নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাসি, আনন্দ আর ভালবাসা গুলো ছড়িয়ে দিতে চাই নিজের ও নিজের আসেপাশের কিংবা ভালবাসার মানুষদের কাছে । আর রাগ, ঘৃণা , দুঃখ ,ক্ষোভ অথবা কষ্ট গুলো থাকনা নিজের মাঝে- বদ্ধ ঘরে । আমার ও আমাদের ক্ষুদ্রতার শৃঙ্খল আমাদের বঞ্চিত করে মিলনের আনন্দ থেকে । তাই ভেঙ্গে ফেলি চ

হাসি, আনন্দ আর ভালবাসা গুলো ছড়িয়ে দিতে চাই নিজের ও নিজের আসেপাশের কিংবা ভালবাসার মানুষদের কাছে । আর রাগ, ঘৃণা , দুঃখ ,ক্ষোভ অথবা কষ্ট গুলো থাকনা নিজের মাঝে- বদ্ধ ঘরে ।

মাসুম রৌদ্র

হাসি, আনন্দ আর ভালবাসা গুলো ছড়িয়ে দিতে চাই নিজের ও নিজের আসেপাশের কিংবা ভালবাসার মানুষদের কাছে । আর রাগ, ঘৃণা , দুঃখ ,ক্ষোভ অথবা কষ্ট গুলো থাকনা নিজের মাঝে- বদ্ধ ঘরে । আমার ও আমাদের ক্ষুদ্রতার শৃঙ্খল আমাদের বঞ্চিত করে মিলনের আনন্দ থেকে । তাই ভেঙ্গে ফেলি চল নিজের ক্ষুদ্রতার শৃঙ্খল

মাসুম রৌদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা ,তুমি ভাল আছ তো ?

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:৩৫

আজ থেকে ১১ বছর আগে ...

১১ বছরের বালক আমি ।

পড়ি ক্লাস সিক্সে । থাকি হোস্টেলে । বাড়ি হতে অর্ধ শত মাইল দূরে । বাবা মৌলবি । মার বাড়ির বাহিরে বের হওয়া হারাম ছিল । বাবা প্রতি বৃহস্পতিবার এসে আমাকে নিয়ে যেতেন আবার শনিবার এসে দিয়ে যেতেন ।

সেবার বাবার হাজ্ব করার ইচ্ছে জাগল । বাবা কাবা দর্শনে গেলেন । বাড়ী নিয়ে যাবার কেউ নাই ।১,২,৩......... গুনতে গুনতে ৪ সপ্তাহ না না ২৮ দিন । মাকে দেখা হয় নি । মাথার চুল মায়ের হাতের স্পর্শ পায়নি, ভাত ও খাইয়ে দেয় নি কেউ । নিয়ম করে দিনে ৩/৪ বার চোখের পানি পড়তে শুরু করল।

পড়াশুনা উঠে গেল শিকায় । পড়ায় কোন মনযোগ নেই । বই সামনে নিয়ে বসে থাকতাম । মাঝে মাঝে আনমনে পাতা উলটাতে থাকতাম । আকি বুকি করতাম । হঠাৎ হঠাৎ মায়ের অশ্রুসজল মুখটি ভেসে উঠত । আর চোখের কোনে পানি চলে আসত । দ্রুত লুকিয়ে ফেলতাম কেউ যদি দেখে ফেলে ! ক্লাসের টিউটোরিয়াল পরীক্ষার নাম্বার ফাংশানের মত করে শুন্যের দিকে যেতে লাগল । ক্লাসের এ ভাল ছাত্রটির এহেন অবস্থা টিচার মেনে নিতে পারলেন না । নিয়ম করে আচ্ছা করে পিটাতে লাগলেন যাতে করে বখে যাওয়া ছেলেটি আবার শুধরে যায় ; এতে তাদের কর্ম উদ্ধার হবে-জাতীর মেরুদন্ড শক্ত হবে , ধারালো হবে কামারের পেটানো লম্বা গরু জবাইয়ের চুরির মত । আমি টের পেলাম না; কখন বখে গেলাম। তাদের মারের পর আমার কাজ একটাই ছিল নিরবে চোখের পানি ফেলা ।

এভাবে কেটে গেল আরও ১২ সপ্তাহ , ৬২ দিন । আর পারছিনা , এভাবে আর কত সহ্য করবে ১১ বছেরের এ ছেলেটি ।

