নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
দিব্য দৃষ্টি
মঞ্জুর চৌধুরী
"তুমি অলৌকিকতায় বিশ্বাস করো?"
"কি ধরনের অলৌকিকতা? জাদু টোনা? ব্ল্যাক ম্যাজিক?"
আকরাম ভাই ইতস্তত করে বললেন, "না, ঠিক তা না। ঠিক কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না। আচ্ছা, তোমাকে পুরো ঘটনাটাই খুলে বলি।"
আকরাম ভাই বেঁটেখাটো নাদুসনুদুস একজন ভদ্রলোক। খুব বেশি হলে উচ্চতায় পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি হবেন। পুরো মাথা চকচক করছে টাকে, যার অর্ধেকটা আপনাতেই হয়েছে, বাকিটা স্বেচ্ছায়। মাথার চুলের অভাব তিনি দাড়ি গোঁফ দিয়ে পুষিয়ে দিয়েছেন। আধুনিক পোশাকে তিনি গালভর্তি সুন্নতি দাড়ি নিয়ে চলেন। চেহারায় একটা পরহেজগার ভাব। দেখেই মনে হয়, এই ভদ্রলোক নিতান্তই ভাল ও স্মার্ট একজন মানুষ।
তিনি পেশায় একজন লাইসেন্সড রেসিডেন্সিয়াল রিয়েলটর। মানে কারোর বাড়ি কেনা বেঁচা করতে হলে তিনি মিডল ম্যান হিসেবে কাজ করেন, বাড়ির দাম অনুযায়ী কমিশন পান, এবং তাতেই তাঁর সংসার আরামসে চলে যায়। বিশাল বাড়িতে থাকেন, দামি গাড়ি চালান। এই পেশায় সাকসেসফুল হতে হলে নেটওয়ার্কিংয়ের প্রয়োজন। মানে প্রচুর জানা শোনা মানুষ থাকতে হয়। তা তাঁর আছেও। প্রায় কুড়ি বছরের উপরে হলো তিনি ডালাসে বাস করেন। প্রচুর মানুষকে চিনেন। সবার সাথেই হাসিমুখে গল্প করেন, খোঁজ খবর নেন। বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাওয়ান। মানুষ তাঁকে ভাল মানুষ হিসেবে চিনে। কারোর বাড়ি কেনা বেঁচা বা ভাড়া দেয়ার প্রয়োজন হলে তাঁকে স্মরণ করে।
বহুদিন ধরেই ভদ্রলোক অপেক্ষায় আছেন, একদিন নিজেই ব্রোকারেজ ব্যবসা চালু করবেন। আসল পয়সা সেখানেই। সেল্স এজেন্ট হয়ে কতটাকাই বা কমিশন আসে?
পেশাগত কারণেই আকরাম ভাই অতি ব্যস্ত সময় কাটান। তবে মাঝেমাঝে তাঁর সাথে এখানে সেখানে দেখা হয়ে যায়। সেদিন যেমন দেখা হয়ে গেল একটি বাঙালি গ্রোসারি স্টোরে।
বিদেশে স্থায়ী হয়ে গেলেও জিভ থেকে আমি বাঙালি স্বাদ সরাতে পারিনি। ঘি মাখানো দেশি টোস্ট বিস্কিট, দেশি চানাচুর ইত্যাদি থেকে শুরু করে দেশি নদী-হাওরের মাছ, দেশি মিষ্টির দোকানের তৈরী মিষ্টি ইত্যাদি খেতে ইচ্ছা হলেই এই গ্রোসারি স্টোরে হানা দেই। স্টোরের মালিক আমার বড় ভাইয়ের মতন, অতি কাছের মানুষ। এদের ক্যাফেটেরিয়ায় সমুচা সিঙ্গারা চা বিরিয়ানি ইত্যাদি সব পাওয়া যায়। সাথে পাওয়া যায় মুরগির কিমা দিয়ে তৈরী চিকেন ললিপপ। আমার সাড়ে চার বছর বয়সী ছেলে আবার এই বিশেষ খাবারের একনিষ্ঠ ভক্ত। এই দোকানে আসলেই সে বায়না ধরে চিকেন ললিপপের। আগে ওকে দুই তিনটা কিনে দেই, তারপরে ও খেতে থাকে আর আমরা বাজার শুরু করি।
এই চিকেন ললিপপ কিনতে গিয়েই আকরাম ভাইয়ের সাথে দেখা। প্রায় তিন চারমাস পরেতো অবশ্যই। স্বভাবসুলভ উৎফুল্ল কণ্ঠে তিনি বলে উঠলেন, "আরে তুমি যে! কি খবর? অনেকদিন কোন খোঁজ নাই!"
