নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
এক রূপকথার গল্প শোনাই। বাস্তব রূপকথা। তবে এ গল্পেও এক উদ্ধত, অহংকারী ও শক্তিশালী রাজা আছে। আছে গরিব, নিপীড়িত শোষিত এক প্রজা। আছে এই দুইয়ের মাঝে চরম সংঘর্ষ। এবং সবশেষে আছে হ্যাপি এন্ডিং।
রূপকথার মতন বাস্তবের এই গল্পের রাজার নাম অস্ট্রেলিয়া, গরিব প্রজার নাম শ্রীলংকা এবং এটি ক্রিকেট রাজ্যের ঘটনা।
নব্বইয়ের দশক। আরও নির্দিষ্ট করে বললে ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ। অস্ট্রেলিয়া বনাম শ্রীলংকার মধ্যকার এক ম্যাচে অস্ট্রেলীয় আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নেন তরুণ লংকান এক স্পিনারের ছোড়া বলগুলো অবৈধ ঘোষণা করবেন। বোলারের নাম মুথিয়া মুরলীধরণ। সন্দেহ নেই তাঁর বোলিং অ্যাকশন অভূতপূর্ব। অমন বিদঘুটে ভঙ্গিতে বোলিং অতীতে কেউ করেছিল কিনা কারোর স্মরণে নেই। কিন্তু তাঁকে সরাসরি চাকিংয়ের অভিযোগে ক্রমাগত "নো বল" ঘোষণা করাটাও কি একটু বেশিই বাড়াবাড়ি নয়? বেচারার খেলোয়াড়ি জীবন শুরুর আগেই শেষ হতে চলেছে।
তখন পর্যন্ত শ্রীলংকান ক্রিকেটারদের সবাই ভদ্রলোক হিসেবেই চিনতো। এই রেপুটেশন তাঁদের বহুদিন ধরেই। কিছুদিন আগেও বীরেন্দ্র সেহওয়াগ এক ইন্টারভিউতে বলেন ওরাই সবচেয়ে ভদ্র ক্রিকেট দল। কারোর সাতেও থাকে না, পাঁচেও না। চুপচাপ নিজেদের কাজ করে চলে যায়। আশি নব্বইয়ের দশকেও ওদের কেউ গালাগালি দিলে ওরা জবাবে হাসিমুখে তাকিয়ে থাকতো। সেই দলটিকেই এই পঁচানব্বইয়ের অস্ট্রেলিয়া ট্যুরে সব ধরনের নির্যাতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। স্লেজিং থেকে শুরু করে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ হয়ে "স্পিরিট অফ দ্য গেম" নষ্টের অভিযোগও করা হয়। কিন্তু মুরলীধরণের বলগুলোকে, বিশেষ করে লেগ স্পিনগুলোকেও, যেখানে হাত বাঁকানো মোটামুটি অসম্ভব একটি কাজ, সেগুলোকেও নির্লজ্জের মতন নো বল ঘোষণা করায় শ্রীলংকানরা ক্ষেপে উঠলো। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে তখন গৃহযুদ্ধ চলছে। এক জাতি আরেক জাতির রক্তে তৃষ্ণা মিটাচ্ছে। বন্দুক গোলা মিষ্টি কথা কিছুতেই লাভ হচ্ছেনা। ওরা একে অন্যের জীবন নিয়ে ছাড়বেই। অথচ ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার এমন আচরণ গোটা রাষ্ট্রটিকে এক করে দিল। সবাই তখন মুরলির জন্য কাঁদছে। তাঁদের সন্তানকে এভাবে অন্যায়ভাবে কেউ ধ্বংস করে দিবে, আর তাঁরা চুপ করে থাকবে?
আজকে আমরা জানি মুরলীধরণ বিশ্বের সর্বকালের সর্বসেরা অফ স্পিনার। তখন কেউ জানতো না। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারই হয়তো তাসমান সাগরে ডুবে যেত যদিনা তাঁর অধিনায়কের নাম হতো অর্জুনা রানাতুঙ্গা। এই একটা লোক যেভাবে তাঁর খেলোয়াড়দের আগলে রাখতেন, তা অতীতে কবে কোন অধিনায়ক করতেন কে জানে!
