নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের দাওয়াত

২৬ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১০:১৬

ঘটনা এক: এক বাংলাদেশী ক্রিকেটার ফেসবুকে তাঁর পরিবারের ছবি দিয়েছেন। জীবনের আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত তিনি ভক্তদের সাথে শেয়ার করতে চান। অমনি "ভূতের মতন বৌ!" "পেত্নীর মতন চেহারা!" ইত্যাদি কমেন্ট ছাড়াও হাজারে হাজারে কমেন্ট জমা হতে শুরু করলো, "বৌয়ের পর্দা কই?" "তোর দাড়ি কই?" "নামাজ রোজা বাদ দিয়া ক্রিকেট খেইলা বেড়াস! দোযখে যাবি!" ইত্যাদি ইত্যাদি।

ঘটনা দুই: খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য পরিচিত কোন নায়িকা নিজের প্রোমোশনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। প্রায়ই সেখানে নিজের ছবি পোস্ট করে ভক্তদের সাথে কানেকশন ধরে রাখতে চান। সেখানেও মহিলার চেহারা, বুকের সাইজ ইত্যাদি নিয়ে অশ্লীল কমেন্টের পাশাপাশি হাজারে হাজারে কমেন্ট জমা হয়, "বেশ্যা-মাগিগিরি বন্ধ করে আল্লাহর পথে আয়।" "পর্দা কর!" "নামাজ পড়!" "কুরআন পড়ছিস জীবনেও?"

ঘটনা তিন: রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কোন সাধারণ বাঙালি তরুণী। অমনি আশেপাশ থেকে কিছু লোক চিৎকার শুরু করবে, "মাথায় ওড়না দে!" "হিজাব কই তোর?"

ঘটনা চার: কারোর বাচ্চা গান গেয়েছে। আহামরি কিছু না গাইলেও বাবা মায়ের কাছে তাঁরাই এল্টন জন আর লতা মঙ্গেশকর। তাঁরা সেই গানটি ভিডিও করে অতি গর্বের সাথে ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। সেখানেও কমেন্ট জমা হতে শুরু করবে, "গান বাজনা হারাম!" "আমার সন্তান হলে আমি গান না শিখিয়ে কুরআন শিখাতাম।" "সূরা পাঠের ভিডিওতো দিতে দেখি না!"

এইরকম ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে, হাজারে হাজারে, লাখে লাখে।
এতে একটা সমস্যা খুব প্রকট হয়ে চোখে পড়ছে এবং তা হচ্ছে, বাংলাদেশে এখন ফ্যান্টিসিজমের উত্থান ঘটছে, এবং সেটা রোধ করা মোটামুটি অসম্ভব হয়ে গেছে।
ফ্যানাটিসিজম হচ্ছে এমন এক মতবাদ, যার মানে হচ্ছে, "my way or highway." মানে "আমার কথা মানলে মান, নাহলে বিদায় হওয়া ছাড়া তোমার আর কোন চয়েস নাই।"
সমস্যা হচ্ছে, যারা এইসব বাণী প্রচার করছে, তারা নিজেরাই ইসলামবিরোধী কাজ করছে। প্রথমত, ওরা ভাবছে, ওরা ধার্মিক তাই ওরা উত্তম। তারা বেহেস্তি আর বাকিরা সবাই দোযখে যাচ্ছে। ইসলাম এই অহংকার এলাউ করেনা।
দ্বিতীয়ত, নারীর পর্দা যেমন ফরজ, তেমনই পুরুষের চোখের পর্দাটাও ফরজ। পরপর দুই আয়াতে এই নির্দেশ এসেছে। আপনি যে মহিলাকে পর্দা করতে বলছেন, সেই মহিলার দিকে চোখ তুলে তাকানোরই কথা ছিল না আপনার। নিজে আইন না মেনে অন্যকে আইন শিখাচ্ছেন, এই অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে?
আর তৃতীয়ত, ফেসবুকও "সময় নষ্টের" স্থান। এখানে নায়িকার প্রোফাইল ঘাটাঘাটি করে "সময় নষ্ট" (যেকারনে গান বাজনা হারাম ইসলামে) করে আপনিও অপরাধ করছেন। ধার্মিক হলে এই সময়টা জিকির আসগার করে কাটাতেন।

