![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মনগড়া, মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য সংবলিত রিপোর্ট প্রকাশ করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস নামের দিল্লিভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন। সুহাস চাকমা নামের এক বাংলাদেশী নাগরিক পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ও র্যাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাকর্মকর্তার নেতিবাচক কর্মকান্ডের দায় সমগ্র সেনাবাহিনীর ওপর চাপিয়ে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বন্ধ করার প্রস্তাব করেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দেশের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরিকরা এ রিপোর্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, জাতিসংঘ শাস্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল করে সেদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করা।``Bangladesh Sending Death Squads to Keep the UN’s Peace`` শিরোনামে গত জুলাই মাসে প্রকাশিত এই রিপোর্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ‘ডেথ স্কোয়াড’ বা ‘খুনী বাহিনী’ হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।রিপোর্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা, বিদ্বেষপ্রসূত ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করে বলা হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ‘পাওয়ার ব্রোকার ইন বাংলাদেশ পলিটিস’ এবং প্রতিষ্ঠানটির ‘ঢাকার সিংহাসনের পেছনের মূল চালিকাশক্তি’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা যেমন র্যাব, পুলিশ ও প্যারামিলিশিয়া বাহিনীর ীপর পূর্ণ কমান্ড, কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। রিপোর্টে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সৈন্য প্রেরণকারী দেশ আখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে, এ কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োগের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলেও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশী বাহিনীসমূহের কোনো সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ নির্বাচননীতি নেই, এছাড়াও জাতিসংঘ কর্তৃক ২০১২ সালে প্রণীত Human Rights Screening of United Nations Personnelবিষয়ক নীতিমালার অনুসরণে বাংলাদেশ সরকার কোনো ধরনের যাচাই নীতিমালা প্রণয়ন করেনি।শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ জীবনমান, জাতীয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের অপূর্ব সুযোগ আখ্যা দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই কারণেই ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছে, এছাড়াও সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও সেনাবাহিনীর বেসামরিক বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য বিনির্মাণে সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে ‘ডেথ স্কোয়াড’ প্রেরণ করছে মর্মে অভিযোগ করে প্রমাণ হিসাবে সুদানে কয়েকজন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষা যৌন হয়রানির বিচার না হওয়া, জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীসমুহকে মানবাধিকার লংঘনের জন্য দায়ী করে অঈঐজ পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালীদের পক্ষাবলম্বনের জন্য এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা, গ্রেফতার, নির্যাতন, জোরপূর্বক উৎখাত এবং উপজাতি লোকজনের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করে। শান্তি চুক্তির পরও পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ক্যাম্পের অবস্থিতির সমালোচনা করে এই প্রতিবেদনে আরো মন্তব্য করা হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম এখনও সামরিক শাসন ও দখলদারিত্বে রয়েছে। এছাড়াও র্যাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা কর্মরত আছে উল্লেখ করে রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে : ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় যে, বাংলাদেশ সরকার তাদের ‘উবধঃয ঝয়ঁধফং’ সমূহকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রেরণ করবে। একইভাবে এটাও কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় যে, জাতিসংঘ র্যাব সদস্যদেরকে শান্তিরক্ষী হিসাবে গ্রহণ করবে’। এছাড়াও রিপোর্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আকার, বাজেট, ব্যয় বৃদ্ধি, ইমপিউনিটি ও আধুনিকায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ করা হয়েছে, সেনাবাহিনী গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ক্ষতি করে দেশের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এদিকে, উল্লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিপোর্টে জাতিসংঘের কাছে কয়েকদফা সুপারিশমালাও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এরমধ্যে রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীর সংখ্যা কমিয়ে আনা; বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদেরকে র্যাব থেকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োগ রহিতকরণ; পার্বত্য চট্টগ্রাম ও র্যাব বাহিনীতে কর্মরত সেনা সদস্যদেরকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োগ দান বন্ধ রাখা প্রভৃতি। প্রতিবেদনের স্বাক্ষরকারী সুহাস চাকমা অঈঐজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও একমাত্র পরিচালক। তার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাহ্যত তিনি মানবাধিকার ও আদিবাসী অধিকার নিয়ে কাজ করলেও অঈঐজ-এর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বাংলাদেশী হয়েও ভুয়া কাগজপত্র ও সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ভারতের নাগরিকত্ব লাভের চেষ্টা করায় পাসপোর্ট ও নাগরিকত্ব জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। সুহাস চাকমা অঈঐজ-এর মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশবিরোধী প্রকাশনা ও মন্তব্য প্রতিবেদন প্রকাশ করে চলেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও বাঙালীদের উপস্থিতির বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই সোচ্চার।
