নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কাছে ড ইউনুস

০৮ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৪৭

তখন আমি স্টুডেন্ট মানুষ। ওয়ালমার্টে পার্টটাইম কাজ করি। এক শ্বেতাঙ্গ কাস্টমারের সাথে কথা হচ্ছিল। আমাকে জিজ্ঞেস করেন "তোমার দেশ কোথায়?"
"বাংলাদেশ।"
"বাংলাদেশ? আমিতো চিনি দেশটাকে।"
ভাবলাম হয়তো বলবে ফকির মিসকিনের দেশ। ওদের সরকারের কাছে আমাদের নেতারা প্রায়ই হাত পাতে। নাহয় বলবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। প্রতিবছর সাইক্লোন আসে, নয় বন্যা আসে আর প্রচুর মানুষ মারা যায়। যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষ মারতে পারে না, তখন আমরা লঞ্চ ডুবায় মরি, নাহয় সড়ক দুর্ঘটনায়, নাহয় আস্ত বিল্ডিং ধ্বসিয়ে বা আগুনে পুড়ে। মোট কথা, বিদেশে আমাদের রেপুটেশন ভয়াবহ।
লোকটা আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল "তোমাদের দেশেই মাইক্রো ক্রেডিটের জন্ম হয়েছে। ড ইউনূসের দেশ।"
গর্বে বুক ফুলে গেল। বললাম, "তুমি উনাকে চেনো?"
"অবশ্যই, ও নোবেল জিতেছে এজন্য। একটা জিনিয়াস ভদ্রলোক।"
ডক্টর ইউনুস যেদিন নোবেল পেলেন, আমার স্পষ্ট মনে আছে শেখ হাসিনাও তখন তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।
কিন্তু যখনই জনমনে তাঁকে রাষ্ট্রীয় নেতা হিসেবে দেখার গুঞ্জন উঠেছিল, এর পরপরই জননেত্রী উনাকে "সুদখোর" ট্যাগ দিয়ে অপপ্রচার শুরু করেন।
এমন না যে জননেত্রী নিজে খুবই পরহেজগার লোকজনের সাথে উঠাবসা করতেন। সালমান রহমান, লোটাস কামাল, বেনজির, উনার পিওন পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকা মেরে খাওয়া পাবলিক। অথচ তাঁর নজরে ড ইউনুসই বিশ্বের সবচেয়ে বড় চোর, এবং উনার চ্যালা চামচারাও বলে "ঠিক! ঠিক!!"

এরপরে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমরা দেখছিলাম উনাকে কি পরিমান হেনস্তা করা হয়েছিল।
তা আমাকে যারা চিনেন, জানেন যে প্রমান ছাড়া বেহুদা লাফালাফির অভ্যাস আমার নাই। তাই "নেত্রী বলেছেন ও খ্রাপ মানুষ, তাই ও খুব খ্রাপ" - থিওরি আমার সাথে চলে না।
খোঁজ নিলাম।

দালাল-এ-লীগের লোকজনের দৃষ্টিভঙ্গিতে ড ইউনুস খুব খারাপ।
১. "কারন সে একটা সুদখোর।"
আমি জানতে চাইলাম ড ইউনুস সুদখোর, কিন্তু বাংলাদেশে কয়টা মানুষ, ইনক্লুডিং যে ছাগলা পোস্ট লিখেছে সে নিজেও, ব্যাংকে টাকা রাখে না? তা লভ্যাংশ, মুনাফা, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি হিসেবে যে টাকা ওকে দেয়া হয় সেটা কি মন্ডা মিঠাই? সেটাওতো সুদ।
ব্যাটা আজও সেই প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। মানে হচ্ছে সে নিজেও খাবে, কিন্তু ড ইউনুস সুদখোর।

