নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলার জন্য

মারস্ শীতল

কিছু বলার নাই,নিয়মিত ব্লগার হবারও কোন ইচ্ছা নাই। মাঝে মাঝে ... কিছু কথা যা মনকে উতলা করে প্রকাশ করতে!

মারস্ শীতল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনলাইন নিউজ পোর্টাল : উদ্দেশ্য জনপ্রীতি না জনসেবা?

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৪৯

মোবাইলের এক ক্লিকে যখন নিউজ চলে আসত তখন উন্নয়নশীল দেশের উন্নীত নাগরিক হিসেবে গর্ব হত নিজের মাঝে। দেশের চলমান অবস্থা গুলো তুলে ধরা একসময় এর কাজ ছিল এবং সে দায়িত্ব নিয়ে এ ধরণের পত্রিকাগুলো একটা সময় ভালই পরিষেবা দিত, তখন নিজেকে ডিজাটালাইজড্ মনে হত।

হ্যা! তথ্য সরবরাহের মতো গুরত্বপূর্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকা অনলাইন নিউজগুলোর কথাই বলা হচ্ছে। অনলাইন নিউজ, কাগজের পত্রিকার ডিজিটাল ভার্সন। আজ বসে থাকতে হয় না পরের দিনের জন্য। আজ বসে থাকতে হয় না, সকালে তারাতারি ঘুম থেকে উঠার জন্য। এক ক্লিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেয়ে বসে নিউজ সাইট গুলো। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চোখ খুলে মোবাইলে শুধু বুকমার্ক করে রাখা অ্যাড্রেস টাতে ক্লিক। তারপর গোটা দুনিয়ার খবর হাতের মুঠোয়। এছাড়া যে কোন সময় ঘটে যাওয়া ব্রেকিং নিউজ তো রয়েছেই।

কিন্তু মোড় এখন ঘুড়ে গেছে। বর্তমানে অনলাইন নিউজ গুলোর পরিষেবার মান ধীরে ধীরে কমে এসেছে। উত্তোরোত্তর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়ে আবার যেন নিচের দিকেই নেমে আসছে নিউজ পোর্টালগুলো। কারণ? নিম্নমানের সংবাদ উপস্থাপনা, যথেচ্ছা শিরোনাম ব্যবহার, অ্যাডাল্ট নিউজ পরিবেশন ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রথমেই বলা দরকার, সংবাদ উপস্থাপনের কথা। দেশের মধ্যে ব্যাঙের ছাতির ন্যায় গড়ে ওঠা নিউজ পোর্টাল গুলোর বেশিরভাগেরই নিজস্ব এবং স্থায়ী কোন অফিস নেই। একটি ফ্ল্যাটের কয়েকটি রুম নিয়ে ক্ষেত্রবিশেষে এক রুমের মধ্যে গড়ে উঠছে এই অনলাইন নিউজ চ্যানেল গুলো। আর হোস্টিং ডোমেইন এর ব্যাপার গুলো সহজ হয়ে যাওয়ায় অনেকে ১০-২০০০০ টাকা খরচ করে পেয়ে যাচ্ছেন ওয়েবসাইটগুলো। তারপর ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে বসে নিউজ আপডেট! আর এই ওয়েব নিউজ পোর্টালগুলোর অধিকাংশের কোন নিউজ রিপোর্টার নেই। প্রশ্ন হলো, তাহলে এই নিউজ গুলো তারা পান কোথা থেকে? উত্তরে বলা যায় দেশের লিডিং নিউজ ওয়েব পোর্টালগুলোর সাহায্যের কথা। হাতেগোণা কিছু ওয়েব পোর্টালের রিপোর্টার আছেন। তারা নিয়মিত আপডেটে হেল্প করেন। আর বাকি ওয়েব পত্রিকাগুলো কপি-পেষ্ট নীতি অনুসরণের মাধ্যমে নিউজ আপডেট করেন। তারা নিজেদের ওয়েবে বিভিন লিডিং পত্রিকার ট্যাব খুলে রাখেন এবং আপডেটগুলো চোখে চোখে রাখেন। আর এখনকার ওয়েবগুলো বানানো এমনভাবে যে, আপনি এখনকার নিউজ ১০ মিনিট বা আধ ঘন্টা পিছিয়ে দিয়ে পাবলিশ করতে পারেন। এর কারণ হলো, অনলাইন পত্রিকার বাজার প্রতিযোগিতা। দেশে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৫,৫০০ এর উপর ওয়েব পত্রিকা রয়েছে। আর এগুলোতে যে পত্রিকা সবচেয়ে আগে নিউজ দিতে পারবে সে পত্রিকার নিউজের কদর বাড়বে। বস্তুত আদৌ এটি আগে এলে আগে পাবেন থিওরি নয়।

এরপর আসা যাক নিউজের তথ্যমান। কপি-পেষ্ট থিওরি খাটানো বেশ কিছু পত্রিকার নিউজ পড়লে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, পত্রিকার খবরের মান কতটা নিম্ন। একটা নিউজ থেকে আরেকটা নিউজ কপি করার পর কারণ হলো, সময়ের অভাব। কারণ যে নিউজটি ১০ মিনিট আগে পাবলিশ হয়ে গেছে সে নিউজ টি আপনি চাইবেন না আপনার ওয়েবসাইটে ২ মিনিট আগে প্রকাশিত হোক। এতে আপনার নিউজ পোর্টালের দৌড় অন্যের দিক থেকে পিছিয়ে যাবে। তাই এডিটররা আগে থেকে কিছু অংশ পরিবর্তন করে এবং পিছন থেকে কিছু অংশ পরিবর্তন করে তা পাবলিশ করে দেন। ভিতরের বডিটা টা বিভিন্ন পত্রিকা থেকে ঘুরে আসা একই নিউজ মাত্র।

