নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজাকাররা চায়নি পৃথিবীবাসী দেখুক বাংলাদেশের উন্নয়ন।

০৯ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১২:০০

একাত্তরের পরাজিত শক্তি গোলাম আজম ও ওর সাঙ্গপাঙ্গরা কিন্তু পরাজিত হয়েই থেমে থাকেনি, সে বিভিন্ন রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে গিয়ে, বিশেষ করে সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে গিয়ে আমাদের সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশটিকে যাতে কেউ স্বীকৃতি না দেয়, সেজন্য জীবন উজাড় করে তদবির করছিল। "পাকিস্তান একটি ইসলামী রাষ্ট্র, ভারত একটি হিন্দু দেশ। ওদের ষড়যন্ত্রে ভুলে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ভেঙ্গে গিয়ে হিন্দু রাষ্ট্র গঠন করেছে।" - এই ছিল মূল কথা।
ওর কারণেই স্বাধীনতার বহু বছর পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য আমাদের স্বীকৃতি দেয়নি।
তা বর্তমান রাজাকারদের কান্ডকারখানাও দেখা যাক।

১. প্রথমে যখন ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের আন্দোলনকে সরকার অগণতান্ত্রিক উপায়ে দমন করতে চাইলো, তখন সরকারের কুকর্মের সমালোচনা না করে উল্টো লাই দিল। ইন্টারেস্টিং বিষয় হচ্ছে পিলখানার বিদ্রোহ ছিল ১০০% মিলিটারি ম্যাটার। সে ধরনের সমস্যা মিলিটারিতে নিয়মিতই ঘটে, এবং মিলিটারি নিজের মত করেই সেসব ট্যাকল করে। আমাদের সরকার বেকুবের মতন সেই মিলিটারি ম্যাটারকে গণতান্ত্রিক উপায়ে resolve করতে গিয়ে গুবলেট পাকালেন। আমরা হারালাম আমাদের বহু সূর্যসন্তানদের। আর ছাত্রদের এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে মিলিটারি কায়দায় সমাধান করতে গিয়ে হাজারখানেক মানুষকে শহীদ করলেন। শেখ হাসিনার আশেপাশে একটাও বুদ্ধিমান প্রাণী কি ছিল না যে শুধু উনাকে ধরিয়ে দিতে পারতো যে শুধু একবার ওদের সাথে কথা বললেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? ক্ষমতার দম্ভ, ডিক্টেটরশিপ মানুষকে অমানুষ করে দেয়! এই আন্দোলনে সরকারি রেসপন্সটা একটা টেক্সট বুক উদাহরণ হয়ে রইলো "What not to do in a situation like this."

২. ছাত্রদের উপর হামলা করছে "সিভিলিয়ান" ছাত্রলীগ, বন্দুক, পিস্তল, রামদা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, পুলিশও নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর গুলি চালাচ্ছে - এই সময়ে ওরা কি করেছে? লাঠি হাতের ছাত্রদের ছবি পোস্ট করে বলছে "এদের হাতে দেশি অস্ত্র এলো কিভাবে?" গুলিবিদ্ধ মানুষের ছবি ইগনোর করে ভাংচুর করা স্থাপনার ছবি পোস্ট করে বলছে "মেধাবীদের কান্ড।" নেত্রী যখন শহীদদের প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়ে মেট্রোরেলের জন্য, বিটিভি অফিসের জন্য কেঁদে বুক ভাসালেন, তখনও এরা জ্বি হুজুরীতে ব্যস্ত।

৩. গোলাম আজমরা যেমন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছিল যে মুক্তিযোদ্ধারা বিচ্ছিন্নতাবাদী, হিন্দু ষড়যন্ত্রী, দেশদ্রোহী; তেমনি একালের রাজাকাররা ছড়িয়েছে "ওরা আমাদের জাতীয় পতাকা পাল্টে দিতে চায়! সবুজ জমিন মুছে পুরোপুরি লাল করতে চায়।"
তাই? কবে? কোন পত্রিকায় কে স্টেটমেন্ট দিয়েছে? There is a reason ওরা মেধাবী আর তোরা মূর্খ গবেট। দুনিয়ার কোন বেকুবে এক কালারের পতাকা ওড়ায়? ফেসবুকে সবাই রক্তের রংয়ের সাথে মিলিয়ে প্রতিবাদ হিসেবে প্রোফাইল পিকচার লাল করেছিল। সেটাকে এই আহাম্মকরা ধরে নিয়েছে সবাই জাতীয় পতাকা পাল্টাতে চায়।
"ওরা জাতীয় সংগীত পাল্টে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে।"
আবারও জানতে আগ্রহী, কোথায় এই তথ্য পেয়েছে? ছাত্রদের ৯ দফা বা ১ দফার কোথায় ছিল জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের কথা? মানুষ মেরে ফেলছে তা নিয়ে ওদের বিন্দুমাত্র শব্দোচ্চারণ নাই, আইছে জাতীয় সংগীতের প্রতি আলগা দরদ দেখাতে।
এই আহাম্মকদের জ্ঞাতার্থে, জাতীয় সংগীতকেই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটা gathering এ আমরা সবাই একসাথে জাতীয় সংগীত গেয়েছি, এবং যখন "মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি" গেয়েছি - দেখেছি প্রতিটা প্রবাসী হুহু করে কেঁদেছে। আমরা তোদের মতন চ্যালা চামচাদের চাইতে জাতীয় সংগীতকে হৃদয়ে ধারণ করি। যে কারনে দেশ মায়ের কালিমা দূর করতে আমরা ঘরের বাইরে নেমেছি আর তোরা গুন্ডামি করে বেড়াচ্ছিস।

