারেনা ।আর সরকারী হাসপাতালে তো বসেই না,বসে অসরকারি ক্লিনিক গুলিতে ।কসাই ছাড়া আর কি বলবো বলেন ?
দায়ে পড়ে তবুও এই কসাইদের কাছেই যেতে হয় আমাদের !

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৩:০১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সবাইকে তাঁদের মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। দুঃখিত সবাইকে আলাদা আলাদাভাবে উত্তর দিতে পারছি না বলে। কিন্তু সবার মন্তব্যই পড়েছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.