নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই নৈসর্গিক স্বপ্নগুলো ব্যাঞ্জনবাধা শব্দে বন্দী,যার কোন প্রত্যক্ষদর্শী নেই।

মুহামম্াদ হুসাইন বিল্‌লাহ

মুহাম্মদ হুসাইন বিল্লাহ

মুহামম্াদ হুসাইন বিল্‌লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষাব্যবস্থায় রাহুর গ্রাস

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৪৫

মানুষ আর দশটা প্রাণীর মতো নয়। সে দেহ এবং আত্মার সমন্বয়ে উন্নত বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন অসাধারণ একটি সৃষ্টি। সে একাধারে আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টি। তার এই শ্রেষ্ঠত্ব বা অপকৃষ্টত্ব নিরূপিত হয় তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও কর্মের দ্বারা, আর এই চরিত্র নির্মাণ করে তার শিক্ষা। ‘প্রাণী’ মানুষকে আশরাফুল মখলুকাতে রূপান্তরিত করাই হচ্ছে শিক্ষার উদ্দেশ্য। যে শিক্ষা মানুষকে চরিত্রে, চিন্তায়, কর্মে উন্নত করে সেটাই প্রকৃত শিক্ষা, আর যে শিক্ষা মানুষকে চরিত্রে, চিন্তায় কর্মে অধঃগামী করে সেটা কুশিক্ষা। সকল সত্য ও ন্যায়ের উৎস মহান আল্লাহ। তিনিই মানুষের এবং সকল দৃশ্যমান ও অদৃশ্যের স্রষ্টা। সুতরাং মানুষের প্রথম শিক্ষাই হওয়া উচিৎ স্রষ্টা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা, সকল জ্ঞানের উৎসও স্রষ্টা। সেই মহান সত্ত্বাকে বাদ দিয়ে কোন জ্ঞান হতে পারে না। আবার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই স্রষ্টার পরিচয়, তাই সৃষ্টি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করাও শিক্ষার মৌলিক অংশ। এই জ্ঞানকেই বলা যায় বিজ্ঞান। তৃতীয়ত, যেহেতু মানুষ সামাজিক জীব; তাই তাকে জ্ঞান লাভ করতে হবে মানবজাতির শান্তিতে বসবাসের জন্য যে জীবনব্যবস্থা আল্লাহ তাঁর নবী-রসুলদের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন, সেই জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে। এক কথায় বলতে গেলে, একজন শিক্ষিত মানুষকে সবার আগে জানতে হবে, স্রষ্টার সাথে তার কি সম্পর্ক এবং তারপর জানতে হবে মানবজাতির সঙ্গে তার কি সম্পর্ক। এরপর জানতে হবে সৃষ্টির অন্যান্য বস্তুনিচয়ের সঙ্গে তার কি সম্পর্ক। এই তিনটি বিষয়ে একজন ব্যক্তির যদি সঠিক ধারণা না থাকে তবে তাকে শিক্ষিত বলা যাবে না।
মহান আল্লাহ তাঁর শেষ নবীর মাধ্যমে যে জীবনব্যবস্থা দান করেছেন সেই ব্যবস্থা মোতাবেক পরিচালিত সমাজে শিক্ষার উদ্দেশ্যই হবে মানবতার কল্যাণ। আত্মিক, চারিত্রিক ও জাগতিক জ্ঞানের সমন্বয়ে এমন শিক্ষাব্যবস্থা হবে যেখানে শিক্ষক হবেন মানবতাবাদী, মহৎ, সত্যনিষ্ঠ মহান আদর্শের প্রতীক। তিনি শিক্ষাদানকে মানবজাতির প্রতি নিজের কর্তব্য ও দায়বদ্ধতা (Duty and Responsibility) বোলে এবং সকল জ্ঞানকে স্রষ্টার পক্ষ থেকে আমানত বোলে মনে কোরবেন। শিক্ষাকে আজকের মত পণ্যে পরিণত করা হবে না, এতে থাকবে ধনী-নির্ধন সকলের সমান অধিকার। তাই শিক্ষার্জন কোরতে গিয়ে কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচের প্রয়োজন হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যা অর্জন কোরে কেউ দুর্নীতিবাজ হবে না, আত্মস্বার্থে দেশ বিক্রি করার ষড়যন্ত্র কোরবে না। তারা হবে সুশিক্ষিত, নৈতিক চরিত্রে বলীয়ান সমাজের এক একটি আলোকবর্তিকা। তারা মানবতার কল্যাণে আত্মনিয়োগ কোরবে, কোটি কোটি টাকার বিনিময়েও মানবতার ক্ষতি হয় এমন কাজ করার কথা তারা চিন্তাও কোরবে না। ছাত্রের কাছে একজন শিক্ষক হবেন শ্রদ্ধায় দেবতুল্য এবং ছাত্ররাও হবে শিক্ষকের আত্মার সন্তান। উম্মতে মোহাম্মদী নামক মহাজাতির শিক্ষক ছিলেন স্বয়ং আল্লাহর রসুল। তিনি তাঁর জাতিকে শিক্ষা দিয়েছিলেন কিভাবে মানবজাতির কল্যাণে নিজেদের সমস্ত সম্পদ ও জীবন কোরবানী করে দিতে হয়। তিনি ভোগবাদ শেখান নি, তিনি শিখিয়েছেন ‘দানে সম্পদ বাড়ে, সঞ্চয়ে হ্রাস পায়’। তাঁর সামনে বসে নারী-পুরুষ উভয়ই শিক্ষা অর্জন কোরতেন, কাজেই প্রকৃত এসলামেও নারী-পুরুষ উভয়ই শিক্ষকের সামনে বসে শিক্ষা অর্জন কোরবেন।
