![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যক মানুষের জীবনে কাউকে না কাউকে ভালবাসা প্রয়োজন। এম ডি আরিফ
সাগর তলার দুনিয়ায় কত কিছুই ঘটছে। হাজার জাতের উদ্ভিদ, হাজার জাতের প্রাণী আছে সাগরে। সাগরের পরিবেশও বৈচিত্র্যময়। এসব নিয়ে সাগরের বুকে ঘটছে নান পরিবর্তন। সাগর তলার সৌন্দর্য্যরে কোনো তুলনা বোধ হয় সম্ভব নয়। এ সৌন্দর্য্যরে জন্য কোরালের নাম সবার আগে আসবে। কোরাল এক ধরনের প্রাণী। অমেরুদণ্ডি। সিলন্টারাটা পূর্বভুক্ত। বর্ণিল এ প্রাণী সাগররত্ন নামে পরিচিত।
কোরাল সমাজবদ্ধ জীব। সারাজীবন যারা এক সাথে বসবাস করে, মরণেও তারা এক সাথে। মৃত কোরালও এক ধরনের পরিবর্তনের অংশ নেয়। মৃত কোরালের দেহ স্তুপাকারে জমা হয়ে নানা আকৃতির কাঠামো তৈরি করে। উদাহরণ হিসেবে কোরাল রিফ, কোরাল ব্যাঙ্ক (বাঁধাকৃতি)-এর নাম উল্লেখ করার মতো। তবে এদের মূল উপাদান অভিন্ন। এরা কার্বোনেট অব লাইম নিয়ে তৈরি। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর অংশ ও শৈবালও দেখতে পাওয়া যায়। কোরাল রিফ গঠন অথবা কোরাল ব্যাঙ্ক গঠন নির্ভর করে সাগরের পরিবেশের উপর। বিশেষ করে তাপমাত্রা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবের উপস্থিতির মাত্রার উপর খুবই নির্ভরশীল।
কোরাল রিফ কি
পাথুরে কোরাল দিয়ে কোরাল রিফ তৈরি। কোরাল রিফ সাধারণতঃ ট্রপিক্যাল সাগরে গঠিত। ট্রপিক্যাল সাগরে অগভীর অঞ্চলে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। কোরাল রিফ গঠনে আদর্শ তাপমাত্রা (২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড)-এখানে সব সময়ে বজায় থাকে। একই কারণে সাধারণত ১১ মিটার হতে ৪০ মিটার গভীর সাগর অঞ্চলে এদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। রিফকে সাধারণতঃ উপর দিকে বাড়তে দেখা যায়।
কোরাল ব্যাঙ্ক কি
সাগরের গভীরে আরেক ধরনের কোরাল জন্মে। ৬০ মিটার হতে ২০০ মিটার গভীর সাগর অঞ্চলে এরা বেঁচে থাকে। ৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এদের খুবই উপযোগী। এ ধরনের কোরালের মৃতদেহ রিফ না গঠন করে ব্যাঙ্ক গঠন করে। ব্যাঙ্কগুলো উচ্চতায় খুব একটা বাড়ে না। এদের বৃদ্ধি বরং দৈর্ঘ্য বরাবর অনেক বেশি। নরওয়ে হতে কেপ ভার্দের কূল বরাবর ইস্টার্ন আটলান্টিক শেলফ এজ এদের উৎপত্তিস্থল। এছাড়া নাইজার নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চল, মেক্সিকো উপসাগর, নিউজিল্যান্ডে ক্যাম্পবেল মালভূমি ও শাথান রাইজ, জাপানের কাছে উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরেও এ ধরনের কোরাল পাওয়া যায়। এদের মৃতদেহ কোরাল ব্যাঙ্ক গঠন করে।
এছাড়া আধুনিক সাগরগুলোতে আরো এক ধরনের কোরাল জন্মে। এরা আরো গভীর। আর শীতলতার উপযোগী। এন্টার্টিকা, পাতাগোনিয়া, ফকল্যান্ড দ্বীপে এদের দেখা যায়। এখানে তাপামাত্রা ২ ডিগ্রি সে. থেকে ৬ ডিগ্রি সে. সীমাবদ্ধ থাকে। তবে, অধিকাংশ কোরালই রিফ গঠন করে।
রিফ কিভাবে গড়ে উঠে
