নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমাদের ছোটবেলা থেকে আব্বু আম্মু একটা শিক্ষা মাথায় ঢুকিয়ে বড় করেছেন, তাঁরা যা সম্পত্তি রেখে যাবেন, সব বোনাস হবে, কিন্তু আমাদের আসল সম্পদ আমাদেরকেই গড়তে হবে। যে কারনে অন্যের সম্পদতো দূরের কথা, নিজের বাবা মায়ের সম্পত্তির ব্যাপারেই আমরা তিনভাই বোনই উদাস হয়ে বড় হয়েছি। গ্রামের পৈতৃক সম্পত্তি কে ভোগ করছে, কোনটা বেদখল হয়েছে সে হিসাব আমাদের নেই। গ্রামে যাইনা দুই দশকের বেশি সময়তো হয়েছেই। শহরের সম্পত্তিরও বেশ কিছু বেদখল হয়ে আছে বহুদিন ধরে। আইনি লড়াই লড়া যায়, ফল হবে না কিছুই। বছরের পর বছর উকিল আর কোর্টের ফিসই দেয়া হয়ে কেবল। আর ওসব পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে খুন হবার কোন শখ আমাদের কারোর নেই।
গ্রামের যা সম্পদ আছে, ছোটচাচাকে বললাম সব বেঁচে পারলে বড় চাচার ছেলেকে দিয়ে দিতে, অথবা কাজিনদের মধ্যে যদি কারোর প্রয়োজন আছে, তাঁদের দিতে। মাশাল্লাহ, এই সংখ্যা খুবই কম। যে যার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
তা এই শিক্ষার সমস্যা আছে? অবশ্যই আছে। বাবা মা পুরো জীবনভর খাটাখাটুনি করে যা গড়েছেন, তা অন্যে ভোগ করে ফেলছে, অথচ আমরা সেগুলো উদ্ধারের কোন তাগিদ অনুভব করছি না। নিঃসন্দেহে এটি খুবই বাজে অভ্যাস।
আবার, এই শিক্ষার ফলেই আমরা অন্যের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকি না। বিয়েতে কোন ভাই "যৌতুক" নেই নাই, "উপহার" হিসেবে শ্বশুর বাড়ি থেকে টিভি ফ্রিজ ফার্নিচার ইত্যাদি কিছুই না। বিয়েও করেছি এমন এক মেয়েকে যে নিজের খরচের জন্য কারোর কাছে হাত পাতায় সংকোচ বোধ করে। এমনকি আমার কাছেও হাত পাতেনা। নিজের উপার্জনে সে স্বয়ং সম্পূর্ণ। আমার শ্বশুর তাঁর পৈতৃক সম্পত্তির নব্বই শতাংশ তাঁর ভাইয়ের নামে লিখে দিলেন। উড়ো খবর শুনেছি এতে নাকি আমার চাচা শ্বশুরের হালকা চাল ছিল। ফ্যামিলি পলিটিক্স যাকে বলে। তিনিই নাকি ভাইকে ভুজুং ভাজুং দিয়ে সিংহভাগ নিজের নামে লিখিয়ে ফেলেছেন।
যদিও কথাটি আমার শ্বশুর মানতে রাজি নন। নিজের ভাইকে স্নেহ করেন বলেই।
আমার বৌকে উল্টো বললাম পুরোটাই যেন লিখে দেন। প্রথমত, শুধু শুধু গ্রামের সম্পত্তি রেখে লাভ নেই। ওরা গ্রামে থাকেন, ওরাই ভোগ করুন। না আমরা কখনও যাব, না আমাদের সন্তানরা যাবে। আর দ্বিতীয়ত, উনারা এমনিতেও ভোগ দখল করবেন। মাঝে দিয়ে শুধু শুধু দাবি ধরে রাখার কোন মানে হয়না। বরং ১০০% হালাল উপায়েই ভোগ করুন। যদি কোন প্রয়োজনে বিক্রি করতে চান, তখনও যেন কোন ঝামেলা না হয়।
আমার বৌও বাবাকে সেটাই বুঝায়। গ্রামের ঐ সম্পত্তির আমাদের কারোরই প্রয়োজন নেই। আশা করি শ্বশুর সাহেব একদিন বুঝবেন ও পুরোটাই লিখে দিবেন।
পাঁচশো ডলার হাতে নিয়ে এই দেশে এসে পরিশ্রম ও পড়ালেখা করেছি। চাকরি হারিয়ে বেকারও থেকেছি কয়েকমাস। এমনও দিন গেছে যে শুধু সিরিয়াল খেয়েছি সকাল দুপুর ও রাতে, তবু কারোর কাছে হাত পাতিনি। কে দাওয়াত দিল না, কে খাওয়ালো না, কে কেন সাহায্য করলো না ইত্যাদি ধরাধরি করিনি। আল্লাহ আমাকে পরিশ্রমের সামর্থ্য দিয়েছেন, যাবতীয় সমস্যাকে নিজের আলসেমির উপর দোষ দিয়েছি।