২. "কারন ও গরিব মানুষকে ঋণের ফাঁদে ফেলে, এবং ঋণের টাকা শোধ না করলে বাড়ির চালা খুলে নিয়ে যায়।"
প্রথমতম, এই মূর্খ জানেই না যে গরিব মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ কেউই দেয়না। ক্ষুদ্র ঋণ ওদেরকে ওদের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা সুযোগ দেয়। বহু মানুষ নিজেদের পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে এই সুযোগ তুলে।
আর ঋণ শোধ না করলে দুনিয়ার কোন ব্যাংক আপনাকে "হ্যাপি বার্থডে টু ইউ" বলে সেটা মাফ করে দিবে? আপনি যেকোন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি বানান, তারপরে ঋণ শোধ না করে তামাশা দেখেন। ব্যাংক যদি বাড়ি বিক্রি না করে আমাকে বলবেন।
হ্যা, আপনি শেখ হাসিনার আপনজন হলে, যেমন এস আলম, সালমান রহমান সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ঋণ খেলাপি হলে ভিন্ন কথা। তখন নিজেরা দেউলিয়া হয়ে গেলেও কোন এক অজানা কারনে ব্যাংক আপনাদের ঋণকে মাফ করে দিবে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে এক্ষেত্রেও ড ইউনুস ব্যতিক্রম কিছু করছে না। উল্টো যতদূর জানি, গ্রামীণ ব্যাংকের মাইক্রো ক্রেডিট সিস্টেমে বিনা জামানতে, কেবল বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে আপনাকে ঋণ দেয়া হয়। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য! বাঙালিকে মুখের কথায় বিশ্বাস করে ঋণ প্রদান? যেখানে ঐতিহাসিকভাবেই প্রমাণিত যে আমরা সুযোগ পেলেই চুরি করি। ঋণখেলাপিরা নিয়মিতই টাকা মেরে দিয়ে আমার কথাকেই সত্য প্রমান করছে। সেখানে শুধু বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে টাকা দিতে অনেক বড় কলিজার প্রয়োজন।
৩. "কারন উনি পদ্মাসেতু যাতে না হয় সেজন্য বিশ্বব্যাংককে নিষেধ করে দিয়েছিলেন।"
"তাই? তা এই তথ্য কোথায় পেলেন?"
"নেত্রী নিজে বলেছেন।"
"নেত্রী কিভাবে জানলেন? জিব্রাইল (আঃ) এসে উনাকে এই তথ্য দিয়ে গেছেন?"
আবারও চুপ।

৪. "ড ইউনুস কিভাবে নোবেল পায়? আমেরিকার সাথে লিংক থাকলে ওরকম অনেক নোবেল পাওয়া যায়।" - এমন বেকুবের সাথে কথা বলবেন কি? ইন্টারনেট সস্তা হওয়ায় এই এক সমস্যা হয়ে গেছে, মূর্খ লোকজনও নিজেকে ইন্টেলেকচুয়াল ভাবা শুরু করে দিয়েছে।

তা এই চাটাদের কারণেই আজকে শেখ হাসিনা একজন সাধারণ শাসক থেকে দানব হতে হতে ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনে পরিণত হয়েছিলেন।
এই চাটার দলের কারণেই আজকে উনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।
শুরু থেকেই ওরা যদি নেত্রীকে সুপরামর্শ দিত, ভুল ধরিয়ে দিত, তাহলে আজকে এত ঝামেলা হতো না।

তা ১/১১ সময়েও আর্মি চেয়েছিল ড ইউনুস তত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব নিক। উনাকে রাজি করাতে মিলিটারির লোকজন উনার বাড়িতে সারারাত বসে ছিল। উনি রাজি হননি। শেখ হাসিনা বেহুদাই উনাকে প্রতিপক্ষ মনে করে উনার পেছনে লেগে হয়রানি করেছিল। উনার পায়ের ধুলপরিমান হওয়ারও যাদের যোগ্যতা নাই, সেইসব চ্যালা চামচারা উনাকে গালাগালি করেছে।
আজকে দেশের মানুষ উনাকেই রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য ভরসা করছে।
আল্লাহর খেলা!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৯:২৫

কামাল১৮ বলেছেন: কেন রাজি হয় নাই ,সেটা কি জানেন।

০৯ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:০০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কেন হয়নাই? আপনাকে কি আপনার আম্মু বলে গেছে এবং সবকিছুর মতন আপনি বিশ্বাস করে ফেলছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.