নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
ইংলিশ নববর্ষ পালন করা হালাল নাকি হারাম, সংস্কৃতি নাকি অপসংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া খুব তোলপাড় থাকে।
একদল মুসলিম বলেন ঈদ ছাড়া যেকোন উৎসব পালন করাটাই "হারাম।"
আরেকদল বলেন যেকোন নিরপেক্ষ উৎসব হালাল/হারাম নির্ভর করবে "কিভাবে" পালন করা হচ্ছে সেটার উপর। যেমন আপনি মদ্যপান করে যদি ঈদ পালন করেন, তাহলে ভাই আপনার জন্য সেই উৎসবও হারাম। কারন মদ ইসলামে এমনিতেই হারাম। আবার বছরের একটি তারিখকে কোন ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে শুধুমাত্র নিজেকে reset করার জন্য, বা ক্লান্তিকর একঘেয়েমি থেকে সামান্য বিরতি নেয়ার জন্য কোন রকমের বাড়াবাড়ি না করে শুধু নির্মল আনন্দের মধ্য দিয়ে (হালাল আনন্দ) দিবসটি পালন করেন, পরিবারের সাথে ভাল সময় কাটান, ভাল মন্দ খান (পোলাও রোস্ট বিরিয়ানি), তাহলে এখানে ইসলাম কিছুই বলে না। কোন সাধারণ উৎসবের সাথেই ইসলামের কোনই সমস্যা নাই যতক্ষন না আপনি "জানুয়ারি/ডিসেম্বর দেবতাকে" সন্তুষ্ট করতে মানত করে বসছেন বা ধরে নিবেন জানুয়ারির এক তারিখে এই ঐ নফল ইবাদত পালন করলে আল্লাহ খুশি হবেন কিংবা এমনই উদ্ভট কিছু ইত্যাদি। মোট কথা, এতে ধর্ম ঢুকানোর চেষ্টা করবেন। আর আগেই বলেছি, যা এমনিতেই নিষেধ, যেমন মদ্যপান বা মাদক সেবন বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ইত্যাদি ইত্যাদি - ওসব যদি করেন তাহলে সেটা জানুয়ারির এক তারিখে করলেও হারাম, ডিসেম্বরের দুই তারিখ করলেও তা হারাম।
তেমনই যারা নিজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে কনজারভেটিভ, তাঁদের দৃষ্টিতে এই বিজাতীয় উৎসব বেলেল্লাপনা। আমাদের নিজেদের নববর্ষ আছে, আমাদের বিভিন্ন সংক্রান্তি আছে, আমরা বারো মাসে তেরো পার্বনের দেশ, আমাদের দুই ঈদ আছে, অন্যান্য ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব আছে, আমাদের এইসব বিদেশী সংস্কৃতি যুক্ত করার কোনই মানে নেই। মূলত ডিস্কো, নাইট ক্লাব, ডিজে, ড্রাগ্স ইত্যাদির বিরুদ্ধে তাঁদের কট্টর অবস্থান।
আবার যারা খানিকটা উদারমনা, তাঁদের ভাষায় কাজটা ততক্ষন ঠিক আছে যতক্ষন না "সীমা লঙ্ঘন" করা হচ্ছে। কেউ বাড়ির ছাদে উঠে আনন্দ করছে, নিজের পরিবারের সাথে, এতে সংস্কৃতির দিক দিয়ে সমস্যা কি?
