নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
সেদিন এক ভদ্রমহিলা খুব তেড়েফুঁড়ে এলেন। অভিযোগ গুরুতর, "ইসলামে ধর্ষণের প্রমান দিতে কেন চার সাক্ষীর প্রয়োজন? একজন ধর্ষিতা কিভাবে চার সাক্ষী পাবে? তারচেয়ে বড় কথা, সাক্ষ্য প্রমান করতে না পারলে অনেক সময়ে তাঁকেই শাস্তি দেয়া হয়। এইটাতো তাঁর প্রতিই অবিচার! অন্যায়!
(প্রথমত ক্লিয়ার করে নেই, ইসলামে ধর্ষণে চার সাক্ষ্যের শর্ত প্রযোজ্য না। যেভাবেই পারেন, প্রমান করেন, শাস্তির বিধান ভয়াবহ। ওটা ইরানি শরিয়া আইনের শর্ত ও বিধি।
তবে মহিলার প্রধান অভিযোগ, অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি কেন দেয়া হয়না? কেন প্রমান চায়? প্রমান করতে না পারলে কেন উল্টো অভিযোগকারীকেই শাস্তি পেতে হয়? আমার এই লেখা সেই পয়েন্টেই।)
কিছু বলার আগে এখানে একটি তথ্য দেই, আমেরিকার আইনেও আপনি যদি কারোর বিরুদ্ধে ফলস একিউজেশন করেন, বিশেষ করে সেটি যদি হয় সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের মতন গুরুতর কোন ইস্যু, এবং অভিযোগ প্রমান করতে না পারেন, তারপরে সে পাল্টা আপনার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে প্রমান করে দেয় যে আপনি তাঁকে ফাঁসানোর জন্যই কাজটি করেছেন, তাহলে আপনাকে আইনের আওতায় শাস্তি পেতে হবে। এই শাস্তি মিসডিমিনর (মাঝারি) থেকে শুরু করে ফেলনী (সর্বোচ্চ) পর্যায়ের হয়ে থাকে।
কেন? কারন হ্যাশট্যাগ মিটু মুভমেন্টের সময়ে এক মেয়ে অভিযোগ করেছিল এক কলেজ ফুটবল প্লেয়ার এনএফএলের ডাক পেলেন। আমাদের দেশের কথা বিবেচনা করলে ধরেন কোন ছেলে নির্মাণ স্কুল ক্রিকেট খেলেই বিপিএলের ডাক পেয়ে গেছে। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় স্টেপিং স্টোন। ঠিক সেই সময়ে ওর স্কুলের এক মেয়ে অভিযোগ করলো সে নাকি একবার মেয়েটিকে যৌন নির্যাতন করেছে।
তখনকার দিনে এটাই ছিল বার্নিং ইস্যু। হলিউড, কর্পোরেশন, গির্জা, মসজিদ থেকে শুরু করে হোয়াইটহাউজ পর্যন্ত সব জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে, মেয়েরা মুখ খুলছে। এনএফএল ছেলেটাকে নিয়ে রিস্ক নিতে চাইলো না।
দুইমাস পরে প্রমান হলো, মেয়েটা ফাজলামি করেছে। ছেলেটাকে একটা শিক্ষা দিতে এই কাজ করা।
এই "শিক্ষা" দেয়ার জন্য এমন অভিযোগ আজকের দিনের না। হাজার হাজার বছর ধরেই চলে আসছে। সূরা ইউসুফের ঘটনা মনে নেই? ইউসুফ (আঃ) নবীর মালিকের বৌ প্রতিশোধ নিতে একই অভিযোগ করেছিল। এখনও, আমেরিকাতেই এইসব ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই ঘটে। পুলিশরা এমন অভিযোগ প্রায় প্রতিদিন হ্যান্ডেল করে অভ্যস্ত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওরা প্রাথমিক তদন্তেই ধরে ফেলতে পারে কে চাপা মারছে, কে না। তারপরেও কিছু মামলা কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।
মানুষের ক্যারিয়ার, রেপুটেশন, ভবিষ্যৎ, সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থান সবই নির্ভর করে এই অভিযোগের উপর। তাই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে এই শাস্তির বিধান আছে।
সমস্যা হচ্ছে, আমেরিকান আইন নিয়ে কারোর অভিযোগ নেই, সব দোষ শরিয়ার!
ঠিক যেমন আমরা (আমেরিকানরা) বিমান থেকে বোমা ফেলে লাখে লাখে মানুষ মেরে ফেললেও মিডিয়া চুপ করে থাকে।
"আমরাতো "গণতন্ত্র" ফিরিয়ে দিতে এই কাজটা করেছি।"
কারোর বলার সাহস নাই, "তোরে কইছে কেউ গণতন্ত্র দিতে?"
আমাদের দেশে যেমন এককালে বিএনপি আওয়ামীলীগ খুব দাঙ্গা হাঙ্গামা মারামারি করে দেশের মানুষের গাড়ি, দোকানপাট, সম্পদ ভাংচুর করতো। আর মুখে বলতো, "আমরা জনগনের সেবক হতে চাই!"
ফাজিলের ফাজিল একেকটা!
