নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
আমাদের দেশের চায়ের দোকানের আড্ডাবাজরা কি করে? যে লোকটা নিজের সংসার চালাতেই হিমশিম খায়, নুন আনতে পান্তা ফুরায়, সে বিশ্ব অর্থনীতির উপর বিশাল লেকচার দিয়ে বসে। বাইডেন প্রশাসন কতটা ব্যর্থ, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রণালয় কতটা নিষ্কর্মা ইত্যাদি সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত। আশেপাশের লোকজনও মনোযোগ দিয়ে শোনে, অতি গুরুত্বের সাথে আলোচনা করে, এবং নিজনিজ সার্কেলে সেও বিশেষজ্ঞ হয়ে যায়। ঠিক না?
তা ফেসবুকের কল্যানে এখন সেই চায়ের দোকানের আড্ডাবাজরা বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা পাচ্ছে। মনে যা আসে, তাই লিখে ফেলে। ক্রসচেকিং করবে, সেই বিদ্যাই নাই। পাঠকদের প্রতি অনুরোধ, কারোর পোস্ট লাইক, শেয়ার, এবং নিজের জীবনে এপ্লাই করার আগে ভাল করে যাচাই বাছাই করে নিবেন।
যেমন আজকে একজনের পোস্ট দেখলাম লিখেছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস রপ্তানি বন্ধ করলে আমেরিকানদের ন্যাংটা হয়ে ঘুরতে হবে। কারন ইউরোপ-আমেরিকায় প্রোডাকশন কস্ট অনেক হাই। মিনিমাম লেবার ওয়েজ অনেক বেশি। ভিয়েতনামেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। কাজেই বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করে মূলত আমেরিকার প্রতি করুণা করে। পোশাক রপ্তানি বন্ধ করলে আমেরিকা এসে বাংলাদেশের পায়ে ধরবে। ইত্যাদি ইত্যাদি আরও যা তা প্রলাপ!
পোস্টদাতা যে ডিলিউশনের মধ্যে আছে সন্দেহ নেই। কি আবোল তাবোল বকছে ওর কোন ধারনাই নাই।
পরিচিত গার্মেন্টস মালিকদের জিজ্ঞেস করেন আমেরিকা গার্মেন্টস না কিনলে উনাদের অবস্থা কি হয়। নিজের আত্মীয়দের মাঝে বেশ কিছু ব্যবসায়ী আছে বলেই বললাম। তাজরীন ফ্যাশনসে আগুন লেগেছিল, এ কারনে আমেরিকা কয়েকদিন গার্মেন্টস কেনা বন্ধ করেছিল, এর ফলে কি হয়েছিল এইটা একটু খোঁজ নেন।
এইটা সত্যি যে ইউরোপ আমেরিকার মিনিমাম ওয়েজ অনেক বেশি। এবং এই কারণেই এইসব শিল্প বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে। এই কারণেই আমাদের দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই মার্কেট কিভাবে কাজ করে সেটার ব্যাপারে লোকটার ধারণা শূন্য। আপনাদের একটু বলি।
আমেরিকা প্রথমেই হিসাব করে বছরে ওর কত পরিমান পোশাক লাগবে। সেটা বানাতে কত খরচ হবে। এখন সেটা যদি ভিন্ন দেশে বানাতে দেয়া হয়, তাহলে উৎপাদন এবং শিপিং খরচ কত পড়বে। যোগ বিয়োগের হিসাবে যেটা লাভজনক, সেটাই আউটসোর্স করতে হয়।
শুধু পোশাকই না, যেকোন ফিল্ডে এমনটাই করছে। একাউন্টিংয়ের কথাই বলি। আমেরিকায় একজন সাধারণ বুককিপারকে ঘন্টায় পঁচিশ-তিরিশ ডলার বেতন দিতে হয়। বাংলাদেশে ঘন্টায় দশ-১২ ডলারেই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে হায়ার করে ফেললেই হবেনা। কাজের কোয়ালিটি কেমন হবে, বিদ্যা কতটুকু আছে, সময় মতন ডেলিভারি দিতে পারবে কিনা, আরও হাজারো হিসাব নিকাশ করতে হয়। টাইমজোনেরও একটা ব্যাপার আছে। আমার ইন্ডিয়ার অফিস ওদের নাইট শিফটে কাজ করে, কারন আমাদের যখন তখন ওদেরকে ফোন দিতে হয়। নাইট শিফটে কাজ করার যথেষ্ট লোক আছে কিনা। নিরাপত্তা কতটুকু। হরতাল, ইলেক্ট্রিসিটি ইত্যাদি ঝামেলা যা বিঘ্ন ঘটায় এসব আছে কিনা। সবকিছু নিয়ে কাটাছেড়া শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এরউপর দেশ হিসেবে আমেরিকার কত পয়সা আছে এই ভদ্রলোকের হয়তো ধারনাই নাই। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জিডিপির দেশ। প্রায় একুশ ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি! অনেক ক্যালকুলেটরেই সংখ্যাটা ধরে না। ঐ ভদ্রলোকেরও মাথায় ধরে নাই।
