![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছু বলার নাই,নিয়মিত ব্লগার হবারও কোন ইচ্ছা নাই। মাঝে মাঝে ... কিছু কথা যা মনকে উতলা করে প্রকাশ করতে!
ঢাকা শহরের মিরপুরের এককোণায় পড়ে থাকা ছোট ঝুপড়ি ঘরের মতো এলাকা কালশী। কিন্তু কয়েকদিন ধরে চলে আসা বিভিন্ন ঘটনার জন্য কালশী এখন আলেচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে বলা যায়। একটা খবর শেষ হতে না হতেই আরেকটি সমস্যার সৃষ্টি। প্রশ্ন হচ্ছে কালশী নামের এই ছোট এলাকাটি বারবার কেন ঘুরে আসছে খবরের তালিকায়?
শুরু থেকে বলতে গেলে, উত্তর দিতে হবে কালশী কোথায়? উত্তর; কালশী ঢাকা জেলার অন্তর্গত মিরপুরের একটি অঞ্চল। মিরপুর সাড়ে এগারোয় অবস্থিত পূরবী সিনেমা হলের সম্মুখে চলে যাওয়া রাস্তা ধরে রিকশায় এগুলে মিনিট পাঁচেকের রাস্তা। ১২-১৫ বছরের আগের ঘটনা চিন্তা করলে এখানে মানুষের বসবাস খুব কমই ছিল। কিন্তু কালশী কবরস্থানের ঠিক পশ্চিম দিকে অবস্থিত ২০ তলা স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের অন্তর্গত একটি ফ্যাক্টরীর সৃষ্টি যেন গোটা কালশী এলাকাটিকেই বদলে দিল। কালশী এলাকার চেহারায় পরিবর্তন আসল। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকল এখানকার জনবসতি। একের পর এক ফ্ল্যাট উঠতে থাকল। উন্নত হয়ে উঠার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকল সমস্যাগুলো।
কালশীর বর্তমান চেহারার সাথে ১০-১৫ বছরের আগের চেহারার কোন মিল নেই বললেই চলে। কিন্তু এর জন্য অনেকটাই দায়ী স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টস এবং কালশী-টু-আব্দুল্লাহপুর রুটের সৃষ্টি। দায়ী বললে ভুল হবে কিংবা কথাটি খারাপ শোনা যাবে। এদুটো বিষয় অনেকাংশেই এ এলাকার উন্নয়ন ও পরিচিতির জন্য বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।
কিন্তু বিগত ১০-১৫ বছরে অনেক কিছু আধুনিক হলেও আধুনিক হয়নি এলাকার বাজার, রাস্তাঘাট এমনকি ড্রেনেজ সিস্টেম। বাড়িওয়ালাগণের যত্রতত্র ভাড়া বৃদ্ধিও জনগণের কাছে আরও একটি প্রধান সমস্যা বলে বিবেচিত। এ সকল সমস্যার সাথে রয়েছে চাঁদাবাজি, নেশার আড্ডাস্থল ইত্যাদি।
সামান্য বৃষ্টি হলেই এলাকাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। আর ভারি বর্ষণ হলেই আশেপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এলাকার প্রধান ড্রেনটি চলে গেছে নদীর মতই কালশী এলাকার বুক দিয়ে। ৫ বছর আগে যখন ড্রেইনটি তৈরী করা হয়েছিল তারপর খুব কম সময়ই ড্রেনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। যার কারণে হালকা বর্ষণেই সৃষ্টি হওয়ায় ওভার ফ্লো করে ড্রেনটি। ড্রেনের পানি আর জলাবদ্ধ পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট নোংরা পরিবেশে হাঁটতেই ইচ্ছা প্রকাশ করেন না জনগণ। আর ড্রেনের সংস্কার কাজগুলোও হাতে নেওয়া হয় বর্ষাকাল এলেই। এমনিতেই রোড কন্সট্রাকশনের কাজের মালামাল অবৈধভাবে জায়গা ধরে রাখে রাস্তাগুলো তার উপর ড্রেনের ময়লাগুলোও জড়ো করে রাখা হয় রাস্তার উপর। বহুবার এ সকল ব্যাপারে আবেদন করার পর জনগণ মিইয়ে গেছেন, তারা এসব ব্যাপার গুলো ডালভাতের মতো করেই নিয়ে নিয়েছেন।