যাই হোক, ব্যাক টু "আইন ও শাস্তি।"
নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে যদি বিবেচনা করি, তাহলে যেকোন আইন বুঝার আগে আমাকে শাস্তির ভয়াবহতা বুঝতে হবে। কারোর বিরুদ্ধে ধর্ষণ প্রমাণিত হলে ইসলামিক আইন ওকে শুধু জেল জরিমানা করে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার শাস্তি দিয়ে বিদেশে চলে যাবার দন্ড দিবেনা। ওকে জনসম্মুখে পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিবে। যাতে আশেপাশের দশ এলাকার মানুষ এই শাস্তি দেখে ভয়ে শিউরে উঠে। যাতে ভবিষ্যতে কারোর এই অপরাধ করার কথা চিন্তারও আগে কলিজা শুকিয়ে যায়।
এখন আমার ইচ্ছা হলো আপনাকে কোন কারনে উচিৎ শিক্ষা দিতে। তাই আমি আদালতে গিয়ে বললাম আপনি আমাকে ধর্ষণ করেছেন। যদি আদালত কেবলমাত্র আমার কথার উপর ভরসা করেই আপনাকে পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিয়ে দেয়, তাহলে? আপনার ভাল লাগবে বিনা অপরাধে মরে যেতে?
"ন্যায় বিচারের" (যা আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত হওয়া জরুরি) প্রধান শর্ত হচ্ছে, আপনাকে দুই পক্ষের জবানী শুনতে হবে, অপরাধের গভীরতা, পরিস্থিতি, শাস্তির পরিণতি ইত্যাদি সব বিবেচনায় নিতে হবে। ধরেন ভুল করে কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিলেন, এবং তারপরেই জানতে পারলেন যাকে শাস্তি দিয়েছেন, সে আসলে নিরপরাধ। তখন কি করতে পারবেন? প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারবেন?
সেকুলার আইনও কি কোন অপরাধ প্রমাণিত না হলে কাউকে স্রেফ অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি দেয়?
কাজেই, ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের আগে যেকোন দেশের আদালত ১০০% নিশ্চিত হতে চায়। যাকে বলে "সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত" বা "beyond reasonable doubt." সামান্যতম সন্দেহ থাকলে মৃত্যুদন্ড না দিয়ে অন্য শাস্তি দেয়া হয়। সন্দেহ বেশি হলে খালাস করে দেয়া হয়।
"প্রয়োজনে দোষী ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হবে, তবু নিরপরাধ কাউকে শাস্তি দেয়া যাবেনা।" - এই হচ্ছে বিশ্বের যেকোন আদালতের নীতি।
এখন ইসলামের আইনে ফেরত যাওয়া যাক।
চার চাক্ষুষ সাক্ষীর নীতি কখন এসেছে? সাড়ে চৌদ্দশো বছর আগে। কোন অটপসি, মেডিকেল এক্সপার্ট, রেপকিট, ডিএনএ ইত্যাদি কোন বিদ্যার অস্তিত্ব তখন ছিল না। বর্তমানে এই চার সাক্ষী হতে পারে এইসব রিপোর্টই। রিপোর্টগুলো যদি "সাক্ষ্য" দেয় রেপ হয়েছে, তখন আসামিকে শাস্তি দেয়া হয়। যদি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে, তখন আসামি খালাস।
শরিয়া আইন নিয়ে তর্ক না তুলে বরং ফোকাস করতে হবে, "তাহলে শরিয়াপ্রধান দেশগুলো এখনও চার "চাক্ষুষ" সাক্ষীর নীতিতে আটকে আছে কেন?"
মানে সমস্যা ইসলামে না, যারা প্রয়োগ করছে, তাদের।
উপরের প্রশ্নের উত্তরটাও সহজ। কারণ এরা পুরো দুনিয়া থেকে একশো বছর পিছিয়ে থাকে।
প্রমান দেই।
যখন প্রথম প্রথম মাইক আবিষ্কৃত হয়েছিল, এবং মসজিদে মাইক ব্যবহারের কথা উঠলো, তখন লোকজন দাবি তুললো ইমামের কণ্ঠস্বর সরাসরি না শুনলে নামাজ কবুল হবেনা। বিলাল (রাঃ) খালি কণ্ঠে আজান দিয়েছিলেন, কোন চোঙা ব্যবহার করেননি। কাজেই আজানে মাইক ব্যবহার করলে সেটা হবে বেদাত! কাজেই এইটা হারাম!
এখন সেইসব মসজিদ, সেইসব মাদ্রাসাতেই মাইক ব্যবহার হয়ে আসছে। এখন যদি শব্দ দূষণের দোহাই দিয়ে মাইক ব্যবহার নিষেধ করেন, কিংবা বলেন যে সাউন্ড কন্ট্রোল করতে, ওরাই তখন আপনার বিরুদ্ধে তেড়ে আসবে।
সৌদি আরবে যখন রেডিও চালু হয়, একদল হুজুর তখন ঘোষণা করলেন এটি কালোজাদু! নাহলে এইটা কিভাবে সম্ভব একজন মানুষের কণ্ঠস্বর শত মাইল দূরেও শোনা যায়? উনারা এই জাদুবিদ্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রেডিও টাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতেন। তারপরে যখন রেডিওতে প্রথম কুরআন তেলাওয়াত শুনে, তখন মেনে নেয় যে এটা কোন জাদুবিদ্যা না, কারন জাদু বিদ্যায় কুরআনের আয়াত পাঠ করা সম্ভব না।
প্রথম দিকে কফি খাওয়া হারাম ছিল। মুসলিমরাই বিশ্বকে কফি পান করা শিখিয়েছে, কিন্তু ওরাই এটা নিষেধ করেছিল। কেন? কারন কফি খায় সুফিরা, তারপরে সারারাত জেগে ঘুরে ঘুরে ওদের স্টাইলে ইবাদত করে, যা মেইনস্ট্রিম ইসলামে নিষেধ। হুজুরদের ধারণা ছিল, কফিতে বুঝি এমন কিছু আছে যা মানুষকে অমনভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করে। পরে নিজেরা খাবার পরে দেখে রাত জেগে কুরআন-তাহাজ্জুদ পড়তে কফির বিকল্প নেই। হয়ে গেল হালাল!