চা আর প্যাটিস হাতে আমরা আড্ডায় বসে গেলাম। এটা সেটা নানান বিষয়ে কথা হলো। এর ওর খোঁজ নেয়া হলো। তারপরে কথা থেকে কথার সূত্র ধরে ধরেই তিনি বললেন, "তুমি অলৌকিকতায় বিশ্বাস করো?"
"সেবার আমি আমেরিকা আসার পরে প্রথমবারের মতন বাংলাদেশে বেড়াতে গেছি। এক বছরের মাথাতেই। দেশকে পাগলের মতন মিস করি। বন্ধুদের আড্ডা, শহরের কোলাহল, দোকানের খাবার সবকিছুর জন্য মন হাহাকার করে উঠে। এয়ারপোর্ট থেকে বাড়িতে গিয়ে লাগেজ নামিয়েই বেরিয়ে গিয়েছিলাম বন্ধুবান্ধব নিয়ে আনোয়ারের দোকানে চা খেতে খেতে আড্ডা দিতে। সাথে গরম গরম তেলে ভাজা ধোঁয়া উঠা সিঙ্গারা। আনোয়ার করতো কি সিঙ্গারার সাথে টমেটো সসের বদলে কাসুন্দির মতন ঝাঁঝালো সরিষার একটা সস দিত। ইশ! যদি একবার কাঁচা পেঁয়াজ আর সেই সস দিয়ে সিঙ্গারা খেতে তাহলে বুঝতে কি অমৃত যে লাগতো! এদেশে বাংলাদেশি স্টাইলে সিঙ্গারা কেউ বানায় না। সবাই ইন্ডিয়ান গ্রাহক পেতে ইন্ডিয়ান সিঙ্গারা বানায়। ওটা মুখে দেয়া যায়?"
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। বাস্তবেই, যে বাঙালি সিঙ্গারায় অভ্যস্ত, তাঁর কাছে পাঞ্জাবি সিঙ্গারা ভাল লাগার কথা না।
"প্রথম দিনই ফুড পয়জনিং হয়ে গেল। এতটাই খারাপ অবস্থা যে একরাত হাসপাতালে কাটাতে হয়েছিল। মনে মনে হাসছিলাম। আমার দেশি পেট বুঝি নিজেকে ইংরেজ ভাবতে শুরু করেছিল, তাই বাঙালি খাবার পেটে যেতেই বিদ্রোহ করেছে। হাহাহা।"
আমিও হাসলাম। প্রতিটা প্রবাসীর দেশে গেলে এই যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অতি সাবধানে খাওয়া দাওয়া করতে হয়। একটু পান থেকে চান খসলেই খাঁটি ভেজাল মুক্ত খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া পাকস্থলী তখন দ্রোহী হয়ে উঠে।
"সুস্থ হবার পরে ছুটলাম পুরান ঢাকার দিকে। বিরিয়ানি খেতে হবে। মাত্র এক মাসের জন্য গেছি বেড়াতে। সময় একদমই নেই। পেট খারাপ হলে হবে, ওষুধ খেয়ে ঠিক করা যাবে। ডালাসে আমাকে নান্না আর হাজির বিরিয়ানি কে এনে দিবে?"
কথা ঠিক। আমি নিজেও দেশে গেলে পুরান ঢাকায় ছুটি। দেশি খাবারের কারোর স্মৃতিচারণও আমার জিভে জল নিয়ে আসে, যেমনটা এখন আনলো। তিনি বর্ণনাও শুরু করেননি, অথচ আমি ঠিক চোখের সামনে দেখলাম বিরাট লাইন অতিক্রম করে আমি হাজি সাহেবের রেস্টুরেন্টে বসার সুযোগ পেয়েছি। আমার সামনে এক প্লেট গরম গরম বিরিয়ানি রাখা হয়েছে। তা থেকে ভেসে আসছে সরিষার তেলে ভাজা খাসির মাংসের ঘ্রান! সাথে সালাদ হিসেবে কিছু শশা, মরিচ আর টমেটো। এক গ্লাস বোরহানি এনে এই মাত্র রাখলো পাশে। টেবিলে গ্লাস রাখার শব্দটাও যেন স্পষ্ট শুনতে পেলাম। আহ!