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে বিশ্বজগতে এবং মানবজাতিতে যে প্রাকৃতিক নিয়মগুলি বিরাজ করছে, মানুষ যখনই সেগুলির ব্যতিক্রম করার চেষ্টা করেছে, তখনই সে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। আজ আমাদের সমাজে যে অন্যায়, অরাজকতা, দুর্নীতি, অনৈক্য, অবিচার, বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে সেগুলি সবই প্রাকৃতিক নিয়মগুলিকে অস্বীকার করে জোর করে মানুষের মনগড়া বিধি-বিধান প্রয়োগ করার ফল। একজন শিক্ষিত মানুষ কখনোই প্রাকৃতিক নিয়মগুলির বাইরে যেতে চাইবে না। সে জানবে মানুষের জীবনে সঙ্কটগুলো কী কী, সেই সঙ্কট থেকে উত্তরণের উপায়গুলো কী কী। সে তার জ্ঞানকে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে। এভাবে জ্ঞানের স্রোতধারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলতে থাকবে। পাশ্চাত্য সভ্যতার সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের আগে পর্যন্ত আমাদের সমাজে স্রষ্টার দেওয়া মূল্যবোধ কিছুটা টিকে থাকায় শিক্ষক ও ছাত্রের সম্পর্ক ছিলো অনেকটা পিতা-পুত্রের সম্পর্কের মতো। কিন্তু বর্তমানে পাশ্চাত্যের বস্তুবাদী জীবনদর্শনে প্রভাবিত সভ্যতা মানুষের ব্যবহারিক জীবনে স্রষ্টার বিধানের উপযোগিতা অস্বীকার করেছে। ফলশ্র“তিতে শিক্ষিত মানুষগুলি হয়ে পড়ছে স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক। শিক্ষিত সমাজের অবদানে প্রায় প্রতি বছর আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হচ্ছি। চাকুরিগতপ্রাণ এই শ্রেণি একটি ভালো চাকরি পেলে বাবা-মাকে পর্যন্ত ভুলে যাচ্ছে। অফিসের কর্তাকে খুশি রাখতে পারলেই তার যথেষ্ট। এই শিক্ষাব্যবস্থা সার্টিফিকেটধারী অসংখ্য ব্যক্তির জন্ম দিচ্ছে। এরা যদি প্রত্যেকে নিজের উন্নতির পাশাপাশি জাতির ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকতো তাহলে পশ্চিমা জাতিগুলির মতো অন্তত এ জাতির অবস্থারও বহুদূর উন্নয়ন সম্ভবপর হতো। কিন্তু আমাদের শিক্ষায় জাত্যবোধের শিক্ষা না থাকায় শিক্ষিতদের মধ্যে জাতির কল্যাণ সাধনের কোন প্রেরণা নেই। তাই তারা জাতির সম্পদ লুট করে বিদেশি ব্যাংকে টাকা জমায়। সেই টাকা থেকে লাভবান হয় সেই পশ্চিমারাই। এভাবেই শিক্ষিতরাই এ জাতিকে দিন দিন পিছিয়ে দিচ্ছে।
আজকে জাতীয় রাজনীতিতে যে হিংসা, হানাহানি, আক্রমণ, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা, অহেতুক বিরোধিতা, সমস্ত দেশকে অচল করে দেয়ার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, অর্থাৎ জাতীয় জীবনে এই যে নৈরাজ্য এটাও শিক্ষিত শ্রেণির কাজের ফল, এবং এই চর্চা শুরুই হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। অথচ কথা ছিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্ররা লেখাপড়া করতে যাবে। বিভিন্ন বাবা মায়ের সন্তানেরা এক জায়গায় এসে পড়বে ভাইবোনের মতো, শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা ও ছাত্রের প্রতি শিক্ষকের অপত্য øেহ- সব মিলিয়ে শিক্ষাঙ্গনে একটি স্বর্গীয় পরিবেশ বিরাজ করার কথা। কিন্তু আজ সেখানে চলে দৈনিক মিছিল, শ্লোগান- ওমুককে বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করো, ওমুককে জবাই করো, ওমুকের লাশ ফেলে দাও। তারা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ছাত্রকে