নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মারজান রহমান, দক্ষিণ এশিয়া ইতিহাস,রাজনীতি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ আছে এজন্য সমসাময়িক বিষয় লেখালেখিও করি। এছাড়াও ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম শাসন, পরবর্তীতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তার থেকে শুরু ক্রে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ২০২০ থেকে পড়াশুনা করছি, সেটা এখনো চলম

মারজান রহমান

মারজান রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গজালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন। - আলহাজ্ব আতিয়ার রহমান বিশ্বাস

১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯

খুলনা জেলার দক্ষিণ অঞ্চলের পাইকগাছা থানার একটা অজপাড়াগাঁয়ের নাম গজালিয়া গ্রাম। অবহেলিত, বঞ্চিত শিক্ষার আলোবিহীন একটা গ্রাম। ঝোপ-ঝাড়-বনাঞ্চল, নদী আর খাল, পাখ-পাখালীর কলরবে ভরা এ গ্রাম। গ্রামের শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী জহির উদ্দীন সরদার বাছতুল্লাহ সরদার, দেলদার সরদার এরা মিলে জায়গা দিয়ে তৈরী হয় স্কুল ঘর। সেখানে জয়নাল আবেদীন সরদার ও দেলদার সরদার ও গ্রামের লোকজন সম্মিলিতভাবে ছাত্রছাত্রী জোগাড় করে শুরু হয় গজালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা। পরে আমি খুলনা থেকে লেখাপড়া ছেড়ে গ্রামে চলে আসি এবং ক্লাশ নেয়া শুরু করি।

স্কুলের প্রতি, লেখাপড়ার প্রতি আমার আগ্রহ দেখে স্কুল গড়ার দায়-দায়িত্ব আমার উপরে অর্পিত হলো। আমার বড়ভাই আলহাজ্ব আজিজুর রহমান বিশ্বাস, বাছতুল্লাহ সরদার, জয়নাল আবেদীন সরদার, দেলদার আহমেদ সরদারসহ অন্যান্যরা আমাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করতেন। আমিও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে স্কুলকে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাই। আজকের গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঐ সময় থানা শিক্ষা অফিসার (টি.ও) ছিলেন জনাব কুদরতউল্লাহ, তিনি অত্যন্ত ভাল লোক ছিলেন এবং শিক্ষার প্রতি ছিল অসীম আগ্রহ। তিনি আমাদের স্কুলের কর্মকান্ডে বেশ সন্তুষ্ট ছিলেন, স্কুল পরিচালনার ব্যাপারে নানা প্রকার উপদেশ দিতেন যা ছিল আমাদের জন্য মূল্যবান। তিনি প্রায়ই দক্ষিণ অঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতেন এবং সময় সুযোগ করে আমাদের স্কুলে আসতেন, ভিজিট করতেন, রিপোর্ট দিতেন। উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ক্লাশে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতেন তাদের নানা ধরণের উপদেশ দিতেন আরো উল্লেখ করা যায় যে, এ অঞ্চলে এলেই তিনি আমারই অতিথি হতেন, আমি সাধ্যমত তাকে খাওয়া- দাওয়া ও আপ্যায়ন করতাম। কুদরত উল্লাহ সাহেব ধীরে ধীরে আমার ব্যক্তিগত বন্ধুতে পরিণত হন যার ফলে আমাদের স্কুলের জন্য সরকার থেকে ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকার মঞ্জুরী দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ঐ সময় জনাব নজরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আমরা গ্রামবাসী মিলিতভাবে জলকরের টাকা থেকে স্কুল করার জন্য ১২,০০০ (বার হাজার) টাকা দেন যা দিয়ে প্রতিটি কক্ষ ২২ ফুট লম্বা এবং ১৮ ফুট প্রশস্ত বিশিষ্ট পাঁচটা কক্ষ তৈরী করা হয়। কিন্তু বারান্দার কাজ বাকী থাকে তখন আমার বড় ভাই আমাকে নিজের টাকা দিয়ে কাজটা সমাপ্ত করার জন্য বললে আমি নিজের ১৪০০/- টাকা খরচ করে স্কুল ভবনের কাজ সমাপ্ত করি।

আমার স্কুলের কাজ কর্মে সন্তুষ্ট হয়ে প্রতিবারই আমাকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদের দায়িত্ব দিতেন। আর আমিও যথাযথভাবে আমার দায়িত্ব পালন করতাম, ফলে ইং ১৯৬৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একটানা ঐ দায়িত্ব পালন করি। আমি ছাত্রছাত্রী জোগাড় করা, বাড়ী বাড়ী গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আনার ব্যবস্থা করতাম। আজ এ স্কুল থেকে লেখা পড়া শিখে অনেকেই স্কুল ও গ্রামের নাম উজ্জ্বল করেছে এজন্য আমি খুবই খুশী।

আমি এ বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতি ও কল্যাণ কামনা করি।

গজালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়ন
----- লেখাঃ আলহাজ্ব আতিয়ার রহমান বিশ্বাস।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.