"গুলিস্তান মোড়ে পৌঁছে রিকশা নিলাম, আমি আর আমার বন্ধু ইলিয়াস। জসিম ও সুজনও আছে আমাদের সঙ্গী, তবে ওরা অন্য রিক্সায় চেপেছে। আমরা চারজন একদম নার্সারি ওয়ান থেকে বন্ধু। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সব একসাথে। তাই খুব হৈ হুল্লোড় করতে করতে যাচ্ছি। বয়স ছিল তরুণ, মন ছিল নির্ভার এবং ফুর্তিতে ভরপুর। বুঝতেই পারছো।"
আমি বুঝতে পারছি। একই বয়স আমিও কাটিয়ে এসেছি।
"তা হঠাৎই আমার মনে হলো রিক্সার গতি বাড়তে শুরু করেছে। অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। আশেপাশের সবকিছু হঠাৎ শ্লথ হয়ে গেছে, আমাদের রিকশাই কেবল বাতাসের বাঁধা কেটে উল্কার বেগে সামনের দিকে ছুটছে। হাওয়ার চাপে আমি তখন টিকে থাকতে পারছি না। মনে হচ্ছে এই বুঝবি রিক্সা থেকে ছিটকে পড়বো। অথবা উড়েই যাব! শিউরে উঠলাম। ইলিয়াসের হাত ধরতে যাব, কিন্তু পাশে দেখি সে নেই। সামনে রিকশাওয়ালাও গায়েব হয়ে গেল। রিক্সা আপনাতেই দুরন্ত বেগে ছুটছে। আমি চিৎকার দিতে চাইলাম, মুখ থেকে শব্দও বেরুলো, কিন্তু বাতাস সে শব্দ ঠেলে পেছনে নিয়ে গেল। যেন রিক্সা না, আমি কোন রকেটের ছাদে বসে আছি। আমি নিজেকে সামলাতে পারছি না। রিক্সার হুড চেপে ধরে আছি। চোখ খুলে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। বন্ধ করতে সাহস পাচ্ছিনা। কোথায় না কোথায় গিয়ে আছড়ে পড়ি! রিক্সা থেকে লাফ দিব, সে উপায়ও নেই। আমার শরীর পুরোপুরি অবশ তখন। সিটের সাথে যেন গেঁথে গেছি।
যেভাবে হঠাৎই রিক্সা চলতে শুরু করেছিল, ঠিক সেভাবেই হঠাৎই থেমে গেল। আমার হার্টবিট তখন দুই তিনশো হবে নিশ্চিত। হৃদপিন্ড যে ফেটে যায়নি, সেটাই বিস্ময়কর। খানিকটা স্থির হয়ে আমি যখন আশেপাশে চোখ বুলাই, দেখি আমি এক সম্পূর্ণ অন্য জগতে চলে এসেছি। আমি একটি করিডোরের মাঝে দাঁড়িয়ে আছি। আমার দুইপাশে ধবধবে সাদা দেয়াল যেন আকাশ ফুঁড়ে দাঁড়িয়ে আছে। উপর চোখ তুলে ছাদ বুঝার চেষ্টা করলাম, সম্ভব হলো না। অসীমে, যেখানে চোখের দৃষ্টিও হার মানে, আমি দেখলাম দেয়াল তখনও কেবল উঠছেই। আর সামনে পেছনেও কোথা থেকে শুরু হয়ে কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না। সবচেয়ে অদ্ভুত হচ্ছে আমি আলো দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু আলোর উৎস খুঁজে পাচ্ছি না। দেয়ালে কোন লাইট বাল্ব নেই, কিন্তু পুরো করিডোর ভেসে যাচ্ছে স্থির আলোর বন্যায়। এবং সবচেয়ে অদ্ভুত হচ্ছে, আমার ছায়া আমি দেখতে পারছি না। ধবধবে সাদা মেঝের কোথাওই আমার বা রিক্সার ছায়া নেই।
রিক্সা থেকে নেমে আমি হাঁটতে শুরু করলাম। দুইপাশের দেয়ালে কোন দরজা নেই, জানালা নেই। বুঝতে পারছি না কোথায় এসেছি, কিভাবে এসেছি। গায়ে চিমটি কেটে দেখলাম আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো। ব্যথা টের পেলাম, ঘুম ভাঙলো না। বুঝলাম, আমি বাস্তবেই আছি।
হাটঁতে হাঁটতে একবার পেছন ফিরে তাকালাম। রিক্সাটা গায়েব! যেন হাওয়ায় মিলিয়েছে, বা মেঝে গিলে খেয়েছে। কোন চিহ্ন নেই। আমি ভয়ে আঁতকে উঠলাম। ছুটলাম সামনের দিকে। দৌড়াচ্ছি এবং হাপাচ্ছি। আবারও বুঝলাম এটি স্বপ্ন না। অবাস্তব অভিজ্ঞতা হলেও এটাই বাস্তব। দীর্ঘক্ষণ দৌড়ানোর পর যখন আমার নিশ্বাস ধরে এলো, কিছুতেই চলার শক্তি নেই, তখন পিছন ফিরে বুঝার চেষ্টা করলাম কতদূর এগিয়েছি। বুঝার কোনই উপায় নেই। সব এক। কংক্রিটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে। দুধ সাদা, ধবধবে। কোন ময়লা দাগ বা চিহ্ন নেই কোথাও যা দেখে দূরত্ব মাপবো। মনে হচ্ছে যেন এক চুলও এগোইনি।