তা বর্তমানে ইসলামী টেলিভিশনও আছে। একসময়ে যারা প্রাণীর ছবির বিরুদ্ধে ফতোয়া দিতেন, তাঁরাই টেলিভিশনে এসে প্রোগ্রাম করেন। ইউটিউবে তাঁদের ভিডিও ভাইরাল হয়। এখন লোকজন বুঝতে পারছেন সবকিছুরই ক্ষতিকর ও কল্যাণকর দুই ধরনেরই দিক আছে। হালাল-হারাম ইত্যাদি সবই নির্ভর করে আপনি কিভাবে সেটা ব্যবহার করছেন। যে এলকোহল পানীয়তে মেশালে নেশা হয়, সেই এলকোহলই কেমিকেলে মিশলে রোগ সারায়। বুঝতে হবে। মদ হারাম, এলকোহল নয়। যে এখনও বলে "এলকোহল" নাজাস, নাপাক, "হারাম" সে কেমিক্যাল সায়েন্স সম্পর্কে জ্ঞানহীন।
তা ইসলামী শরিয়া দেশগুলো, যারা এখনও চার সাক্ষীর নীতিতে নিজেদের বেঁধে রেখেছে, ওদের মাথায় ঢুকছে না যে ডক্টরের রিপোর্টও এক সাক্ষী, ডিএনএ স্যাম্পলের পজিটিভ আইডেন্টিটিও একটি চাক্ষুষ সাক্ষী। যদিও এইটাও ফ্যাক্ট যে স্মার্ট অপরাধী অনায়াসেই এইসবও প্ল্যান্ট করে আসামি ফাঁসাতে পারে, সিনেমা, নাটকে, গল্পে আমরা এমন উদাহরণ প্রচুর পাই, যা বাস্তবে অবাস্তব না। কিন্তু তারপরেও, বিচারের সময়ে এইসব প্রমাণকে ইগনোর করার কোনই উপায় নেই।
ঠিক যেমন আজকের যুগে আমরা কেউ সূর্য দেখে নামাজের ওয়াক্ত নির্ধারণ করিনা। ঘড়ি বাঁধা সময়ে আমরা নামাজ পড়ি। দিন মেঘলা নাকি রোদেলা, কিছুই যায় আসেনা। ঘড়িতে সাড়ে চারটার সময় যদি মেঘের কারনে বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকারও থাকে, আমরা জানি সেটা আসরের সময়, মাগরিবের নয়। আমাদের ঘড়িই তখন আমাদের "চাক্ষুষ" সাক্ষী।
বুঝাতে পেরেছি?
তা যা বলতে লিখতে শুরু করেছি সেটা বলা যাক।
আমাদের মুসলিমদের মূল সমস্যা হচ্ছে, আমরা ধর্মটাকে নিজেদের সুবিধামতন গ্রহণ করি। আমার যতটুকু ফায়দা হবে, ততটুকুই আমি নিব। যেখানে ফায়দা নেই, সেখানে আমি নীরব।
একটা উদাহরণ তুলে আনলে বিষয়টা স্পষ্ট হবে।
ধরেন সম্পত্তির উত্তরাধিকার আইনের ব্যাপারটাই।
ছেলে বেশি পায়, মেয়ে কম পায় - তাই সবার অভিযোগ, কেন "আল্লাহ" এমন না-ইনসাফী করলেন? এই কথা লেখার জন্যও আমাকে আল্লাহ মাফ করুন, কিন্তু আমি শুধু ওদের বক্তব্যই কোট করছি। নিজের কথা এখন বলবো।
এই কথা যারা বলে, তারা এমন বলার ভিত্তি পায় আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এবং আমাদের মুসলিমদের আচার আচরণের কারণেই।
আমরা মানতে চাই না যে আল্লাহ শুধু শুধু ভাইকে বেশি সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করেননি, তিনি সাথে দায়িত্বও দিয়ে দিয়েছেন। যেমন ভরণপোষণ ইত্যাদির। ব্যাখ্যা করতে গেলে আরেকটি আইনের উদাহরণ এখানে টেনে আনলে সুবিধা হবে। এতিমের সম্পত্তির বিষয়টা। আপনার আত্মীয়ের এতিম শিশু সন্তানের দায়িত্ব আপনি নিয়েছেন। তাঁরা ধনী, আপনি গরিব। তাঁদের ভরণ পোষণের ক্ষমতা আপনার নেই। তাঁদের মৃত পিতামাতার সম্পত্তি থেকেই আপনি তাঁদের ব্যয়ভার বহন করতে পারেন। সেই অধিকার আল্লাহ দিয়েছেন। একই সাথে সাবধান করে দিয়েছেন, সেই টাকা নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।
মানে হচ্ছে, ধরেন সেই আত্মীয়ের ব্যাংকে এক কোটি টাকা ছিল। আপনি তাঁর সন্তানদের মাসিক খাওয়া দাওয়া, থাকা, স্কুল কলেজ, টিউশন, জামা কাপড় ইত্যাদি খরচ মেটাতে কয়েক হাজার টাকা সেই একাউন্ট থেকে নিতে পারেন। যত খরচ হচ্ছে, ঠিক ততটুকুই। কিন্তু সেই টাকায় আপনি নিজের বাড়ির ভাড়া, নিজের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা, খাওয়া দাওয়া ইত্যাদির খরচ মেটাতে পারবেন না।
