আবাহমান পর্ব ১

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪০

পূর্ব কথা

প্রচণ্ড শীতের প্রকোপে কাঁপছে সবাই। সকাল বেলা কুয়াশায় সব ঝাপসা। বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় পর্যন্ত সকাল দশটার আগে দেখা যায় না। সন্ধ্যায় গ্রামের তথাকথিত গরীব ব্যাক্তিরা খড়-কুটো একত্রিত করে আগুনের কুণ্ডুলি করে পাশে বসে আগুনের তাপ নিতে থাকে। এক সময় আগুন নিভে যায় তারা ঘরে যেতে থাকে। এখানে এতো শীত পড়ে যে গ্রামের কিছু বৃদ্ধ বা শিশুর জীবন খোয়াতে হয় এই গ্রামের কাউকে না কাউকে।

কিন্তু এতো কিছুর মাঝেও অপূর্ব সুন্দর এক গ্রাম গোবিন্দগড়। ছবির মতো সুন্দর কুড়ে ঘর, বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়, দূরে রেল লাইনে দিনে তিনবার ঝিক ঝিক শব্দে ট্রেন চলে যায় দিনে তিনবার। পুকুর আছে কয়েকটা। খুব ভোরে পাখির কলরবে মুখোর থাকে চারপাশ। তাল গাছে ঘুঘু পাখির বাসা বাতাসে দুলে এক অপূর্ব দৃশের সৃষ্টি করে। রাতে অগণিত জনাকি যখন থকায় থকায় জ্বলতে আর নিভতে থাকে তখন কোন এক অচেনা স্বপ্নের রাজ্য মনে হতে থাকে গোবিন্দগড়কে।

উত্তর-বঙ্গের এই ছোট অথচ সুন্দর গ্রামের এক ছোট্ট মেয়ে তানি র গল্প করবো আমরা। যে অনেক উচ্ছল, প্রানজ্জল, আর হাসি-খুশি মেয়ে। কিন্তু জীবনের কিছু কঠিন মুহূর্ত এই ছোট্ট মেয়েটার জীবন আমূল পাল্টে দিলো। সেই বদল তানি কে হঠাৎ অনেক বড় করে দিল।

জীবনের এই বদল এবং তানির বড় হয়ে উঠা নিয়েই আমাদের এই গল্প। তানির জীবন কি কষ্টের নাকি আনন্দের হবে তা বেশ কয়েকটা পর্ব পর্যন্ত পাঠকদের হাতে।

গল্প শুরু করার আগে তানির পরিচয় দেয়া আবশ্যক। তানি গোবিন্দগড় নামের এক ছোট্ট গ্রামের ছোট্ট মেয়ে। বয়স আট বৎসর। বাড়িতে বাবা, মা, বড় দুই ভাই আর সে থাকে। তানির সব থেকে কাছের বন্ধু হোল তার মামাতো বোন জান্নাত, যদিও দিনের একটা বড় অংশ তারা ঝগড়া করেই কাটিয়ে দেয়। তার পরেও তাদের মিল এতো বেশি যে কেউ কাউকে ছাড়া যেমন খায় না ঠিক তেমন ঘুমায়ও না। জান্নাত ও তানি একই বয়সী আর একই ইস্কুলে পড়ে। দিনের শুরু থেকে রাত পর্যন্তই তাদের ঝগড়া চলে।

তানি এখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে। পড়ার চাপ খুব বেশি না। মিউনিসিপাল ইস্কুলে এখনো দ্বিতীয় শ্রেণীর জন্য তিনটা বই। বাংলা, ইংরেজি, আর অঙ্ক। যেখানে নাম মাত্র পড়া থাকে।

আমাদের এই গল্পের মূল চরিত্র তানি। তাকে ঘিরে এই গল্পের ডাল-পালা প্রসারিত হতে থাকবে। গল্পের প্রয়োজনে কিছু চরিত্র যেমন যোগ করা হবে ঠিক তেমনি কিছু চরিত্র বাদ পরে যাবে।

০ টি +০/-০