নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আমাদের মানবসভ্যতার ইতিহাসে এযাবৎকাল পর্যন্ত সব থেকে সংঘটিত সর্ববৃহৎ ও সব থেকে ভয়াবহ যুদ্ধ ছিল ।
যাকে ইংরেজিতে বলা হয়ছে ''World War II, Second World War, WWII, WW2''
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পযন্ত এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হয় । কিন্ত ১৯৩৯ সালের আগে এশিয়ায় সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবেও ধরা হয়ছে । সে সময় বিশ্বের সকল পরাশক্তি ও বেশিরভাগ রাষ্ট্রই এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং দুইটি বিপরীত সামরিক জোটের সৃষ্টি হয়ে যায় । একটি মিত্রশক্তি আর অপরটি অক্ষশক্তি । এই মহাসময়কে ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্তৃত যুদ্ধের সময় বলে ধরা হয় । যাতে ৩০টি দেশের সব মিলিয়ে ১০ কোটিরও বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন । অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ খুব দ্রুতএকটি সামগ্রিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন সামরিক এবং বেসামরিক সম্পদের মধ্যে কোনরকম পার্থক্য না করে তাদের পূর্ণ অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা প্রয়োগ করা শুরু করেন । এছাড়াও বেসামরিক জনগণের উপর চালানো নির্বিচার গণহত্যা ও হলোকস্ট এবং হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের উপর চালানো গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োগ এইসব বিভিন্ন ঘটনায় কুখ্যাত এই যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেন । এসব পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে যে এটাই পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম একটি যুদ্ধ ছিল ।
পূর্ব এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে জাপান ১৯৩৭ সালে প্রজাতন্ত্রী চীনে আক্রমণ করেন । তার পরে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করেন এবং তার ফলে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন । দ্বিতীয় ঘটনাটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বলে গণ্য করা হয় । ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা আর চুক্তি সম্পাদনার মাধ্যমে জার্মানি ইতালির সাথে একটি মিত্রজোট গঠন করেন, ও ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলই নিজের দখলে অথবা নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হন । মলোটভ রিবেনট্রপ চুক্তি অনুসারে জার্মানি আর সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের দখলিকৃত পোল্যান্ড ফিনল্যান্ড এবং বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন । এই সময় শুধু যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ব্রিটিশ কমন ওয়েলথভুক্ত দেশসমূহ অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেন । যেমনঃ উত্তর আফ্ৰিকার যুদ্ধসমূহ আর বহুদিন ধরে চলা আটলান্টিকের যুদ্ধ । ১৯৪১ সালের জুন মাসে ইউরোপীয় অক্ষশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করে যার কারনে সমর ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ রণাঙ্গনের অবতারণা ঘটে যায় । এই আক্রমণ অক্ষশক্তির সামরিক বাহিনীর একটা বড় অংশকে মূল যুদ্ধ থেকে আলাদা করে রাখেন । ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে জাপান অক্ষশক্তিতে যোগদান করে ও প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় উপনিবেশগুলো আক্রমণ করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে পশ্চিম প্ৰশান্ত মহাসাগরের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করতে তারা সক্ষম হন ।
