নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ুন

আমি একজন সাধারণ মানুস।তাই বেশী কিছু লিখবো না।

মেসি০০৭০০৭

আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।

মেসি০০৭০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪

বাংলাদেশের সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনের নামে কিছু ব্যক্তি ও সংস্থা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। সেনাবাহিনী ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামের শান্তিরক্ষায় ব্যস্ত। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর ও উদ্যোগী। দেশবিরোধী অপতৎপরতায় অংশগ্রহণকারীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। মানবাধিকার বিনষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে। নয়াদিলি্লভিত্তিক সংগঠন 'এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস' নামের সংগঠনটি এ অপপ্রচারে উদ্যোগী হয়েছে।রতনতনু ঘোষ বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের অর্জিত শীর্ষ পর্যায়ের ভাবমূর্তি বিনষ্টে শুরু হয়েছে অপপ্রচার ও অপতৎপরতা। অত্যন্ত সাহস, দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশের সৈনিকরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের হয়ে কাজ করছে। দুই যুগ ধরে বিশ্বের ৫৪টি দেশে শান্তি রক্ষার গৌরবজনক ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। দেশের অর্থনীতিতেও তারা অবদান রেখে চলেছেন। ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের ৮ হাজার ৯১৭ জন পুরুষ ও ২২৫ জন নারী মিলিয়ে ৯ হাজার ১৪২ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে পাকিস্তান দ্বিতীয় পর্যায়ে আর ভারত তৃতীয় অবস্থানে ছিল। কঙ্গো, আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, দক্ষিণ সুদান এবং দারফুরে (সুদান) বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। ১৯৮৯ সালের ইরাক-ইরানে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে ভূমিকা পালনের পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শুরু হয় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ। জাতিসংঘের সর্বমোট ৬৮টি মিশনের মধ্যে মোট ৫৮টি মিশনে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী এ মিশনে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা এ মিশনে অংশ নিয়ে চলেছে। পশ্চিম সাহারায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ফোর্স কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আবদুল হাফিজ। তিনি আইভরি কোস্টেও প্রশংসনীয় দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সুদান মিশনের ফোর্স কমান্ডার হিসেবেও বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক শাহজামান, রাজু তিমুর লেস্টে জাতিসংঘ মিশনে ডেপুটি পুলিশ কমান্ডার হিসেবে এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমান্ডার মোহাম্মদ বেনিজ আলী মিয়া লেবাননে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে চিফ অব নেভাল অপারেশন সেন্টারের দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি জাতিসংঘের নানাভাবে উজ্জ্বলতর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনগণের ক্ষমতায়ন এবং শান্তির সংস্কৃতি শীর্ষক প্রস্তাব দুটো শান্তিকেন্দ্রিক উন্নয়নের মডেল হিসেবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৭তম অধিবেশনে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর গৃহীত হয় সর্বসম্মতিক্রমে। ১৯৩ সদস্য-রাষ্ট্র সাধারণ অধিবেশনে ২৯ নাম্বার এজেন্ডা হিসেবে প্রস্তাব দুটি সমর্থন লাভ করে সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন আকারে 'জনগণের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন' নামে গৃহীত হয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব। ২০০১ সালে উপস্থাপিত হয়েছিল 'শান্তির সংস্কৃতি' শীর্ষ প্রস্তাবটি। ২০১২ সালের প্রস্তাবে 'শান্তির সংস্কৃতি' বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক প্রতিবছর আয়োজনের বিধান রক্ষা হয়। বাংলাদেশে একের পর এক ভাবমূর্তি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের সহযোগী ও পোষ্য সংগঠন, প্রচার মাধ্যমগুলো। বিডিআর হত্যাকা-ের মাধ্যমে আওয়ামী সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্টা চলে। সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রয়াস চলে। বিডিআর হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচারের পর সরকারের বিবেচনা গুরুত্ব লাভ করে। বারবার সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা গ্রহণে উস্কানি দিয়েছেন খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা। সেনাবাহিনী এসব উস্কানিকে গুরুত্ব দেয়নি, ব্যবহৃত হয়নি। এতে সেনা কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি বেড়েছে। র্যাবের বিলুপ্তি চেয়ে বিএনপি নেত্রী বারবার বক্তব্য দিয়েছেন। শুধু তাই নয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিএনপি-জামায়াতের সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বলেছে। নারাণগঞ্জে সাত খুনের দায়ে সরকার তিন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার, তদন্তসহ নানা কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। তারপরও এ ঘটনার জন্য পুরো র্যাবের বিলুপ্তি চাওয়া হয়েছিল। সরকারকে দোষারোপের নানা অজুহাত তোলা হয়েছে। বিশেষত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে সরকারের পতনের ধারাবাহিক আন্দোলনে দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের চেষ্টা চালানো হয়েছে। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অর্থনীতির গতিশীলতা বিনষ্ট, বিনিয়োগ ব্যাহত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়। সশস্ত্রবাহিনী, র্যাব ও সরকারকে ঘায়েলের পরিপূর্ণ অপতৎপরতা চালানো হয়েছে একের পর এক। সরকারকে অবৈধ এবং সংসদকে অকার্যকর দাবি করে বিএনপি ক্রমাগত হাইকোর্টের রায়ে বাতিলকৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনরুজ্জীবনের দাবি তুলেছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের বাতিল চেয়েছে তারা। সাংবিধানিক উপায়ে নির্বাচন হওয়ায় যাবতীয় অপপ্রচার সত্ত্বেও জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, রাশিয়া, চীন, জার্মানিসহ বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো সরকারকে মেনে নিয়েছে এবং সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে কল্পিত দুর্নীতির ধারাবাহিক অভিযোগ, গ্রামীণ ব্যাংক বিলুপ্তির আশঙ্কা এবং নারীনীতিবিরোধী হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং সেই সরকার পতনের লক্ষ্যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শান্তি বজায় রেখে ধ্বংসের অপশক্তিকে মোকাবেলা করেছে। তাতে সশস্ত্রবাহিনী ও পুলিশবাহিনীর ভাবমূর্তি বেড়েছে। জাতিসংঘ পূর্বাপেক্ষা অধিক সুনাম করেছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা কর্তৃক শিবির বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত হওয়ার পর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে পুলিশের সদস্য এবং নারী পুলিশ অধিক হারে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী মোকাবেলায় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সফল ভূমিকা পালন করায় সন্তুষ্টি লাভ হয়েছে, বাংলাদেশের দারিদ্র্যবিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে বিশ্বের মডেল বলে উল্লেখ করেন। নারীর ক্ষমতায়ন আর বিশ্বশান্তি সুরক্ষায় বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায় গৌরবজনক। এসব গৌরবময় অর্জন ধরে রাখা জরুরি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সরকার সচেষ্ট। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের মাত্রাও অর্জিত হয়েছে অনেকাংশে। ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ নানাভাবে শীর্ষ পর্যায় অর্জন করে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিগত ২০ বছরে বাংলাদেশের ১৩৫ মিলিয়ন লোক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে। সরকারি উদ্যোগে গ্রামীণ পর্যায়ে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ২৫ হাজার কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবীকে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখার দৃষ্টান্ত বিশ্বের কাছে অনুসরণীয় হয়ে উঠেছে। জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবেলা করে বাংলাদেশের মানুষকে জীবনসংগ্রাম করে বাঁচতে হয়। প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়। জনগণের সঙ্গে এ দেশের শান্তিবাহিনী, পুলিশ বাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে চলেছে। দেশে জেএমবি, হিযবুত তাহরীরসহ নানা নিষিদ্ধ সংগঠন অতীতে নাশকতা ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি ও শান্তি বিনষ্টের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। জেএমবি উত্থানের পেছনে ছিল জোট সরকারের শীর্ষ নেতাদের প্রকাশ্য মদদ ও উৎসাহ। নাটোর, নওগাঁ ও রাজশাহীর তৎকালিন পুলিশ সুপার বিএনপি-জামায়াত সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে জঙ্গি তৎপরতায় সহযোগিতা প্রদান করেছিল। তদন্তে বেরিয়েছে নানা ভয়ঙ্কর তথ্যাদি।দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসমের (উলফা) সামরিকপ্রধান পরেশ বড়ুয়া বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন বলেও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে দশ ট্রাক অস্ত্র আটক করেছিল পুলিশ। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ ঘটনা জেনেও আসামিদের পালিয়ে যেতে বাধা দেননি। এ ব্যাপারে টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তি বিনষ্টের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চলেছে। গার্মেন্টশিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অগি্নসংযোগ ও নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তাল করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গার্মেন্টে ধস ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করে সুনাম অর্জন করেছেন। তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ মানবাধিকার সংগঠাগুলোর প্রচারণায় জিএসপি সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও সরকার শর্ত পূরণ করে তা রক্ষার চেষ্টা করেছেন। বিজিএমইএর উদ্যোগ গৃহীত হয়। সহিংসতা ও অস্থিতিশীল রাজনীতির কারণে বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে ২০১৩-১৪ সালে দেশের পোশক খাতের ক্ষতি হয়েছে ১৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার। তখন ৩০-৪০ শতাংশ অর্ডার চলে যায় অন্য রাষ্ট্রে। সাত শতাধিক পোশাক কারখানায় নামে ধস। নতুন মজুরি কাঠামোর বেতন দিতে না পারায় দেখা দেয় অসন্তোষ ও অনশন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা, নির্বাচনকেন্দ্রিক নাশকতা নিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি বিনষ্টসহ নানা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। নিউইয়র্ক টাইমস, দি ইকোনমিস্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন ছিল লক্ষণীয় ব্যাপার।

