নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

"ডিপ্রেশন" শুনলে দয়া করে যে মন্তব্য করবেন না

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৭:০৫

প্রিয় ভাইয়েরা ও বোনেরা, "ডিপ্রেশন" কি সেটা জানার চেষ্টা করুন। মানসিক রোগ কি সেটা বুঝার চেষ্টা করুন। দয়া করে নিম্নোক্ত ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। কারণগুলো সংক্ষেপে লিখছি, পড়ে বুঝার চেষ্টা করুন। দয়া করে সমস্যাটা বুঝার চেষ্টা করুন। অস্বীকার করে কিংবা ভুল চিকিৎসা করে একে বাড়তে দিবেন। ডিপ্রেশন এই মুহূর্তে ভয়াবহ একটি ব্যাধি, আপনি স্বীকার করুন, অথবা না করুন, বিশ্বব্যাপী এটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে টিনেজারদের মনে। যাদের জন্ম ২০০০ এর পরে। আমি আপনি, যারা আশি নব্বইয়ের ঘরে জন্মেছি, বা আমাদের মুরুব্বিরা, তাঁরা বুঝারই চেষ্টা করিনা তাঁদের মধ্যে "কিছু একটা" সমস্যা চলছে। আমাদের শৈশব আর ওদের শৈশব এক না। আমাদের যুগ এবং তাঁদের যুগ এক না। যেভাবে আমরা আমাদের সমস্যা মোকাবেলা করেছি, তাঁরা সেভাবে হয়তো পারেনা। এজন্য তাঁদের দোষারোপ না করে আমাদের উচিৎ তাঁদের সাহায্য করা। যদি না পারি, তবে চুপ থাকা। কিন্তু কিছু উক্তি, কিছু আচরণ নিঃসন্দেহে সমস্যা কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।
ভূমিকা ছেড়ে মূল বক্তব্যে যাওয়া যাক। নিচে যেসব উক্তি উল্লেখ করবো, "খবরদার" করে বলছি, এইসব মনে আসলেও আমলে নিবেন না। তাহলেই বিপদে পড়বেন।
১. "ইসলামী জীবন যাপন করলে, কুরআনের আলোকে জীবন ধারণ করলে এমন ভয়ংকর সন্তান তৈরী হতো না।"
- মানসিক রোগের সাথে ধর্মের কোনই সম্পর্ক নাই। নামাজ, রোজা, কুরআন, আল্লাহর উপর বিশ্বাস ইত্যাদি সবই ডিপ্রেশন মোকাবেলার একটি হাতিয়ার কেবল, কিন্তু ডিপ্রেশনের মাত্রা অধিক হলে ওষুধের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে কেবলই আধ্যাত্মিক ও মানসিক শক্তি আপনাকে সাহায্য করবে না। ইসলামিক জীবনধারণ (মদ/মাদক এড়িয়ে চলা) করলেও যেমন অনেকেরই ক্যান্সার হতে পারে, তেমনই ইসলামিক জীবন ধারণের পরেও মানসিক রোগ হতে পারে। আজকে ওরা ১০০% ইসলামিক হলে হয়তো দেখা যেত "আল্লাহু আকবার" বলে সুইসাইড বম্বিং করে মরতো। যে ব্রেন ওদের বুঝিয়েছে পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে ওরা তাঁদের প্রতি দয়া করছে, সেই একই ব্রেন বুঝাতো যে সুইসাইড বম্বিংয়ের মাধ্যমে ওরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে শহীদ হচ্ছে। বেহেস্তের দৃশ্য হয়তো ওরা চোখের সামনেই দেখতে পেত। কাজেই, দয়া করে বুঝার চেষ্টা করুন, আল্লাহর শরণাপন্ন হবার পাশাপাশি মানসিক চিকিৎসা নিন/দিন।
প্র্যাকটিক্যালি দেখলে, মসজিদের লোকজনের কাছ থেকেই শোনা যাচ্ছে, তাঁদের টিনেজ ছেলেমেয়েরা বিষন্নতায় ভুগছে। মসজিদের নিয়মিত নামাজী, ভলান্টিয়ার টিনেজাররা মসজিদের ইয়ুথ কাউন্সিলরদের কাছে স্বীকার করছে মাঝে মাঝে তাঁরা আত্মহত্যার কথা চিন্তা করছে। আমি ইউরোপ আমেরিকার অতি আধুনিক মসজিদগুলোর কথা বলছি, যেখানে টিনেজারদের জন্য এইসব ব্যবস্থা থাকে। আমাদের দেশের মসজিদে এসবের কিছুই হয়না। কাজেই আমরা জানিও না কয়জনের মানসিক অবস্থা কি!
"আমার ছেলেমেয়েকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছি, তাই ডিপ্রেস্ড হবে না" জাতীয় বাবল থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনার ছেলে/মেয়েও বিষন্ন হতে পারে। নানা কারণেই হতে পারে। বিশ্বব্যাপী কিছু একটাতো চলছে যে দাবানলের মতন টিনএজারদের মধ্যে বিষন্নতা ছড়িয়ে গেছে। শক্তিশালী অত্যাধুনিক দেশ হোক অথবা ফকির মিসকিনের দেশ, সব জায়গাতেই এক সমস্যা। বড়রাও ডিপ্রেশনে ভুগছেন। কারনটা এখনও কেউ জানেনা, গবেষণা চলছে, একদিন বের হবে নিশ্চিত। তবে ততদিনে না দেরি হয়ে যায়!