রাস্তাগুলোর অবস্থা দেখলে মনে হয় কতকাল ধরে যেন একই অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে। তার উপর গত বিশ্বকাপ টি টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলার সময় কথিত রাস্তার উন্নয়ন কার্য মানুষকে বিব্রত করে তুলেছে। অযথা ভাল রাস্তা খুঁড়ে তার উপর বাজে পিচ ঢালাই করার কারণে বর্তমান বর্ষার সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তার পিচগুলো ভাঙ্গতে শুরু করেছে। আর ভাঙ্গা এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কালশী-টু-আব্দুল্লাহপুর রুটের হাজারো গাড়ি এখান থেকে চলাচল করে। খাড়ার উপরে মরার ঘা কথাটি এক্ষেত্রে তুলনীয়। রাস্তার উপর গাড়ির অত্যাচার বলা চলে। শেষ না হওয়ার আগেই কেনই বা রাস্তা খুলে দেওয়া হল বা কেনই বা ভাল রাস্তাকে নষ্ট করা হলো এ প্রশ্ন জনগণের মনে। বিদ্যমান এই অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করা হলে এক কর্মী বলেন, এখানে হালকাভাবে পিচের আবরণ দেয়া হয়েছে যাতে রাস্তার মাটিগুলো বসে পড়ে। তার মতে, রাস্তার উপর কিছু স্থানের গর্ত পূরণ করতেই এই পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হবার পরেই এই রাস্তার উপর ফিনিশিং দেওয়া হবে। অনেকেরই মন্তব্য বর্তমানের রাস্তার অবস্থার চেয়ে পূর্বের রাস্তার অবস্থা অনেক ভালো ছিল। শুধু শুধু কেন এই রাস্তার খোড়াখুড়ি তা জানতে চেয়েছেন জনগণ। রাস্তার উন্নয়ন কাজ নাকি মৃত্যুফাঁদ এ কথাও উঠে এসেছে। রাস্তার মাঝে এমন অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে যে রাস্তা গাড়ি চলাচলের অনুপুযুক্ত হয়ে উঠেছে। বিআরটিসি ডবল ডেকারগুলোর অবস্থা দেখলে মনে হয় এই বুঝি একদিকে কাত হয়ে পড়ে যাবে। আর গর্তগুলো বড় হওয়ায় ডবল ডেকারগুলো রাস্তায় চলাচল করা কমিয়ে দিয়েছে।
রাস্তার সামনেই কোন পুলিশ কন্ট্রোল না থাকায় গাড়িচালকগণ অনেক সময় বেপোরয়া গাড়ি চালান। আর তার কারণেই কদিন আগে ঘটে গেল এক দুর্ঘটনা। স্বেচ্ছাচারী গাড়িচালকের চাকার তলে পিষ্ট হল শ্রমিক। রাস্তার পরিধি ছোট হওয়ায়, রাস্তা কোন জেব্রা ক্রসিং বা ওভারব্রীজ না থাকার কারণে প্রধান রাস্তা ক্রস করেই লোকজন চলাচল করে। আর আশেপাশের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা হুটহাট চলে আসায় আশঙ্কগ্রস্ত এলাকার লোকজন। প্রশ্ন রাস্তার গাড়ির পরিমাণ বাড়া সত্ত্বেও কোন ওভারব্রীজ কেন বসানো হচ্ছে না। আর কত প্রাণ গেলে এই সমস্যার সমাধান হবে?