হ্যা, আপনি যদি সে টাকা মেরে দেন, কেউ টেরও পাবেন। টের পেলেও কেউ কিছুই করতে পারবে না। কিন্তু আল্লাহ সেটা আপনার উপর ছেড়ে দিয়ে বলেছেন যে তাঁর কাছে সব হিসাব আছে। শেষ বিচারের দিনে ডেবিট ইকুয়েলটু ক্রেডিট ব্যালেন্স যদি না মেলাতে পারেন, তাহলে আপনার ইনকাম স্টেটে এমন লস দেখবেন যে আফসোস করেও কিছু করতে পারবেন না।
এতিম শিশুগুলো যখন সাবালক হয়ে যাবে, তখন তাঁদেরকে তাঁদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে হবে।
এর একটু এদিক সেদিক হলে আল্লাহর ওয়াদা আছে, আপনার জন্য জাহান্নামের আগুন অপেক্ষমান।
ঠিক একইভাবে, ইসলামিক বিধান অনুযায়ীই বোনের দায়িত্ব ভাইয়ের কাঁধে পড়ে। শুধুমাত্র সে কারণেই ভাইকে নিজের সম্পত্তি থেকেই বোনের জন্য খরচ করতে হয়। পুরো বিষয়গুলোই ব্যালেন্সের উপর। আপনি যদি দায়িত্ব পালন না করে আইন দেখিয়ে সম্পত্তির ভাগ নিয়ে কেটে পড়েন, বোনের খোঁজও নেন না, তাহলে সেই ব্যালেন্স নষ্ট হয়। এবং এক্ষেত্রেও নিজের বোনের হক আদায় না করার অপরাধে আমরা মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আপনার জন্য জাহান্নামের আগুন অপেক্ষমান। আপনার ডেবিট ইকুয়েলটু ক্রেডিট মিলবে না।
বলতে পারেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে যেখানে বড় ভাই বাবা মা বোনের দায়িত্ব একা পালন করেন, ছোটভাই তাহলে একই পরিমান সম্পত্তি পাচ্ছে কেন? ঘটনা এখানেও এক। সব ভাইকেই সবার দায়িত্ব নিতে হবে। একারনেই এই আইন এসেছে। আমরা ব্যালেন্স নষ্ট করি বলেই এই ধরনের প্রশ্ন উঠে।
প্র্যাকটিকেল আরেকটি উদাহরণ দেই। ধরা যাক পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে এক ভাই মানসিকভাবে পরিপক্ক নয়। মানে বিষয় সম্পত্তি সামলানোর ক্ষমতা তাঁর নেই। এক্ষেত্রে কি নিয়ম?
এক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম, এতিমের সম্পত্তি যেমন আপনি একজন "সৎ কর্মচারী" হিসেবে দেখভাল করে যাবেন, নিজের আপন ভাইটির সম্পত্তিও সেভাবেই সৎ কর্মচারীর মতই আগলে রাখবেন। তাঁর যেহেতু বোধশক্তি কম, কাজেই তাঁকে আগলে রাখার "দায়িত্ব" আপনার।
আমার নিজের পরিচিত খুব কাছের এক বন্ধুর ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছে যে ওর বড় ভাই একটু মানসিকভাবে অপরিপক্ব ছিলেন। তাঁর বৌ তাঁর সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়ে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। এমনটা যে কারোর সাথেই ঘটতে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনটা অহরহই ঘটছে। পরিচিত এক মহিলার মায়ের বাড়ি জামাই নিজের নামে লিখিয়ে নিয়ে শ্বশুরবাড়িকে মোটামুটি পথের ভিখিরি বানিয়ে বদমাইশি শুরু করেছে যে সে বাড়ি আর ফেরত দিবে না। কে কি করবে করে দেখাক! এদিকে ব্যাটা পরকীয়া করে বেড়াচ্ছে, বৌ কিছু বলতেও পারছে না। কারন তালাক দিলে মা সহ মহিলাকে পথে নেমে যেতে হবে। এইটা ২০২১ সালের বাংলাদেশের ঘটনা বলছি।
হ্যা, মহিলার ভাইয়ের দায়িত্ব এখানে বোনের পাশে এসে দাঁড়ানো। ইসলাম সেই হুকুমটাই দিয়েছে।
কিন্তু তিনি দাঁড়াবেন না। কেন? কারন তাঁর নিজের সংসারই নাকি চলে না। উনার বৌ বাঁধা দিচ্ছে। উটকো ঝামেলা নিতে নিষেধ করছে।