কাজেই ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক উভয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এখন তাহলে বলি কোথায় গিয়ে লোকজন "সীমালঙ্ঘন" করে। তবে তার আগে জানা যাক বিদেশে, পশ্চিমা দেশে কিভাবে পালন করা হয়। যেহেতু আমেরিকায় থাকি, কাজেই আমেরিকারই উদাহরণ দিব।
১. সরকার নিশ্চিত করে রাস্তায় প্রচুর পুলিশ মজুদ থাকে। কারন এই দিনে প্রচুর অপরাধের সম্ভাবনা থাকে। লোকজন মদ্যপান করে, বারে, ক্লাবে, প্রচুর ভিড় থাকে, সবাই আকণ্ঠ মদ খায়। আমেরিকায় ড্রিংক এন্ড ড্রাইভের কারনে প্রতিদিন প্রচুর একসিডেন্ট হয়, প্রচুর মানুষ মারা যায়। আইন এই ব্যাপারে প্রচন্ড কড়া, কোনরকমের ছাড় দেয়া হয়না, একবার ধরা খেলে জেল, মোটা জরিমানা, রেকর্ড থেকে কখনই যায় না। তারপরেও অসভ্যরা শুধরায় না। ওরা নিজেদের জীবনের চাইতেও অন্যদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে গাড়ি নিয়ে হাইওয়েতে নামে। আমার সাবেক কলিগেরই বোন মারা গিয়েছিল এক ড্রাঙ্ক ড্রাইভারের গাড়ি চাপা পড়ে।
এছাড়া অন্যান্য অপরাধতো আছেই।
২. শহরের পক্ষ থেকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আতশবাজির ব্যবস্থা করা হয়। সময় মতন কাউন্টডাউন হয়, বাজি পোড়ানো হয় এবং পুরো অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে আধা ঘন্টাও লাগেনা। লাখে লাখে মানুষ এই দৃশ্য দেখতে জড়ো হয়। তারপরে রাস্তায় প্রচন্ড জ্যামের শিকার হয়। এবং বাড়ি ফিরতে ফিরতে দুই আড়াই ঘন্টাও লাগে। এটাই আনন্দ।
তবে সরকার এই আয়োজনের সময় অনেক কিছুই বিবেচনায় নেয়। যেমন আতশবাজি যদি দুর্ঘটনাবশতঃও এদিকে সেদিকে নিক্ষিপ্ত হয়, তারপরেও যেন কারোর ক্ষতি করতে না পারে। কারোর বাড়ির ভিতরে না ঢুকে, কারোর বাড়িতে আগুন না লাগে ইত্যাদি। বাতাস, ঝড়, আবহাওয়া ইত্যাদি সব কিছু হিসাবের মধ্যে থাকে। কোন একটা বিপদের আশংকা থাকলে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। এবং সবচেয়ে বড় কথা, বিপদ হতে পারে, এমন স্থানে এই অনুষ্ঠান আয়োজনই করা হয়না।
এখন বলি বাঙালি কিভাবে পালন করে।
টিভিতে দেখে বিদেশে আতশবাজি পোড়ানো হয়। কাজেই ধরেই নেয় আমাকেও পোড়াতে হবে, এবং যদি না পোড়াই, তাহলেতো আমি সহীহ নিউ ইয়ার পালনকারী হলাম না। এর পেছনের নিরাপত্তার বিষয়গুলি নিয়ে কে মাথায় ঘামায়? সরকার নিষেধ করেছে? তাহলেতো আরও বেশি করে পোড়াতে হবে। নাহলে আমি কিসের ব্যাটা হলাম? একজনও কি ভাবে সরকার কেন নিষেধ করেছে? আমাদের নিরাপত্তার জন্যই কিন্তু। এত উদ্ভট সাইকোলজি দুনিয়ার আর কোন জাতির আছে কিনা জানিনা।
নিউইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস ডালাস বা অন্যান্য বড় শহরগুলোর সাথে ঢাকা শহরের বেসিক পার্থক্যই হচ্ছে ঢাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর, একই সাথে অত্যন্ত অপরিকল্পিত। এখানে আগাছার মতন যেখানে সেখানে বাড়িঘরই শুধু গজায়নি, প্রতিটা গলিতে কম করে হলেও হাজার খানেক মানুষের বাস (আমেরিকার এমন বহু শহর আছে যার মোট জনসংখ্যা ঢাকা শহরের এক গলির মোট জনসংখ্যার চেয়ে কম) এবং তারচেয়েও ভয়াবহ ব্যপার, এইসব আবাসিক এলাকার বাড়ি ঘরেই অনেকে রাসায়নিক কেমিকেলের গোডাউন বানিয়ে রাখেন। একটা বাড়িতেও আগুন লাগলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নাই। দমকল বাহিনীকে ডাকেন, ওরা আসবে, কিন্তু ওদের রাস্তায় প্রচুর বাঁধার সম্মুখীন হতে হবে। কারন উৎসুক জনতা তখন নিজের ফেসবুক লাইভের জন্য ভিডিও করায় ব্যস্ত