মানসিকভাবে বিদ্ধস্ত মুরলিকে অধিনায়ক রানাতুঙ্গা নিজের বাড়িতে নৈশভোজে ডাকলেন। এ বাড়িতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নিয়মিতই আসর বসে। দুইজন ক্রিকেটারতো এ বাড়িতে "আশ্রিতই" থাকেন। কারন, বাড়ি ভাড়া করে থাকার মতন আয় রোজগার তাঁদের নেই। ক্রিকেটার দুইজনের নাম সনৎ জয়সুরিয়া এবং বিক্রমাসিংয়ে। চমকে উঠার মতই ব্যাপার। জয়সুরিয়া যে কি, সেটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তাঁর এই জয়সুরিয়া হয়ে ওঠার পেছনে রানাতুঙ্গার অবদান কতটা সেটা অজানা থেকে যায়।
শ্রীলংকান ক্রিকেট বোর্ডের তখন একদমই হতদরিদ্র অবস্থা। খেলোয়াড়দের বেতনভাতা দেয়াতো দূরের কথা, যেকোন ট্যুরে যাওয়ার আগে তাঁদের আগে নামতে হয় স্পন্সরের খোঁজে। এই দলের কোন খেলোয়াড়েরই বাড়তি জামা বা বাড়তি জুতা ছিল না। প্রাচুর্য বলতে যা ছিল তা ঐক্যের। ওরা ছিল এক পরিবারের মতন, রানাতুঙ্গা যাদের "বড় ভাই" এবং এই ঐক্যই ছিল ওদের একমাত্র সম্পদ। এই দলেই তখন যুক্ত হন এক অস্ট্রেলিয়ান জিনিয়াস, কোচ ডেভ হোয়াটমোর। তিনি এবং ম্যানেজার দুলিপ মেন্ডিস দায়িত্ব নিয়েই দলকে একটি চরম ঝাঁকুনি দেন। শরীর থেকে আলস্য ঝেড়ে ফেলে দলের প্রতিটা খেলোয়াড়কেই ফিজিক্যালি ফিট বানানোর রুটিন ধরিয়ে দেন। এর ফলেই মানসিকতা পাল্টাতে শুরু করে। এতটাই যে যখন অস্ট্রেলিয়া ঘোষণা দিয়েছিল যে ওরা শ্রীলংকায় কোন ম্যাচ খেলতে যাবেনা (কলম্বোয় বোমা হামলা ঘটেছিল), অর্জুনা রানাতুঙ্গা জবাবে বলেন, "আমরা বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে চাই।"
সেই যুগেও খুব বেশি দলের এই বুকের পাটা ছিল না যে ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জ করবে। ক্রিকেটবিশ্ব শাসন করা ক্রিকেটারের অভাব কোন কালেই ওদের ছিল না।
দলটিতে তখন শারীরিক - মানসিক পরিবর্তনের পাশাপাশি কৌশলগতও অনেক পরিবর্তন ঘটছে। যেমন যেকোন ম্যাচের আগে আলাদা দুই ঘন্টারও বেশি সময় টিম মিটিং চলতো শুধু এই নিয়ে আলোচনায় যে প্রতিপক্ষের কোন খেলোয়াড়ের কোন দিকে দুর্বলতা আছে, শক্তি আছে, কোন ব্যাটসম্যানকে কেমন বল করতে হবে, কেমন ফিল্ড প্লেস করতে হবে, কোন বোলারকে কিভাবে খেলতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। সবই ছিল ছকে বাঁধা। আর নিজের দলের প্রতিটা খেলোয়াড়ের জন্যও নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পিত থাকতো। রানাতুঙ্গা নিজে সেসব তদারকি করতেন, সবাই সবকিছু ঠিকঠাকভাবে করছে কিনা। তবে ওদের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ছিল ব্যাটিং লাইন আপে। ওপেনিংয়ে ওরা নামিয়ে দিল আট এবং নয় নম্বরে ব্যাটিং করে অভ্যস্ত জয়সুরিয়া ও কালুভিথারানাকে। এবং ওদের প্রতি নির্দেশনাও ছিল খুবই সরল।
"পিটা!"