ফেসবুক এবং ইন্টারনেট সস্তা হয়ে যাওয়ায় এই এক সমস্যা হয়েছে। যে কেউ যে কারোর পোস্টে কমেন্ট করতে পারে। ভাই-বোনে ব্যক্তিগত আলাপ করছে, অমনি উটকো কোন আপদ মাঝপথে এসে কমেন্ট করে বলবে, "আল্লাহকে স্মরণ করেন।" এই স্মরণ বানানটাও ঠিক মতন লিখতে পারবে না, সেই জ্ঞানও নেই, লিখবে "সরণ।" সে আল্লাহকে "সরণ" (Displacement) করতে বলছে। কত বড় আহাম্মক! আলাপের সিরিয়াস মুড মুহূর্তেই পাল্টে কমেডি হয়ে যায় এদের জন্য।
যাই হোক, মূল সমস্যা হচ্ছে, এখন বাংলাদেশে কোটি কোটি ভদ্রলোক ও মহিলা ইসলামের পথে দাওয়াত দেয়াকে নিজের জীবনের একমাত্র মিশন হিসেবে ধরে নিয়েছেন। খুবই ভাল কথা। এটাই হওয়া উচিৎ প্রতিটা মুসলিমের জীবনের লক্ষ্য। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এরা লাভের চেয়ে ক্ষতি করছে বেশি। উপরে যে উদাহরণগুলো দিলাম, সেক্ষেত্রে একশতে একশভাগ সুযোগ থাকে লোকজনকে ইসলামের পথ থেকে দূরে ঠেলে দেয়ার। ইসলামের পথে দাওয়াত দেয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, ওরা যা করছে, সেটা কোন পদ্ধতি না, বরং বিরক্তি। এক ভিডিও দেখলাম সেদিন, একদল বান্ধবী আড্ডা দিচ্ছে, অমনি এক ছাগল ক্যামেরা আর মাইক নিয়ে উপস্থিত। সেখানে হিন্দু মেয়েটিকে সরাসরি প্রশ্ন করছে "আপনি মূর্তি পূজা কেন করেন, আপনার ধর্মগ্রন্থেতো সে নির্দেশ নাই।"
মেয়েটা অপ্রস্তুত হয়ে গেছে। আর লোকটা খুব বড় "জাকির নায়েক" হয়ে গেছে ভেবে অতি গর্বের সাথে সেই হিন্দু বোনকে দাওয়াত দেয়া ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছে। এর নাম দাওয়াত? কোন ছাগল একে শিখিয়েছে? কিন্তু লাইক ও শেয়ার দিয়ে ভরে গেল ভিডিও। অদ্ভুত!
আরেকবার কি হয়েছে শুনেন, এক এসিড দগ্ধ মেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলছে, সেখানে কিছু মুমিন মুসলমান মন্তব্য করতে শুরু করলো, "ভূতের মতন সেজে লাইভে না এসে নামাজ পড়েন।"
মেয়েটা উত্তর দিল, "নামাজ পড়ার সময়ে কি লাইভ করে আপনাকে দেখাবো?"
সবচেয়ে বিদঘুটে কমেন্ট ছিল এই যে, "আপনাকে বাইরে লোকজন দেখলে অজ্ঞান হয়ে যাবে।"
একটা এসিড দগ্ধ মেয়ের মন মানসিকতার বিন্দুমাত্র পরোয়া না করে এরা ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছে। আক্কেল কতটা অনুপস্থিত হলে "মানুষ" এমন করে?
তো, ইসলামে কার্যকরভাবে "দাওয়াত" দেয়ার উপায় কি? সেটা কুরআন এবং নবীর জীবনীতেই আছে।

