নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ আগমন উপলক্ষ্যে নিজের মত প্রকাশ করলাম।
এতে সমস্যা হয়েছে এই যে হেফাজত ভাবছে আমি লীগের লোক, মানে ভারতীয় দালাল। এবং লীগ ভাবছে আমি হেফাজতি, মানে পাকিস্তানী চামচা।
আরে **ল, আমি আন্ধা লীগও না, আমি কানা হেফাজতও না, আমি হচ্ছি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ট্রেনস্টেশন ভাংচুরের ফলে ভোগান্তিতে পড়েছিল যে সাতটি ট্রেনের যাত্রী ও তাঁদের পরিবার, আমি তাঁদের একজন। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদকে রণক্ষেত্র বানানোর পরে সেখানে আটকে পড়েছিল যে সাধারণ মুসল্লি, আমি তাঁদের একজন। যে সাধারণ জনতার দোকান, গাড়ি, সম্পদ ভাংচুর হয়, ওদের একজন আমি। আমাদের দেশটাই দুনিয়ার একমাত্র দেশ, স্বাধীন হবার পঞ্চাশ বছর পরেও যেখানে কোটি কোটি ভারতীয় এবং পাকিস্তানী সমর্থক পাওয়া যায়, শালার একটা বাংলাদেশী খুঁজে পেতে হলে ম্যাগনিফাইং গ্লাসের সাহায্য লাগে।
যারা লাফালাফি করছে, তাদের উদ্দেশ্যে আবারও বলি, আমার দেশের পঞ্চাশ বছরের স্বাধীনতা উৎসবে এবং আমার দেশের রাষ্ট্রপিতার জন্ম শতবার্ষিকীতে "পাকিস্তান" গণনাতেই আসছে না। কাজেই "ইমরান খান আসলে আপনি প্রতিবাদ করতেন?" - জাতীয় উজবুকীয় প্রশ্নকর্তার মেন্টাল স্টেবিলিটি নিয়েই উল্টো প্রশ্ন করতে পারি। কোন সুস্থ মাথার মানুষ এইভাবে চিন্তা করতে পারে?
এখন আসা যাক নরেন্দ্র মোদির কথায়।
আমার অভিযোগ লোকটার সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে, ভারতের "প্রধানমন্ত্রীত্ব" নিয়ে নয়। এই সময়ে যদি গান্ধী পরিবারের কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতো, অথবা তাঁদের দলের কেউ, আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি থাকতো না। কেন? কারণ "ইন্দিরা গান্ধী।" যদিও অপারেশন ব্লু স্টারের জন্য নিজের দেশের একাংশের মানুষের কাছে তিনি ভিলেন, কিন্তু আমাদের স্বাধীনতার পেছনে সিংহভাগ কৃতিত্ব এই লৌহ মানবীর। একাত্তরের তিনি ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের শরণার্থীরা যখন দলে দলে তাঁর দেশে যাচ্ছিলেন, তিনি বর্ডার সিল করে দেননি। আমাদের শরণার্থীদের হাতে ভারতীয় নাগরিক খুন হবার পরেও না, আমাদের শরণার্থী কর্তৃক নানান সমস্যা (কলেরা মহামারী থেকে শুরু করে অনেক কিছুই) ভোগ করার পরেও না। শুধু তাই না, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছেন তাঁর সেনাবাহিনী। এবং তিনি আমাদের জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন ইউরোপ আমেরিকার একের পর এক দেশে। সব জায়গাতেই তিনি আমাদের জন্য সাহায্য "ভিক্ষা" করেছেন, লোকে তাঁকে টাকা পয়সা ধরিয়ে দিতে চেয়েছিল, তিনি বলেছিলেন, "ভারত তাঁর অতিথি আপ্যায়ন করতে পারবে। আমার চাই স্থায়ী সমাধান।"
