![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আছি ব্যাক বেঞ্চার, আর কিছু ভাবনা আছে নিঃসঙ্গ। কিছু কথা আছে কাউকে বলতে না পারার- সেগুলো বলতেই আমার কিবোর্ড চাপাচাপি.।...।
সময়!
জগতের সবচেয়ে বড় অমিমাংসিত একটা রহস্য সৃষ্টিকারি অথবা নিজেই একটা বিরাট রহস্য। সবচেয়ে বিখ্যাত গল্পের জন্মদাতা অথবা নিজেই অনেকগুলো গল্পের সমষ্টি। ভালো সময়; খারাপ সময়। উত্তেজনার সময়; নিরস সময়; যৌবনের সময়; বার্ধকের সময়। সময়ের আগে-পরে মানুষ আরো কতশত বিশেষণ যে বসায় তা স্বয়ং মানুষও ঠিক জানে না।
৬০ বছরের বৃদ্ধা একবুকের সবটুকু কষ্টযুক্ত বাতাস যাকে আমরা দীর্ঘশ্বাস বলি-বাইরে ঠেলে দিয়ে বলে, আমাদের সময় তো শেষই! এখন হচ্ছে তুমাদের সময়, তুমাদের দাপিয়ে বেড়ানোর সময় শুরু.. আচ্ছা সময়ের আবার শুরু শেষ আছে নাকি? একটা পারফেক্ট বৃত্ত অথবা নিখুঁত একটি গোলকের শুরু শেষ কিভাবে নির্ণয় করা যায়? পারফেক্ট বৃত্ত আর আর নিখুঁত গোলকের প্রত্যেকটা বিন্দুই তো শুরু অথবা শেষ সীমা হবার সামর্থ রাখে!! বিষয়টা ভাবতে ভাবতে মাথার ভেতর একটা ঘুন পোকা জন্মনিছে, ঘুনপোকাটা আমার ভাবনার জগৎ থেকে সমস্ত আপাতত সত্য বিষয়গুলো কেটেকুটে মস্তিস্ক শূন্য করে দিয়েছে।
সময় নিয়ে ভাবতে ভাবতে সময়ের সাথে একটা সন্ধি বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। এই যে সময় বছরের পর বছর আমার থেকে কতকিছু নিয়েছে! শৈশবটা চুরি করে কাঁদা জলে ঝাঁপিয়ে খেলার অধিকারটা ছিনিয়ে নিয়েছে, কৈশোরটা ছিনিয়ে নিয়ে দাপটে বেড়ানোর সুখগুলো চুরি করেছে। তারপর দিয়েছে সময়- চিন্তার বোঝা, দায় আর দায়িত্বের এক অসামাঞ্জসতা, বিদ্যা না থাকলেও বিদ্বানের তকমা, ভালো না থাকলেও বিন্দাস বলার একটা মিথ্যে অভ্যাস। এই তো সময়, সময় বড়ই রঙচং হীন অথবা রঙচঙে ভরপুর। ডিপেন্ড করে আমি আর আপনার উপর।
আমি আমার অতীত সময় নিয়ে অনেক বেশি ভাবি। শুনেছি বুদ্ধিমানেরা অতীত নিয়ে বেশি ভাবে না, আমি ভাবি।সে ক্ষেত্রে নিজেরে নির্বোধ ছাড়া কিছু মনে করতে পারি না। বলতে গেলে একা থাকলেই অতীত ভাবনাগুলো চলে আসে। আবার অতীতে যে খুব কিছু করে ফেলেছি বা অস্থির কেটেছে তাও না.. আযথাই কেটেছে অতিত। কৈশোর কেটেছে একটা তারের সাথে আরেকটা তারের জোড়া দিয়ে! একটা ব্যটারির দুই মেরু কোন দুই দিগন্তে গিয়ে মেশলে বাল্বটা জ্বলে উঠে এই সব করেই কেটেছে আমার সময়। তখন বিষয়গুলো ছিলো কেবলই শখ, টান অথবা নেশা। নাহ নেশা বলতে কোন নেশা দ্রব্যের নেশা না.. একটা কোমল মনের নতুন নতুন কিছু করার নেশা। অবশ্য কিছু পয়সা কড়িও আসতো তাতে- এখন বুঝি সেটি ছিলো নেশার একটি মটিভেশনাল ফ্যাক্টর।
এখন অবশ্য জিবনের ফ্যাক্টরের অভাব নাই, সময় যতবাড়ে জীবনের সাথে নাকি ততবেশি ফ্যাক্টর যোগ হয়। এই এক একটি ফ্যাক্টরের কতশক্তি! এখন মনে হয়- জিবনের এই ফ্যাক্টরের চেয়ে আমার সেই তারজোড়াই ভালো ছিলো। ভালো ছিলো ব্যাটারির দুই মেরুর আলোজ্বালানোর শক্তি। তার দুইটির ক্ষমতা কেবলই সংযোগ জুড়ে দেয়া। আমাদেরও কি কম ক্ষমতা? অচেনা, অজানা, কত অদ্ভুদ রকমের মানুষদের সাথে কত মজবুদ সংযোগটাই করে ফেলি। আর আলো জ্বালানোর যা অসম্ভব শক্ষি আমাদের আছে, সময়ের মতো তা স্বয়ং আমরাও জানি না। আমাদের কলমের অক্ষরে আলো জ্বলে, পেন্সিলের রেখায় আলোজ্বলে, কন্ঠনালির সুরে আলো জ্বলে। এই আলোর কত শক্তি! হৃদয়, মস্তিস্ক, মনোজগৎ সব কিছুই কত উজ্জ্বল ভাবে আলোকিত করে দেয়!
ভাবতেই ভালো লাগে। মানুষের কত ক্ষমতা, কত শক্তি!
আমিও কি দুনিয়া আলোকিত করার একটু শক্তি হবে?
কি যেন, কে জানে!
হয়তো সময় জানে, অদৃষ্যকে জানবার ক্ষমতা একমাত্র সময়েরই আছে..
লেখাঃ হাবিব রহমান।
ঢাকা। 1.4.18
©somewhere in net ltd.