নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
১. দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন "মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের চাকরি দেব নাতো কাদের দেব? রাজাকারের সন্তানদের?"
এখন তিনি কোন কবি সাহিত্যিক নন যে রূপক অর্থে কথাবার্তা বলবেন, শ্রোতাকে মাথা খাটিয়ে তার ভাবার্থ বের করতে হবে। তাঁর কথা থেকে যদি কেউ ধরে নেয় "বাংলাদেশে যারা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না, তাঁরা সবাই রাজাকার" তাহলে ওদের দোষ দিবেন ঠিক কোন যুক্তিতে? দেশের সবচেয়ে বড় দায়িত্বে থাকা মানুষটি কেন গুছিয়ে কথা বললেন না? বেফাঁস কথা আমার মতন ফজলু বজলুকে মানায়, কিন্তু তিনি তো প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটা কথা হতে হবে বেদবাক্যের মতন। প্রয়োজনে আগে থেকেই লিখে আনতে হবে। কারন ওনার বাক্যের দাড়ি কমার বেশকমও অনেক বড় ইম্প্যাক্ট ফেলে।
২. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সবাই অস্ত্রহাতে যুদ্ধ লড়েনি। অনেকের অনেক ধরনেরই অসুবিধা/দায়/দায়িত্ব ছিল। কিন্তু স্বাধীনতা চেয়েছিলেন ৯০% এরও বেশি মানুষ। যদি এত বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাধীনতা না চাইতো, তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। তাঁরা নিজ দায়িত্বে, জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছে। এমনও হয়েছে যে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাত খাওয়াবার অভিযোগে আস্ত পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করেছে পাকবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছে বলে আস্ত গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে ওরা। মুক্তিযোদ্ধার সাধারণ মানুষের ভালবাসা ও সাহায্য না পেলে গেরিলা হামলা চালাতে পারতো না। এইটা ফ্যাক্ট। সে তুলনায় রাজাকার, আল বদর সংখ্যা কত ছিল? ওদেরকে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠরা সাহায্য করতো, তাহলেতো দেশ স্বাধীন হতো না। সম্ভবই ছিল না। দেশের অভিভাবকের তাহলে এ কেমন কথাবার্তা?
৩. প্রধানমন্ত্রীর কাছে গালি খেয়ে কিশোর কিশোরীরা অভিমান করতেই পারে। আমার বাপ যদি আমাকে গালি দিয়ে বলেন "তুই একটা চোর!" তখন রাগে ক্ষোভে দুঃখে আমি কি বলি না "হ্যা আমি চোর! খুশি হয়েছো?" - এমনটা ঘটেনা? এর অর্থ কি আমি চোর বা চুরিকে সাপোর্ট করি? কোটা সংস্কারপন্থীরাও তেমনটাই করেছে। "প্রধানমন্ত্রী যদি বলে থাকেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না মানেই রাজাকার, তাহলে আমি রাজাকার!" এর অর্থ এই না যে ওরা ইন্ডিয়া পাকিস্তানের হাতে দেশকে বিক্রি করে দিবে। কমন সেন্স কোথায় থাকে মানুষের?
এতেই অনেকে মন্তব্য করছেন "যারা সামান্য চাকরির জন্য নিজেদের রাজাকার দাবি করছে, ওরা চাকরিতে গেলে কি হরির লুটটাই না করবে!"
কথা হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করে যারা চাকরিতে যাচ্ছে, ওরাই বা কি দেশোদ্ধার করে ফেলছে? মুরাদ টাকলা নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে নায়িকাদের নিয়ে বিছানায় গেছে। প্রধানমন্ত্রীর খাস আদমি, পুলিশ প্রধান বেনজিরের মোট লুটের হিসাব কি এখনও সরকার করতে পেরেছে? সামান্য ড্রাইভার প্রশ্ন বিক্রি করে যে পরিমান টাকা কামিয়েছে আমি সমস্ত জীবন খাটাখাটুনি করলেও এর অর্ধেকও উপার্জন করতে পারবো না। সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সরকারি চাকরি হচ্ছে চোরের খনি। কথাটা আমার না, আমাদের জাতির জনকের। উনিও আফসোস করেছেন, আমরাও করি যে সব চাটার দল আমাদের দেশটাকে চেটে পুটে শেষ করে দিচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে, "মুক্তিযুদ্ধের ট্রাম্প কার্ড" ব্যবহার করে সরকারের খাস লোকজন সব হালাল করে ফেলছে। আমরা তামাশা দেখা ছাড়া কিছু করতে পারি না।
৪. ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালও যুক্ত হলেন অবিবেচকের কাতারে। তিনি বয়ান দিয়ে দিলেন ঢাবির ছাত্রছাত্রীদের দেখলে এখন উনার রাজাকার বলে ভ্রম হবে। "বার্ধক্য গুণনাশিনী।" ওনার বয়স হয়েছে, মাথা আগের মতন কাজ করার কথা না। তবু খানিকটা বিবেচনা, খানিকটা দায়িত্বশীল কথাবার্তা তাঁর থেকেতো আশা করাই যায়। কোন ঘটনায়, কোন কারনে ছাত্রছাত্রীরা এমন বলল সেটা বিবেচনাতে না নিয়েই তাঁর মতন লোকের এমন কথা সত্যিই হতাশাজনক।
৫. সবশেষে যুক্ত হয়েছে টেন মিনিট স্কুলের জন্য সরকারি বিনিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। আয়মান সাদিক লিখেছিল "কোটা সংস্কার চাই, মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা।" তারপরে ঢাবিতে নিজের অনুজদের রক্তাক্ত হতে দেখে লিখেছিল "আমার ক্যাম্পাসে এত রক্ত কেন? প্রতিবাদ জানাই।" মোটেই সরকার বিরোধী কোন পোস্ট না। কাউকে উস্কে দেয়ারও পোস্ট না। একজন স্বাভাবিক, সুস্থ মস্তিষ্কের সাধারণ বাংলাদেশির যা করা উচিত, সেটাই করেছে সে। এতেই পলক মিয়া পলক ফেলার আগেই ঘোষণা দিয়ে দিলেন ওদের বিনোয়োগ বাতিল!