স্থায়ী সমাধান মানে পাকিস্তানকে কঠিন করে ধমক দিতে হবে, প্রয়োজনে বল প্রয়োগ। কিন্তু কোন রাষ্ট্রের এই সাহস ছিল না, কারন পাকিস্তানের পক্ষে তখন বিশ্বের তিন শক্তিশালী দেশের দুইটা, আমেরিকা ও চায়না ছিল। আমেরিকার বিরুদ্ধে কেউ কোন শব্দ উচ্চারণ করবে না, এবং চীনারা ইন্ডিয়ার বর্ডার দিয়ে যখন তখন ঢুকে যাবার ক্ষমতা রাখতো। ভারতের পক্ষে সম্ভব ছিল না উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ চীন-ভারত সীমানা পাহারা দেয়ার পাশাপাশি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়াবার। কারন পূর্বে যুদ্ধে বাঁধলে, পশ্চিমের পাক-ভারত সীমান্তও রক্ষা করতে হবে, এবং এর মাঝে চরম মাথা ব্যথার কারন ছিল নক্সালবাদীদের সহিংস আন্দোলন। সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশ ব্যস্ত ছিল এদের দমনেই। এরমাঝে ছিল "গুড ফর নাথিং ব্যাড ফর এভ্রিথিং" জাতিসংঘ। যারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে নাক গলাতে অনিচ্ছুক, কিন্তু ভারত যদি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়ায়, তবে হারেরেরে করে তেড়ে আসবে।
এটাও বিবেচনায় নিতে হবে ভারতের সেনাবাহিনীর চেয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শক্তিশালী ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের জাতীয় বাজেটের বিপুল অংশ বিভিন্নখাতে ব্যয় হয়েছে। এদিকে জন্মের পর থেকেই সিংহভাগ সময় মিলিটারি শাসকদের অধীনে থাকায় ওদের জাতীয় বাজেটের সিংহভাগ ব্যয় হয়েছে আর্মির বাজেটে।
এত কিছুর পরেও ভারত যদি পূর্ব পাকিস্তান আক্রমন করে, তবে কমসেকম যুদ্ধনীতি অনুযায়ী পাকিস্তান মিলিটারির চেয়ে কমসেকম তিনগুন বেশি সেনা নিয়ে আক্রমন করতে হবে। কারন পাকিস্তান যদি দুর্গ প্রতিরক্ষা কৌশল অবলম্বন করে (যা নিয়াজী করেছিলও) তাহলে এরচেয়ে কম সৈন্য নিয়ে ভূখন্ড জয় সম্ভব না। কাগজে কলমে পরীক্ষিত।
কাজেই ভারত চাইলেই যুদ্ধে জড়াতে পারতো না। উপায় ছিল না।
অবশেষে রাশিয়া যখন ভারতকে আশ্বাস দিল যে চীন যদি ভারত আক্রমন করে, তবে লাখে লাখে রাশিয়ান সৈন্য চিনে ঢুকে পড়বে, তখন ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং প্রকাশ্যে যুদ্ধে অংশ নেয়। নিয়াজির দুর্গ প্রতিরক্ষা নীতি মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতার কারনে। সেই সাথে ওদের মোরাল ভেঙে দেয় সাধারণ বাঙালি জনতাও। যাদের তখন হারাবার কিছু নেই। পাকিস্তানী সেনা জীবিত পাকড়াও করার সাথে সাথে ওদের কচুকাটা করা হচ্ছে। "বাংলাদেশ" তখন স্বীকৃত দেশ নয়, কাজেই জেনেভা কনভেনশনে সাইন করেনি, যুদ্ধাপরাধীদের ধরে ধরে কুচি কুচি করে কেটে মেরে ফেললেও কেউ কিছুই বলতে পারবে না। পাকিস্তান তাই তখন বুদ্ধিমানের মতন ভারতীয় সিপাহীদের কাছেই আত্মসমর্পণ করতে থাকে। ১০% ক্ষতি হলেও ওরা সাদা পতাকা উড়িয়ে দিতে থাকে। ওদের কোন ঠ্যাকা নেই "বাংলাদেশ" রক্ষা করার জন্য নিজেদের প্রাণ দিয়ে দেয়ার। ওদের ভয় তখন মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারণ বাঙালিদের, তাদের হাতে ওরা ধরা খেতে চায় না। দীর্ঘ নয় মাসের নৃশংসতার বদলা ওরা নৃশংসতার সাথেই নিচ্ছে তখন।
অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বর আমরা শত্রুমুক্ত হই।