১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র মিত্রশক্তির সাথে যোগ দেন । মূলত জার্মানি এবং জাপান দুই অক্ষশক্তিই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করার মাধ্যমে একে যুদ্ধে ডেকে আনে । অপরদিকে চীনের সাথে জাপানের ছিল পুরাতন শত্রুতা ১৯৩০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় চীন জাপান যুদ্ধ চলছিল । এর ফলে চীনও মিত্রপক্ষে যোগদান করে । ১৯৪৫ সালে জার্মানি এবং জাপান উভয় দেশের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়েই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটান ।
এই যুদ্ধে নব্য আবিষ্কৃত অনেক প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায় । এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ ছিল পারমাণবিক অস্ত্রের । মহাযুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যেই এই মারণাস্ত্র উদ্ভাবিত হয় ও এর ধ্বংসলীলার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তিও ঘটে । সকল পুণর্গঠন কাজ বাদ দিলে কেবল ১৯৪৫ সালেই মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাড়ায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার । এই যুদ্ধের পরপরই সমগ্র ইউরোপ দুই ভাগে ভাগ করা হয় । এক অংশ হয় পশ্চিম ইউরোপ আর অন্য আরেক অংশে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সোভিয়েত রাশিয়া । পরবর্তীতে এই রাশিয়ান ইউনিয়নই ভেঙে অনেকগুলো ছোট ছোট রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল । পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহের সমন্বয়ে গঠিত হয় ন্যাটো আর সমগ্র ইউরোপের দেশসমূহের সীমান্তরেখা নির্ধারিত হতে শুরু করে । ওয়ারস প্যাক্টের মাঝে অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহ নিয়ে দানা বেধে উঠে স্নায়ুযুদ্ধ । এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিশ্বমঞ্চে অভিনব এক নাটকের অবতারণা ঘটে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ কি ছিল চলুন একটু পড়ি । বিরক্ত হয়েন না কারন যত পড়া হবে তত ইতিহাস জানা যাবে ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ রয়েছে বলে আমাদের ধারনা । তবে এ নিয়ে একটি সাধারণ ধারণা রয়েছে যা বেশির ভাগ গ্রহণযোগ্য । এই কারণটি যুদ্ধোত্তর সময়ে মিত্রশক্তির দেশসমূহের মধ্যে তোষণ নীতির মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তি হয়ে দাড়ায় যা নির্দেশক শক্তির ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি ও জাপানের আধিপত্য এবং সাম্রাজ্যবাদকে দায়ী করে এই কারণটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে যার কিছু এখানে উল্লেখিত করা হলো ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানি তার সম্পদ সম্মান এবং ক্ষমতার প্রায় সবটুকুই হারিয়ে বসেন । এর সাম্রাজ্যবাদী চিন্তাধারার মূল কারণ ছিল জার্মানির অর্থনৈতি সামরিক এবং ভূমিকেন্দ্রিক সম্পদ পুণরুদ্ধার করা এবং পুণরায় একটি বিশ্বশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা । এর পাশাপাশি পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের সম্পদসমৃদ্ধ ভূমি নিয়ন্ত্রণে আনাও একটি উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করেছে । জার্মানির একটি জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর সম্পাদিত ভার্সাই চুক্তি হতে বেরিয়ে আসার । এরই প্রেক্ষাপটে হিটলার ও তার নাজি বাহিনীর ধারণা ছিল যে একটি জাতীয় বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে সংগঠিত করা সম্ভব ।