ঠিক এই সময়ে দেখলাম বিশ পঁচিশ হাত দূরে দেয়াল থেকে হঠাৎই একটি দরজা স্লাইড করে খুলে গেল। আমি হাঁপাতে হাঁপাতে সেদিকেই এগুলাম। দরজার ভিতরে ঢুকবো কি ঢুকবো না ভাবছি। না ঢুকে উপায়ওতো নেই।
আমি ভেতরে ঢুকে গেলাম। এটিও ধবধবে সাদা কামরা। তবে স্বস্তির কথা, আমার সামনে আমার বন্ধু সুজনকে দেখলাম বসে আছে।
আমি হাহাকার করে বললাম, "সুজন এটা কোন জায়গা! কোথায় আমরা? কিভাবে এলাম?"
সুজন আমাকে দেখে স্মিত হাসলো, কিছু বললো না, তবে তাঁর শান্ত সৌম্য দৃষ্টি দেখে বুঝলাম সে আমাকে বলছে চিন্তার বা ভয়ের কিছু নেই।
আমি আরও কিছু বলতে গেলাম, কিন্তু সে আমার হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিল। আমি হাতে নিয়ে দেখি ওটা একটা কাগজের ট্যাগ। নাম, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদি লেখা।
"এটা কি?"
জিজ্ঞেস করতে সে কোন জবাব দিল না। আবারও স্মিত হাসি হাসলো। আমার কাঁধে হাত রাখলো।
পেছনে কেঁচ কেঁচ করে একটা আওয়াজ হলো। আমি ফিরে দেখি দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম, "দরজা বন্ধ হলে এ ঘরে আটক পড়বো যে! জলদি বের হ!"
বলেই বুঝে না বুঝে আমি দৌড় দিলাম। বেরিয়ে করিডরে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দেখি আমি হাজির বিরিয়ানির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার পাশে আমার চার বন্ধু, আমাদের ঘিরে পুরান ঢাকার স্বাভাবিক জনরোল। কিছু একটা ব্যাপারে হাহা হোহো করে বন্ধুরা হাসছে। বুঝলাম না আমি কি এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম? হাতে তখন ট্যাগটা নেই, তবে সেই যে কব্জিতে চিমটি কেটেছিলাম, সেই নখের দাগ ঠিকই হাতে রয়ে গেছে।
বন্ধুদের কিছু জানালাম না। বাস্তবের কিছু স্বপ্নের কথা এতদিন শুনে এসেছি, ভেবে নিলাম এটিও তেমন কিছুই হবে। আড্ডায়, খাওয়া দাওয়ায় যোগ দিলাম। এক সপ্তাহ সেরকমই কাটলো। আমি চলে গেলাম রাজশাহী, দেশের বাড়ির কিছু আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে। এবং পরের সোমবার দুপুরে খবর পেলাম সুজন একসিডেন্টে মারা গেছে। মোটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিল, বাসের ধাক্কায় সে স্পট ডেড।
আমি ছুটলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। আসতে আসতে মঙ্গলবার হয়ে গেল। সুজনের বডির পোস্টমর্টেম শেষ। আমাদের হাতে লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে। বন্ধুর শরীর দেখে শিউরে উঠলাম। আসলে শরীর না, ওর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে ঝুলছে একটি কাগজের ট্যাগ। সেই ট্যাগ যা সেদিন ঐ ভুতুড়ে করিডোরের রহস্যময় ঘরটিতে সুজনই আমাকে দিয়েছিল। সেদিন সেই ট্যাগে কি কারও নাম লেখা ছিল সেটা ঠিকমতন খেয়াল করে পড়িনি, তবে এইটাই যে সেই ট্যাগ, আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিশ্চিত!"