থাকে। আগুন নেভাবে, মানুষ বাঁচাবে সেই বোধ শক্তিটাই নেই। সবাই তখন লাইভ টিভি সাংবাদিক হয়ে যান। বিদেশে ইমার্জেন্সি গাড়িকে বাঁধা দেয়ার জন্য চড়া জরিমানা দেয়া হয়। বাংলায় দমকল বাহিনীর নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী থাকা আবশ্যক, যাদের কাজ হবে এইসমস্ত বেকুবদের পাছায় ডান্ডা মেরে রাস্তা থেকে সরানো। প্রতিবছর বড় বড় ভবনে আগুন লেগে আমাদের প্রচুর মানুষ মরেন। এই কিছুদিন আগেই লঞ্চে আগুন লেগে বহু মানুষ মরলো। আজকেই তুরাগে আগুনে পুড়ে তিনজন মরেছে। আমাদের তবুও বিন্দুমাত্র সিম্প্যাথি নেই।
আগুনের পাশাপাশি আরেকটা সমস্যা হচ্ছে শব্দদূষণ এবং এই ব্যাপারে আমাদের সবাই নির্বিকার। বিশেষ করে উনারা যারা আজানে মাইকের ব্যবহার নিয়ে শব্দদূষণ হচ্ছে বলে মুখ থেকে ফ্যানা বের করে ফেলেন, এবং এই ক্ষেত্রে একদমই নির্বাক হয়ে যান। ভাইরে, দয়া করে কনসিস্ট্যান্ট হন। হ্যা, আজানে বা যেকোন কাজে মাইকের অনিয়ন্ত্রিত শব্দ দোষণীয়, এবং নিঃসন্দেহে ওটা মানুষের ক্ষতি করে, এবং এর আওতায় আতশবাজিও আসবে। এক ভদ্রলোককে সেদিন দেখলাম বলতে যে ফজরের আজানে উনার সমস্যা হয়, উনি হার্টের রোগী। আবার উনাকেই দেখি নিউইয়ারের আতশবাজির সময়ে হার্টের রোগ সেরে দিব্যি সুস্থ হয়ে যেতে। এমন হিপোক্রেটদের জন্যই বাংলাদেশে যেকোন ভাল কাজ আটকে যায়।
হার্টের রোগীদের জন্য রেস্ট নেয়াটা অত্যন্ত জরুরি। উচ্চ মাত্রার শব্দ (গাড়ির হর্ণ থেকে শুরু করে লাউড স্পিকারে ওয়াজ, আজান, পূজায় ঢাকের আওয়াজ, কনসার্ট ইত্যাদি সবকিছুই) আমাদের হার্টরেট বাড়িয়ে দেয়, যাদের হার্ট দুর্বল তাঁদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারন হয় এই শব্দমাত্রা। আপনার হার্টের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে এ কারনে। সেই সাথে ব্রেনেও ক্ষতি/স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে। কিন্তু আপনার মাথায় ততক্ষন ঢুকবে না যতক্ষন না আপনার নিজের আপনজনের কোন ক্ষতি হবেনা।
ঢাকা শহরে চার মাস বয়সী এক বাচ্চার বাবাকে দেখেছিলাম স্ট্যাটাস দিতে যে শব্দ দূষণের কারনে ভয়ে তাঁর শিশু ঘুমাতে পারছে না। শিশুটার হার্ট কন্ডিশন ভাল না। হার্টে ছিদ্র নিয়ে জন্মেছিল। আজকে দেখি শিশুটা মারা গেছে। এই শিশুটাকে কি হত্যা করা হলো না? ওর বাবা স্ট্যাটাস দেয়াতে এবং প্রথম আলো পত্রিকা কভার করায় আমরা জানতে পারছি, কতজন স্ট্যাটাস দেননি সেই হিসাব আছে? আজকে যাদের হার্টে পার্মানেন্ট ড্যামেজ হলো, কালকে যারা ভুক্তভোগী হবেন, সেজন্যও কি আমরা দায়ী না? আমাদেরও ফানুস ওড়াতে হবে। বেকুবের মতন এই বুদ্ধি বিবেচনা নাই যে যদি বাতাস সেটাকে ঠেলে কোন ইলেকট্রিক ট্রান্সফর্মারের উপর ফেলে, কিংবা এমন কোথাও যেখানে আরামসে আগুন ধরে যাবার সম্ভাবনা থাকে, তখন? আমি নিশ্চিত করলাম আমার বাড়ির ছাদে কোন দাহ্য পদার্থ নাই, আমি এইটা নিশ্চিত হবো কিভাবে আমার আশেপাশের সব বাড়ির ছাদ ও বাসিন্দা নিরাপদ? পত্রিকায় খবর এসেছে অসংখ্য স্থানে আগুন লেগেছে, ফায়ার সার্ভিস চকিত ছিল বলেই বিপদ ঘটেনি। একটা ক্ষেত্রেও খবর আসেনি আগুন লাগানোর দায় কেউ স্বীকার করে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। বিদেশে কিন্তু এইসবের জন্য ইন্সুরেন্স থাকে। সরকার যে আয়োজন করে, ওর ভুল হলে এবং কারোর ক্ষতি হলে সেজন্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেয়। অথচ আমাদের লোকজন ঘোড়ার আন্ডার সতর্কতা ও দায়িত্ব না নিয়ে কুতর্ক করতে আসে এর পক্ষে। অদ্ভুত!