পোল্যান্ড যুদ্ধের কথা
কোবরিনের যুদ্ধ সেপ্টেম্বর ১৭,১৯৩৯ মানচিত্রে জার্মান দ্বিতীয় মোটোরাইজড ডিভিশনের অগ্রযাত্রা এবং পুলিশ বাহিনীর পিছু হটা ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় কিভাবে সে ইতিহাস জেনে নিন ।
নাৎসি বাহিনীর পোল্যান্ড আক্রমণএর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হয় । সোভিয়েত ইউনিয়নকে নিষ্ক্রিয় রাখার জন্য জার্মানী অনাক্রমণ চুক্তি করেন । অন্যদিকে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স পোল্যান্ডের সাথে সহায়তা চুক্তি করেন । ১৯৩৯ সালের ১লা সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড অভিযান শুরু করেন । ৩রা সেপ্টেম্বর মিত্রবাহিনী জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন এবং শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ।
প্রথম দিনই জার্মান ঝটিকা বাহিনী পোল্যান্ডকে ছিন্নবিছিন্ন করে দিলেন । ফরাসি ও ব্রিটিশ বাহিনী সাহায্য করবার সুযোগ পেলেন না । এটি পশ্চিমের বিশ্বাসভঙ্গতা হিসেবেও পরিচিত । ১৭ই সেপ্টেম্বর গোপন সমঝোতা অনুসারে সোভিয়েত বাহিনীও আক্রমণে যোগ দিলেন । পরদিনই পোলিশ কর্তাব্যক্তিরা দেশ ছাড়লেন। ওয়ারসের পতন হলো ২৭ শে সেপ্টেম্বর । শেষ সেনাদল কক্ দূর্গে যুদ্ধ করেন ৬ই অক্টোবর পর্যন্ত ।
সোভিয়েত ফিনল্যান্ড যুদ্ধ
জার্মানী বনাম মিত্রপক্ষীয় যুদ্ধ চলাকালীন সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করেন শীতকালীন যুদ্ধের সূচনা করলেন । এর আগেই লিথুনিয়া,, লাটভিয়া এবং এস্তোনিয়ায় সোভিয়েত সৈন্য প্রবেশ করে ক্ষতিপূরণসহ একটি অনুরূপ প্রস্তাবে ফিনল্যান্ড রাজী না হওয়ায় ১৯৩৯সালে ৩০শে নভেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন ফিনল্যান্ড আক্রমণ করলেন । ফিন লোকবল খুব কম হলেও তাদের দেশরক্ষার ইচ্ছা ছিল অনেক বেশী মাত্রা । স্তালিন একটি নিজস্ব ঝটিকা যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন । কিন্ত প্রতিটি ফ্রন্টে তার বাহিনী প্রতিহত হন । ১৪ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে বহিষ্কার করা হয় ।
১৯৪০ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে সোভিয়েত বিমান,, ট্যাঙ্ক এবং স্লেজবাহিত সেনাবাহিনী একযোগে ফিনদের প্রতিরক্ষা রেখায় আক্রমণ চালানো শুরু করেন । ১৫ দিন পর অবশেষে তারা একটি ফাক তৈরি করতে সক্ষম হলেন । ১৯৪০সালের ৬ই মার্চ ফিনল্যান্ড শান্তির জন্য আবেদন করলেন । সার্বভৌমত্ব রক্ষা পেলেও সোভিয়েত ইউনিয়নের আগের দাবী অনুযায়ী লেলিনগ্র্রাদের কাছাকাছি বেশকিছু এলাকার মালিকানা ছেড়ে দিতে হয় ফিনল্যান্ডকে । এই যুদ্ধে ২ লক্ষ ফিনল্যান্ডের সৈন্যের মধ্যে ৭০ হাজার সৈন্য মারা যায় । যুদ্ধ থেকে স্তালিনের সেনাদল গুরুত্বপূর্ণ সামরিক শিক্ষা লাভ করেন । অন্যদিকে সোভিয়েত শক্তি সম্পর্কে হিটলারের ভ্রান্ত নিম্ন ধারণা তৈরি হয়,,যা পরবর্তীতে জার্মানীর রাশিয়া আক্রমণে প্রভাব পড়ে ।
নরওয়ে এবং ডেনমার্কের যুদ্ধ
নরওয়ে বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তার ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য । সুইডেনের কিরুনা খনি থেকে গরমকালে বাল্টিক সাগর দিয়ে ও শীতকালে নরওয়ের বরফমুক্ত নারভিক বন্দর এবং নরওয়ের রেলপথ দিয়ে লোহা চালান করাহতো জার্মানীতে । প্রথমে হিটলার নরওয়েকে নিরপেক্ষ থাকতে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । ওদিকে মিত্রপক্ষ নারভিকের ঠিক বাইরের সমুদ্রে মাইন পেতে রাখার পরিকল্পনা করেন । পরিকল্পনাটি ফাস হয়ে গেলে হিটলার ফ্রান্স আক্রমণের ইচ্ছা স্থগিত রেখে নরওয়ে অভিযানের নির্দেশ দেন । ১৯৪০ সালের ৯ই এপ্রিল একই সাথে নরওয়ে এবং ডেনমার্কে আগ্রাসন শুরু করা হয় সুইডেনের সাথে যোগাযোগের সুবিধার্থে ।