৪. শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার ফলে দেশব্যাপী লুটতরাজ ঘটেছে। পুলিশের উপর হামলা হয়েছে, আওয়ামী নেতাকর্মীদের উপর হামলা হয়েছে, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয়েছে। ভাংচুর হয়েছে জাতীয় ভাস্কর্য। গোলাম আজমরা যেমন প্রচার করে বেড়াচ্ছিল যে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দেশেও অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ অন্ন বস্ত্রের সংকটে ভুগেছে, চাটার দল সব সাফ করে দিয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমান "চোরের খনি" আবিষ্কার করেছেন - এখনও এরাও এসব হাইলাইট করছে।
এরা ডাকাতির ঘটনাকে হাইলাইট করার চেষ্টা করছে, অথচ এদের দৃষ্টিতে এইটা পড়ছে না যে ডাকাতির খবর পেয়েই গোটা ঢাকা শহরের মানুষ পথে নেমে এসে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন যাতে নিজে ও প্রতিবেশীর বাড়ি নিরাপদ থাকে। ডাকাত দলকে জনতাই ধরে ফেলেছে।
মন্দির ভাংচুরের ঘটনা হাইলাইট করছে অথচ এরা এইটা হাইলাইট করছে না যে দাড়ি টুপিওয়ালা মুসলিমরা হিন্দু মন্দির পাহারা দিচ্ছে, নামাজের সময়ে মন্দিরের দরজার পাশে জায়নামাজ পেতে নামাজ আদায় করছে যাতে হিন্দু মন্দির সুরক্ষিত থাকে।
ওরা দেশের বিশৃঙ্খলা নিয়ে হাহাকার করছে, অথচ ওরা দেখতে চাইছে না ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমেছে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে। পালা করে ডিউটি বদল করছে, রাস্তায় কোন বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়। ওদের খাবার ও পানির ব্যবস্থা করতে জনতাই এগিয়ে আসছেন।
রাজাকাররা হাহাকার করেছিল বিহারীদের বাড়িঘর লুটপাট, রাজাকারদের বেয়োনেটের খোঁচায় মেরে ফেলার ঘটনাগুলোয়। মুক্তিযোদ্ধাপন্থিদের জন্য বলা হচ্ছিল এসব বন্ধ করো, ওরা কিন্তু শুনতে রাজি হচ্ছিল না। শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা নিয়ে এসব থামাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। অস্ত্র জমা দিতে বলার পরেও একটি বিরাট অংশের মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র জমা দিচ্ছিল না। আরও অনেক ঘটনা ইতিহাস বইয়ে পাই।
এখানেও কিন্তু আওয়ামী নেতাদের উপর হামলা হচ্ছে, লুটপাট হচ্ছে ওদের বাড়িঘর, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখানেও সবাইকে থামতে বলা হচ্ছে, এবং আশার কথা, প্রথম ১-২ দিনের তুলনায় এসব অনেকখানিই কমে এসেছে। ড ইউনুসও বলে দিয়েছেন দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তাঁর কথা/নির্দেশ সবাইকে শুনতে হবে। তাঁর কথা যদি কেউ না শুনে, তাহলে তাঁর প্রয়োজন নাই। আর তাঁকে যদি সবাই রাখতে চায়, তবে যেন তাঁর কথা সবাই মেনে চলে।

যারা ফকির মিসকিন স্বভাবের, ওরা গণভবন থেকে লুটে আনা সোনার চেইন ভিডিও পোস্ট করে ভাইরাল হওয়ার ধান্দা করছে, বিভিন্ন দোকানের শোরুম থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যাচ্ছে। আশা করি ওদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির মামলা করা হবে, গ্রেফতার করা হবে, এবং বিচার করা হবে। হাজারের উপর মানুষ এই কারনে শহীদ হন নাই যাতে টোকাই মেন্টালিটির লোকজন ইচ্ছামতন চুরি চামারি করতে পারে।
তাই আমরা দেখি যারা আসলেই দেশপ্রেমিক, ওরাই জাতীয় সংসদ ভবন থেকে বিস্তর পরিমান ক্যাশ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ/আর্মির হাতে তুলে দিচ্ছে। গণভবন থেকে লুটে নেয়া আসবাবপত্র ফেরত দিয়ে যাচ্ছে। সংসদ ভবন পরিষ্কার করে শহীদদের ট্রিবিউট দিচ্ছে।
পথঘাট পরিষ্কার করছে, দেয়াল রাঙাচ্ছে। একজন বললেন "ভাই, দেশে এসে দেখে যান, কি অবিশ্বাস্য কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে! নিজের চোখে নতুন বাংলাদেশের সাক্ষী হয়ে যান!"

৫. রাজাকাররা চায়নি পৃথিবীবাসী দেখুক বাংলাদেশের উন্নয়ন। তলাবিহীন ঝুড়ির দেশটা মাথা উঁচু করে যতদূর এগিয়েছে, প্রতিবার ওদের বুকে শেল বিঁধেছে।
নব্য রাজাকারদেরও একই হাল হতে দেখছি।
এমন কেন হবে? এই দেশটাতো ওদেরও। ওদের নেত্রীর মতনতো পালানোর কোন পথ নেই। ওদেরকে এদেশেই থাকতে হবে। তবে কেন না মিলে মিশেই দেশটাকে গড়া যাক! একসাথে পথে নামলে ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনকেও বধ করা সম্ভব, তাহলে দেশ গড়া এমন কি আর কঠিন কাজ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.