কেউ স্বীকার করুক বা না করুক, এইটা এ যুগে খুবই কমন ঘটনা। আমরা অতি স্বার্থপর একটা জাতিতে পরিণত হচ্ছি। বৌয়ের বাপ মা অসুস্থ হলে জামাই টাকা দিতে নিষেধ করে। শ্যালক ব্যবসা করতে চায়, দুলাভাইর কাছে টাকা চাচ্ছে। দুলাভাই না করে দিয়েছে। জামাইর বাপ মা ভাই বোন বিপদে পড়লে বৌ ঝামেলা এড়াতে বলে। শ্বশুর শ্বাশুড়ি মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিলে জামাইর মুখ কালো হয়ে যায়। বিয়ের পরপরই যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবার তৈরী হচ্ছে। সংসারের "সুখের উদ্দেশ্য" থেকে বড় কারন ঝামেলা এড়ানো। কারন নতুন বৌকে উঠতে বসতে শ্বাশুড়ির খোটা শুনতে হয়। "এইটা এইভাবে করলে কেন? ওভাবে করলে কেন? মা বাবা বাড়িতে কিছুই শিখায় নাই?" মাঝে মাঝে নিজের আপন মাই এমন সব অন্যায় করেন যে আপন ছেলে/মেয়েই তখন ফলস পজিশনে পড়ে যান।
কে কবে কল্পনা করেছিল বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তা সংখ্যায় দিন দিন বাড়তেই থাকবে? এইসব কিসের কারনে? "ব্যালেন্সের" অভাবে।
তা ঐ ভাই বলে দিয়েছেন মহিলার যদি ডিভোর্স হয়, তাহলে তিনি তাঁর মা এবং বোনের দায়িত্ব নিতে অপারগ।
তাঁকে গালাগালি করার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বলে ফেলি, সেটি হচ্ছে, বাবার মৃত্যুর পরে ভাইবোনের মাঝে সম্পত্তি "সমান" ভাগ হয়েছিল। মানে, ইসলামী শরিয়া মতে, ভাই নিজের অংশ থেকে একাংশ বোনের নামে ছেড়ে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র এই কারণেই যে তিনি ভবিষ্যতে দায়িত্ব নিতে পারবেন না। বরং সে নিজের টাকায় যা খুশি করুক।
তাহলে এখন কিন্তু দৃশ্যপট বদলে গেল। মহিলা ভাইয়ের কাছে "দাবি" করার অধিকার রাখছেন না, কারন সেটা আগেই তিনি ক্যাশ করে ফেলেছেন।
আর যেসব ভাইয়েরা সম্পত্তি বন্টনের সময়ে খুবই ইসলামী হয়ে যান, একদম অংক কষে নিজের ভাগ বুঝে নেন, তাঁদের কিন্তু তখন ফরজ হয়ে যায় বোনের বিপদে আপদে সর্বাবস্থায় সাহায্য করার। কারন, ওর অধিকার আছে সেই সম্পত্তির উপর। ইসলাম বলছে মেয়েকে সম্পত্তির ঐ নির্দিষ্ট পরিমান "মিনিমাম" দিতেই হবে। এর বেশি "দিতে পারবেনা" এমন কোথাও লেখা নেই। হ্যা, শর্ত আছে যে যার ভাগ থেকে (ভাই) এনে দেয়া হচ্ছে, সে যেন মন থেকেই তা "সম্প্রদান" করে। মানে "দায়িত্ব" নিতে পারবো না, তাই নিজে থেকেই ছেড়ে দেয়া। "যদি" সেটা না করে, যদি সে টাকা মেরে দেয়, এবং বোনের প্রয়োজনের সময়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যায়, তখন? এতিমের সম্পদের সময়, মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের সম্পদের সময়ে যে নিয়ম, এখানেও সেই একই নিয়ম ও পরিণতি। সাবধান! আল্লাহ রসিকতা করার উদ্দেশ্যে এইসব আয়াত নাজেল করেন নাই।
বুঝাতে পেরেছি?
এখন এই আয়াত ও নিয়ম নাজেলের প্রেক্ষাপট জানা যাক। এটি তখন নাজেল হয় যখন সমাজে মেয়েদের উত্তরাধিকারী করাতো দূরের কথা, ওদেরকেই উত্তরাধিকার সূত্রে বিলি বন্টন করা হতো। মানে, পিতার অন্যান্য স্ত্রী, মানে ছেলের সৎ-মায়েরা সম্পত্তি হিসেবে সৎ পুত্রদের মাঝে ভাগ হতো। বোঝার সুবিধার্থে আরও ভেঙে বললে, এককালে যে সৎ মা ছিল, পরবর্তীতে সেই হয়ে যায় স্ত্রী, সন্তানের মা। জ্বি, চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মতন শোনালেও এতটাই জঘন্য ছিল আরব সমাজ ব্যবস্থা। রোমান সম্রাটদের কেউ কেউ নিজের বোনের সাথে বিয়ে করতো। রাজ রক্ত পবিত্র রাখতে আপন ভাইবোনদের মধ্যে বিয়ের রীতি ছিল মিশরের ফারাওদের মধ্যেও।
ইসলাম এসে প্রথমেই এইসব জঘন্য রীতি বন্ধ করে। এবং মেয়েদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করে।
স্বাভাবিকভাবেই পুরুষ সাহাবীগণ নবীজির (সঃ) কাছে এসে বলেন, "আমরা যুদ্ধ করি, বাণিজ্য করি, খেতে খামারে খেটে মরি, তাহলে সম্পত্তির মধ্যে কেন মেয়েদের ভাগ দিব? সব ব্যয়ভারতো আমরা নিজেদের সম্পত্তি থেকেই দিচ্ছি। ওদের এই বোনাস কেন?"