পত্রিকার শিরোনামের যথেচ্ছা ব্যবহার নিউজকে আরো বাজে করে তোলার মধ্যে অন্যতম। একটা ভাল শিরোনাম একটা নিউজকে পাল্টে দেয়। কপি-পেষ্ট নীতিতে অনুসারী নিউজ পোর্টালগুলো হেডিংগুলোকে বদলে দিতে আগের শব্দকে পিছনে ও পিছনের শব্দকে আগে দিয়ে সাজিয়ে একটা যেন তেন হেডিং বানিয়ে ছেড়ে দেয় তাদের ওয়েবসাইটে। শব্দ মিলল কি মিলল না সেটা দেখার সময় নেই।

বানানের বেখেয়ালী ব্যবহারে কারণে অনেক বানানই ভুল হিসেবে ধরা পড়ে। সেটা অনেক পাঠকেরই চোখে পড়ে না। আবার অনেকের চোখে পড়ে। আর অনলাইন নিউজ গুলোর সুবিধা একে বারবার পরিবর্তন করে ব্যবহার করা যায়। আপনি চাইলেই সংশোধন করতে পারবেন। আপনি চাইলেই যে কোন একজন কমেন্টকারীর কমেন্ট ডিলেট করে দিতে পারেন। আর এই কারণে কেউ যদি নিউজের ভুল ধরিয়ে দেন তা রিমুভ করে সহজেই নিউজটা পরিশোধন বা পরিবর্ধন করা যায়।

আর বর্তমানে আরেকটি বাজে বিষয় হলো অ্যাডাল্ট নিউজ বা এর সম্পর্কিত খবারাদি পাবলিশ করা। সরাসরি হোক কিংবা পরোক্ষভাবে এগুলো পত্রিকায় প্রকাশ করা হচ্ছে। যা অনেক সময়ই পত্রিকা পড়াকালীন সময়ে আমাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। এটা পানির তলে ডুব দিয়ে নিছক জনগণকে পত্রিকা খাওয়ানো ছাড়া আর কিছুই নয়। জনগণ চায় কিছুটা উত্তেজক খবর। সবার কথা বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে গোটাকতক মানুষের কথা। যারা এ ধরণের নিউজ পছন্দ করেন। আর আজেবাজে সব ভুলেভরা এবং অপ্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। যে নিউজগুলোনিউজে আসার উপযুক্ত নয় সেগুলোও উঠে আসছে। কোন উদাহরণ দেবার দরকার নেই। কেননা, এই নিউজগুলো যারা কিছুটা হলেও শিক্ষিত তাদের নজরে ফেলাচ্ছেন এবং প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু এতে কাজের কোন অন্যথা হয় নি। তারা আগের মতোই নিউজ পাবলিশ করে যাচ্ছেন।

অনলাইন নিউজগুলোর আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন, আর এই বিজ্ঞাপনগুলোই বাচিয়ে রাখতে গিয়ে অনেকটা বিরক্তির মুখে পড়েন পাঠক। নিউজ পড়তে গিয়ে নানা বিড়ম্বনাও পাঠককে ফেরাচ্ছেন নিউজ পড়া থেকে।

এসকল দিককে কেন্দ্র করেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তথাকথিত নিউজ পোর্টালগুলো। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের চেষ্টা করতে হবে। নয়ত অকালেই ফেসবুকের আইডি ডিঅ্যাক্টিভেটের মতোই হারিয়ে যাবে নিউজ পোর্টালগুলো। আর প্রশ্ন রইবে পত্রিকাগুলোর কাছে, জনপ্রিয়তা অর্জনই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য কিনা?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:২৫

রাজিব বলেছেন: সুন্দর লেখা। বাংলাদেশে ৫,৫০০ নিউজ পোর্টাল আছে এ তথ্য কোথায় পেলেন? আমি জানতাম বড় জোর ৪-৫০০ হবে। আর পত্রিকা ও ম্যাগাজিনের ডিক্লারেশন মনে হয় আর তার মধ্যে ২০ টাও মান সম্মত কিনা সন্দেহ আছে। তাই নিউজ ওয়েবসাইটকে এক তরফা গাল দিয়ে লাভ নেই। আমাদের একটা কমন স্বভাব হল হুজুগে মেতে উঠা। সবাই নিউজ ওয়েবসাইটের মালিক ও সম্পাদক হতে চাই আমরা।
আমার ব্লগঃ http://ecombd.net/

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:৫২

মারস্ শীতল বলেছেন: সামান্য একটা বিষয় নিয়ে হুজুগে ওঠা জাতি বাঙালি তা আমি জানি। আমিও বাঙালি। কিন্তু একটা কথা কিন্তু সত্য যা রটে, তার কিছু হলেও ঘটে।
তথ্য জানানোর জন্য ধন্যবাদ। কাগজী আর ওয়ের পোর্টাল নিয়ে তো ৫,৫০০ হবেই বলে আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.