নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিপ্রেশন

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:৪৩

বৌ যখন প্রেগন্যান্ট ছিল, ওকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে যেতাম। সেখানে অনেক ম্যাগাজিন পড়ে থাকতো। আজাইরা গসিপ ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে স্পোর্টস ম্যাগাজিন হয়ে টাইম, ন্যাশনাল ডিসকভারি বা মেডিকেল জার্নাল থাকতোই। এইসব ব্যাপারে আমি সর্বভুক। সহজ বোধগম্য ভাষায় আমার সামনে যাই হাজির করো, আমি গিলে খাব।
তেমনই মাঝে মাঝে কিছু মেডিকেল ম্যাগাজিন খুলে পড়তাম। দেশের বিখ্যাত ডাক্তাররা সেখানে লেখালেখি করতেন। আমাদের দেশে এমনটা লিখলে সবচেয়ে বড় সমস্যা যা হবে তা হচ্ছে, ঘরে ঘরে ডাক্তার পয়দা হয়ে যাবে। সবাই ডাক্তারি ফলাতে শুরু করবে।
"এটা হয়েছে? এই ওষুধটা খেয়ে ফেল, সব ঠিক হয়ে যাবে।"
"কিন্তু এইভাবে না জেনে বুঝে ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে?"
"না জেনে মানে? আমি মেডিকেল জার্নালে পড়েছি বলেইতো বলছি। তোর কি আমার উপর বিশ্বাস নেই?"
আমাদের দেশে পাশ করা ডাক্তারের চাইতে লোকে ফার্মেসির কম্পাউন্ডারের উপর বেশি ভরসা করে। ওদের কথায় এন্টিবায়োটিক খায়। সেখানে এই ধরনের বই/ম্যাগাজিন যে কি সর্বনাশটা ঘটাবে, সেটা অনুমান করাই যায়।
যাই হোক। সেখানেই একবার ডিপ্রেশন নিয়ে পড়েছিলাম। অনেক আগের কথা, সবটা মনেও নেই। তবে যা মনে আছে, তা হচ্ছে, ডিপ্রেশন একটি ভয়াবহ মানসিক রোগ। অনেক কারণেই ডিপ্রেশন হতে পারে। চাকরি চলে যাওয়া, সন্তান না হওয়া, কারোর মৃত্যু, কোন কিছু না পাওয়া থেকে শুরু করে আবহাওয়ারও ভূমিকা আছে ডিপ্রেশনের পেছনে। রোদ ঝলমলে দিন, প্রচুর আলো বাতাস, নাতিশীতোষ্ণ তাপমাত্রা মন হালকা করে দেয়। অন্যদিকে মেঘলা, গুমোট আবহাওয়া, হীম শীতল পরিবেশ যা মানুষকে বাড়িতে বন্দি থাকতে বাধ্য করে - মনের উপর প্রচন্ড চাপ ফেলতে সক্ষম। চাকরি না করা যেমন ডিপ্রেশনের কারন হতে পারে, বিরতিহীন কাজ করে যাওয়াটাও কারন হতে পারে। কোন ছুটিছাটা নেই, দিনরাত শুধু কাজ কাজ আর কাজ। চারপাশ থেকে বানের জলের মতন টাকা আসছে। সবাই এই কারণেই হিংসায় শেষ। একদিন দেখবেন এমন মানুষ দুম করে আত্মহত্যা করে ফেলেছে।
"মন খারাপ" আর "ডিপ্রেশন" এক না। মন মেজাজ খারাপ হলে সেটা ভাল করার নানান উপায় থাকে, ডিপ্রেশনের জন্য একচুয়াল মেডিকেল চিকিৎসা নিতে হয়। কারোর ওষুধ লাগে, কারোর লাগেনা। এবং কেউ ডিপ্রেশনে আছে কিনা, সেটা একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ভাল বুঝতে পারবেন, আমি আপনি আমরা নই। কারন ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলো পুরুষ ও নারী ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
কিছু লক্ষণের বর্ণনা দেই।
১. প্রচন্ড মন খারাপ থাকে, এবং শূন্য অনুভব করে।
২. খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যায়।
৩. কথায় কথায় রাগ উঠে যায়। যেকোন ছোটখাট বিষয়েই।
৪. উদ্বিগ্নতা বাড়ে প্রচন্ড পরিমানে।
৫. অফিস বা অন্যান্য কাজের উপর থেকে মন উঠে যায়।
৬. পরিবারের উপরও বিরক্তি চলে আসে।
৭. সবসময়ে যা করতে ভাল লাগে, যেমন কেউ বাগান করে, কেউ বই পড়ে, সিনেমা দেখে, সেগুলোর উপর থেকেও মন উঠে যায়।
৮. স্বামী স্ত্রীর মিলনে পর্যন্ত আগ্রহ থাকেনা।
৯. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন চলে আসে। খেতে মন চায় না। একবেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে কোনই সমস্যা হয়না।
১০. মৃত্যুচিন্তা মনে দানা বাঁধতে থাকে, এবং মাঝে মাঝে সুইসাইডাল হতেও মন চায়।
এইগুলো সামান্য একটা তালিকা। কারোর ডিপ্রেশন হয়েছে কিনা সেটা বুঝতে এই তালিকার সবগুলো লক্ষণ থাকতে হবে, এর কোন গ্যারান্টি নেই। এবং সবচেয়ে বড় কথা, ডিপ্রেশন হয়েছে কিনা, সেটা বুঝার ও চিকিৎসা দেয়ার একমাত্র ক্ষমতা কেবলই ডাক্তারের আছে।

