নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথা বলতে চাই

মাজেদ-উল হক চৌধূরী

মাজেদ

মাজেদ-উল হক চৌধূরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিনোদন যখন রঙ্গখেলা!

১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

সাধারণ দৃষ্টিতে, কিছুলোক স্টেডিয়ামে খেলছে। গ্যালারী ভর্তি লোকগুলো সেই খেলা দেখছে। পৃথিবীর লাখো মানুষ হাজার কর্মব্যস্ততা উপেক্ষা করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও সেই খেলা দেখছে। যারা খেলছে তারা অর্থ পাবে কিন্তু যারা দেখছে তারা কি পাবে ? হয়তো তার উত্তরে কেউ কেউ বলবেন বিনোদনের কথা। অস্বীকার করছিনা, মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য বিনোদন প্রয়োজন। কিন্তু সেই বিনোদন যদি হয় মাত্রাতিরিক্ত ! তখন তাকে বলতে হয় রঙ্গখেলা!



দুঃখের বিষয় আজ আমরা সেই রঙ্গখেলায় আসক্ত। দেশের হর্তাকর্তারাও আসক্তি থেকে মুক্ত নয় বরং তারা জাতিকে আসক্ত হওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। স্টেডিয়ামে যখন খেলা চলে তখন সেই খেলা জাতীয় টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়। খেলা সরাসরি সম্প্রচারের জন্য প্রয়োজনে বিটিভির নিয়মিত খবরের অনুষ্ঠানের সময়সূচীও পরিবর্তন করা হয়। আফসোস। আমাদের মনে রাখা দরকার কতটি উন্নতদেশ তার জাতীয় টিভি চ্যানেলে এভাবে খেলা সম্প্রচার করে। হর্তাকর্তারা রঙ্গখেলায় এতটাই আসক্ত যে ছাত্রদের পড়ালেখার টেবিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে স্টেডিয়ামে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়। যার কারনে অসংখ্য ছাত্র পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আগেকার বেশীরভাগ ছাত্ররা ইংরেজী রচনা গু অরস রহ খরভব লিখার সময় তাদের অরস লিখতো ডাক্তার কিংবা শিক্ষক। কিন্তু এখন অনেক ছাত্র তাদের অরস রহ খরভব হিসেবে লিখে ক্রিকেটার ! একজন ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য তারা কিকেট কোচিং করে। অনেকে একাডেমিক কোচিং এর ফি না দিতে পারলেও ক্রিকেট কোচিং এর ফি নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছে।



আমরা শিক্ষার চেয়ে রঙ্গখেলাকে বেশী দাম দিচ্ছি। দেশের সবচেয়ে নিম্নমানের একজন খেলোয়াড়ের মাসিক বেতন-ভাতা ও স্কুল শিক্ষকদের মাসিক বেতন-ভাতার পরিমাণ উল্লেখ করে জাতির কান্ডারী শিক্ষকদের অসম্মান করতে পারবো না। যাইহোক, খোলোয়াড়রা মাসিক বেতন-ভাতা সময়মত পেলেও শিক্ষকরা সারা মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করেও সময়মত বেতন-ভাতা পান না। কেন তাদেরকে পবিত্র ঈদের দিনেও কালো ব্যজ পড়ে শহীদ মিনারে মানববন্ধন করতে হয় !



আমি খেলোয়াড়দেরকে বা ফুটবল-ক্রিকেট খেলাকে খারাপ বলবো না। এটা আমার উদ্দেশ্যও নয়। শিশু-কিশোররা এসব খেলা খেলবে আনন্দ করবে, এক এলাকা অন্য এলাকার সাথে খেলবে, এক দেশ অন্য দেশের সাথে খেলবে এতে করে তাদের মধ্যে সম্প্রিতি তৈরী হবে। বিশ্বের দরবারে ফুটবল-ক্রিকেট বাংলাদেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছে এবং হয়তো আরো করবে, এই প্রত্যাশা সবার। কিন্তু নিজের প্রধান কাজ উপেক্ষা করে নয়। নিজের কাজ রেখে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় করার কোন মানে হয়না। ফুটবল ক্রিকেটের প্রতি আমরা এত বেশী আসক্ত যে, দশ বছরের ছোট শিশু থেকে ষাট বছরের বৃদ্ধও ঘন্টার পর ঘন্টা টিভি চ্যানেলের সামনে বসে থাকি খেলা দেখার জন্য। কিন্তু মনে রাখতে হবে মাত্রাতিরিক্ত কোন কিছুই মঙ্গলজনক নয়। বর্তমানে দেশে ফুটবল-ক্রিকেটের যে আসক্তি চলছে তা সত্যিই আমাদেরকে শঙ্কিত করে তুলছে।



বড়লোকের আদরের দুলালরা আনন্দফূর্তির জন্য যেভাবে নাইট ক্লাব, ড্যান্স ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্লাবে যায়, ক্লাবের বাইরে তাদের প্রাইভেট গাড়িগুলো পার্কিং করে প্রায় একই স্টাইলে রিকশাওলাদের দেখা যায় সিনেমা হলে। তাছাড়া রাস্তার পাশের ছোট ছোট রেস্তোরা গুলোও মিনিহলে পরিণত হয়েছে। সারাদিন মাথাার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত টাকাগুলো তারা এসব হলে বসে রঙ্গখেলায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। তাহলে কেমনে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে ?



শিক্ষিত অশিক্ষিত অধিকাংশ মানুষই আজ বিনোদনের নামে এসব রঙ্গখেলায় মত্ত। এসব রঙ্গখেলা চলতে থাকলে দেশ ক্রমশই অধঃপতনের দিকে যাবে। দারিদ্রতা আমাদের সঙ্গ ছাড়বেনা বরং দুঃখ-দূর্দশা বাড়তেই থাকবে যদি দেশ পরিচালনায় নিয়জিত ব্যক্তিবর্গ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন। আসুন আমরা সকলে এসব রঙ্গখেলা সাঙ্গ করে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোকে কাজে লাগাই।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.