আকরাম ভাই কথা থামিয়ে পানির গ্লাসে চুমুক দিলেন। তিনি একটানে বলে গেছেন, আমিও এক নিশ্বাসে শুনে গেছি।
"কাকতালীয় কোন স্বপ্ন নয়তো?"
আমি প্রশ্ন করলাম। তিনি বললেন, "সেটা ছাড়া আর কোন ব্যাখ্যা কি আছে?"
তারপরে তিনি ছোট একটি শ্বাস ফেলে গলার স্বর পাল্টে বললেন, "দেখো মঞ্জুর। আমি কিন্তু যথেষ্ট যুক্তিবাদী মানুষ। এইসব জাদু টোনা ভৌতিক গালগপ্পে আমার বিশ্বাস নেই। ব্যাপারটা আমার নিজের সাথে না ঘটলে আমাকে মেরে কেটেও কেউ বিশ্বাস করাতে পারতো না। তারপরেও, আমি ধরে নিলাম, এটি অবশ্যই একটি স্বপ্ন ছিল। সুজনের মৃত্যুটা একটা কাকতালীয় দুর্ঘটনা। বাস্তবে এটি কোনভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরে আরও বেশ কয়েকবার ঘটনা ঘটলো।"
"বলেন কি!" কথাটি আমি যদিও তখনও শতভাগ বিশ্বাস করিনি, তারপরেও মুখ ফুটে সত্যিকারের বিস্মিত স্বর বেরিয়ে এলো।
"হুম। আমার বহু আত্মীয়ের, কলিগের মৃত্যুর খবর আমি এক দুই সপ্তাহ আগে টের পেয়েছি।"
"প্রতিবার তাঁদের সেই সাদা করিডরের কামরায় দেখেছেন?"
"না। এইটাই অদ্ভুত। একেকবার একেকভাবে ঘটেছে ঘটনা। প্রতিবারই আমি কোন না কোন উপায়ে অন্যভুবনে চলে যাই। যেমন ধরো প্রথমবার আমি চলন্ত অবস্থায় ছিলাম, মাঝে মাঝে বিছানায় শোয়া অবস্থাতেও সে জগতে পৌঁছেছি। প্রতিবারই নতুন নতুন জায়গা দেখি। ধরো একবার দেখলাম উঁচু পাহাড়ের উপর আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমার সাথে আমার কলিগ জনাথন। আমার বয়সী ছেলে। প্রতিদিন জিম করে, স্বাস্থকর খাবার খায়। রেগুলার ডাক্তারি পরীক্ষা করায়। নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। দেখলাম আমরা দুইজনে সেখানে কিছু একটা খুঁজছি। হঠাৎ সে বসে পড়লো। আমি বললাম কি হয়েছে? সে কিছু বলল না, উল্টো শুয়ে পড়লো। ব্যস এই পর্যন্তই। আমি বাস্তবের ওকে বললাম কিছুদিন সাবধানে চলাফেরা করতে। দেখেশুনে গাড়ি চালাতে। লাভ হলো না। সে মারা গেল ম্যাসিভ হার্ট এটাকে। এত সুস্থ সবল ছেলে হার্ট এটাকে কিভাবে মরে কে জানে!"
আমি কিছু বললাম না। কি বলবো সেটাই মাথায় আসছে না। অবিশ্বাস্য কথাবার্তা। কিন্তু আকরাম ভাইয়ের মতন মানুষ শুধু শুধু মিথ্যা কথা বলবেনই বা কেন?
"আমার মায়ের মৃত্যুর কথাটাই ধরো। আমি আগেভাগে টের পেলাম। মা তখন দিব্যি সুস্থ সবল মহিলা। সাবধান হলাম। মাকে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ফুল বডি চেকাপ করাবো। সেখানেই তাঁর স্টমাক ক্যান্সার ধরা পড়লো। আর্লি স্টেজ। সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু করে দিলাম। কিন্তু তিনি মারা গেলেন এক মাস পরেই, স্ট্রোক করেছিল।"
আমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। আকরাম ভাই নিজের মাকে জড়িয়ে মিথ্যা বলবেন না নিশ্চিত। অদ্ভুত শোনালেও তিনি সত্যিই বলছেন।
"আপনি যাকেই স্বপ্নে দেখেন, তাঁরই মৃত্যু ঘটে?"