এই লেখা পড়ে যে কেউ লেখককে এবং নিজেকে ডাক্তার মনে করে বসবেন না। যদি কেউ উপরের দশ লক্ষণ নিজের মধ্যে পান, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের সাহায্য নিন। যদি কারোর মাঝে দেখেন, নিজে ডাক্তারি ফলাতে ("এইটা কর, ঐটা কর, ঠিক হয়ে যাবে" জাতীয় উপদেশ) যাবেন না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৫:৪৭

রংবাজপোলা বলেছেন: হক কথাই কইছেন।

তই আমজনতার থাইক্যা হাতুড়ি ডক্তরেরা, পল্লী চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট - হেরাই বেশি ক্ষতি কইরছে। গ্রামে তো আসল ডকতোর নাইক্কা, হেরায় সব দক্তরি কইরা ফাটাই ফেলতাছে। হেইগুলা দেখনের কেউ নাইক্কা।

অশিকখিত মাইনসেরা তো পল্লী চিকিত্সক আর MBBS পাস চিকিত্সকের ফারাকটা বুইঝেনা। হইত বুঝে মাগার উপাই নাইককা। মাইনকার চিপায় পইরা গেইছে।

লেহাটা বালাই লাগলো।

কদমবুসি লইয়েন।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৬

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আমি একবার মহা ডিপ্রেশনে পড়েছিলাম। তখন খালি খাইতে মন চাইতো। পকেটে টাকা নাই; অন্য দিকে খাইতে মন চায়! সে যে কি এক বিপদ। ডিপ্রেশনের উপরে ডিপ্রেশন।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে পানি পড়া খেলেই হয়, ডাক্তারের প্রয়োজন কি?

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:৫১

নাহল তরকারি বলেছেন: কত কষ্ট মাইন্সের।

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৭

জ্যাকেল বলেছেন: ডিপ্রেশন শব্দটা জেনারালাইজড হইয়া গেছে। আমি সেমাই এজুকেডেট মানুষদের এই শব্দ ব্যবহার করতে দেখি অহরহ। এ নিয়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা দরকার। সরকারের ওপর এই আশা করা এক প্রকার ছাগলামী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.