ভিয়েৎনামের লেবার বাংলাদেশের চেয়ে "অনেক বেশি" এই তথ্য ভাইজান কোত্থেকে পেলেন সেটাও জানতে চাই। দশ ডলারে যে গেঞ্জি কিনতে হয়, সেই গেঞ্জি খুব বেশি হলে ১২ ডলারে কিনতে হবে। ২০ ডলারে কিনতে হলেও আমেরিকানদের ন্যাংটা থাকতে হবে না। "পোশাকের জন্য একটি দেশের পা ধরতে হবে" - টাইপ কথাবার্তা তাই ওর বুদ্ধির লেভেল নিয়েই প্রশ্ন তোলে।
পোশাক শিল্পে ভিয়েৎনাম মুখ হা করে আছে বাংলাদেশের মার্কেট নিয়ে নিতে, বাংলাদেশে গার্মেন্টস বন্ধ হলেই ভিয়েতনাম মার্কেটের দখল নিয়ে নিবে। পেছনে আছে আরও বহু দেশ। আমাদের "মিত্র" ইন্ডিয়া নিজেই দখল নিয়ে নিবে। বাংলাদেশ যখন বলবে, "ভাই, তুমিও?" ভারত তখন ফিল্মি কায়দায় বলবে, "ধান্ধে মে দোস্ত দুশমান হোতা হ্যায়।" (ব্যবসায় বন্ধু শত্রু হয়ে থাকে)
বাংলাদেশের তখন হাত কামড়ানো ছাড়া উপায় থাকবে না।
চায়না যে এত এত কামরা কামড়ি করছে আমেরিকার সাথে, তা কোন পণ্যটা রপ্তানি বন্ধ করেছে সে?
ওরা সবাই জাতে মাতাল, তালে ঠিক। মাঝে দিয়ে বেশি লাফালাফির কারনে আমাদের ক্ষতি হলে আমাদের কিন্তু ফাইটব্যাক করার শক্তি নাই। রিজার্ভে কত আছে? মার্কেট হারালে নতুন মার্কেট কত দ্রুত পাব? যে বেয়াক্কেল বলে দিলেন আমেরিকাকে আমরা পোশাক দিয়ে করুণা করি, আমেরিকা না নিলে আমাদের এই বিপুল পরিমান গার্মেন্টস কে নিবে? চায়না নিজেই উৎপাদন করে। ইন্ডিয়ার ঠ্যাকা নাই এত দাম দিয়ে কেনার। রাশিয়া চায়না থেকেই সস্তায় পাচ্ছে। সৌদি কিনবে? ব্রাজিল? কত পরিমান কিনবে?
যেকোন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করলে জানতে পারবেন প্রতিটা ডিল নিতে কিভাবে কামরা কামড়ি করতে হয়। ব্যবসা এত সহজ না। কোন বুদ্ধিমান ব্যবসায়ীই বান্ধা কাস্টমার হারাতে চায় না। চায়ের দোকানের আড্ডাবাজ বিশেষজ্ঞের এইসব মাথাতেই ঢুকে না।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতিবিদদের মতামত কি? যাদের কাজই অর্থনীতি নিয়ে, তাঁদের মতামতের ব্যাপারে খোঁজ নিন। ফেসবুকে যে যা বলে, তাই বিশ্বাস করলে বিপদে পড়বেন।
আমি নিজে এই ব্যাপারে এক্সপার্ট? অবশ্যই না। তবে কাজের কারণেই ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট এবং আউটসোর্সিং নিয়ে খানিকটা জানাশোনা আছে। এবং আশেপাশে এই ফিল্ডে কাজ করে এমন কিছু মানুষের সাথে কথাবার্তা বলে, একটু খোঁজ খবর নিয়ে এইসব লিখেছি। ডিটেইল জানতে হলে অবশ্যই এক্সপার্টের কাছে যাওয়া ছাড়া কোন উপায়ই নাই।
১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:০৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: এখানে বিএনপি আওয়ামীলীগ আমলের রেমিটেন্স নিয়ে কথা উঠছে কেন? আমার কি মাথা নষ্ট? কথা হচ্ছে ইদানিং বাংলাদেশের কিছু ফরেনপলিসি নিয়ে যা বিপদে ফেলতে পারে। কিসের মধ্যে কি টেনে আনেন? ধুর মিয়া! অফ যান!
২| ১৬ ই জুন, ২০২৩ ভোর ৬:০৯
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
রেমিটেন্সের কথা তুলেছি কেন?