"হুম। একদম যাকে দেখি, সেই মারা যায়।"
"আপনার এই ক্ষমতার কথা ভাবি বা অন্য কেউ জানেন?"
তিনি বললেন, "না। কাউকে বললে সে বিশ্বাস করবে না। আমাকে পাগল ভাববে। মনে করবে এটেনশন পেতে চাইছি। রিয়েলটরি করি, লোকে ভাববে এইটা কোন বিশেষ ধরনের এডভার্টাইজমেন্ট। ধান্দাবাজি করছি।"
"তাও ঠিক।"
এ ছাড়া আমার আর কি বলার আছে বুঝতে পারছি না।
"তোমাকে বললাম বিশেষ কারনে। এই আজকেই আমার সাথে আবারও ঘটনাটা ঘটেছে। তবে এইবার সম্পূর্ণ নতুন জিনিস দেখলাম। দেখলাম আমি একটি শহরে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। অদ্ভুত একটি শহর। অনেক উঁচু উঁচু বাড়িঘর, আমাদের ডাউনটাউনগুলোতে সাধারণ স্কাইস্ক্র্যাপারগুলো বা বুর্জ খলিফার মতন উঁচু না, তারচেয়েও বহুগুন উঁচু উঁচু একেকটি ভবন। আকাশ ঢেকে গেছে বাড়িগুলোর উচ্চতায়, এমন উঁচু। পুরো শহর মানুষে গিজগিজ করছে। রাস্তায় মানুষ, ফুটপাথে মানুষ, বাড়িঘরের জানালায় মানুষ আর মানুষ। কোন গাড়ি ঘোড়া বাস নেই। শুধুই মানুষ। কেউ কারোর দিকে তাকাচ্ছে না, সবাই কেবল হেঁটেই যাচ্ছে। ব্যস্ত সড়কের ব্যস্ত মানুষের খুবই স্বাভাবিক আচরণ। কিন্তু হঠাৎই সবাই থমকে গেল। তারচেয়ে ভীতিকর হলো সবাই তখন স্থির দাঁড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবলেশহীন একেকটি চেহারা। কোন আনন্দ, উচ্ছাস বা বিষাদ বুঝার উপায় নেই। নিষ্প্রাণ দৃষ্টি সবার। সুতা পরিমান নড়চড় নেই কারোর।
আমি আঁতকে উঠলাম। ওদের থেকে সরে যেতে চাইলাম। কেউ বাঁধা দিল না। ভিড় ঠেলে আমি ছুটতে চাইছি। ধাক্কা দিয়ে সামনে থেকে লোকজন সরাচ্ছি। সবাই সরছে, কিন্তু কারোরই দৃষ্টি আমার উপর থেকে নড়ছে না। তারপরে আবার আমি আগের জায়গায়, মানে নিজের গাড়িতে ফিরে এলাম। দেখি ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে আছি। সামনে লাল বাতি জ্বলে আছে।"
"খুবই অদ্ভুত। আপনি ঐ জগতে থাকলেও এই জগতের কাজ কিন্তু ঠিকই চালিয়ে যান।"
"সেটাই। এমন না যে গাড়ি চলন্ত অবস্থায় আমি সে জগতে এবং এ জগতে আমি একসিডেন্ট করে ফেললাম। এমনটা কখনই হয়নি।"
"ঐ জগতের কোন চিহ্ন আপনি আনতে পারেন না, তাই না?"
"না। সুজনের দেয়া ট্যাগ সেখানেই হারিয়ে আসি, যদিও চিমটির দাগ ছিল আমার হাতে। অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও তাই ঘটে। আরেকবার এমনই এক ঘটনায় ইচ্ছা করেই মাটিতে পড়ে নিজের হাঁটুর চামড়া ছিলেছিলাম, বাস্তবে এসে দেখি আমার হাঁটুর চামড়া ছিলা। মোট কথা, ব্যাপারটা খুবই রহস্যময়, একটা ঘটে তো আরেকটা ঘটেনা। কোন সূত্রেই ফেলা যায় না। কেন ঘটছে, কিছুই বুঝিনা। লোকজনকে বলতেও পারিনা।"
আমি তাঁর দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে বললাম, "ভাই, আমি আপনাকে বিশ্বাস করছি। যদিও এটাও বলবো যে আপনি যা বলছেন খুবই অবিশ্বাস্য কথাবার্তা। আপনি না হয়ে অন্য কেউ হলে অবশ্যই বিশ্বাস করতাম না।"
তিনি চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললেন, "এই প্রথম আমি এত বিপুল সংখ্যক মানুষ এক সাথে দেখেছি। ব্যাপারটা আমার কাছে ভাল লাগছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, খুব দ্রুত একটা বিশ্বযুদ্ধ টাইপ কিছু একটা লাগবে। প্রচুর মানুষ মারা যাবে।"
আমি বুঝলাম না কি বলা উচিৎ।
"কোন বিশেষ জাতির মানুষ দেখেছেন?"