২. "মা বাপকে মেরে ফেলেছে, আত্মহত্যা করেছে, এদেরতো দোজখেও স্থান হবে না।"
- ওদের ব্রেন যে ঠিক ছিল না সেটাতো ওদের আচরণ থেকেই প্রমাণিত। পাগলের ব্যপারে আল্লাহ কি এমন কিছু বলেছেন? কোথায়? দেখান দেখি। আপনি নিজেকে আল্লাহ ভাবেন? তাহলে এমন মন্তব্য করেন কোন সাহসে?
ওদের দুনিয়ার যাত্রা শেষ হয়েছে। এখন ওদের হিসাব নিকাশ আল্লাহকে করতে দিন। আপনি নিজেকে নিয়ে ভাবুন। নিজের আশেপাশে দেখুন, ব্যবস্থা নিন।

৩. "বাপ মায়ের দোষ! ওরা খেয়াল করলো না?"
- ছেলেটার একটি উক্তি ছিল এমন যে সে এতদিন বেঁচে ছিল, কারন পরিবার তাঁকে ভালবাসতো। এর মানে, পরিবার যদি তাঁর পাশে না থাকতো, তবে বহু আগেই তাঁরা নিজেরা শেষ হয়ে যেত। আরেক জায়গায় সে বলেছে তার বাবা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন সারিয়ে তুলতে।
প্রিয় ভাইয়েরা ও বোনেরা, যার যার পরিবারের ভাল মন্দ সে সে বুঝে। আপনি আমি কেউ না সে ব্যাপারে মন্তব্য করার। না জেনে শুনে এইভাবে কারোর ব্যাপারে আলতু ফালতু কথা বলা কথাটা শোভন? কতটা ইসলামিক? ইসলামে সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি গুনাহ হচ্ছে গীবত। সেটাইতো গাইছেন আপনারা। বাঙালি পিতামাতা হয়ে মেন্টাল চিকিৎসার জন্য ছেলেদের ডাক্তার দেখিয়েছেন, এটাই অনেক বড় কথা। ডাক্তার ওষুধও দিয়েছেন। তাঁরা আর কি করতে পারেন? আপনি আপনার ছেলে কোথায় যায়, কি করে না করে কাদের সাথে মিশে সব জানেন? সেটা সম্ভব? তাহলে অন্যের ব্যাপারে কুমন্তব্য করেন কেন? চিনতেন তাঁদের? একটি পরিবার মারা গেছে, আর আপনি তাঁদের ব্যাপারে জাজমেন্ট দিয়ে দিচ্ছেন? দয়া করে এই আচরণ করবেন না। আপনাদের এই আচরণ আমাকেই ডিপ্রেশনে নিয়ে যায়।