শুনলাম ফায়ার সার্ভিস সরকারের কাছে দাবি করছে নববর্ষে ফানুস ওড়ানো নিষেধ করা হোক। সরকার নিষেধ করলেও কি বেকুব জনতা মানবে? নিজের বাড়িতেও যদি আগুন লাগে, তারপরেও আমি লিখে দিতে পারি পরের বছর এরা ঠিকই আবারও উড়াবে। কারন ইদানিং এটাই ফ্যাশন হয়ে গেছে। যেহেতু অন্যরা করছে, আমরা না করলে আমরা খ্যাত থেকে যাব। ফেসবুকে ছবি দিতে হবে, বন্ধুদের দেখাতে হবে।
দশ পনেরো বছর আগেও ঢাকা শহরের আকাশে এত বিপুল পরিমানে আতশবাজি পোড়ানো হতো না। আমাদের সময়ে (আর্লি ২০০১-৪ এর দিককার ঘটনা) নিউ ইয়ার পালন হতো ভিন্নভাবে। এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে একশো আটটা ফ্ল্যাট, মানে প্রচুর ছেলেমেয়ে থাকে। কাজেই ডিসেম্বরের একত্রিশ তারিখ একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পারফরমারের অভাব নেই। স্টেজ বানানো হতো, লাইটিং করা হতো। যারা গান পারতো, গান গাইতো। যারা নাচতে পারতো, নাচতো। আমাকে বলা হতো নাটক লিখতে। লেখা, ডিরেকশন, অভিনয় সব আমরা আমরাই, বন্ধু বান্ধবরা। একটা মেয়েকে গ্রামের মেয়ে সাজতে হবে। মেকাপ করবে কিভাবে? কেউই জানিনা। বললাম ওর কাজের মেয়েকে বলতে যেন সুন্দর করে সাজায় দেয়। আধাঘন্টার মধ্যে আমাদের কাজ হয়ে গেল। ক্লাস ফাইভে পড়া অভিনেতা দাবি করলো ও কাজের লোকের অভিনয় করবে না। কারন ওর ক্রাশ এই এপার্টমেন্টেরই আরেক মেয়ে, ওর সামনে ইজ্জত চলে যাবে। সেই কাজের লোককে চাকরিজীবী বানাতে হলো। এইসব কত কি সমস্যা আর কত বিচিত্র সমাধান!
দেখা গেল গান, নাচ নাটকের পরেও আরও আধা ঘন্টা সময় ফাঁকা থেকে যাচ্ছে। লিখো আরেকটা নাটক। করো রিহার্স্যাল। স্কুল ফাইনাল শেষ, হাতে অফুরন্ত সময়। প্রোডাক্টিভ কাজেই সময় ব্যয় হতো। এবং তারপরে মা বাবা আংকেল আন্টির সামনে মঞ্চে পরিবেশন। ডায়লগ বলতে গিয়ে শিশু অভিনেতা হেসে দিচ্ছে, অথবা এতটাই নার্ভাস যে ডায়লগই ভুলে গেছে, দর্শকসারি থেকে লোকজন হেসেই খুন। যার বাচ্চা ভুল করছে, সেই বেশি হাসছে। এইভাবে করতে করতেই নাটক শেষ। সবাই দাঁড়িয়ে তুমুল করতালি, আমাদের মনে হতো এইমাত্র অস্কার জিতে দেশে ফিরলাম। সিদ্বেশ্বরীর ইস্টার্ন প্যালেসের কথা বলছি। শুনেছি আশেপাশের অন্যান্য হাউজিংয়ের এপার্টমেন্টগুলিতেও একইভাবে কিছু না কিছু করা হতো।
অথবা যারা সাংস্কৃতিক কিছুই করতেন না, শুধুমাত্র ভাল খাবার দাবার খেতেন, এবং পরিবারের সাথে একান্তেই ব্যক্তিগত আনন্দে সময় কাটাতেন, তাঁরাও অন্তত অন্য কারোর ক্ষতির কারন হতেন না।
মানুষ আমাকে বলে "নির্মল" আনন্দ মিসিং। তাই আতশবাজি পোড়ানো আর ফানুস ওড়ানো ছাড়া নাকি আমাদের হাতে কোনই অল্টারনেটিভ নাই। থাকবে কিভাবে? অন্ধ অনুকরণ বাদ দিয়ে নিজের সংস্কৃতি ঐতিহ্যের মধ্যে থেকে কখনও চিন্তা করেছেন?