রাস্তার কথা বাদ দিলে আসতে হবে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া কালশী এলাকার বিহারী পট্টিতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কথা। দুর্ঘটনার আগে ও পরে অনেক ঘটনা সামনে এসেছে। অনেক কারণ উঠেছে এবং তা সময়ের সাথেই মিশে গেছে। এমনকি ঘটনার হেতু হিসেবে এম.পি সাহেবের দিকেও আঙ্গুল উঠেছিল। মনে করা হচ্ছিল এ ঘটনা অনেকদূর বিস্তৃত হবে। কিন্তু না সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে আন্দোলনটা জোরদার হয়নি। যার কারণে কলি ফোটার আগেই ফুল ছিড়ে নেওয়ার মতো অবস্থার হয়েছে। ব্লগ, ফেসবুক, খবরের কাগজে অনেক লেখালেখি হলেও এখন আর কেউ মনেও করতে চান না।
এতো গেল আশেপাশের বিপর্যয় ও ঘটে যাওয়া সাময়িক ঘটনাগুলো। রাত্রিবেলার কালশীর কথা আরও ভয়াবহ। এখানে রাতের আধারে চলে নেশার আড্ডা। বিভিন্ন রকম নেশার সামগ্রী বিক্রয় ও ক্রয়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। খোজ নিয়ে দেখা গেছে এগুলোতে আইন শৃঙ্খলা কর্মীদের ব্যাপক আঁতাত রয়েছে। নেশার সামগ্রী গুলোর গাঁজা ও ফেনসিডিল এর বিক্রয় বেশি। আইনশৃঙ্খলা কর্মীদের এহেন আচরণ একরকম দেখেও না দেখার ভান বলা চলে। বিহারী পট্টির লোকজন ও কমবয়সী অনেকে যুবক তো রয়েছেই তার সাথে আরও যুক্ত আছেন আশেপাশের এলাকার যুবক-কিশোর এমনকি বৃদ্ধরাও।
আধুনিকীকরণের দোহাই দিয়ে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির সাথে বেড়েই চলেছে বাড়িওয়ালাদের ভাড়া ও অন্যান্য বিল বৃদ্ধির উপক্রমণ। অধিকাংশ বাড়িওয়ালাই বছরে একবার হলেও বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করেন আবার এমন অনেকে আছেন যারা বছরে দুই থেকে তিনবার। স্বল্পআয়ের মানুষ তো আছেনই তার সাথে আরও আছেন মধ্যবিত্তরাও। এমনকি উচ্চবিত্ত অনেকেই যারা ভাড়া থাকেন তারাও ভাড়া বৃৃদ্ধি নিয়ে অসোন্তষ প্রকাশ করেছেন।
এখানেই শেষ বললে ভুল বলা হবে, এছাড়াও আরও অনেক কর্মকান্ড রয়েছে যার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। যেগুলোর সমাধান কবে হবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন চলে। কিন্তু উপায় নেই। গায়ের সাথে জোঁক যেমন মিশে গেয়ে রক্ত চুষে খায়। তেমনিই এই ব্যাপারগুলো আমাদের শরীরের সাথে মিশে গেছে। নেই কোন প্রতিবাদ। প্রতিবাদ করতে গেলেই অপমান, হুমকি। ব্যাপারগুলো নিয়ে লেখালেখি এখন আর হয় না। ভয়ে অনেকে মুখ খোলেন না। উপর স্তরের রাজনৈতিক নেতাদের ছায়ার তলে এসকল বিষয় থাকায় অনেকে বলতেও চান না। তবে প্রশ্ন একটাই, কবে মিলবে এসব দুর্ভোগ থেকে মুক্তি, কবে হবে আবার শান্তিময় কালশী।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫
মারস্ শীতল বলেছেন: টনক নড়েব তখন, জনসাধারণ এদের বিরুেদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৫
ধুম্রজ্বাল বলেছেন: এই কালশী একদিন উচ্চবিত্তদের ঠিকানা হবে
০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩
মারস্ শীতল বলেছেন: ইনশাল্লাহ, অবশ্যই হবে।
৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫০
মফিজ বলেছেন: এই এলাকার এমপি অকমর্া,শুধু ক্যামেরায় মুখ দেখাতে পারে।রুপনগর-দুয়ারীপাড়া রাস্তা চষা ক্ষেত হয়ে আছে,এই পেট মোটার হুশ নাই।
০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩
মারস্ শীতল বলেছেন: ভাই কালশী আমার বাসস্থান, ঘটনা গুলো আমার সামনে ঘটেছে.... তবু মুখ ফুটে বলার কিছু নেই!!
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৩
দারাশিকো বলেছেন: গুড পোস্ট। যথাযথ কর্তৃপক্ষের টনক নড়ার অপেক্ষা করছি।