![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।
দেশে স্বাক্ষরতার প্রকৃত হার কত এ নিয়ে যত মতদ্বৈততাই থাক নিরক্ষর মানুষের মধ্যে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন হওয়ার ধারা এনে দিয়েছে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো। অত্যন্ত নীরবে, নিভৃতে স্রোতের আপন গতির মতো কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, মুদি দোকানি, ভ্রাম্যমাণ দোকানি, গাঁয়ের বধূ অক্ষরজ্ঞান শিখেছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো মোবাইল ফোনে বাংলা বর্ণ ব্যবহারের আগে বেশিরভাগই ছবির মতো করে ইংরেজী অক্ষর দেখে ও উচ্চারণ শুনে এবং ইংরেজী সংখ্যা দেখে নাম ও নম্বর সেভ করা শিখেছে। তারা ফোনবুক লিস্ট দেখে নাম বের করে বোতাম টিপে (কোন ফোনে শুধু স্পর্শ করলেই হয়) কল করে। চোখের সামনে স্বাক্ষরতার এমন বিপ্লব ঘটে যাচ্ছে। গ্রামের পথে পা বাড়ালে দেখা যায় জমিতে চাষ দেয়া, সেচ দেয়া কৃষকের কোমরেও মোবাইল ফোন থাকে। ঘাটের মাঝি, মাঠের রাখাল কেউ বাদ যাচ্ছে না। গৃহস্থ বাড়ি, কিষান বাড়ির বধূরাও বর্ণমালা শিখে মোবাইল ফোন ব্যবহারের পাশাপাশি ক্ষুদে বার্তায় সংক্ষিপ্ত চিঠি লিখতে শিখেছে। শহরে ভ্রাম্যমাণ তরকারির দোকানি, হকার, রিকশা ও ভ্যানচালক, দিনমজুরসহ সবাই মোবাইল ফোনে কল দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (বিবিএস বাংলায় পরিসংখ্যান ব্যুরো) প্রায় সাড়ে চার বছর আগে (২০১০) স্বাক্ষরতার জরিপ করে যে হার প্রকাশ করেছিল ২০১৪ সালেও সেই হিসাব দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ পুরনো হিসাবে দেশের ৫৯ দশমিক ৮২ শতাংশ মানুষ স্বাক্ষর, যারা বাংলায় চিঠি লিখতে ও পড়তে পারে। সরকার টার্গেট নিয়েছে ভিশন (রূপকল্প) ২০২১ এর মধ্যেই দেশে একশ’ ভাগ স্বাক্ষরতা অর্জনের। যা পূরণ করতে হাতে সময় আছে মাত্র সাড়ে ছয় বছর। সরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার ঠিকমতো পালন করতে পারলে ওই রূপকল্পের আগেই শত ভাগ স্বাক্ষরতায় পৌঁছে যাবে দেশ। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পরই ১৯৯৭ সালে দেশে স্বাক্ষরতার আন্দোলন সফল করতে সরকারী অর্থের ৬৮৩ কোটি টাকার দুটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এর আগে ১৯৯১ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। আওয়ামী লীগের প্রথম দফার শাসনামল শেষে এই হার ৫২ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়। সফলভাবে স্বাক্ষরতা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করায় ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ইউনেস্কো স্বাক্ষরতা পুরস্কায় পায়। ২০১০ সালের জরিপে এই হার প্রায় ৬০ শতাংশে। বর্তমান সময়ে এই হার কত সেই হিসাব মেলেনি। তবে ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের আগের দিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী দাবি করেছেন দেশে স্বাক্ষরতার হার ৬৫ শতাংশ। দিন দিন নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। স্বাক্ষরতার হার আরও বাড়িয়ে দেশকে সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে সরকার মৌলিক স্বাক্ষরতা নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে দেশের প্রতিটি জেলায় ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী অন্তত ৪৫ লাখ নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে স্বাক্ষরতার আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
©somewhere in net ltd.