বোলার যেই হোক, পরিস্থিতি যাই হোক, তোদের কাজ হচ্ছে পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে দেয়া। উইকেট যদি পড়েও, কোনই সমস্যা নাই, তোরা পিটাতে থাকবি।
স্বাভাবিকভাবেই দুই ব্যাটসম্যান ঘাবড়ে গেলেন। যদি তাঁরা আউট হয়ে যান, তাহলেতো দল থেকে বের করে দেয়া হবে। এইবারও রানাতুঙ্গা আশ্বস্ত করলেন। "আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, তোদের কিছু হবেনা। তোরা শুধু তাই করবি যা বলা হয়েছে। বাকিটা আমি দেখবো।"
গোটা ক্রিকেট বিশ্ব তখন এই দুই ব্যাটসম্যানের নামে কাঁপে। গ্রামার মেনে চলা ব্যাটসম্যানদের নির্দিষ্ট লাইন লেন্থে বল করলে আটকে রাখা যায়। এদের আটকাবেন কিভাবে? সামনে সুইং সুলতান ওয়াসিম আকরাম বল করছেন, নাকি গতি দানব ওয়াকার-ডোনাল্ড, নাকি একুরেট লাইন লেন্থে পটু ম্যাকগ্রা-পোলক, কিচ্ছু যায় আসেনা। ওরা সামনে এগিয়ে এসে ব্যাট চালিয়ে দিচ্ছে। বলও চলে যাচ্ছে সীমানার বাইরে। প্রতিপক্ষের অধিনায়ক, বোলার ও ফিল্ডারদের সেই হতাশ চেহারা এখনও চোখে ভাসে। কিচ্ছু করার নেই। বারবার বাউন্ডারির ওপার থেকে বল কুড়িয়ে আনতে হচ্ছে।
রোশন মহানামার প্রতি নির্দেশ ছিল স্ট্রাইক বদলে পিঞ্চ হিটারদের স্ট্রাইক দেয়া। হাসান তিলকারত্নেরও দায়িত্ব ছিল এই। গুরু সিনহাকে বলা হয় পুরো ইনিংস জুড়ে ব্যাট করতে। এমনই এক দল ছিল শ্রীলংকা যার লাইনআপের সাত নম্বর পর্যন্ত ছিল জেনুইন ব্যাটসম্যান, এবং আটে নামা চামিন্ডা ভাসও তখন মাঝে মাঝে ব্যাট চালিয়ে দশ বিশ রান তুলে দিতে পারতেন। সেই সময়ের ক্রিকেটে সব দলই পাঁচ থেকে ছয়জনের বেশি ব্যাটসম্যান রাখতে পারতেন না, কারন বোলার ও উইকেট কিপারেরও জায়গা লাগে।
শ্রীলংকার বোলারদেরও দায়িত্ব নির্দিষ্টভাবে ভাগ করা থাকতো। হাত ঘুরালে উইকেট পেতেন জয়সুরিয়া ও অরবিন্দ ডি সিলভাও। মানে দলটিতে তখন সাত ব্যাটসম্যান এবং ছয় বোলার, অন্যদের ক্ষেত্রে যা ছিল পাঁচ-পাঁচ।
শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড়কে কোন রকমের দায়িত্বের শৃঙ্খলে বাঁধা হয় না। তিনি অরবিন্দ ডি সিলভা। শ্রীলংকার ইতিহাসের সর্বকালের সর্বসেরা ব্যাটসম্যান। আমি জানি লোকে তর্ক করবেন সাঙ্গাকারা নিয়ে, কিন্তু ডি সিলভা কি ছিল, সেটা যে তাঁর খেলা দেখেনি, সে কখনই বুঝবে না। পরিসংখ্যান দিয়ে ওকে বিচার করা সম্ভব না। রানাতুঙ্গা তাঁকে স্বাধীনতা দিয়ে বলেছিলেন "তুমি যেভাবে ইচ্ছা ব্যাট করো, কোনই সমস্যা নাই। তুমি সেঞ্চুরি করো, দেখবা আমরা ওয়ার্ল্ডকাপ জিতে যাব।"