আর "সরকার করছে না তাই বাধ্য হয়ে আমাদেরই আতশবাজি পোড়াতে হচ্ছে" জাতীয় হাস্যকর, ফালতু কুযুক্তি দিবেন না। সরকার খুন করতেও নিষেধ করে, তাই বাধ্য হয়ে আমি রাস্তায় নেমে লোকজনকে খুন করতে শুরু করে দিব?
তাছাড়া সরকার আর কত বাজি পোড়াবে? স্বাধীনতা দিবসেও পোড়াও, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনেও পোড়াও, বিজয় দিবসেও পোড়াও, এখন নিউইয়ারেও পোড়ানোর দাবি। রাস্তাঘাট বা অন্যান্য সব উন্নয়ন বাদ দিয়ে সরকার শুধু বাজিই পোড়াক, আর আমরা এতেই আনন্দিত হই, কি বলেন? আমেরিকাতেই শুধুমাত্র স্বাধীনতা দিবসে ঘটা করে বাজি পোড়ানো হয়। নিউ ইয়ারেরটা সেই তুলনায় একটু কম। এছাড়া আর নাই। এখন যদি বলেন আমরা আমেরিকার চেয়ে ধনী, তাহলে ভিন্ন কথা।
বাজি পোড়াবেন, ফানুস উড়াবেন ভাল কথা, সবার আগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকার বাইরে গিয়ে মাঝ নদীতে বা সমুদ্রের তীরে গিয়ে ফানুস ওড়ান, কোনই সমস্যা নাই। ফাঁকা মাঠে (যেমন স্টেডিয়াম) আতশবাজি পোড়ান, কোনই সমস্যা নাই। যদি তা না পারেন, দয়া করে অল্টারনেট কিছু ভাবুন। এমন কিছু যার জন্য চার মাসের শিশুকে মরে যেতে হয়না।
২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:৫২
সুনীল সমুদ্র বলেছেন: অত্যন্ত বাস্তবসম্মত বিশ্লেষনধর্মী লেখা। ভালো লাগলো খুব। ধন্যবাদ।
৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:০৫
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: সোবুজ বলেছেন: প্রখ্যাত কয়েক জন চাপাবাজ মাওলানার ওয়াজেই শুনলাম আরবি ছাড়া বাকি সব নব বর্ষ পালন করা হারাম।
যদি সম্ভব হয় একটু রেফরেন্স দিয়েন। আমি তো যদ্দুর পেলাম সবখানেই বলতেছে যে, যে কোন ক্যালেন্ডারের নববর্ষই ইসলামে নিষিদ্ধ!
৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১২
বিটপি বলেছেন: ইসলামের হারাম হালালের লিস্ট ফিকাহবিদেরা প্রবর্তন করেছেন, যা এক রকম ইজমা - শরীয়তের অন্যতম উৎস। এর বাইরে চাপাবাজ মাওলানারা কি বলে লোক হাসালো - সেটা মাদের বিবেচ্য বিষয় নয়।
আপনার লেখাগুলো খুব মনে ধরেছে। কিন্তু সরকার বাহাদুর কাজের কাজ বলতে একটাই পেরেছে - যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি আর দেশকে বিরোধী দল মুক্ত করা। এর বাইরে যে আরো ভালো কিছু করা যায়, সে চিন্তা সম্ভবত তাদের মাথায় নেই।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন।
৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১:২২
ইমরান আশফাক বলেছেন: আপনার ইসলাম সন্মন্ধে স্বচ্ছ ধারনা আছে সেটা আপনার পোষ্টগুলি পড়লেই বুঝা যায়।
০৯ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, চেষ্টা নেই নিজের ধর্ম জানতে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:১০
সোবুজ বলেছেন: প্রখ্যাত কয়েক জন চাপাবাজ মাওলানার ওয়াজেই শুনলাম আরবি ছাড়া বাকি সব নব বর্ষ পালন করা হারাম।