নবী (সঃ) সহজ সরল উত্তর দিয়ে বলেন, কারন আল্লাহ হুকুম করেছেন তাঁদের ভাগ দিতে হবে, তো দিতে হবে।
ইসলামে "অধিকার" বা "হক আদায়"টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটার উপরই সবকিছুর ব্যালেন্স নির্ভর করে। আপনি বাড়িতে পশু পালছেন, পশুরও হক আছে আপনার উপর। ওকে সময় মতন খাওয়ানো, অতিরিক্ত পরিশ্রম না করানো, অযথা নির্যাতন না করা ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনসব হাদিস ভর্তি। আমি ঠিক বলছি না? আমরা শরীরে ট্যাটু করি না কেন? বেয়াম করা, শরীরের উপকারী খাদ্য গ্রহণ, রোগে চিকিৎসা ইত্যাদি কেন? নিজের শরীরের হক আদায় করা। ইসলাম মানেই হক আদায়। আল্লাহর হক ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত আদায়। আমার হক আছে আল্লাহর প্রতি যা তিনি আদায় করেন। নাহলে বেহেস্ত, দোজখ ইত্যাদি কি? সৎ কাজের পুরস্কার, অসৎকাজের শাস্তি, এইতো? এটাইতো হক! আপনি আল্লাহকে মানলেন না, মন যা চাইলো তাই করে বেড়ালেন, আল্লাহ কিন্তু ঠিকই নিজের হক আদায় করে গেলেন। আপনাকে হায়াৎ দিলেন, সুস্থ দেহ দিলেন, টাকা পয়সা দিলেন, জীবন উপভোগ করার সুযোগ দিলেন, পরিবার দিলেন, তারপরেও আপনি তাঁর হক মেরে দিলেন। কাজটা কি ঠিক হলো? তারপরেও আশা করেন/অভিযোগ করেন, কেন আল্লাহ কুরআনে দোজখের বর্ণনা দিয়েছেন? আরে বেয়াক্কেল, দোজখের সাথেই যে বেহেস্তের সুসংবাদ দিয়েছেন, সেটা দেখলেন না? যদি দোজখ নিয়ে কমপ্লেন থাকে, তাহলে বেহেস্তে যাবার মতন কাজ করেন। সবার হক আদায় করেন।
বাবা মায়ের হক আছে আমাদের উপর, আমাদের হক আছে তাঁদের উপর। প্রতিবেশীর একের অপরের প্রতি হক আছে। সরকারের আছে হক জনতার উপর, জনতার আছে সরকারের উপর। কোথাও অন্যায় হতে দেখলে আপনি ন্যায়ের হক আদায় করতেই সেটার প্রতিবাদ করবেন। না করলেই ব্যালেন্স নষ্ট হবে। দেশে দুর্নীতি আসবে। আজকের বাংলাদেশের অন্যায় ও দুর্নীতির পেছনে দায়ী কে? সমানে সমান দায় আমাদের সবার। হয় আমরা করছি, নাহয় আমরা একে প্রশ্রয় দিচ্ছি। এর বাইরে কোন থার্ড ক্যাটাগরি নাই। যদি বলেন, "আমিতো প্রতিবাদ করি" - তাহলে সেটাও প্রশ্রয় দেয়ার কাতারেই পড়ে। এমন প্রতিবাদ করলাম যে দুর্নীতিবাজরা পাত্তাও দিল না, এই প্রতিবাদ কি আমি শোকেসে সাজায়ে রাখবো?
আপনি রমজান মাসে টেবিল ভরে ইফতার করলেন, অথচ আপনার পাশের বাড়ির লোকেরা আধপেটা খেয়ে ঘুমাতে গেল, এইটা চলবে না। ধনীর সম্পদে আড়াই ভাগ গরিবের হক থাকে, সেটা আদায় করতেই হবে। আর গরিবের যেহেতু কিছু করার ক্ষমতা নেই, তাই আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে বলছেন তিনি আপনাকে কমসেকম দশগুন ফেরত দিবেন। এখন বিষয়টা বুঝতে পারছেন?
এই যে আমি বিশাল বিশাল লেখা লিখে লোকজনকে জানানোর চেষ্টা করি, সেটা "জ্ঞানের" হক আদায়। আমার শিক্ষক আমাকে শিখিয়েছেন, আমি কাউকে শিখালাম, তিনিও কাউকে শিখাবেন। ইসলামে সবকিছুই "টু ওয়ে স্ট্রিট।" এক তরফা কিছুই নেই। আবারও বলি, "ব্যালেন্স!"
আপনি যেই মুহূর্তে একজনের হক মারার চেষ্টা করবেন, সেই মুহূর্তেই বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে। তখনই লোকে প্রশ্ন তুলবে। আপনাকে নিয়ে না, ইসলামকে নিয়ে। ভিন্নধর্মের মানুষদের, নাস্তিকদের গালাগালি করবেন কিভাবে? কোন যুক্তিতে? ওরাতো আশেপাশে কোন প্রকৃত মুসলমানের উদাহরণ পাচ্ছে না।
এখন পর্যন্ত সব বুঝতে পারছেন? এখন একটু সময় নিয়ে ভাবতে বসুন। আপনি কার কার হক মেরে দিচ্ছেন। সেটা আদায় করবেন কবে? কিভাবে? মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বলতে পারেন, "it's never too late."
তাহলে শুরু করে দিন। বিসমিল্লাহ!