বাড়ি চলে যাব, সিদ্ধান্ত নিলাম দৃঢ় প্রত্যয়ে । কিন্তু কিভাবে টাকা পাব কই । মাথায় একটা চিন্তা আসল । ENGLISH 2ND PART- ADVANCED LEARNERS , বাংলা ২য় পত্র- সর্বাধুনিক বাংলা ব্যাকরণ ও রচনা বই দুটা মোটামুটি দামী । নিয়ে গেলাম “তালুকদার লাইব্রেরী , নতুন বাজার” ; বড় করে লেখা “ এখানে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার পুরাতন বই ক্রয় ও বিক্রয় করা হয়” । ২৫০ টাকায় কিনা বই ৪০ টাকায় বিক্রি করে দিলাম ।

হাঁটা দিলাম ইছলি ফেরিঘাট , ফেরি পার হয়ে গেলাম টাকা চাইল না । ৫-৭ টা টেম্পু দাঁড়ানো ।

জিজ্ঞেস করলাম “আংকেল , রামপুর যাবেন ?” একজন গা জাড়া দিয়ে উঠলেন ।

---উঠে পর

উঠে পরলাম ।

কিছুক্ষন পর আরও ৪ জন উঠলেন । টেম্পু ছেড়ে দিল । আমি বাহিরে চেয়ে আছি - স্বপ্নে বিভোর । বুকটা কাঁপছে । চোখে ভাসছে মায়ের আদর মাখা মুখটি । নানান প্রশ্ন উঁকি দিতে লাগল অবচেতন মনে। মা মনি টা জানি কেমন আছে? আমার কথা কি তার মনে আছে? আমাকে দেখে মা কেমন করে আদর করবে ? এসব ভাবতে ভাবতে টেম্পু রামপুর এসে থামল । আমি ড্রাইবার কে ৪০ টাকা দিলাম । ড্রাইভার ধমকে উঠলেন ।

------ ভাড়া ৫০ টেহা ৪০ টাকা দিলি কেন ?

আমি কেঁদে দিলাম ।

-----আংকেল আমার কাছে আর টাকা নেই । এইটাই ছিল । আমি সত্যি করে বলছি কাল দিয়ে দেব ।

তার মনটি নরম হয়ে গেল । আর কিছু ই বলল না । চোখ মুছতে মুছতে বাড়ির পথে রওনা হলাম । ২ কিলো পথ । উঠুনে পা দিলাম । মা পুকুরে । ধান শুকিয়ে ঘরে তুলে গোসল টা সেরে নিচ্ছিলেন । ভিজে শরীরে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলেন ।

বললাম মা ভাল আছ ?

মা কেঁদে দিলেন

---তুই কেমন আছিস রে বাবা ?

চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না । মায়ের গলা ধরে ফুফিয়ে কেঁদে উঠলাম ।

হ্যাঁ এটাই তো এটাইতো আমার জান্নাত । আমার জান্নাতুল ফেরদাউস । আমার সব ।



মা তোমার সেই ছেলে এখন অনেক বড় হয়ে গেছে । তোমার ছেলে এখন ইউনিভারসিটিতে পড়ে ; থার্ড ইয়ার । এখন আর তোমার জন্য এতটা মন কাঁদে না । ৪ বছর তোমাকে দেখি নি । বিশ্বাস কর মা আমি একবার ও কাঁদি নি । আমি ভাল আছি মা, অনেক ভাল । এখন তোমার কথা মনে করে আনমনা হয়ে বসে থাকলে কেউ আমাকে মারে না মা । আমি যখন ইচ্ছে তখন ই তোমার কথা মনে করতে পারি । মা এখন আমি রোজ তোমার হাসি মাখা মুখ দেখি মিশে থাকা তারার মাঝে । তোমাকে দেখার জন্য ৫০ মাইল বই বিক্রি করে পাড়ি দিতে হয় না । হলের ছাদে গেলে ই তোমাকে দেখা যায় এখন আর তোমার চোখে পানি থাকে না, থাকে তৃপ্তি মাখা হাসি........................

এখন কেউ আমাকে চুল কাটার কথা বলে না , চুলে সাবান মেখে গোসল করিয়ে দেয় না । কেউ নখ কেটে দেয় না , নখ বড় থাকলে বকা ঝকা করে না ।ছুটিতে বাড়ী গেলে পথে এসে কেউ বসে থাকে না । দেরি করে বাড়ি ফিরলে লুকিয়ে দরজা খুলে দেয় না ,করে না বকা ঝকা । মা আমি অনেক ভাল আছি । মা অনেক ভাল........................

তুমি ভাল আছ তো ?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

বুমকেশ বলেছেন: দোস্ত অস্থির লিখছস । ভালো লাগল ।

২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:১১

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: থেংকু বন্ধু

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৭:০৭

এক মুসাফির বলেছেন: আমার চোখে পানি আসলো কেন বুঝলামনা। মানুষ হও এই কামনই রইল।

৪| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:৪৮

মাসুম রৌদ্র বলেছেন: আপনার শুভ কামনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.