একদিকে নারভিকসহ গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলি দখল করে নিল জার্মান বাহিনী । অন্যদিকে বিমানবন্দরগুলিতে অবতরণ করলো প্যারাশ্যুট বাহিনী । এরপর বিমানবন্দর দখল করে সেখান থেকে অতর্কিতে শহরে প্রবেশ করলো জার্মান সেনারা । ডেনমার্ক বিনাবাধায় আত্মসমর্পণ করলেও নরওয়ে লড়াই করতে লাগলো । ১৪ই এপ্রিল মিত্রবাহিনী নামলো নরওয়েতে । কিন্ত মে মাসেই পিছু হটলো তারা । নারভিকে জার্মানরা পাচগুণ বেশী শত্রুর সাথে লড়াই চালিযে যাচ্ছিল ২৭শে মে পর্যন্ত । কিন্ত ততদিনে ফ্রান্সের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠায় মিত্রসৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে হল নরওয়ে থেকে । নরওয়ে বাহিনী আত্মসমর্পণ করলো এবং রাজা সপ্তম হাকোন ব্রিটেনে আশ্রয় নিলেন । জার্মানীর জন্য নরওয়ে আর্কটিক সাগর এবং ব্রিটেনের নিকটবর্তী একটি দরকারী নৌ এবং বিমান ঘাটি হিসেবে কাজে দিল ।
১৯৪০ সালের ১০ই মে এক সাথে ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ড এবং লুক্সেমবার্গ এই চারটি দেশ আক্রমণ করে জার্মানী । ফরাসিরা ভেবেছিল আক্রমণ আসবে ফ্রান্স জার্মানী সীমান্তের রণরেখা ম্যাগিনোট লাইনের ওপরে । অথবা বেলজিয়ামের ভিতর দিয়ে আরদেন হয়ে । তারা ভেবেছিল জার্মানীর প্যানজার বাহিনী আরদেনের জঙ্গল ভেদ করে আসতে পারবে না । ১৪ই মে নেদারল্যান্ডের পতন ঘটলো । ১৪ই মে আরদেন থেকে জার্মান বাহিনী বেরিয়ে এসে দিশেহারা মিত্র সেনাদের ছিন্নবিছিন্ন করে প্রবল বেগে এগোতে থাকল । ডানকার্ক বন্দর দিয়ে তড়িঘড়ি ফরাসি এবং ব্রিটিশ অভিযানবাহিনীর সেনা পশ্চাদপসরণ শুরু করলো । ২৬শে মে থেকে ৪ঠা জুন পযন্ত ইতিহাসের সব থেকে বড় সেনা অপসারণের কাজ শেষ হলো । তবে ফেলে আসতে হলো বেশীরভাগ যন্ত্রাদি । এরমাঝে ২৭শে মে বেলজিয়ামের পতন ঘটল ।
১০ই জুন ইতালিও যুদ্ধ ঘোষণা করলেন । তবে তারা আক্রমণ শুরু করেন ২০শে জুন থেকে । ফরাসি সরকার প্রথমে তুর ও পরে বোর্দোতে সরে গেলেন । ১৪ই জুন প্যারিসের পতন ঘটল । ১৬ই জুন প্রধানমন্ত্রী রেনো পদত্যাগ করলেন এবং তার বদলে এলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নায়ক পেত্যা । ২২শে জুন জার্মান ফরাসি এবং ২৪শে জুন জার্মান ইতালীয় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত করা হয় । ফ্রান্সের বেশিরভাগ এলাকা জার্মানীরা নিয়ে নেন । অল্প কিছু জায়গা জুড়ে পেত্যা একটি নিরপেক্ষ কিন্তু জার্মানীর প্রভাবাধীন সরকার গঠন করেন । এটি ভিশি ফ্রান্স নামে পরিচিত হয় ।
বাল্টিক অঞ্চলে আক্রমনের ঘটনা
পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের জন্য রুমানিয়ার প্লোইস্তি তেলের খনি হিটলারের প্রয়োজন ছিল । ১৯৪০ সালে জার্মানী রুমানিয়া তেল অস্ত্র চুক্তি করেন । হাঙ্গেরি এবং রুমানিয়ার মতবিরোধ ঘটায় জার্মানী মধ্যস্থতা করেন । রুমানিয়ার জনগণ এতে আন্দোলন শুরু করায় রাজা ২য় ক্যারল ছেলে মাইকেলের কাছে মুকুট হস্তান্তর করলেন এবং সেনাপ্রধান আন্তনেস্কু জার্মান সেনা আহ্বান করলেন । ১৯৪০সালের ১২ই অক্টোবর বুখারেস্টে জার্মান সৈন্য অবতরণ করেন । এতে কুটনৈতিক ভুল বোঝাবুঝির কারণে বিরক্ত মুসোলিনি ১৯৪০সালে ২৮শে অক্টোবর আলবেনিয়া থেকে গ্রীস আক্রমণ করেন । কিন্তু গ্রীকরা যে শুধু প্রতিহত করল তাই না উল্টো ডিসেম্বরের মধ্যে আলবেনিয়ার এক তৃতীয়াংশ দখল করে নিলেন । উপরন্তু ক্রীটে ব্রিটিশ সৈন্য নামল । তুরস্কও সৈন্যসমাবেশ করে রাখলেন । নিরপেক্ষ বুলগেরিয়া এবং যুগোস্লাভিয়াও বেকে বসলেন ।