৪. "ওষুধে কাজ হলো না কেন?"
- ছেলেটার নিজের স্বীকারোক্তি ছিল ওষুধে তাঁর লাভ হয়েছিল। এরপরে ঘটনা কোন দিকে মোড় নিয়েছে সেটা বিস্তারিত লিখেনি, তবে আমার ধারণা, ওরা সুস্থ হয়ে গেছে ভেবে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিয়েছিল। আমি নিজে এমন কিছু মানসিক রোগী চিনি, যাদের স্বাভাবিক সময়ে দেখলে বুঝতেই পারবেন না তাঁদের কোন সমস্যা আছে। অথচ তাঁরা মেডিসিনের উপরই থাকেন। একটা সময়ে তাঁদের মনে হয় তাঁদের আর ওষুধ সেবনের প্রয়োজন নেই। তখনই সমস্যাটা প্রকট হয়ে যায়। মানসিক রোগে ওষুধে যদি অনিয়মিত হয়ে যান, তাহলে ব্রেন মারাত্মক আকারে বিগড়ে যায়। ফলে তখন সে আপনাকে যা তা করাতে পারে। আমার ধারণা, নিশ্চিত নই, এখানেও তেমনই কিছু ঘটেছে।
কাজেই, যদি আপনি ডিপ্রেশনের রোগী হয়ে থাকেন, ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে থাকেন, তবে দয়া করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ছাড়া ওষুধ ছাড়বেন না। মাত্রা বাড়াবেন না বা কমাবেনও না।

৫. "কিসের অভাব? কি নেই? তাহলে ডিপ্রেশন কিসের?"
- সমস্যা এখানেই। ছেলেগুলোর জীবনে কোনকিছুরই অভাব ছিল না। কিন্তু কোন কিছুতেই "সুখ" পাচ্ছিল না। কোটি কোটি ডলারের মালিক হয়েও সুখী হওয়া যায় না, আবার খালি পা আর পকেটবিহীন পাঞ্জাবির হিমু হয়েও সুখী হওয়া যায়। ছেলেগুলোর নিজেদের স্বীকারোক্তিতে, পরিবার তাঁদের পাশে ছিল, তারপরেও তাঁরা সুখী ছিল না। পরিবারকে "অসুখী" না করতেই তাঁরা তাঁদেরও নিয়ে গেল।
"সুখ" জিনিষটা যে কি, সেটা যদি জানতে পারতাম, বুঝতে পারতাম, কিনে যত্ন করে সাজিয়ে রাখতাম। অন্যকেও ভোগ করতে দিতাম। আজকের যুগের ছেলেমেয়েদের, সে বাঙালি হোক বা পশ্চিমা, কোথাও না কোথাওতো ঠিকই সমস্যা হচ্ছে যে তাঁরা আশঙ্কাজনকহারে ডিপ্রেশনে যাচ্ছে। ওদের হাতের মুঠোয় যা আছে, সেটা পাবার জন্য আমাদের বাপ দাদারা, আমরা নিজেরা খেটে মরেছি। একটা ল্যাপটপ কিনেছি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিকে। ওরা জন্ম নেয় ট্যাব হাতে নিয়ে। ইটের মতন দেখতে পলিফোনিক রিংটোনের মোবাইল নিয়েই কত শো অফ, আর ওরা সারাদিন থাকে স্মার্টফোনের উপর। আমাদের কাছে যা মহামূল্যবান, অথচ ওদের কাছে সেগুলোই মূল্যহীন। কেন? সমস্যাটা কোথায়? কাদের? শুধু ওদের ওপর দোষ চাপিয়ে দায় সারলেই চলবে? আমাদের ভাবতে হবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ইনিয়ে বিনিয়ে এসব কি লিখেন?
আপনি কি আধুনিক মানুষ নন? এত কুসংস্কার কেন আপনার মধ্যে?

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৬

স্প্যানকড বলেছেন: ডিপ্রেশন হওয়ার কারণ হয়তো কোনকিছু খুব বেশী আশা করা আর তা না পেলেই শুরু হতে থাকে এ রোগ। যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে ইবাদতে মনোনিবেশ করলে এ রোগ হওয়ার চান্স কম। ভালো লিখেছেন।

ওহে আধুনিক মানব
শোন দিয়া মন
আরও চালাইয়ায়া যাও
লেহন চাটন !

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৪

বিড়ি বলেছেন: @ রাজীব নুর বিনয়ের সাথে জানতে চাচ্ছি, আপনি কি পোস্ট টা পড়েছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.