আপনি যেভাবে গার্মেন্টস রপ্তানি বন্ধ আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন একইভাবে 2011 সালেও মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক রপ্তানি বন্ধ করে রেমিটেন্স বন্ধের ভয় দেখানো হয়েছিল।
সব আতংকই সেইম ফেইক আতঙ্ক।
১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:৪৩
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিলে কি হয় তা যেসব দেশের উপর দেয়া হয়েছিল, সেগুলোর অবস্থা দেখলেই বুঝবেন।
এইটা ফেইক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা না, সম্ভাবনার ব্যাপারে সাবধান করা। দুইটার পার্থক্য আছে।
মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক নেয়া যদি বন্ধ করে তখন কি হবে নিজেই বুঝবেন। ওরা বন্ধ করেনি বলেই রেমিটেন্সের হিসাব দিতে পারছেন।
৩| ১৬ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আদার বেপারি, তাই চুপ থাকলাম।
১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:৪১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: হাহাহাহা। ভাল বলেছেন।
৪| ১৬ ই জুন, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬
নীলসাধু বলেছেন: হুম। আমরা হাবিজাবি কথা বলা জাতি। চায়ের আড্ডায় তো লাগাম থাকে না।
১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ৮:৪১
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কত শিক্ষিত মানুষ যে কত ফাউল কথা বলে!
৫| ১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ৯:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: হাহাহাহা। ভাল বলেছেন।
আপনাকে অনুরোধ মাঝে মাঝে আমাদের পোস্টে আসবেন। দুই একটা মন্তব্য করবেন।
২০ শে জুন, ২০২৩ রাত ৩:৫৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: অবশ্যই।
৬| ১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:০৭
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: চা - কাপের আড্ডা,
এটাতো আয়েশী খোশগল্প সময় কাটানো ।
যা গ্রামে গন্জে চলতেই থাকবে ।
সন্ধ্যার পর তাদের সময় কাটানোর আর অবকাশ যে নাই ।
....................................................................................................
তবে ইউক্রেন - রাশা যুদ্ধে পর পর বুঝা যাচ্ছে, আমেরিকান প্রশাসন অনেক আগে
থেকেই বহু প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যা ইউরোপীয় ইঊনিয়ন পর্যন্ত যানেনা ।
সম্পদ,শক্তি, কৌশল সবদিকে তাদের অর্জন বিশাল তাই আমাদের লাগতে যাওয়া বোকামী ।
২০ শে জুন, ২০২৩ রাত ৩:৫৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাই।
৭| ১৮ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:৪৯
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আসলে যে যে দলের সাপোর্টার সে সে দলের পক্ষে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক, আতি উৎসাহী হয়ে আওয়ামীলীগের কেউ কেউ এমন কথা বলতেই পারে।
বাংলাদেশ থেকে পোশাক না কিনলে আমেরিকা ল্যাংটা হয়ে থাকবে এটা যেমন আজগুবি কথা, শেখ হাসিনা ভারতের কাছে দ্যাশ বিক্রি করে দিবো এটাও ঠিক তেমনই আজগুবি কথা যা গত ১০ বছর ধরে শুনে আসতেছি। এরকম জেনারালাইজড করে যারা কথা বার্তা বলে তাদের সাথে যুক্তি তর্কে সময় নষ্ট করে লাভ নেই, এগুলাকে আমি বুলশিট রাজনৈতিক আলাপন হিসেবেই কন্সিডার করি।
২০ শে জুন, ২০২৩ রাত ৩:৫৯
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ভাল বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুন, ২০২৩ রাত ১২:৪২
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আপনিও তো কম জান না।
বাংলাদেশের অধপতন চেয়ে গত দশ ১২ বছর বছর জাবৎ হাবিজাবি তথ্য খুজে এনে মানুষকে বোকা বানানো হয়েছিল লাগাতার ভাবে'।
২০০৯ এর পর থেকে একটানা প্রথমআলো সহ পত্রিকায় তথ্যপ্রমান দিয়ে পর্যন্ত ক্রমাগত বলা হচ্ছিল আরবদেশগুলো শ্রমিক নেয়া বন্ধ করেছে, বাকিগুলোকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। সৌদিআরব থেকে গাট্টিপোটরা নিয়ে কান্নাকাটি করে ফিরে আসছে এমন ছবি মানবজমিন পত্রিকায়, ভিডিও নিউজ মিডিয়াতে দেখা যাচ্ছিল।
কিন্তু প্রতিবছর রেমিটেন্স ক্রমাগত বৃদ্ধি দেখে বোঝা যায় বাস্তবতা ছিল সম্পুর্ন ভিন্ন। সবকিছু টোটালি ভিত্তিহীন গুজব।
রেমিটেন্স তালিকা দিলাম বিএনপি আমল(wikipedia)
2002–2003 - US$ 3 .061 billion
2003–2004 - US$ 3.37 billion
2004–2005 - US$ 3.84 billion
2005–2006 - US$ 4.80 billion, রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩-৪ বিলিয়নের ঘরে।
রেমিটেন্স বর্তমান আমল
2016–2017- US$ 12.769 billion - রিজার্ভ ছিল ১৮ বিলিয়ন
2017–2018- US$ 14.981 billion
2018–2019- US$ 16.419 billion
2019–2020 -US$ 18.205 billion
2020-2021 - US$ 22.16 billion - রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন,
2021-2022 - US$ 21.03 billon - রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন (কিছু কমে গেলেও করোনার আগের বছরের চেয়ে অনেক ভাল।)