হিটলার দ্রুত হাঙ্গেরি ও রুমানিয়া এবং স্লোভাকিয়াকে অক্ষচুক্তিতে টেনে নিলেন । বুলগেরিয়ায় জার্মান সৈন্য নামল ২রা মার্চ থেকে । যুগোস্লাভিয়ার যুবরাজ পল অক্ষে যোগ দিলেন ২৭শে মার্চ। দুই দিন পর জেনারেল সিমোভিচের নেতৃত্বে রাষ্ট্রবিপ্লব ঘটে এবং সিংহাসনে আরোহন করেন ১৭ বছর বয়সী রাজা ২য় পিটার । রাষ্ট্রীয় নীতিরও পরিবর্তন ঘটে । ৬ই এপ্রিল একই দিনে আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ ও বুলগেরিয়া এবং অস্ট্রিয়া দিয়ে সৈন্য পাঠিয়ে জার্মানী গ্রিস ও যুগোস্লাভিয়া আক্রমণ করলেন । ১৭ই এপ্রিল যুগোস্লাভিয়া এবং ২২শে এপ্রিল গ্রিস আত্মসমর্পণ করেন । এরপর ক্রীট দখল করেন । যুগোস্লাভিয়াকে খন্ড বিখন্ড করে অক্ষশক্তিরা ভাগ করে নেন । তবে পুরো যুদ্ধ জুড়ে দ্রজা হিমাজলোচির নেতৃত্বে সেন্টিক দল এবং জোসেফ টিটোর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট দল গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে যান ।
উত্তর আফ্রিকাঃ
সংঘর্ষ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে এ সময়ে অগণিতসংখ্যক লোক শরণার্থী হয়েছিলেন । যুদ্ধ শেষে একমাত্র ইউরোপেই ৪০ মিলিয়নেরও অধিক লোক শরণার্থী ছিল । ১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তি জাতিসংঘ ত্রাণ এবং পুণর্বাসন প্রশাসন ''ইউএনআরআরএ'' গঠন করেন । যার প্রধান কাজ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দেশসহ ইউরোপ ও চীন থেকে আগত শরণার্থীদেরকে সহায়তা করা । তাদের নিয়ন্ত্রণে ও প্রত্যক্ষ সহায়তায় ৭ মিলিয়ন লোক নিজ বাসভূমিতে ফিরে যান । কিন্তু উদ্বাস্তু এক মিলিয়ন লোক মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান ।
বিশ্বযুদ্ধের শেষ মাসে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন জার্মান বেসামরিক নাগরিক পূর্ব প্রুশিয়া, পোমারানিয়া এবং সিলেসিয়া রাজ্য থেকে রেড আর্মির প্রচণ্ড আক্রমণের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ম্যাকলেনবার্গ, ব্রান্ডেনবার্গ এবং স্যাক্সনিতে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেন ।
পটসড্যাম সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মিত্রশক্তি অনুমোদন না করায় যুগোস্লাভিয়া এবং রোমানিয়ায় অবস্থানরত হাজার হাজার জাতিগত জার্মানদেরকে সোভিয়েত ইউনিয়নে দাস শ্রমের জন্য ফেরত পাঠিয়ে দেন । বিশ্বের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশী শরণার্থী স্থানান্তর প্রক্রিয়া । ১৫ মিলিয়ন জার্মানদের সবাই এতে অন্তর্ভূক্ত ছিলেন । এছাড়াও দুই মিলিয়নেরও অধিক জার্মান বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে বিতাড়িত হয়ে প্রাণ হারান ।
তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা ।
বিদ্রঃ একটি বিশেষ অনুরোধ অনুগ্রহ করে সকলের অবগতির জন্য বলছি । আমার ব্লগ লেখার নেশা দেখে আমার বেশ কয়েক জন বন্ধু মিলে আমাকে বিভিন্ন সময় এ ধরনের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে । তাই সকলের অবগতির জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো মানুষ মাত্রই ভুল সূতরাং যদি আমার পোস্টে কোন ভুল তথ্য পেয়ে যান তা আমাকে অবশ্যয় মন্তব্যের মাধ্যমে জানানোর জন্য অনুরোধ থাকলো । ধন্যবাদ সকল সহ ব্লগার বড় ভাইদের ।
২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার ভাল লেগেছে শুনে আমার ভাল লাগল ।