অরবিন্দ ডি সিলভা ক্যাপ্টেনের কথা রাখেন। সেমি ফাইনালে দলকে চরম বিপদ থেকে (১ রানেই দলের দুই বিধ্বংসী ওপেনার শেষ) রক্ষা করা আক্রমণাত্মক হাফ সেঞ্চুরির পরে বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর ব্যাট থেকেই আসে সেই কাঙ্খিত সেঞ্চুরি। তাও সেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যারা কয়েক মাস আগেও তাঁদের চরম বেইজ্জতি করেছে। পঁচানব্বইয়ের অস্ট্রেলিয়া ট্যুরের টেস্ট সিরিজে মুরলিকে বুলি করার পাশাপাশি ওরা শ্রীলংকাকেও তুলোধুনো করেছিল। সবকিছুর শোধ তাঁরা তুললো লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। এখানেও রানাতুঙ্গার একটি বিশেষ কৃতিত্বের কথা বলতেই হবে।
"ফাইনালে টসে জিতলে শ্রীলংকার ব্যাট করা উচিৎ" - এই ছিল দলীয় সিদ্ধান্ত। এর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন স্বয়ং কোচ ডেভ হোয়াটমোর, অরবিন্দ ডি সিলভা এবং অন্যান্য আরও কিছু সিনিয়র সদস্য।
রানাতুঙ্গা লাহোরের লোকাল বয় পাক কিংবদন্তি ইমরান খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন, এবং পরামর্শ চান, টসে জিতলে তাঁর কি করা উচিৎ। ইমরানও বলেন ব্যাটিং। আগের বিশ্বকাপেই আগে ব্যাট করে বিশ্ব জয় করে ইমরান, তাঁর কথার জোরতো আছেই। তার উপর চিরন্তন সত্য হচ্ছে, আগে ব্যাট করলে চাপ থাকে কম। একে বিশ্বকাপ ফাইনালের চাপ, তার উপর প্রতিপক্ষের নাম অস্ট্রেলিয়া, তার উপর ওরা যদি একটু বেশি রান করে ফেলে, সেই চাপ শ্রীলংকা কতটা নিতে পারবেন?
কিন্তু ম্যাচের আগের রাতে রানাতুঙ্গা মাঠে গিয়ে দেখেন গোটা মাঠ ভিজে চুপচুপ করছে। তিনি ভাবলেন ঘাসে বুঝিবা পানি দেয়া হয়েছে। গ্রাউন্ডসম্যানরা তাঁর ভুল ভাঙ্গে। তিনি অবাক হয়ে জানতে পারেন ওটা পানিনা, ওটা শিশির। লাহোরে সেই সময়ে রাতের বেলা এমনই শিশির পড়ে।
তাঁর সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলো না। সবার বিরুদ্ধে গিয়েও টস জিতে তিনি ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন। তার পরেরটাতো ইতিহাস। আসলে আকাশে বসা মহাবিশ্বের প্রতিপালকও চাইছিলেন শ্রীলঙ্কাই চ্যাম্পিয়ন হোক। যেমন আগের ম্যাচেই, মানে সেমি ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে তাঁর পরিকল্পনা ছিল ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে পরে রান তাড়া করতে নামা। আজহারউদ্দিন টসে জিতে যার বিপরীতটা করেন। এবং দ্বিতীয় ইনিংসে পিচের অমন ভুতুড়ে আচরণ অর্জুনার কলিজা ঠান্ডা করে দিয়েছিল। টস জিতলে যে নির্ঘাত তিনি ম্যাচটা হেরে বসতেন!