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:০৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই, নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে রমজান মাসটা আযাবের মাস হয়ে যায়।
২| ২০ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৬:১১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: চারজন সাক্ষী হলেই চলবে না ,এমন সাক্ষী হতে হবে যারা প্রত্যক্ষ দেখেছে যেমন করে সুরমা দানির ভিতর সুরমা শলাকা প্রবেশ করায়।তার অর্থ চার জনকে দাঁড় করিয়ে তার সামনে জিনা করতে হবে ,তবেই মেয়ে বিচার পাবে।কি জংলী আইন।
আর একটি ডাহা মিথ্যা বলেছেন।ইসলামের আগে ছেলে মেয়ে উভয়েই পিতার সম্পত্তির সমান অংশ পেত।স্বামী মারা গেলে স্বামীর সম্পদের অংশ পেত,তার প্রমান বিবি খাদিজা এতো সম্পদের মালিক হল কিভাবে।এই সম্পদ নিশ্চয় নবীর ছিল না।প্রয়োজনে হাদিস থেকে দেখাবো।
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:০২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সমস্যা এখানেই, সবাই বিবি খাদিজাতেই আটকে থাকেন। এর বেশি পড়াশোনার দৌড় নেই কারোর। ভাই, আমাদের সেরা দশ সাহাবী, যাদের জান্নাত নিশ্চিত, তাঁদের লিনিয়েজেই আপনি আমার তথ্যের সত্যতা পাবেন। আর যদি সব নারীই উত্তরাধিকার সম্পত্তি পেত, তাহলে সাহাবীরা কেন কুরআনের আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিলেন নবীর কাছে?
আর বিশ্বের "ইসলাম" এমন কোন বিধি দেয়নি যে ধর্ষণ প্রমানে চার সাক্ষী লাগবে, ওটা ইরানের শরিয়া আইন। কুরআন বা হাদিস অনুযায়ী যেভাবেই প্রমান করতে পারবেন, "অকাট্য" হলে শাস্তি প্রযোজ্য। "জংলী আইন" যে বলছেন, পৃথিবীর কোন দেশের কোন আইনে আধা ডাউট থাকলেও ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট নিশ্চিত করে সেটা বলতে পারেন? বিনা বিচারে দণ্ডের আইনই বরং জংলী।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৬:৩৭
এ আর ১৫ বলেছেন: আপনার মত মানুষের কাছে চার সাক্ষীকে জাস্টিফাই করে এই ধরনের লিখা আশা করিনি । আপনাকে কাট মোল্লাদের থেকে আলাদা ভেবে এসেছি কিন্তু সত্যই অবাক হোলাম আপনার এই পোস্টটি দেখে --
যেখানে আপনার বলা উচিৎ ছিল -- ধর্ষন প্রমাণে চার সাক্ষীর আব্যশিকতা কোরান বিরুধি, সেটা না করে কাটমোল্লা যুক্তির অবতারনা করেছেন , দেখুন কোরানে শুধু ব্যাভিচার প্রমাণ করার জন্য ৪ সাক্ষীর কথা বলেছে , ধর্ষন প্রমান করার জন্য নহে
- -- নিসা-র ১৫ নম্বর আয়াত : − “ব্যাভিচারিণী নারীদের বিরুদ্ধে চারজন পুরুষকে সাক্ষী হিসাবে তলব কর।” --
আপনি আপনার বক্তব্য প্রমাণের জন্য নারি কর্তৃক মিথ্যা যৌনাচারের যে ঘটনা নিয়ে এসেছেন --- সেগুলোর সাথে ৪ সাক্ষীর আব্যশকতা কি কারনে ? আমেরিকাতে কি ৪ সাক্ষীর প্রয়োজন আছে । কোরানে ব্যাভিচার প্রমাণ করার জন্য ৪ সাক্ষীর কথা আছে ধর্ষনের জন্য নহে । আপনার তো দাবি করা উচিৎ ছিল ধর্ষন প্রমাণ করার জন্য ৪ সাক্ষীর বিধান কোরান লংঘন ।
যদি এই পোস্টটা নূর সাহেব বা নতুন নকিব সাহেব লিখতো , তাহোলে কিছুই বলার ছিল না কিন্তু আপনি লিখেছেন দেখে সত্যই অবাক হোলাম এবং ধাক্কা খেলাম কারন আপনার আগের লিখার সাথে এই লিখার দাবি মানায় না । ধন্যবাদ
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৫২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ইসলামে ধর্ষণে চার সাক্ষ্যের শর্ত প্রযোজ্য না। যেভাবেই পারেন, প্রমান করেন, শাস্তির বিধান ভয়াবহ। ওটা ইরানি শরিয়া আইনের শর্ত ও বিধি।
তবে মহিলার প্রধান অভিযোগ, অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি কেন দেয়া হয়না? কেন প্রমান চায়? প্রমান করতে না পারলে কেন উল্টো অভিযোগকারীকেই শাস্তি পেতে হয়? আমার এই লেখা সেই পয়েন্টেই।
৪| ২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:৩২
এমেরিকা বলেছেন: লাল ছাগলকে জিজ্ঞেস করুন তো সে কোন শুয়োরের কাছ থেকে ইসলাম শিখেছে? সেই শুয়োরটাকে আমি গু মাখা জুতা দিয়ে পেটাতে চাই। খাদীজার পিতা খুওয়াইলিদ তৎকালীন মদীনার সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলেন। তার মৃত্যুর পর পিতার সম্পত্তি পুরোটা তিনি একাই পান কারণ তার দুই ভাই তখনও প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি।