মাশাল্লাহ এখন দিন পাল্টেছে। দোয়া করি এমন থাকবে আগামী দিনগুলো।
যে কারনে এই কথাগুলো লিখলাম, তা হচ্ছে, যৌতুক প্রথাটাই ছ্যাচড়ামি একটা প্রথা। অন্যের সম্পত্তির দিকে লোভাতুর দৃষ্টি থাকে কিছু কুলাঙ্গার ছ্যাঁচড়া, ফকির মিসকিন হাভাইত্যা স্বভাবের লোকজনের। এদের হা এত বড় থাকে যে যতই খাওয়াবেন, হা ততই বড় হবে। সরকার যৌতুকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন জারি করার পরেও এটি নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছেনা কেবলমাত্র আমাদের সামাজিক/পারিবারিক শিক্ষার কারণেই। নিজের পরিশ্রমে ভরসা না করে অন্যের উপার্জনে কোটিপতি হবার ধান্দা করা ধান্দাবাজদের কারনে। এরা ছোটবেলা থেকে এই শিখে বড় হয় যে বিয়ের পরে বাড়িতে নতুন ফার্নিচার আসবে, টিভি এসি ফ্যান আসবে। নগদ টাকাও আসবে। এদের থেকে পথের ফকিরও ভাল। অন্ততঃ সে কারোর উপর জুলুম করে না। উপার্জনের সামর্থ্য না থাকলে যে থালা হাতে রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করে। ওদের চেয়ে বেশ্যাও ভাল। নিজের শরীর বেঁচে খায়, অন্যের হক মারে না।
এখন অনুভূতিকে অবস করে পুরুষ দিবস, নারী দিবস, বৃদ্ধ দিবস, শিশু দিবস, হিজড়া দিবস ইত্যাদি দিবস টিবস পালন করতে থাকেন, এদিকে যৌতুকের কারনে একই দেশে কোন স্বামী ওর স্ত্রীর যোনিপথে আগুন ধরিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফোন দিয়ে ব্যাটাগিরি দেখাতে থাকুক।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৩০
স্থিতধী বলেছেন: আত্ম সম্মান জিনিসটা যদি দেশের বেশীরভাগ বাঙালীর ঠিকঠাক মতো থাকতো তবে দেশে কখনো এতোটা অরাজকতা তৈরি হতে পারতোনা । প্রবল দুর্নীতি পরায়নতা, ধর্মান্ধতা আর পরশ্রী কাতরতার পেছনের মূল একটি নিয়ামক হল আত্মসম্মান হীনতা; বিষয়টি আমারো মনে হয়। ভালো লাগলো লেখাটি।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: এত এত দিবস দিয়ে দেশ, সমাজ আর মানুষের কি উপকার হয়?
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৭
শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: নিউজটা দেখে শিহরিত হয়ে গেছি। মানুষ এখনো এতটা বর্বর মানসিকতা ধারণ করে যে আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাঁচতে দিতে চায়না। খুব বাস্তব কিছু কথা বলেছেন। ''সরকার যৌতুকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন জারি করার পরেও এটি নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছেনা কেবলমাত্র আমাদের সামাজিক/পারিবারিক শিক্ষার কারণেই।'' একদম আসল মূল ফোকাস করেছেন। এজন্যই আসলে এখনো যৌতুকের লোভ মানুষ ছাড়তে পারছেনা। কিসের পয়সাওয়ালা আর শিক্ষিত, এখনো অনেক মানুষের পর ধনে এই লোভটা রয়েই গেছে।