নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুনতাসীর মারুফ - নতুন নিক

http://www.somewhereinblog.net/blog/marufk56

মারুফডি

মারুফডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

টুকরো টুকরো ভালবাসা - ৯

২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৩

নাম পরিবর্তন: 'মারুফডি' থেকে 'মুনতাসীর মারুফ'



টুকরো - ৮, টুকরো - ৭, টুকরো - ৬, টুকরো - ৫, টুকরো - ৪, টুকরো - ৩, টুকরো - ২, টুকরো - ১

এই টুকরোটি নাম-না-জানা কোন ছেলে বা মেয়ের না। এবার আমারই একটি কাহিনী বলি। যাকে বলে জীবন থেকে নেয়া, তেমন একটি গল্প বলি।

ক্লাসে চার সারিতে বসে ছেলে মেয়েরা। বাঁ দিক থেকে তিনটি সারি ছেলেদের, ডান দিকের টা মেয়েদের। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে সংখ্যায় কম বলে একটি সারিই তাদের জন্য যথেষ্ট। প্রথম দিন থেকেই একটি মেয়েকে মনে ধরে যায়। মেয়েটি অসাধারণ সুন্দরী টাইপ নয়, তবে বেশ সুন্দরী বলা যায়। তবুও তাকেই আমার সবচেয়ে ভালো ভাগে, সবচেয়ে কাছের মনে হয়। কাছের মনে হওয়ার অন্যতম কারণ, আমার ঠিক আগের রোলটিই ওর। আমার রোল ১৩, ওর ১২। স্যার রোল কল করার সময় আমি ওর দিকে চেয়ে থাকি। স্যার ‘১২’ ডাকার পর ওর উঠে দাঁড়িয়ে ‘প্রেজেন্ট প্লিজ’ বলাটা আমার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য বলে মনে হয়। পৃথিবীর তাবৎ কিছু থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমি শুধু সে দিকে মনোযোগ দিই, ওর ছোট্ট ঐ দুটি শব্দ - ‘প্রেজেন্ট প্লীজ’- আমার ভেতরটা অদ্ভূত ভাললাগায় ভরিয়ে দেয়; পুরোটা ক্লাস আমি ঐ কন্ঠের মাদকতায় ডুবে থাকি।

কিন্তু ওর নামটা জানা হয় না। স্যার তো শুধু রোল কলই করেন, নাম তো আর বলেন না। আমি অনেক আগে ক্লাসে এসে নির্লজ্জের মতো মেয়েদের সারির পাশের সারিতে বসি। বান্ধবীদের সাথে ওর কথা শোনার চেষ্টা করি। আবছা আবছা কানে আসে। কিন্তু ওর নামটা শোনা হয় না। ওকে একা কখনো পাই না। অতোগুলো মেয়ের মাঝে গিয়ে তাকে প্রশ্ন করবো সে সাহসও হয় না।

অবশেষে সুযোগ আসে একদিন। সেদিন আমাদের প্রথম পরীক্ষার দিন। পরীক্ষার সীট গুলো সাজানো হয় রোল নম্বর অনুসারে। ফলে আমার সামনের সীটটিতে বসে সে। আমি অনেক আগে থেকে এসে বসে আছি তার প্রতীক্ষায়। কিন্তু সে এলেও আমি কিছু বলতে সাহস পাই না। এদিকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে। শেষে অনেকটা মরিয়া হয়েই ডাক দেই - ‘এই যে’।

ও ফিরে তাকায় পেছনে। ভেতরে কম্পন শুরু হলেও আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি। প্রশ্ন করি - ‘তোমার নাম কি?’

নাম বলে মেয়েটি। নামটা না হয় উহ্যই থাক।

‘বয়স কত?’ (সত্যি কথা, এই প্রশ্নটাই করেছি আমি। )

‘সাত বছর।’

ও আচ্ছা, বলা হয়নি - ঘটনাটি যখনকার তখন আমি ক্লাস ওয়ানে পড়ি, আইডিয়াল স্কুলে। আমি চিন্তা করি - নাহ ঠিকই আছে, বয়স আমার সমানই। চলবে।

ছোট এক টুকরা কাগজে নাম ও বয়সটা টুকে রাখি। সে কাগজের টুকরোটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। তারপর হঠাৎ করে হাত বাড়িয়ে কাগজটা প্রায় ছিনিয়ে নেয়। ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়। আমিও কি কম নাকি! পরীক্ষার হলে যে জ্যামিতি বক্সটা নিয়ে গিয়েছিলাম, তার ভিতরের দিকে পেন্সিল দিয়ে আবার নাম ও বয়স লিখি। এটা তো আর ও ছিঁড়তে পারবে না। লেখাটা ওকে দেখিয়ে আমিও তার হাসি ফিরিয়ে দেই। সে মুখ ঘুরিয়ে সামনে তাকানোর আগে যে দৃষ্টিটা দেয়, তাকেই সম্ভবত ‘বিলোল কটাক্ষ’ বলা হয়।

ক্লাস ওয়ানের আর সব স্মৃতি মুছে গেলেও ঐ টুকু সময় আমি চোখ খোলা রেখেই দেখতে পাই এখনও।

বাড়ি এসে আমি আমার মনের কথাটি জানিয়ে দেই মাকে। খালা-ফুফু মহলে কিছুদিনের মধ্যেই তা ছড়িয়েও পড়ে। এ নিয়ে তারা আমাকে খেপানোর চেষ্টা করে। আমি খেপি না। আমার ভালই লাগে। আমি স্বপ্ন দেখি। কিন্তু তাকে মনের কথাটি বলা হয় না কখনোই। ক্লাস টু-থ্রি-ফোর পেরিয়ে যায়- আরও দু-একবার কথা হয়েছিল কি হয় নি মনে পড়ে না।