"না, এখানে যেমন সব জাতির মানুষ দেখা যায়, স্বপ্নেও তাই দেখলাম। আরেকটা ডিটেইলের কথা তোমাকে বলি। আমরা যেমন এখানে পোষাক পরি, সেখানে কাউকে কোন ড্রেসে আমি দেখিনা। মানে তাঁরা নগ্নও থাকেনা, কিন্তু কোন পোশাকও না। অদ্ভুত ব্যাপার, বলে বুঝাতে পারছি না। ছবি আঁকার ক্ষমতা থাকলে এঁকে দেখাতাম।"
"আজ পর্যন্ত কখনও স্বপ্ন ব্যর্থ হয়নাই?"
তিনি আত্মবিশ্বাসী স্বরে বললেন, "না।"
তারপরে একটু বিরতি নিয়ে বললেন, "আমি জানি আমার ব্যক্তিগত ও পেশাগত রেপুটেশন এর উপর নির্ভরশীল। তুমি যদি দেখো আগামী কয়েকমাসে কিছুই ঘটে নাই তখন তুমিই ভাববে আমি চাপা মেরেছিলাম। হয়তো ক্যানভাসে, ফেসবুকে কিছু একটা লিখে হাসি তামাশাও করবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত, কিছু একটা খুব শীঘ্রই ঘটবে। সবার সাবধান হওয়া উচিৎ।"
তখন ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। দুই হাজার উনিশ সাল। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এক অদ্ভুত খ্যাপাটে বর্ণবাদী লোকের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ ও মিলিটারির ক্ষমতা। আমরা প্রতিদিন আতংকে থাকি এই বুঝি কোন দেশের উপর নিউক্লিয়ার বোমা ছেড়ে দিল। এই বুঝি যুদ্ধ বেঁধে গেল। উত্তর কোরিয়ার সাথে অল্পের জন্য যুদ্ধ বাঁধি বাঁধি করেও বাঁধলো না শেষ পর্যন্ত। চরম মুসলিম বিদ্বেষী হয়েও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধে জড়ালো না। আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু নিজের মেয়াদের শেষ বছরে সে কি করে বসে তারতো ঠিক নেই।
সেই ঘটনার দুই সপ্তাহ পরেই সে আশঙ্কা সত্যি করে দেখালো। জানুয়ারি মাসের তিন তারিখে সে ইরানের প্রধান সমরবিদ জেনারেল কাসিম সুলাইমানিকে রকেট হামলায় বাগদাদে হত্যা করলো।
ইরানই বা চুপ থাকবে কেন? ওরাও ইরাকের ইউএস সেনা ঘাঁটিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো। এর মাঝে ওদের ছোড়া রকেটে ওদেরই দেশের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বংস হয়ে বহু সিভিলিয়ান যাত্রী নিহত হলেন। সিংহভাগই ছিলেন বিদেশী। তখন যুদ্ধ বাঁধা কেবল সময়ের ব্যাপার। আমার মনে পড়ে গেল আকরাম ভাইয়ের কথা। চরম ভয় পেয়েছিলাম। কারন আমরা সবাই জানি আধুনিক বিশ্বে একবার যুদ্ধ শুরু হলে সেটি শেষ করা অতি অতি কঠিন। যুগের পর যুগ কেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে, তারপরেও যুদ্ধের নিষ্পত্তি হয়না। মাঝে দিয়ে শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়ে। বাড়ে গৃহহীন শরণার্থীর সংখ্যা। সমুদ্র সৈকতে ঢেউ এনে আছড়ে ফেলে কোন নিষ্পাপ শিশুর লাশ।
আকরাম ভাই বলেছিলেন, "আমি নিশ্চিত আমাদের সামনে ভীষণ দুর্দিন আসছে। একটা বিশ্বযুদ্ধ বাঁধবেই, প্রচুর মানুষ মারা যাবে তাতে। এবং সেটা এক দুইমাসের মধ্যেই ঘটবে।"
এই চরম সংকটময় মুহূর্তে, এই অদ্ভুত কাকতালে আমি আল্লাহ আল্লাহ করলাম। অবচেতন মন কেন যেন নিশ্চিত হয়ে গেল সামনে দুর্দিন আসছেই। ভীষণ দুর্দিন!
