নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
যেকোন ভাইরাসের ভ্যাকসিনের মূল শর্ত হচ্ছে এটি মানবদেহে কতটা নিরাপদ সেটা আগে পরীক্ষা করা। ধরেন, আপনার বাড়িতে ইঁদুর হয়েছে। আপনি ইচ্ছা করলেই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে পারেন। এতে ইঁদুর মরবে সন্দেহ নেই। তবে বাড়িও পুড়ে ছাই হবে। ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। হয়তো ভাইরাস মারার সব সরঞ্জাম আবিষ্কার হয়ে গেছে। কিন্তু সেটা শরীরের জন্য কতটা উপকারী বা ক্ষতিকর সেটা আপনাকে আগে পরীক্ষা করতে হবে। তারপরে সেটা সবার জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা যাবে।
তা আমাদের শরীরের জন্য শর্ট টার্মে কোন ক্ষতি আছে কিনা সেটা এক দিন থেকে শুরু করে দুই তিন মাসের মধ্যেই আপনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সহজেই সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন। শর্ট টার্মে যা ক্ষতি হবার তা এর মাঝেই দৃশ্যায়মান হয়ে যায়। সমস্যা হচ্ছে লং টার্মের ক্ষতিগুলো। এত ধীর এর প্রক্রিয়া যে বছর খানেক সময় না গেলে বুঝবেনই না কি ক্ষতি হয়ে গেল। অনেক কিছুই হতে পারে। হয়তো দেখা যাবে এই ভ্যাকসিন গ্রহণ আলজেইমারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। কিংবা ক্যানসারের কোষকে শক্তিশালী করে। কিংবা বন্ধ্যাত্বের কারন হতে পারে। কিংবা কে জানে, এটি হয়তো স্লো পয়জনিং হিসেবে কাজ করবে। আরও অনেক কিছুই হতে পারে। এজন্য যেকোন ওষুধ বাজারে ছাড়ার আগে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার গবেষণার পেছনে ফেলে। দুঃখজনক হলেও সত্য, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মানুষকে গিনিপিগ হিসেবেও ব্যবহার করে। যখন দেখে মানবদেহে প্রবেশের দীর্ঘ সময় পরেও কোন ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছেনা, তখনই উন্নতবিশ্বের স্বাস্থ্য সংস্থা একে নিজের দেশে প্রয়োগের জন্য অনুমতি দেয়। অতি ধীর প্রক্রিয়া।
কিছু ভাইরাসেরতো টিকাও আবিষ্কার হয়না। যেমন এইচআইভি। বহু দশক ধরেই এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে যন্ত্রনা দিচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউই আবিষ্কার করতে পারেননি। তাই একটি বড় সম্ভাবনা আছে, করোনা ভাইরাসেরও টিকা আবিষ্কার করতে এতটা সময় লাগতে পারে। আমি নিরাশাবাদী নই, তবে আবেগেরবশে বাস্তববিমুখও নই। সব ধরনের সম্ভাবনাই আছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, আমাদের দায়িত্ব ধৈর্য্য ধরে তাঁদের কাজে সহায়তা করা।
করোনা ভাইরাসের শুরু থেকেই গবেষকরা এই বিষয়গুলো বলে আসছিলেন। আমরা যেন এসব মাথায় রাখি, এবং নিরাপদে থাকি।
কিন্তু করোনার প্রথম থেকেই এখানে সেখানে খবর চাউর হতে শুরু করে এ আবিষ্কার করে ফেলছে, সে আবিষ্কার করে ফেলছে। বাংলাদেশের এক গবেষকতো ক্যামেরার সামনে কেঁদেই ফেললেন, যে জিনিস ইউরোপ আমেরিকার বড় বড় বিজ্ঞানীরা করতে পারলো না, সেটা দেশের কিছু গবেষক করে ফেলেছেন। আজকে বাংলাদেশের নাম বিশ্বের বুকে গর্বের সাথে গাঁথা হয়ে থাকবে। আমাদের অমুক নোবেল পেয়ে যাবে। বিশ্বের ওষুধ শিল্পে নেতৃত্ব দিবে বাংলাদেশ! ইত্যাদি ইত্যাদি। ফেসবুক জুড়ে খুব লাইক ও শেয়ার চললো। আবেগী কথাবার্তা চললো। তারপরে আর কোন খোঁজ নেই।
আমেরিকাও মানবদেহে ভ্যাকসিন পুশ করে ফেললো। তারপরে তাঁদেরও খবর নেই। অক্সফোর্ডের দাবি তাঁরাও গবেষণার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছেন। তাঁরা তাঁদের সফলতার ব্যাপারে ৯০% নিশ্চিত। খুব শীঘ্রই বাজারে ছাড়ছেন। এগুলো বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ। কারন ঐ যে উপরে বললাম, এক বছর সময় দিতেই হয় নিরাপত্তা যাচাই বাছাই করতে, তাঁরা সেটাই যাচাই বাছাই করছেন। নাহলে ব্যাপক ক্ষতি হবারও সম্ভাবনা আছে। দেখা যাবে আস্ত মানবগোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে গেছে তাড়াহুড়া করে ঐ ভ্যাকসিন নিয়ে।