আন্তর্জাতিক মহল নানা চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধের বিচার ও রায় নিয়ে শুরু হয় নানা ধ্বংসাত্মক তৎপরতা ও হত্যার ঘটনা। এসব ঘটনা জনগণ ও সরকারের জন্য হুমকি উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে। বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন, রোড মার্চ, ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি, মার্চ ফর ডেমোক্রেসির আন্দোলন রাজনৈতিক উত্তপ্ত অবস্থার সৃষ্টি করে। সরকারকে পতনের আল্টিমেটাম, টেনেহেঁচড়ে নামানোর হুমকি ছিল দেশের কালো ভাবমূর্তি পতনের উৎস। বিএনপির রাজাকার প্রেম এবং যুদ্ধাপরাধী সুরক্ষার আন্দোলন বিস্ময় সৃষ্টি করে। বিএনপির বাবর, তারেক, পাপিয়া, জয়নাল আবদিন, মির্জা ফখরুলরা কালো রাজনীতির প্রতীক হয়ে ওঠেন। জাতির জনককে নিয়ে অপপ্রচারে খালেদা জিয়া আর তারেকের উদ্যোগ দেশে-বিদেশে নিন্দিত হয়। মিথ্যা, গুজব ও অপপ্রচারের তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে। সংলাপের জন্য দেশি-বিদেশি উদ্যোগ উপেক্ষিত হয়েছে। জাতিসংঘের উদ্যোগও কার্যকর হয়নি এ ব্যাপােের।সবশেষে শুরু হয়েছে জাতিসংঘে অপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর আয়োজন বিএনপির অপপ্রচারকারী, তাদের সপক্ষীয় মিডিয়া এবং সংগঠন জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্টের জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে নানাভাবে। বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী না নেয়ার জন্য চিঠি প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনের নামে কিছু ব্যক্তি ও সংস্থা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। সেনাবাহিনী ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামের শান্তিরক্ষায় ব্যস্ত। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর ও উদ্যোগী। দেশবিরোধী অপতৎপরতায় অংশগ্রহণকারীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। মানবাধিকার বিনষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে। নয়াদিলি্লভিত্তিক সংগঠন 'এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস' নামের সংগঠনটি এ অপপ্রচারে উদ্যোগী হয়েছে।এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সুহাস চাকমা আদিবাসী ও উপজাতিদের ব্যাপারে সোচ্ছার হয়েছেন। বাংলাদেশের বিডিআর হত্যাকা-, র্যাবের ঘটনা ও কর্মকা- নিয়ে তারা অভিযোগ দায়ের করেছে। এসব বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে। পার্বত্যবাসী ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন, বাংলাদেশে জিহাদিদের কার্যক্রম নিয়ে শান্তিরক্ষা মিশনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম-খুন ও ধর্ষণের ঘটনা তাতে স্থান পেয়েছে।বাংলাদেশ যখন দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্রগতির মডেল হয়ে উঠেছে, যখন বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা শীর্ষ পর্যায় লাভ করেছে তখন এ ধরনের অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে জাতিসংঘে কী উদ্দেশ্যে তা বুঝতে কষ্ট হয় না। বাংলাদেশে অস্থিতিশীল রাজনীতির কারণ যুদ্ধাপরাধ, স্বাধীনতার সপক্ষীয় শক্তি আওয়ামী লীগের ক্ষমতায়ন। জাদুকরী উন্নয়ন আর দারিদ্র্যবিমোচনে দেশ এগিয়ে চলেছে রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিরতার পরও।ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি চলছে সারাদেশে। এ দেশে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাও আছেন। তাদের সনদ বাতিলে সরকার উদ্যোগ নিয়েছেন। সনদধারী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের নেতা সাজতে চান। তারাও বিভ্রান্তি ছড়াতে চান। সরকার যখন দেশ-বিদেশের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধুদের সম্মানিত করেছেন এবং সহায়তা লাভ করছেন তখন অপশক্তি ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি। সশস্ত্র বাহিনীর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নে সরকার সচেষ্ট। সেনাবাহিনীর জন্য চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাঙ্ক, সেলফ প্রোপেল্ড গান, ওয়েয়ান লোকেটিং, রাডার, অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার, আর্মড রিকভেরি ভেহিক্যাল ক্রয় করা হয়েছে। নৌবাহিনীর জন্য মেরিটাইম- পেট্রল-এয়ারক্রাফ্ট ও হেলিকপ্টার, ফ্রিগেট, করভেট লার্জ পেট্রল ক্যাফ্ট ও হাইড্রোব্যাকিক সার্ভে জাহাজ ক্রয় করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে স্পেশাল ফোর্স। বিমান বাহিনীতে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল যুক্ত করা হয়েছে। কুর্মিটোলায় বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। পুলিশবাহিনীর আধুনিকায়ন কাজও এগিয়ে চলেছে। ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কেনা হয়েছে হেলিকপ্টার। প্রদান করা হয়েছে পদোন্নতি। জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী রাষ্ট্র হলো বাংলাদেশ। ফায়ারব্রিগেডকে শক্তিশালী করা হয়েছে ভূমিকম্প ও অগি্ননির্বাপণ রক্ষায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারকে কার্যকর করার জন্য। প্রত্যেক উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের কাজ অব্যাহত আছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের পুলিশ ও নারী পুলিশের অবস্থান শীর্ষে। সশস্ত্র বাহিনীর নারী কর্মকর্তারাও সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আয় করেছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। তাতে ৫৬০ কোটি টাকার বেতন-ভাতা আর অস্ত্রশস্ত্র যানবাহন ও অন্যান্য সরঞ্জামের আয় হয় ৩৪০ কোটি টাকা। সেনা সদস্যদের বেতন-ভাতা ছাড়া মিশন থেকে অর্জিত এসব অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়। সেনাবাহিনী ছাড়াও বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও পুলিশবাহিনীর আয় অর্জিত হয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন থেকে। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সুনাম, মর্যাদা, আয় অর্জনসহ নানাভাবে দেশকে অগ্রসর করে চলেছে। শান্তিরক্ষা মিশন থেকে প্রত্যেক বছর গড়ে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয় বাংলাদেশের। এ দেশের শান্তিরক্ষীরা জাতিসংঘসহ সমস্যা কবলিত দেশগুলোর আস্থা ও সুনাম অর্জন করেছে। সেই সুনাম ও সম্মান ধ্বংস করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে 'এসিএইচআর' শীর্ষক দক্ষিণ এশীয় মানবাধিকার সংগঠন। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশীয় কিছু ব্যক্তি ও সংস্থা। তারা নানা ঘটনা ও নেতিবাচক প্রতিবেদন পেশ করে জাতিসংঘে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে চায়। চিঠি দিয়ে শান্তিরক্ষী এ দেশ থেকে না নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। এদের মুখোশ ও অপতৎপরতা থেকে সরকারকে সাবধান হতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্বশান্তি সুরক্ষায় বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি ধরে রাখতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার, বিভিন্ন বাহিনী, প্রচার মাধ্যমকে সতর্ক হয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।–







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.