ইসলামপূর্ব আরবের কথা আমরা সবাই জানি। বর্ণবাদ ছিল শুধু আরব না, বিশ্বের প্রতিটা সমাজেই। ব্যাভিচার, মদ ও মাদক সেবন ইত্যাদি সবই ছিল অতি সাধারণ ঘটনা। সমাজের এলিট শ্রেণীর লোকেরাই করতেন, এবং যেহেতু সবাই করতেন, তাই সেটাই ছিল সংস্কৃতি।
এই সময়ে ইসলামের আগমন ঘটে। আল্লাহ নির্দেশ দেন, "আল্লাহ এক এবং মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর রাসূল" - এই কথা বিশ্বাস করতে ও মেনে চলতে। যে এইটুকু মানবে, সেই মুসলিম।
এর পরপর নাজেল হয় মুসলিমদের প্রতি প্রথম নির্দেশ, "মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ করা যাবেনা।"
নবীজির প্রথম ভাষণ থেকে শুরু করে জীবনের শেষ ভাষণ পর্যন্ত সর্বত্র তাঁর বক্তব্য ছিল এই, মানুষে মানুষে কোন পার্থক্য নাই। যে বিশ্বাস করবে জন্মসূত্রে কেউ অমুক গোত্র, অমুক বর্ণের লোক, তাই সে বাকিদের চেয়ে উত্তম; সে মুসলিম হতে পারবে না।
আজকের যুগে আমরা গর্ব করে বলি, কুরআন রেসিজমের বিরুদ্ধে সেই আদিকালেই আওয়াজ তুলেছে, অথচ এই আয়াতগুলোর কারণেই কুরাইশরা ইসলামকে গ্রহণ করতে পারছিল না। আবু সুফিয়ান, আল ওয়ালিদ প্রমুখ নেতারা কিছুতেই মানতে পারছিল না যে বেলাল(রাঃ), আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদরা (রাঃ) তাঁদের সমগোত্রীয় - "মানুষ।" আল্লাহর চোখে কোন ভেদাভেদ নেই।
কুরআনে আল্লাহ এরপরে নির্দেশ দিলেন, "অভাবগ্রস্ত, এতিম ও বন্দিকে খাবার দিতে। নিজের পাতে খাবার না থাকলেও আল্লাহকে ভালবেসে, আল্লাহর উপর ভরসা করে তাদের পাতে তুলে দিতে। (সূরা আদ-দহর, ৮-৯)
যখন মক্কায় এই আয়াত নাজেল হয়, তখন মক্কা সহ গোটা পৃথিবীতে মুসলিম সংখ্যা হাতে গোনা যায়। দশ পনেরো জন হবেন। অভাবগ্রস্ত মুসলিম নেই, এতিমও নেই, বন্দিও নেই। মানে হচ্ছে, আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন, কাফেরদের (অমুসলিম) এতিম শিশু, অভাবগ্রস্ত কাফের এবং বন্দির প্রতি মানবিক হতে।
এতিম-মিসকিনদের প্রতি দয়া ও সেবার নির্দেশনা দিয়ে আরও প্রচুর নির্দেশনা আসে। পাশাপাশি নির্দেশ আসে পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্বশীল হতে। তাঁদের আচরণে "উফ" পর্যন্ত না বলতে।
এইভাবে আসতে থাকে একের পর এক নির্দেশ। নামাজের নির্দেশ আসে কবে? মেরাজের সময়। মানে নবীজির মাক্কী জীবনের একদম শেষভাগে। ইসলাম প্রচারের বারো তেরো বছর পরে।
"জুয়া ও মাদক নিষেধ" - এই নির্দেশ আসে কবে? মদিনায়। মানে ইসলাম প্রচারের পনেরো ষোল বছর পরে। এর আগে পর্যন্ত মোটামুটি সব সাহাবীই মদ খেতেন। হালাল ছিল, খাবেন না কেন? সবাইতো মোহাম্মদ (সঃ) আর আবু বকর (রাঃ) নন যে জীবনেও তা ছুঁয়ে দেখবেন না।
আর ছেলে-মেয়ের পর্দার নির্দেশ এলো কবে? মদিনা জীবনের মধ্যভাগে। মানে ইসলাম প্রচারের আঠারোতম বছরে। রমজান মাসে রোজা, হজ্ব মৌসুমে হজ্ব ইত্যাদিও নির্দেশনা আসে মদিনায় হিজরতের পরে।
তাহলে এ থেকে আমরা আমাদের কমন সেন্স ও লজিক খাটিয়ে কি পাই? আল্লাহ কেন ধারাবাহিকভাবে সময় নিয়ে এইভাবে ইসলাম ধর্মের বাণী নবীর মাধ্যমে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন? তিনিতো চাইলেই একটা বই আকারে কুরআন পাঠিয়ে বলতে পারতেন "চ্যাপ্টার অনুযায়ী ওদের বুঝিয়ে দাও। প্রতি মাসে একেকটা চ্যাপ্টারের উপর পরীক্ষা নিবে। পরীক্ষায় পাশ করলে বেহেস্ত, না করলে দোযখ!"