ট্রপিক্যাল সাগরে কোরাল রিফ গঠিত হয়। এ ধরনের সাগরে তাপামাত্রা রিফ গঠনকারী কোরালের জন্ম ও দৈহিক বৃদ্ধির জন্য উপযোগী। সাগরের পানিতে প্রয়োজনীয় তাপামাত্রা থাকে বলে প্রচুর ফাইটোপ্লাঙ্কটন জন্মে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্ভিদ। ফাইটোপ্লাঙ্কটন খেয়ে জুপ্লাঙ্কটন (ক্ষুদ্র প্রাণী) বেঁচে থাকে। কোরালের প্রধান খাদ্য জুপ্লাঙ্কটন। যথাযথ পরিমাণ জুপ্লাঙ্কটন থাকে বলে গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠন সম্ভব হয়েছে। গ্রেট বেরিয়ার রিফ গঠনে সাগর পানিতে দ্রবীভুত অক্সিজেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এখানে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুব বেশি, সম্পৃক্ততার কাছাকাছি।
কোরাল রিফ সাধারণতঃ একটা গভীরতার বেশি গভীরতায় গঠিত হয় না। এর মূলে আছে একটা বিশেষ সম্পর্ক: সাগরের গভীরতা বৃদ্ধি পেলে আলোর স্থায়ীত্ব কমে যায়। যেমন- মাকেরিয়া আইল্যান্ডসে (The Maderia Islands) মার্চ মাসে ২০ মিটার গভীরতায় আলো থাকে ১১ ঘণ্টা, ৩০ মিটারে ৫ ঘণ্টা, ৪০ মিটারে মাত্র ১৫ মিনিট। অবশ্য আলোর উপস্থিতি তার অক্ষাংশের উপর নির্ভরশীল।
রিফ গঠন প্রক্রিয়া
রিফ গঠনে সাগরে ভূ-প্রাকৃতিক গঠন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি কথা বললে কোরাল রিফ তৈরির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা এখনো মানুষের অজানা। গঠন প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। এখানে সবচে’ সফল ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো। পৃথিবীর বহিরাঞ্চলের গঠন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। কোথাও চাপের আধিক্যে পবর্তাঞ্চল তৈরি হচ্ছে, আবার কোনো অঞ্চল সাগরে ডুবে যাচ্ছে। সাধারণত তিন ধরনের রিফ দেখা যায়। বেলা শৈল (Frinnging reef), প্রবাল প্রাচীর (Barrir reef), অ্যাটল।
সাগর তলেও অনেক সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। ভূ অভ্যন্তরস্থ চাপের কারণে অনেক সময় এরা পানি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে। এ অবস্থায় কোরাল বেলা শৈল গঠন করে। সময়ে আগ্নেয়গিরি মারা যায় এবং সাগরে ডুবে যেতে শুরু করে। ডুবুডুবু অবস্থায় প্রবাল প্রাচীর তৈরি হয়। সম্পূর্ণ ডুবে গেলে অ্যাটল তৈরি হয়।
রিফে কি কি থাকে
লাইম অব কার্বোনেট তো অবশ্যই আছে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম, স্ট্রনসিয়ামের মতো ধাতুও অল্প পরিমাণে থাকে। আরো আছে ম্যাঙ্গানিজ, লোথ ইত্যাদি, তবে স্বল্প পরিমাণ (পিপিএম)। স্থানভেদে আরো বিশেষ কিছু উপাদান থাকে। উদাহরণ স্বরূপ, প্রশান্ত মহাসাগরের কোরালে ২.১৭ পিপিএম ইউরেনিয়ামও পাওয়া যায়।
সাগরের এ সৌন্দর্য্য ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। কারণ, মানুষের হস্তক্ষেপ খুবই দুঃখজনক একটা ব্যাপার। সাগরের এ সৌন্দর্য্য রক্ষা করা একান্তই কাম্য।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৯
মো: আবু জাফর বলেছেন: দারুন লাগলো http://www.somewhereinblog.net/blog/jafor13