কুরআনে কোথাও ধর্ষণের ব্যাপারে কোন বিধি বিধান নেই। কারণ তৎকালীন আরবে ধর্ষন বলে কিছু ছিলনা। মেয়েদের সাথে দাসীর মত আচরণ করা হত বলে ধর্ষনকে স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবেই চালানো হত। কাজেই আমাদের সাধারণ বুদ্ধিজ্ঞানে পাই, ব্যভিচারের জন্য যে শাস্তি কুরআনে বর্ণিত আছে, তাই ধর্ষকদের জন্য প্রযোজ্য। ধর্ষিতা পরিস্থতির শিকার তাই তাকে ব্যভিচারী বলা যাবেনা এবং ব্যাভিচারের আইন তার জন্য প্রযোজ্যও হবেনা।
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৫৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ইসলামে ধর্ষণে চার সাক্ষ্যের শর্ত প্রযোজ্য না। যেভাবেই পারেন, প্রমান করেন, শাস্তির বিধান ভয়াবহ। ওটা ইরানি শরিয়া আইনের শর্ত ও বিধি।
তবে মহিলার প্রধান অভিযোগ, অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি কেন দেয়া হয়না? কেন প্রমান চায়? প্রমান করতে না পারলে কেন উল্টো অভিযোগকারীকেই শাস্তি পেতে হয়? আমার এই লেখা সেই পয়েন্টেই।
সূরা মায়েদার তেত্রিশ নম্বর আয়াত পড়েন, ধর্ষণকে তুলনা করা হয়েছে আল্লাহর সাথে যুদ্ধ ঘোষণার সাথে। সেখানে স্পেসিফিক শাস্তির নির্দেশনাও আছে।
আবু দাউদের ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট চ্যাপ্টার পড়েন, সেখানে হাদিস আছে "ধর্ষণের" শাস্তি হিসেবে নবী (সঃ) একজনকে পাথর মেরে প্রাণদন্ড দিয়েছিলেন।
খাদিজার "ভাই" ছিলেন, এই তথ্য কোথায় পেলেন? তাঁর বোন হালা ছিলেন, যার ছেলের সাথে তাঁর বড় মেয়ে জয়নবের বিয়ে হয়েছিল। তিনি স্বামীর সম্পত্তি পেয়েছিলেন যা খাটিয়ে তিনি ধনাঢ্য হয়েছিলেন। মেয়েদের যদি সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করাই হতো, তাহলে কুরআনের আয়াতের ব্যাপারে, সাহাবীরাই কেন প্রশ্ন তুললেন?
৫| ২০ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:১১
নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: দেড় বিলিয়ন মুসলিমের ভেতর বাংলাদেশে ১৫ কোটির বেশি মুসলিম থাকে যদি জনসংখ্যা ১৮ কোটি ধরি। এতজনের মধ্যে প্রকৃত মুসলিম খুঁজে পেতে এখন যদি আতশ কাচ লাগে তাহলে তো কোথাও না কোথাও গভীর সমস্যা আছে। সেই সমস্যাটা কি আর সমাধান কি ?
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:০৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সমস্যা এখানেই যে লোকজন নিজের নিজের "হক" আদায় করছে না।
৬| ২০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: ইসলামের বিষয় গুলো যথেষ্ঠ হাস্যকর।
এই যেমন মাইক এ আযান প্রচার নিয়ে কত কাহিনী!!!
২২ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:০৬
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জ্বি ভাই, ইসলামের বিষয়গুলো খুবই হাস্যকর। কিন্তু সাতান্নধারা, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক খুনের আসামি ক্ষমার আইন, ইত্যাদি খুবই যৌক্তিক।
৭| ২১ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন, সেটা জানতে। নতুন কেউ আর মন্তব্য করেনি।
৮| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ২:১১
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আমরা ধর্মটাকে নিজেদের সুবিধামতন গ্রহণ করি।
আমার যতটুকু ফায়দা হবে, ততটুকুই আমি নিব।
যেখানে ফায়দা নেই, সেখানে আমি নীরব।
..................................................................................
সহমত, আমাদের ঈমানের জোর কমে গেছে তাই নানাহ সমস্যার
মাঝে পড়ে আমরা কর্তব্য পালনে ভুলে যাই ।
.................................................................................
আমার একটা প্রশ্ন থাকল, মা বাবা সব সময়ই সম্মানের জায়গায়
থাকবে এটা আমরা মানি, কিন্ত কিছু কিছু বাবা /মা ছেলে বা মেয়ে বড়
হবার পরও নিজ কর্তৃত্ব ছাড়তে চাননা , এমনকি বিয়ে হবার পরও মেয়ে /ছেলেকে
নিজ কর্তৃত্বে রাখতে চান !!!
এর সমাধান ইসলাম কি বলে ???
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৬:০৫
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: হক আদায় বড়োই কঠিন কাজ ভাইসাহেবদের জন্য। আরো সহজ কিছু করতে বলুন।
মূল্যবান ও সময়োপযোগী পোস্ট। বিশেষত অতি সন্নিকটে রমজান মাস যখন আমাদের ব্যবসায়ী বেরাদারগণ ইহকালের অনেক নেকী হাসিলের জন্য পেঁয়াজ, রসুন, বেগুন সহ হেনো কিছু বাদ নেই যার দাম বাড়িয়ে দিবেন - হক আদায় তো হনুজ দূর আস্ত।