জ্বি না। আল্লাহ শ্রেষ্ঠ কৌশলী। তিনি ভাল করেই তাঁর বান্দাদের চিনেন। তাই তিনি প্রথমে তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করার সময় দিয়েছেন। সবচেয়ে কঠিনতম কাজ এটি। আপনাকে পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারপরে ধীরে ধীরে কিছু কার্যাবলীর নির্দেশ দিয়েছেন যা পালন করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর রহমত ও ভালবাসার সাথে পরিচিত হতে শুরু করবো। এইভাবেই ধীরে ধীরে যখন আমাদের ঈমান তাজা হয়ে যাবে, তখন আমরা চোখ বন্ধ করে তাঁর নির্দেশ পালন করবো।
মদ জুয়ার আসক্তি প্রচন্ড খারাপ আসক্তি। এ থেকে সহজে মুক্তি মেলে না। আধুনিক যুগে প্রচন্ড দামি শোধনাগারে গিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করেও অনেকে এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন না। অথচ আল্লাহর মাত্র একটি নির্দেশ শোনা মাত্র মুসলিমরা নিজের বাড়িতে জমিয়ে রাখা মদ এনে রাস্তায় ফেলে দেন। নবীর (সঃ) কণ্ঠ থেকে কুরআনের আয়াত শুনেই এক সাহাবী ছুটে এসে যখন তাঁর মদ্যপানরত বন্ধুদের এই নিষেধাজ্ঞার কথাটি শোনান, পানরত অবস্থা থেকে তাঁরা মুখ থেকে কুলি করে ফেলে দেন, কারন আল্লাহ "নিষেধ" করেছেন। কোন পুলিশ, আর্মি, মিলিটারি গিয়ে সার্চ করে করে তাঁদের বাড়ি থেকে মদ উদ্ধার করে ধ্বংস করেননি। কিভাবে ও কেন এমনটা হলো? কারন সুদীর্ঘ পনেরো বছরে তাঁদের কয়লার হৃদয় একেকটা হীরকখণ্ডে পরিণত হয়েছিল। ঠিক যে কারনে কোন মুসলমান সারাদিন রোজা রেখে চোখের সামনে খাবার নিয়ে বসেও সূর্যাস্তের পূর্বে মুখে এক বিন্দু খাবার তুলে না। একেই বলে তাকওয়া! এটি পুরোপুরিই প্র্যাকটিসের ব্যাপার। সময়ের ব্যাপার।
যদি আল্লাহ শুরুতেই বলে দিতেন "মদ হারাম! জিনাহ হারাম!" তাহলে এই সাহাবীরাই প্রথমেই বলতেন, "আমি মদ ছাড়তে পারবো না, জিনাও না। ইসলামগ্রহণ আমাকে দিয়ে হবেনা।"
কথাটা শুনে চোখ কপালে তুলে ফেলছেন? ভাবছেন, সাহাবীদের নিয়ে এমন কথা বলার ধৃষ্টতা আমি কোথায় পেলাম? আসলে কথাটি আমার না, আমাদের সবার প্রিয় আম্মা হজরত আয়েশার (রাঃ) উক্তি। বুখারী শরীফের ৬৬ নম্বর অধ্যায়ের ১৫ নম্বর হাদীসটি দেখে নিন। সাহাবীদের মন মানসিকতা ও সমসাময়িক সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে আমার আপনার চেয়ে নিশ্চই তাঁর ধারণা বেশি? তাঁর যদি এমন উক্তি হয়ে থাকে, তাহলে সাধারণ বাঙালি কিভাবে আশা করে আমি কাউকে কুরআনের দাওয়াত দিলাম, পর্দার কথা বললাম আর অমনি সে সব ছেড়ে ছুড়ে মুমিন মুসলমান হয়ে যাবে?
বাঙালি কাউকে পালে না, পুষেও না, তারপরেও এমন কথা শোনায়। অথচ আল্লাহ যখন নির্দেশ দিয়েছেন অভুক্তকে খাওয়াতে, এতীমকে দেখভাল করতে, তখন কিন্তু বলেন নাই ইসলামের বাণী প্রচার করতে। আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করে যাবেন, "হেদায়েত" পাওয়ার যদি ইচ্ছা তাঁর থাকে, তবে সে নিজেই আল্লাহর দিকে এগুবে।