যাই হোক। রূপকথার গল্পের মতই এই গল্পেরও শেষটি সুন্দর। রানাতুঙ্গার ব্যাট থেকেই আসে বিজয়ী রানগুলো। যুদ্ধবিদ্ধস্ত একটি দেশ, হতদরিদ্র যার ক্রিকেট বোর্ড, এবং অভাবী একদল খেলোয়াড় মার্চ মাসের সেই হিম হিম রাত্রিতে বিশ্বজয়ের মুকুট মাথায় তুলে ধরেছিল। ভেঙে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ানদের ঔদ্ধত্ব আর অহংকার। চোখে চোখ রেখে ঘোষণা দিয়েছিল, ক্রিকেট শুধু পশ্চিমাদেরই দাপট দেখবে না, দক্ষিণ এশীয়দেরও সমীহ করার সময় এসে গেছে।
উপমহাদেশে এই বিশ্বকাপ আয়োজন এবং এশীয় দলেরই পরপর দুইদুইটি বিশ্বকাপ জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উপর চরম প্রভাব ফেলে। এই সময়েই বাঙালি ছেলেরা ফুটবলকে পাশে রেখে ক্রিকেট নিয়ে সিরিয়াস হতে শুরু করে। এর পরের বছরই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতন বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এবং এর চূড়ান্ত সফলতা ২০০০ সালে আমাদের টেস্ট খেলার যোগ্যতা অর্জন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার আগে ও পরে থেকে এতদিন ধরে আমাদেরকে কতভাবেই না তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে আসছিল ক্রিকেট বিশ্বের দাপুটে সম্রাট অস্ট্রেলিয়া। না নিজের দেশে খেলতে ডাকে, না আমাদের দেশে আসে। ভাবখানা এমন যেন গরিব প্রজার আতিথ্য গ্রহণ করলে রাজা মহারাজার জাত বিনষ্ট হয়ে যাবে। কত তাল বাহানা, কত অজুহাত। তারপরেও উনাদের পদধূলি আমাদের আঙ্গিনায় পড়ায় আমরা ধন্য হয়েছি। এবার সব শোধবোধের পালা। টি-২০ সিরিজে সেটাই ঘটছে। আপাতত তিন শূন্যতে এগিয়ে আছি। ইন শা আল্লাহ ওদের হোয়াইট ওয়াশ করা হবে। ওদের কাছে আশা করি এই বার্তা পৌঁছে গেছে যে "একদিনে টেস্ট শেষ করে দিব"-র দিন শেষ। এখন আমরাও ওদের চোখে চোখ রেখে বলতে পারি, "আমাদের সমীহ করার সময় এসে গেছে।"
তথ্যসূত্র: নিজের স্মৃতি ও ইন্টারনেট আর্টিকেল ও ইউটিউব।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:০২
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: রানাতুঙ্গার বিদায়ী ম্যাচে পুরো দলের ছেলেরা কেঁদেছিল। এতেই বুঝা যায় দলে তাঁর অবস্থান কি ছিল!
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৩:১২
সোহানী বলেছেন: অনেক কিছু মনে পড়ে গেল সে পুরোনো দিনের ক্রিকেট। একদিন আমাদেরকেও সালাম জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড ডাকবে। যে ভাব তারা নিচ্ছে তা থেকে পালাতে সময় নেবে না। আমাদের ছেলেরা সে ক্ষমতা রাখে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন/সংকলন করেছেন!
সেই সময়ের শ্রীলঙ্কা দল আমার ফেভারিট ছিল, অর্জুনা রানাতুঙ্গা বিশ্বের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট ক্যাপ্টেনদের একজন। ছোট্ট খাট একটা ভুঁড়ি নিয়েও তিনি কি সুন্দর খেলতেন! অরবিন্দ ডি সিলভার মত ক্লাস ব্যাটসম্যান ক্রিকেট জগতে সচরাচর দেখা যায় না। কুমারা সাঙ্গাক্কারার মতো একজন অতিশয় ভদ্র এবং উচ্চশিক্ষিত ক্রিকেটার ক্রিকেট জগতের অহংকার।
এবারে ওদেরকে (অজি) বাংলাওয়াশ দিতে পারলে খুব ভালো হতো, যেমন নিউযীল্যান্ডকে দেয়া হয়েছিল। দেখা যাক, বাংলার দামাল ছেলেরা কতদুর যেতে পারে! অভিনন্দন টীম বাংলাদেশকে!