ক্লাস ফাইভে এসে ছেলেরা চলে আসি ডে-শিফটে। মেয়েরা মর্নিং শিফটে। মর্নিং শিফটের সাথে আমাদের দেখা হয় কেবল আমরা স্কুলে ঢোকা আর ওরা বের হওয়ার সময়। তা-ও গেট আলাদা হওয়ায় শুধু দূর থেকেই দেখা। আমরা মেয়েদের সাথে কথা বলতে ভয় পাই। একদিকে টিচারের শাস্তির ভয়, অন্যদিকে 'ভাল ছেলে' হিসেবে সুনাম খোয়ানোর ভয়।

এইট-নাইন-টেনে অসাধারণ ফলাফল করা যে মেয়েদের নাম শুধু জানতাম, তাদের সাথে পরিচয়ই হয় ইন্টারের পর কোচিংয়ে বা মেডিক্যাল-বুয়েটে ভর্তি হওয়ার পর।

ক্লাস সিক্সে স্কুলের গেটে দাঁড়ানো অবস্থায় শেষবারের মতো দেখা ঐ মেয়েটিকে খোঁজ করার চেষ্টা করি এতদিন পর। কেউ খোঁজ দিতে পারে না। ক্লাস ওয়ান-টু-থ্রি-ফোরে একসাথে পড়া যে মেয়েদের সাথে আমার পরে পরিচয় হয়, তাদের সাথে এখন আর যোগাযোগ নেই ওর। কেউ বলে, মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে বলে শুনেছে। কিন্তু কোথায় আছে, কেমন আছে সে আমার জানা হয় না আর।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১২:৫২

সিটিজি৪বিডি বলেছেন: ক্লাস ওয়ানে প্রেম!!! জামানা খারাপ হুগেয়া।

২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:০৮

মারুফডি বলেছেন: জমানা খারাপ বহুত আগেই হুগ্যায়া ভাইজান। আমি ক্লাস ওয়ানে পড়তাম তাও প্রায় সিকি শতাব্দী হইতে চললো।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৫

রাজামশাই বলেছেন: ওরেরে

আমি মুগ্ধ

২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:০৭

মারুফডি বলেছেন: আমার হাতে পয়সাপাতি নাই রাজা সাহেব। আরও কিছু স্বর্ণমুদ্রা চাই।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ২:২০

আহমেদ হেলাল ছোটন বলেছেন: জীবন থেকে কি শুধুই নেয়া?
জীবনকে কিছু দে রে ব্যাটা।

২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:০৭

মারুফডি বলেছেন: হায় হায় ! নিলাম কই? সারা জীবন তো দিয়াই গেলাম।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৫:৩২

কৃষক বলেছেন: আমিও কয়ডা টুকরা বানাইছি ;)

Click This Link

২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪১

মারুফডি বলেছেন: গুড। দেইখা লই।

৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৫

কঁাকন বলেছেন: প্রেমিক পুরুষ

২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

মারুফডি বলেছেন: আরে নাহ! তা আর হইলো কই?

৬| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:২২

নিরক্ষর বলেছেন: পুরো সিরিজ পড়লাম। অসাধারন লেখা।

৩১ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৮

মারুফডি বলেছেন: ধন্যবাদ। লজ্জা পাইলাম।

৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১:২৭

একরামুল হক শামীম বলেছেন: পড়ছি। :)

২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:৫৪

মারুফডি বলেছেন: পড়া শেষ হয় নাই?

৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:১৬

আহমেদ হেলাল ছোটন বলেছেন: আরে মিয়া-
১. এইটা একটা কবিতা- স্বরে অ
২. তোমারে জিজ্ঞাসা করার আগের পোস্ট- অটোড্রাফট পোস্ট কি
৩. ডি - কে আমি ভয় পাই না ডি আমারে ?- উট সন্ধানে

৩১ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৮

মারুফডি বলেছেন: হুম।

৯| ২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:২৪

প্রীটি সোনিয়া বলেছেন: ভাল লাগলো পিচ্চিকালের প্রেম....:)

২৭ শে আগস্ট, ২০০৮ রাত ১১:৫৩

মারুফডি বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ৩০ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৫:৫৮

ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: এইটা আগে পড়ি নাই। পড়ে ভালো লাগলো। অকপটে বলে ফেলার জন্য আপনাকে (আপনার ৭ বছরবয়সী ভার্সনটাকে) উত্তম জাঝা!!;)

৩১ শে আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৩:৫২

মারুফডি বলেছেন: ধন্যবাদ। সবারই ঐ বয়সটার কোন না কোন কাহিনী আছে। আপনারটা বইলা ফেলেন।

১১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:২৬

সৌম্য বলেছেন: ভালো হয়েছে...সুন্দর হয়েছে।।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:২৫

মারুফডি বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১:২৩

ডিজিটাল মুবিন বলেছেন: বস মুইও ১০ বসর ধরি মোর একডা মেয়ে বন্ধুরে খুজতাসি, :(

তাকে লাস্ট দেখেছিলাম ২০০০ এর প্রাইমারি এক্সামের লাস্ট দিন।
এখনো খুজে ফিরি তাকে।জানিনা পাবো কিনা.......তবুও হাল ছাড়িনি...

২০ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ১২:১৬

মারুফডি বলেছেন: আগার কিসি চিজ কো দিলসে চাহো তো পুরি কায়নাত উসে তুমসে মিলানেকি কোশিশমে লাল যাতি হ্যায়। .... লাগে রাহো...

১৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৩:২৬

লেজকাটা বান্দর বলেছেন: হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬

মারুফডি বলেছেন: হো হো হো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.