নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দযাত্রা

মাসুম ফারাহী

অতি সাধারণ । উল্লেখ করার মত কিছু নেই ।

মাসুম ফারাহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডায়েরীর পাতা থেকে ।... (১৫-০৫-২০১৩ । পল্লবী,মিরপুর,ঢাকা )

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫

আজ খুব কাছ থেকে দেখেছি,দেখে আমি আপ্লুত হয়েছি- কিভাবে ভালোবাসার কাছে-মায়ের মমতার কাছে হয় ভয়-বিপদের পরাজয় ।
চারতলায় থাকি আমরা ।আমাদের পূবের বেলকনির পাশে নিচের কাঁঠালগাছটার মাথা উঠে এসেছে ।গাছের একটি ডালে একটা কাকের বাসা ।ক’দিন হলো কাকের বাসায় তিনটে ছা ফুটেছে ।এখনো ওগুলোর ভালোকরে পালক গজায়নি ।

আজ বিকেলে বেলকনিতে গেলে আমার চোখপড়ে কাকের বাসায় ।দেখি অনেক পাখি বাসার আসে-পাশে ডালে ডালে ।কাক,চড়ুই,কবুতর,শালিক ।যেনো কাকের ছা দেখতে এসেছে !আমি কৌতুহল নিয়ে তাকিয়েই থাকলাম ।তখন ঝলমলে রোদ ছিলো ।
কিছুক্ষন পর হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে এলো ।মুষলধারে বৃষ্টি নামলো সেই সাথে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলো । বেলকনিতে শুকোতে দেয়া কাপড়গুলো ভিজে যায় যায় অবস্থা ।ওগুলো নিয়ে দৌড়ে ঘরে ঢুকি ।দেখি জানালা দিয়ে ছিছে পড়ে সব ভিজে যাচ্ছে ।আমার মন তখনো কাঁঠালগাছে ।জানালা বন্ধ করতে করতে ভাবছি হয়তো গিয়ে দেখবো বাতাসের ধাক্কায় কাকের বাসাটা ভেঙ্গে গেছে,ছা গুলো নিচে পড়ে মরে গেছে ।

আম্মু এসে জনালা বন্ধ করতে আমাকে সাহায্য করলেন ।আমি দৌড়ে আবার বেলকনিতে এলাম ।ঝড়ো বাতাসে নিমিষেই ভিজে গেলাম ।কোনদিকে নয় চরম আশংকা আর উদ্বেগ নিয়ে সোজা তাকালাম কাঁঠালগাছে কাকের বাসাটার দিকে ।অবাক হলাম এবং প্রায় লাফিয়ে উঠলাম !যা দেখেছি তা আমি সারা জীবনেও ভুলতে পারবোনা !
দেখি- রাস্তায় কোন মানুষজন নেই,আশপাশের সবগুলো বেলকনি ফাঁকা,সবগুলো জানালা বন্ধ,থেকে থেকে বিজলী চমকাচ্ছে,বজ্র ডাকছে,ঝড়ে গাছপালা এদিক ওদিক দুলছে । কাঁঠালগাছটা প্রবল বাতাসে ভেঙ্গে যায় যায় অবস্থা ।সেখানে একটা পাখিও নেই সবগুলো পাখি উড়ে গেছে শুধু মা কাকটি আছে ।আমি অবাক হয়ে দেখি-মা কাকটি বাসার উপর বসে আছে নিজের ডানা দুটিকে যতদূর পারা যায় মেলে ধরে !পরম মমতায় বুকের নিচে আগলে রেখেছে তিনটে ছা-কে ।ভিজে ছুপ-ছুপ সে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ভয়ার্ত চাহনিতে ।
আমার চোখের পানি আমি ধরে রাখতে পারিনি ।মনে হলো আমার চোখের সামনে আমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা-কে দেখছি ! হোক না সে পাখি, হোক না সে কাক ।যে কিনা এই ভীষণ দূর্যোগের মধ্যে নিজের জীবনবাজি রেখে সন্তানদের রক্ষা করছে ।ভালোবাসার,মমতার ও মাতৃত্বের চরম পরীক্ষা দিচ্ছে ।ধন্য এই সন্তানেরা-যারা পেলো এমন মা ! হোক না তারা কাকের ছা ।
অশ্রুভেজা চোখে কাকের বাসার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবছি-এতদিন মানুষের বন্যতা দেখতে দেখতে যেখানে আমরা পেরেশান ও লবেজান সেখানে আজ একাটি কাকের বাসায় আমি দেখছি মনুষ্যত্বের পরম প্রকাশ !আল্লাহর শোকর একটি কাকের কাছেও আমি পেলাম জীবনের একটি বড়ো শিক্ষা ।


ততক্ষনে ঝড় থেমে এলো- বৃষ্টি বন্ধ হলে গেলো ।এক সময় সব কিছু সুনসান হয়ে গেলো-পূরো প্রকৃতি আগের মত স্বাভাবিক হয়ে এলো । অবশেষে হেরে গেলো ভয়-বিপদ, জয় হলো ভালোবাসার এবং কাক মাতার ।
সূ্র্য্য আবার উঁকি দিলো- রোদে ঝলমল করে উঠলো আবার চারপাশ ।চোখের জল মুছে বেলকনি থেকে ফিরতে ফিরতে মনে মনে বলি –ভালোবাসা(মমতা) তুমি বুঝি আজ এভাবে আমার সামনে নিজেকে প্রকাশ করলে !!!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:০৯

আতিক রাসেল বলেছেন: Good

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.