আপনি কাউকে ইসলামের দাওয়াত দিতে চান? তাহলে তাঁর সাথে আগে নিজে পরিচিত হন। আপনার কাজের মাধ্যমে আপনাকে, আপনার ধর্ম, আপনার নবী, আপনার আল্লাহ সম্পর্কে সে ধারণা পাবে। হঠাৎ উটকো আপদের মতন অচেনা মানুষকে ভড়কে দেয়ার মাঝে বুদ্ধিহীনতা ছাড়া আর কিছুর ছাপ থাকেনা।
আমাদের এডমিন জুয়েল ভাইয়ের কথাই ধরা যাক। তাঁর মা অসুস্থ ছিলেন। রক্তের প্রয়োজন ছিল। এক দাড়িওয়ালা জোব্বাপরিহিত মুসলিম এসে রক্ত দিয়ে গেলেন। জানেন ভদ্রমহিলা অমুসলিম। কেন তিনি এমনটা করলেন? কারন আল্লাহর নির্দেশ আছে। অথচ সেইদিনই শাল্লায় দাঙ্গাবাজ "মুসলিমদের" আক্রমনের শিকার হয়েছিল একটি হিন্দু পাড়া। কেন ওরা এমনটা করলো? কোন পীরকে নিয়ে কোন এক হিন্দু কটূক্তি করেছিল তাই।
আপনাদের কি ধারণা, কোনটা আল্লাহর কাছে প্রিয়? কোনটা কার্যকর দাওয়াত? কে খাঁটি মুসলমান?

আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিল প্রেসিডেন্ট, অনবরত ইসলাম বিদ্বেষী কথাবার্তা বলে যাচ্ছিল। জীবনেও মুসলিম না দেখা লোকজনের চোখে আমরা মানেই ওসামা বিন লাদেন। অথচ আমার কলিগরা দেখলো আমি রমজান মাসে রোজা রাখি, প্রতিমাসে একটা দিন বন্ধুবান্ধবরা মিলে অমুসলিম অভুক্ত গৃহহীন মানুষদের সকালের নাস্তা ও দুপুরের লাঞ্চের ব্যবস্থা করি। আমরা এতিমের দায়িত্ব নেই। আমরা দুস্থ শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করি। বস্ত্রহীনদের জন্য বস্ত্রের ব্যবস্থা করছি। এ থেকে লাভ কি হয় জানেন? যখন কেউ ওদের সামনে এসে বলে "মুসলিমরা টেরোরিস্ট" তখন এই এরাই বলে, "না, আমার সাথে একজন মুসলিম কাজ করে, সে সন্ত্রাসী না। আমি জীবনে একটাই মুসলিমকে চিনি, সে যেহেতু সন্ত্রাসী না, তাই আমি মানতে পারছি না তোমার কথা।"

একদম উপরে যেসব ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিলাম, যেখানে উটকো কমেন্ট করছে লোকজন, সেগুলো কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের চেয়ে কম না। মানুষকে ইসলামের পথে আনার পরিবর্তে অতি বিরক্তির সাথে দূরে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দয়া করে নিজের ইবাদত নিজে করেন, আপনাকে দাওয়াত দিতে হবেনা। যে যার হেদায়েতের পথ নিজেরাই খুঁজে নিবে।
এই লেখা পড়ে কমেন্ট করতে পারেন "তুই নাস্তিক! কেনবাস এখন নাস্তিকরা চালায়!" আপনাদের মাথায় যে এইসব কথা ঢুকবে না, সেটাই প্রমান হবে আবার।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:২২

অগ্নিবেশ বলেছেন: কিতাবে লেখাই আছে এইটা সেরা ধর্ম, ফলোয়াররা তো নিজেকে সেরা মনে করবেই? তাদের দোষ কি? আর নিজেকে নিজেকে সেরা মনে করলে বিনয় আসবে কোথা থেকে? এসব বাদ দিয়ে সমাজের জন্য কিছু ভালো কাজ করেন বেহস্তে যান আর নাই যান নিজের কাছে নিজেকে ভালো লাগবে।

২| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০৮

আমি সাজিদ বলেছেন: ইন্টারনেটের সঙ্গে সহজলভ্যতা বিপদজনকও বটে।

৩| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:২৫

নূর আলম হিরণ বলেছেন: ধর্ম প্রচারে বাংগালীরা নোংরা ও বিরক্তিকর উপায় বেছে নেয়।

৪| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধার্মিকদের জন্য সবচেয়ে সহজ কাজ ইসলামের দাওয়াত দেওয়া। অথচ একজন ক্ষুধার্ত মানুষকে একবেলা খাবার দিতে পারে না।

৫| ২৬ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৩:২৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ধর্মীয় এই সমস্যা কম বেশি সব ধর্মেই আছে।কিন্তু মুসলমানদের এই সমস্যাতো পৃথীবির সকল ধর্মের সাথে।দেশে দেশে আজকে মুসলমানদের উগ্রতার জন্য হিজাব ও মাদ্রাসা বন্ধ করতে হয়।মুসলমানদের উপর নজরদারি হয় সারা বিশ্বে।চিন্তা করার সময় এসে গেছে।

৬| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮

অগ্নিবেশ বলেছেন: ইসলামের দাওয়াত না পেয়ে কেউ যদি ইন্তেকাল করে তবে সে সরাসরি বেহস্তে যাবে, তাহলে যে দাওয়াত পায়নি তাকে দাওয়াত দিয়ে বিপদে ফেলার উদ্দেশ্য কি??

৭| ২৯ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০৩

সোনালি কাবিন বলেছেন: অগ্নিবেশ বলেছেন: ইসলামের দাওয়াত না পেয়ে কেউ যদি ইন্তেকাল করে তবে সে সরাসরি বেহস্তে যাবে, তাহলে যে দাওয়াত পায়নি তাকে দাওয়াত দিয়ে বিপদে ফেলার উদ্দেশ্য কি??

:(( B:-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.