তা এখন রাশিয়া থেকেও খবর আসছে ওরাও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছে। পুতিনের নিজের কন্যা সেটি গ্রহণ করেছেন। লোকজন বাহবাহ দিয়ে লাইক ও শেয়ার দিয়ে সংবাদটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে রাশিয়ার অবস্থান কোথায় সেটা নিশ্চই সবাই জানেন? না জেনে থাকলে একটু সার্চ করলেই পারবেন। তাই রাশিয়ানদের সব কথায় বিশ্বাস করার কিছু নেই।
যদি আবিষ্কার করেই থাকে, তাহলে সেটা কতটা নিরাপদ তা পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট সময় কি তাঁরা ব্যয় করেছেন? চলতি বছরের শুরুর দিকে বিশ্বে ছড়াতে শুরু করে এই ভাইরাস। ধরে নিলাম জানুয়ারিতেই তাঁরা গবেষণা শুরু করেছেন। চলতি মাস হচ্ছে হচ্ছে বছরের অষ্টম মাস। মাত্র আট মাসেই তাঁরা নিশ্চিত হয়ে গেলেন এর কোন লং টার্ম সাইড ইফেক্ট নেই? বিজ্ঞান বিশ্বাসের উপর চলেনা। এর তথ্য প্রমান গাণিতিক হিসেবের উপর নির্ভর করে। পানি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করবে। এর আগে নয়। এটি বিজ্ঞান। ছক কাটা নিয়মে চলে। এদিক সেদিক হয় না। কোন বিজ্ঞানীর পক্ষেই সম্ভব না পনেরো ডিগ্রি সেলসিয়াসে পানিকে ফুটিয়ে ফেলা। রাশিয়া তাহলে কিভাবে এক বছরের টাইম ফ্রেমকে আট মাসে নামিয়ে আনলো? ভাবায় না একটু হলেও? দাবিটা আমেরিকান বা ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা করলেও এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই হতো। এর সাথে কমিউনিস্ট, ক্যাপিটালিস্ট ইত্যাদি ভাবধারার কোনই সংযোগ নেই। কে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, কে মানবতার শত্রু, সেটাও জড়িত না। এখানে pure science জড়িত।
এখন বিশ্বজুড়ে খুবই ভয়ংকর সময় চলছে। লাখে লাখে মানুষ মরে গেছে একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর কাছে হার মেনে। টাকা পয়সা ক্ষমতা কোন কিছুই কাজে আসছে না। এমন কোন মানুষকে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব যার পরিচিত কেউ এই মহামারীতে মারা যাননি। লোকজন বাড়িতে থাকলে চাকরি হারাচ্ছে। বাইরে বেরুলে করোনাক্রান্ত হচ্ছে। কতদিন গৃহবন্দী থাকা সম্ভব? আর্থিক দিকটা বাদ দিলেও মানসিক দিক দিয়ে মানুষকে ভয়াবহ ডিপ্রেশনের দিকে ঠেলে দেয়। তাই এইসব "করোনা টিকা আবিষ্কার হয়ে গেছে আর কোন ভয় নেই" ধরনের গুজব সমাজের জন্য প্রচন্ড ক্ষতিকর। শুধুমাত্র এই গুজবের উপর বিশ্বাস করে লাখে লাখে মানুষ রাস্তায় নেমে আসবেন। তখন পরিস্থিতি আরও অনেক খারাপ হবে। কাজেই দয়া করে এই ধরনের গুজব রটানোর আগে নিজে একটু নিশ্চিত হয়ে নিন। কিভাবে নিশ্চিত হবেন? যেদিন দেখবেন আপনার পাড়ার ফার্মেসিতে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা অনুমোদিত এ ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে, সেদিনই কেবল ফেসবুকে ঘোষণা দিবেন করোনার ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়েছে।
এর আগে দয়া করে একটু ধৈর্য্য ধরুন। নিজে বাঁচুন, অন্যকেও বাঁচান।
ধন্যবাদ।
১৪ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:১৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ব্যস্ত ছিলাম খুব
২| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:২১
নূর আলম হিরণ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:২০
অন্তরা রহমান বলেছেন: সময়োপযোগী ও জরুরী পোস্ট।
৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: ওক্সফোর্ড এবং মডের্নার ভ্যক্সিনের জন্য অপেক্ষা করাটাই বেস্ট হবে।
১৪ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৩৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৮
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশের গ্লোব কোম্পানির ভ্যাকসিনের হাল নাগাদ তথ্য গ্লোবের ভ্যাকসিন ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন।
পোষ্টে সব সত্য লিখেছেন।
বহু দিন আপনার পোষ্ট পেলাম ব্লগে।