মানে সরকারের সাথে সহমদ না হলে আপনি দেশে কিচ্ছু করতে পারবেন না। আবারও প্রমাণিত।
৬. আওয়ামী ঘরানার লোকেরা প্রচার চালাচ্ছে এতে বিএনপি-শিবির-জামাত জড়িত আছে। এ আরেক মজার টুইস্ট। উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা যেমন "কাফির/মুনাফেক/মুরতাদ" ট্যাগ দিয়ে মানব হত্যা জায়েজ করার চেষ্টা করে, এখানেও সেটাই করা হচ্ছে। বিম্পি-জামাত-শিবির ট্যাগ দিয়ে দাও, তারপরে লাঠি হাতে পেটাও। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ওদের রাজাকার বলেছেন, ওরা নিজেরাই নিজেদের রাজাকার দাবি করেছে, জাফর ইকবালও ওদের রাজাকারের সার্টিফিকেট দিয়েছে - কাজেই ওদেরকে পিটিয়ে মেরে ফেলা কোন বিষয়ই না।
৫২-এর ভাষা আন্দোলনে কয়টা বাঙালি মারা গিয়েছিলেন? ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে? স্বাধীন বাংলাদেশে এই ২০২৪ সালে নিজের অধিকার আদায়ের দাবিতে কেন ছাত্রলীগের গুলিতে "কোন বাংলাদেশী" খুন হবে? এখন পর্যন্ত ছয়টা বাংলাদেশী মারা গেছে। রাষ্ট্র এর জবাব দিতে পারবে?
মানুষ হত্যাকে দলের প্রতি প্রভুভক্তির কারনে জায়েজ করার চেষ্টা করেন? ভাইরে, আপনি নিজে একটু গভীরভাবে চিন্তা করে বলেন, আপনি কি মানুষ? আপনার নিজের ভাই বোনকে এইভাবে পিটিয়ে হত্যা করলেও লেজ নাড়তে নাড়তে "ও রাজাকার" বলবেন?
১৭ ই জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:২৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জাতির বোধদয় যে কবে হবে!
২| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:১০
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: এভাবে মানুষ মেরে ফেলবে! যারা নির্বিচারে মানুষ মারতে পারে তারা আর যাই হোক মানুষ হতে পারে না।
১৭ ই জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:২৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: মারতে দেয় বলেই মারে।
৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:১৩
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কোটার সংস্কার হওয়া দরকার।
১৭ ই জুলাই, ২০২৪ ভোর ৪:২৮
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: সেটাইতো।
৪| ১৭ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯
অদ্ভুত অবাক বলেছেন: কিছু মানুষরুপি জানোয়ার রক্ত দেখে পৈশচিক আনন্দ পায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৪৯
নতুন বলেছেন: ৬. আওয়ামী ঘরানার লোকেরা প্রচার চালাচ্ছে এতে বিএনপি-শিবির-জামাত জড়িত আছে। এ আরেক মজার টুইস্ট। উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা যেমন "কাফির/মুনাফেক/মুরতাদ" ট্যাগ দিয়ে মানব হত্যা জায়েজ করার চেষ্টা করে, এখানেও সেটাই করা হচ্ছে। বিম্পি-জামাত-শিবির ট্যাগ দিয়ে দাও, তারপরে লাঠি হাতে পেটাও। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ওদের রাজাকার বলেছেন, ওরা নিজেরাই নিজেদের রাজাকার দাবি করেছে, জাফর ইকবালও ওদের রাজাকারের সার্টিফিকেট দিয়েছে - কাজেই ওদেরকে পিটিয়ে মেরে ফেলা কোন বিষয়ই না।
এই জিনিসটাই অনেকেই বুঝতে পারেনা। আগে বুঝতে পারতামনা কেন কিছু মানুষ এই জিনিসটা গিলতেছে।
নেটফ্লিক্সে How to Become a Cult Leader দেখার পরে বুঝতে পারলাম যে চালাক নেতারা কমবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকেই তো অনুসারী বানায়। যারা অন্ধ অনুসারী তারাও একজন মানুষকে মেরে ফেলে শিবির মেরেছি ভেবে আত্নতৃপ্তি পাবে...