উপবাস আর শুদ্ধতা

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯

সর্বভুখ আর সর্বদা ক্ষুধার্ত এই শরীরকে বশ মানাতে উপবাসের সংস্কৃতি এসেছে বহুকাল আগে। যদিও আজও মানবের কোনো ক্ষুধা মেটাতে পারেনি এই মহাবীর্যবতী পৃথিবী; সে কথা থাক। মহা-মনীষীরা অনুনয় বিনয় করেছেন উপবাসের। উপবাস; ধীরে ধীরে ঝেড়ে ফেলে দেয় ক্রোধ, কামনা, কর্মচাঞ্চল্য আর শক্তির স্তর নামিয়ে নিয়ে আসে শূন্যের কাছাকাছি। সেখান থেকে আবার ভাবতে শুরু করার প্রতিশ্রুতি আমাদের। সপ্তাহে একদিন, দুদিন; শুরু থেকে শুরু করা। কারো কারো মাসে একবার সপ্তাহ জুড়ে। আর কারো সারা বছরে এক মাস জুড়ে। কালের প্রবর্তনে প্রকট হয়ে এই সংস্কৃতি রূপ নিলো সাধনার, নাম ধারণ করলো 'সিয়াম'। সাধনার মাসের শেষে জন্ম নেবে নতুন চিন্তা ধারার, চেতনার আর আসবে নতুন নতুন অভিপ্রায়। চেতনা আর অভিপ্রায়ের ধারায় শুদ্ধ হবে সমাজ, সুন্দর হবে মানুষ। গড়পড়তা হিসাবে দিনের বেলায় উপবাস আর রাতের বেলা খানিকটা আহার, উপাসনা আর বিশ্রাম; অর্ধেক অর্ধেক। এই ছিল অভীষ্ট ...

অদৃষ্ট ছিল ভিন্ন। মনীষীর হাতে সময়ের কাটা না থাকলেও সময়ের হাত ধরে সেই সংস্কৃতি পাড়ি জমালো এদিকে উত্তরমেরু আর ওদিকে দক্ষিণমেরু। মহামনীষীর বেঁধে দেয়া নিয়মে যেখানে সূর্য দিবারাত্রির নিয়মে উদয় হয়না, অস্তও যায়না। মহামনীষীর উপাখ্যানের চেয়ে সূর্য হয়ে উঠলো দেবতা। দিবসের অর্ধাংশের চেয়ে বেশি তিন-চতুর্থাংশ সময় উপোষ থেকে ভুড়িভোজন করতে করতে চিন্তা চেতনার উন্নতি তেমন কোনো পর্যবেখ্হিত হলোনা এই সমাজে।
শুধু রয়ে গেলো নাম আর বংশ পরিচয়,
ভোগ্যপণ্য সকলি, কর্ম তেমন শুদ্ধ কিছু নয়।

'মহারথীর বংশ-পরিচয়' নাকি 'মহারথীর চেতনা'; কি নিয়ে এগুবো আমরা সত্য-সুন্দরের সন্ধানে?

- ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
বেলজিয়াম।

২ টি +০/-০