এই হচ্ছে অতি সংক্ষেপে ভারতের অবদান। বিস্তারিত লিখতে গেলে আস্ত বই লেখা সম্ভব। কিন্তু এখানে অবশ্যই বলে রাখি, যদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী না হয়ে নরেন্দ্র মোদির দলের কেউ হতো, তাহলে আজকে আমরা এখনও পাকিস্তানের পায়ের নিচে পড়ে থাকতাম। এইটা ফ্যাক্ট। প্রমান চাইলে, মুসলমানদের গরু জবাইর অপরাধে মাথা কাটার কথা বাদই দিলাম, রোহিঙ্গাদের সাথে কি করেছে সেটাও বাদ থাকুক, ভারতীয় নাগরিকদেরই উল্টো নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে তার দল। আসামের দাঙ্গা ভুলে গেলেন? খুব কি বেশিদিন আগের কথা? ওর নিজের দলের লোকেরাই কি বলে না যে শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া বাংলাদেশিদের বের করে দিবে। নাহলে বাংলাদেশ থেকে ভূখন্ড ওরা নিয়ে নিবে? এই মোদির সাথে ইন্দিরার তুলনা করাটা মূর্খতা পর্যায়ের পাপ। ভাইয়েরা, আন্ধা হন ভাল কথা, তাই বলে গর্ধব হবেন কেন?
যে একদা সাম্প্রদায়িক ইতর থাকে, সে সবসময়েই থাকে। ওর গুজরাটে "দাঙ্গাবাজির" পক্ষে একজন দলিল পেশ করলেন যেহেতু সবরামতি ট্রেনে আগুন দিয়ে ৫৯ জন হিন্দু মেরেছে মুসলিমরা, কাজেই ওদের দুই হাজার "নিরীহ" নারী শিশু হত্যা "জায়েজ।" এই ছাগলটাকে জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে পুলিশ যে হেফাজতি কয়েকটাকে মেরে ফেলল, এখন কি তাহলে ওদের দ্বারা ওনার নিজের বাড়িতে আগুন দেয়াটা জায়েজ হয়ে যাবে? সাম্প্রদায়িকতা সবসময়েই খারাপ। যার বিরুদ্ধেই হোক, নিন্দা করতে শিখেন। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, আমার দেশে সাম্প্রদায়িকরাই অপর দলকে সাম্প্রদায়িক বলে। আর নিজের সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে নিন্দা করলে বলে অপর দলের দালাল! এ এক বিচিত্র দেশের আজিব নাগরিক আমরা! ন্যায় অন্যায় পার্থক্য করার ক্ষমতায় নাই আমাদের! আমরা আগে দেখি কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে ইন্ডিয়ান, কে পাকিস্তানী, কে আওয়ামীলীগ আর কে হেফাজত! তারপরে অ্যাকশন বিবেচনা! বাহ্!
২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:২৭
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ও সত্য বলে কখন? একটা ফেসবুক লিংক দিচ্ছি, দেখে নিন।
https://www.facebook.com/watch/?v=427464751683098
২| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ ভোর ৫:২৭
ইলি বলেছেন: ধর্মীয় রাজনীতি উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই। ধন্যবাদ।
৩| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:১৫
এমেরিকা বলেছেন: স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি বাঙালিদের জন্য খুব উৎসব মূখর হতে পারত। সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে তা ভন্ডুল হয়ে গেল। এই সরকার কেন যেন হেফাজতের মত ভয়ঙ্কর শক্তিকে খুব লাইমলাইটে আনতে চায়।
৪| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
আলাপচারী প্রহর বলেছেন: স্যালুট
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১২:৪২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার কাছে মনে হচ্ছে মোদি অনেক কথাই মিথ্যা বলেছে। আবেগে বলেছে।