![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।
স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সাফল্যের পাশাপাশি ঔষধ শিল্পেরও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে এ সাফল্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও ঈর্ষণীয়। সেই সঙ্গে লক্ষণীয় যে আমাদের ঔষধ শিল্প এখানেই থেমে নেই, এটি এখনও দ্রুত বিকাশমান একটি শিল্প সেক্টর। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে ঔষধ শিল্পের এই বিকাশের সোপানটি গড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খোদ বঙ্গবন্ধু। বিস্মৃতিপ্রবণ বাঙালীর মানসে সে অবদানটি যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য তা তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছি। এখনও সে সময়কার সংশ্লিষ্ট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকে বেঁচে আছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই ভুল হলে শুধরে দেবেন। তার আগে আমাদের দেশের ঔষধ শিল্পের পটভূমি অতি সংক্ষেপে বলে নেয়া দরকার। পাকিস্তান আমলে ’৫০-এর দশকে এদেশে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ীর নেয়া উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। এগুলো ছিল অত্যন্ত ছোট কিছু কারখানা। পরবর্তীতে ’৬০-এর দশকে কয়েকটি বহুজাতিক ঔষধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এখানে অর্থাৎ তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে ঔষধ উৎপাদন শুরু করে। সে সময় পাকিস্তানের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৮০% এরও বেশি ঔষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। তখনকার পাকিস্তানে যে কয়েকটি ঔষধের কারখানা ছিল তার অধিকাংশই অবস্থিত ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। ফলে অন্যান্য শিল্পকারখানার মতো তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের ঔষধ সেক্টরও ছিল অত্যন্ত অবহেলিত ও পশ্চাৎপদ। যে কয়েকটি দেশী-বিদেশী ঔষধ কারখানা এখানে অবস্থিত ছিল সেগুলোও অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকত অপ্রয়োজনীয় ও কম প্রয়োজনীয় ঔষধ উৎপাদনে। ব্লাড এলকালাইজার, গ্রাইপ ওয়াটার, হিমোগ্লোবিন সিরাপ, কাশির ঔষধ, ভিটামিন টনিক ইত্যাদি ঔষধই এখানে বেশি তৈরি হতো। এগুলোর কোনটাই প্রয়োজনীয় ছিল না কারণ এগুলো বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ছিল অকার্যকর। তুলনায় এন্টিবায়োটিক ঔষধ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হলেও এগুলো এখানে দেশী কোম্পানিগুলো তৈরি করত না বা প্রযুক্তি নেই বলে তৈরি করতে পারত না। ফলে অতি প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ঔষধগুলোর জন্য আমদানি এবং এখানকার বিদেশী কারখানাগুলোর ওপরই নির্ভর করতে হতো। এভাবে তখন এদেশের ঔষধের প্রায় সম্পূর্ণ বাজারটিই ছিল বিদেশীদের দখলে। আমদানি নির্ভরতা, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের একচেটিয়া আধিপত্য, ঔষধ শিল্পের ওপর জনগণের অধিকারহীনতা ইত্যাদি কারণে ঔষধ সেক্টরে সামগ্রিকভাবে একটি অরাজক অবস্থা পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই অব্যাহত ছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই এদেশে ঔষধ শিল্প ছিল অত্যন্ত অনগ্রসর। স্বাধীনতা লাভের পরেও এখানে বিদেশী প্রতিষ্ঠানসমূহের দাপট অব্যাহত থাকে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন এদেশের বার্ষিক চাহিদার ৭৮% ঔষধই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একজন ড্রাগ কন্ট্রোলারের মাধ্যমে দেশে ঔষধের উৎপাদন ও ঔষধের আমদানি নিয়ন্ত্রিত হতো। দেশের ঔষধের বাজার ছিল আমদানিকৃত ঔষধে সয়লাব, এর অনেকটাই ছিল অপ্রয়োজনীয়, অথচ জীবন রক্ষাকারী অতি প্রয়োজনীয় ঔষধ ছিল দুষ্প্রাপ্য। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু বলিষ্ঠ হাতে বিভিন্ন সেক্টরে বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। চলবে.........।
©somewhere in net ltd.