ইরান ও আমেরিকা তখন অদ্ভুত সংযম দেখালো। দুইদলই যুদ্ধাবস্থান থেকে সরে এলো। অহংকার, দম্ভ, আত্মসম্মান, ইত্যাদি কিছুই বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো না। নিশ্চিতভাবেই কয়েক লাখ সিভিলিয়ান বেঁচে গেলেন। এটি যেকোন কোন অলৌকিকতা থেকেই কম নয়।
কিন্তু মৃত্যুদূত পরোয়ানা হাতে এলেন ভিন্নদিক থেকে। তখনই চীন জানালো এক নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেছে। এর নাম কোভিড-১৯. কেউ বুঝতে পারছে না কেন কিভাবে হচ্ছে। তারচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার, কেউ জানেনা কিভাবে এর চিকিৎসা হওয়া উচিৎ!
কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই এশিয়া থেকে ইউরোপ হয়ে আমেরিকায় ছড়িয়ে গেল ভাইরাসটি। ইউরোপে হাজারে হাজারে মানুষ মারা গেলেন তো আমেরিকায় মারা গেলেন লাখে লাখ। বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক এবং শক্তিশালী দেশের সাড়ে ছয়লাখের বেশি মানুষ একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর হাতে মারা পড়লেন। নিউইয়র্কের মর্গে লাশের স্থান হয়না, বিশাল বিশাল এইটিন হুইলার এনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করে লাশ রাখতে হয়। সেই স্থানও দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ায় মৃতের বাড়িতেই রুমের দরজা আটকে লাশ রাখতে শুরু করে। নিজের হাতে নিজের চোখ নাক ঠোঁট ছুটে ভরসা পাই না, আতঙ্কে থাকি, এই না আক্রান্ত হই! ঠান্ডার কারণেও গলা খুশখুশ করলে ভয়ে কলিজা শুকিয়ে আসে। স্কুল কলেজ অফিস সব বন্ধ ঘোষণা করা হলো। নিজের বাড়িতেই নিজেদের বন্দি জীবন তখন শুরু। সে এক অবিশ্বাস্য অতিলৌকিক সময় চলছে আমাদের সবার জীবনে।
নিহতদের তালিকায় আমাদের আকরাম ভাইও ছিলেন। অতিমারী শুরু হবার ঠিক আগে দিয়ে পরিবার সহ নিউইয়র্কে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছিলেন। সেখানেই সংক্রমিত হন, সেখানেই তিনি মারা যান। আমার সাথে তাঁর শেষ দেখা ও কথা ডালাসের সেই বাঙালি রেস্টুরেন্টের ক্যাফেটেরিয়ায়। তিনি নিশ্চিত করেই বলেছিলেন, অতি শীঘ্রই আমরা বিরাট বিপদে পড়তে যাচ্ছি। লাখ মানুষের মৃত্যু কিছুতেই ঠ্যাকানো যাবেনা।
তিনি বলেছিলেন, "আমার কথা মিথ্যা প্রমাণিত হলে তুমি ফেসবুকে ক্যানভাসে গল্প লিখে হাসাহাসি করবে।"
৩০ শে মার্চ, ২০২১ রাত ৮:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্যের জন্য।
২| ৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
নীল আকাশ বলেছেন: লেখা খুব ভালো লেগেছে। পড়ার পর প্রায় বিশ্বাসই করে ফেলেছিলাম।
৩| ৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৫৯
রানার ব্লগ বলেছেন: রেসিডেন্সিয়াল রিয়েলটর কি ?
৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৪৯
সোহানী বলেছেন: ভালো লাগলো।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১২:২৬
নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: অসাধারণ লেগেছে। মনে হচ্ছে আপনি ঠিক সত্যি ঘটনাই বর্ণনা করে গেলেন।
ধন্যবাদ ভালো লেখার জন্য।