২| ২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫
জুন বলেছেন: মহাযুদ্ধের ইতিহাস
২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:২৩
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপুনি পোস্টে আসার জন্য । হ আপুনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ।
৩| ২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
আমি বন্দি বলেছেন: পোস্ট প্রিয়তে রাখলাম ইতিহাস জানার জন্য ।
২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:২১
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
৪| ২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১১
ইমরান আশফাক বলেছেন: জার্মান তো আবারও দাড়িয়ে গেলো সবদিক থেকে, একটা জাতী বটে।
২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:১৯
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ইমরান ভাই । হ ভাই যার যার কর্ম এবং পরিশ্রম তাকে তার পজিসনে নিয়ে যায় ।
৫| ২২ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৫৫
রাঘব বোয়াল বলেছেন: অনেক কষ্ট করেছেন তাই কমেন্ট না দিয়ে পারলাম না।অনেক ভালো লাগলো।
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১২
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: পোস্ট পড়া ও কমেন্টেধন্যবাদ ভাই ।
৬| ২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৫
কালের সময় বলেছেন: দারুন তথ্য বহুল পোস্ট ।
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।
৭| ২৩ শে মে, ২০১৫ রাত ১:২৫
মিন্টুর নগর সংবাদ বলেছেন: দারুন ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো । পোস্টির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নগর সংবাদ । তা দেখছি বেশ কিছুদিন আপনি কোন লেখা ছাড়ছেন না । কারন কি ?
৮| ২৩ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৮
চাঁপাডাঙার চান্দু বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট, পোষ্টগুলোয় ছবি দিয়ে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করুন। লেখায় কিছু বাহুল্যতা আছে, এইটা লিখতে লিখতে ঠিক হয়ে যাবে।
পোষ্টে সুন্দর কিছু জিনিস তুলে এনেছেন, যেমন রাশিয়া-ফিনিশদের উইন্টার ওয়ার। অনেকেই জানে না এই যুদ্ধের কথা, এমন কি ১৯৮৮ সালে প্রথম সোভিয়েত রাশিয়া এই যুদ্ধের কথা জনসন্মুখে প্রকাশ করে। মিলিওন সেনা আর হাজার হাজার ট্যাঙ্কের সামনে ফিনিশদের প্রতিরোধ রূপকথার মতোই শোনায়। এর উপর ইউটিউবে চমৎকার কিছু ডকু পাবেন। তারা যদি সেদিন জীবন দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে না তুলতো, তবে আজকে ফিনল্যান্ড নামে কোন দেশ থাকতো না। যেই অঞ্চল রাশিয়া দখল করেছিল, আজও সেটা ছাড়েনি। আর সেখানের অধিবাসীরা এখনো স্বপ্ন দেখে, একদিন আবারও মাতৃভূমি ফিনল্যান্ডের সাথে যুক্ত হতে পারবে।
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: মূল্যবান মন্তব্যে আপনাকে ধন্যবাদ ভাই ।
৯| ২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫৮
মামুন ইসলাম বলেছেন: মোবাইল থেকে পড়েছিলাম ভালই লাগল ।
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৭
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাইয়া ।
১০| ২৪ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট।+++্
২৫ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৯
ব্লগার মাসুদ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । প্লাস কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করলাম ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হুম। ভাল