এসিএইচআর’র ওয়েবসাইট ও অন্যান্য প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর সিংহভাগই বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট ও অত্যন্ত নেতিবাচক। এতে প্রমাণিত হয় তার সংগঠনের নামের সাথে এশিয়ান সেন্টার শব্দদ্বয় যুক্ত থাকলেও তিনি মূলত দিল্লিতে বসে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় লিপ্ত। সুহাস চাকমা শান্তিবাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের অনেকে মন্তব্য করেন। বিশেষ করে তার রিপোর্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে যেসকল মন্তব্য করা হয়েছে তা জেএসএস ও ইউপিডিএফ’র সেনাবাহিনী সম্পর্কিত মন্তব্যের সাথে মিল পাওয়া যায়। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ছাড়াও বিচ্ছিন্নতাবাদ ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অসামান্য ভূমিকা পালন করছে। এ কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা ও সাধারণ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এছাড়াও শান্তি, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, সংহতি রক্ষা ও উন্নয়ন এবং বহুমুখী সেবা কার্যক্রমে যে অবদান রেখে চলেছে তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে লব্ধ অভিজ্ঞতা দিয়েই বিশ্বশান্তি রক্ষায় ভুয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে।
বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কার্যক্রম কতিপয় বামপন্থী মতলববাজ বুদ্ধিজীবী ছাড়া ব্যাপকভাবে সারাদেশে প্রশংসিত। এমনকি ইউপিডিএফ ও জেএসএস এবং তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সামরিক শাখার কয়েক হাজার সদস্য ও বিদেশি অর্থায়নের ক্রিশ্চিয়ানাইজেশনের মিশনে পরিচালিত কিছু এনজিও কর্মী ছাড়া সাধারণ পাহাড়ি, উপজাতি নৃগোষ্ঠীর মধ্যেও ব্যাপকভাবে আদরণীয়। ইতোপূর্বে দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকগণ বহুবার উচ্চারণ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী না থাকলে দেশের এই অংশ বহুপূর্বেই বাংলাদেশের হাতছাড়া হয়ে যেত। এদিকে, রিপোর্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন, মনগড়া ও বিদ্বেষপ্রসূত বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। বিশেষ করে সুদানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় তাদের কোনো বিচার করা হয়নি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা। কেননা ওই ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের চাকরিচ্যুতি ও কারাদ-ের মতো শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ বঞ্চনার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা আসল সত্যকে গোপন করার অপচেষ্টা মাত্র। কেননা বাংলাদেশের সচেতন সকল দেশবাসীর কাছে এ কথা পরিষ্কার যে, বিডিআর বিদ্রোহ ও সেনা হত্যাকা-ের পেছনে বিদেশি শক্তি ও খুনিদের হাত ছিল। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সার্বভৌমত্ব, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়ার উদ্দেশ্যে এ ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। বিভিন্ন তদন্তেও এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট ও প্রবন্ধে এ কথা বহুবার উচ্চারিত হয়েছে যে, পদুয়া ও বড়াইবাড়ী পরাজয়ের প্রতিশোধ- বিডিআর হত্যাকা-। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ শুধু প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিষয় নয়, এটি বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের জাতীয় অঙ্গীকারের পরিচয় বহন করে। সেই সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আন্তর্জাতিক মান ও দক্ষতা অর্জনেরও একটি বিরাট ক্ষেত্র। শান্তিরক্ষা বাহিনীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ ও কর্মতৎপরতার ফলে ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে- যা জাতি হিসাবে প্রতিটি বাংলাদেশী নাগরিককে গর্বিত করেছে। বাংলাদেশের এই সাফল্যে শান্তিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত প্রতিদ্বন্দ্বী দেশসমূহ ঈর্ষান্বিত হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উক্ত ফোরামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এসিএইচআরের ব্যানারে সুহাস চাকমা প্রণীত জুলাই-২০১৪ প্রকাশিত রিপোর্টটি সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশবিশেষ। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে রাষ্ট্রঘাতী তৎপরতার প্রতি সহানুভূতিশীল বাংলাদেশেরই কতিপয় মতলববাজ বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিবর্গ যারা বিশেষ উদ্দেশ্যে সুহাস চাকমার সাথে সুর মিলিয়ে গলাবাজি করে চলেছেন। এদের আসল উদ্দেশ্য সরকারের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একই সাথে এসিএইচআর’র পরিচালক সুহাস চাকমাকে বাংলাদেশী নাগরিক হয়েও বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করানো উচিত বলে সচেতন মহলের দাবি।
©somewhere in net ltd.