জবাই করে, পায়ের রগ কেটে দেয়, চোখ তুলে নেয়, তাদের অঙ্গপ্রতঙ্গ ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়। পত্র-পত্রিকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক ছাত্রকে আরেক ছাত্রের কোপানোর দৃশ্য আমাদেরকে প্রায়ই দেখতে হয়। এই ছাত্র নামের সন্ত্রাসীদের হাতে যখন জাতির নেতৃত্বের দায়িত্ব পড়ে তখন তাদের থেকে কেমন শান্তিময় জাতীয় জীবন আমরা আশা করতে পারি? ঠিক যেমনটা আজ দেখছি। শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষকরাও অর্থ ও ক্ষমতার মোহে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি করেন এবং নোংরা রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে যান। আজ ছাত্ররা জাতীয় রাজনীতির অন্যায়ের শিকার হচ্ছে, শিক্ষক-রাজনীতির শিকার হচ্ছে, এমন কি তাদের একটি বড় অংশ ধর্ম ব্যবসায়ীদের ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতির কবলে পড়ছে।
আজকে জড়বাদী পাশ্চাত্যের শিক্ষা ও সংস্কৃতি একমাত্র বৈষয়িক স্বার্থ হাসিল অর্থাৎ অর্থ-বিত্ত, যশ, খ্যাতি ইত্যাদিকে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হিসাবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। পাশ্চাত্য দর্শনের প্রভাবাধীন সমস্ত পৃথিবীতে এখন অর্থই মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দু’চার শতাব্দী আগে পর্যন্তও প্রাচ্যের বৌদ্ধ, জৈন, সনাতন ধর্মী, ভারতীয় ইত্যাদির কাছে অর্থনীতির অত গুরুত্ব ছিলো না, পার্থিব জীবনের চেয়ে আত্মার ও চরিত্রের উৎকর্ষের সম্মান ছিলো বেশি। একজন কোটিপতির চেয়ে একজন জ্ঞানী, শিক্ষিত, চরিত্রবান কিন্তু গরীব লোককে সমাজ অনেক বেশি সম্মান কোরত। অথচ আজ অর্থবিত্তই সকল সম্মান, মর্যাদার মাপকাঠি। মনোহর পানপাত্রে বস্তুবাদী এই সভ্যতার পরিবেশিত এই গরল আমরা সুধা ভেবে পান করে চলেছি। পরিণামে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের জীবন ওষ্ঠাগত, আত্মা মৃতপ্রায়। সেই দাসত্বের যুগে মদনমোহন তর্কালঙ্কার তার শিশু শিক্ষা বইটিতে লিখেছিলেন, ‘লেখাপড়া করে যে/গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে।’ আমাদের শৈশবে পিতা-মাতা ওই লাইন দু’টো গুরুত্বের সঙ্গে বুঝাতেন। তারা বলতেন, মন দিয়ে লেখাপড়া কর। লেখাপড়া করলে বড় চাকরি করতে পারবে, অনেক টাকার বেতন পাবে, দালানে থাকতে পারবে, গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়াতে পারবে। মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করলে পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারবে, সবগুলো পাস দিয়ে উচ্চশিক্ষিত হলে লোকে ভালো বলবে, মান্য করবে। লেখাপড়া করলে জীবন তোমার সুখময় ও আনন্দময় হয়ে উঠবে।
লেখাপড়ার প্রতি বাবা-মায়ের আগ্রহ এবং সন্তানের প্রতি হিতোপদেশ শিশু সন্তানকে অনুপ্রাণিত করে। শিশু সন্তানটির মানসিকতাও তেমনটি গড়ে ওঠে, যেমন করে নরম কাদামাটি দিয়ে যে কোনো মূর্তি গড়ে তোলা যায়। পিতামাতার মূল আশা থাকে সন্তান শিক্ষিত হোক, বড় চাকরি করুক, সুখে থাকুক। সেই সুখী সন্তান বিনিময়ে পিতা-মাতাকে দেখভাল করবে, সেটা তারা খুব কমই আশা করেন। কেননা, সন্তানের জন্য পিতা-মাতার হৃদয় থাকে সমুদ্রসম।
বাস্তবে অনেক শিশুই পিতা-মাতার হিতোপদেশ অনুযায়ী চলতে, জীবন গড়ে তুলতে সমর্থ হয়। একদিন যুবক হয়ে বড় চাকুরেও হয়, গাড়িও পায়। কিন্তু পাশ্চাত্য ‘সভ্যতা’র প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থার প্রভাবে সে শিক্ষিত সন্তানের মন-মানসিকতার আমূল পরিবর্তন ঘটে যায়। সেই শিক্ষিত সন্তানটির মন-মানসিকতায় স্থায়ী আসন গেড়ে বসে লোভ-লালসা-বিলাসিতা-আভিজাত্য। সে পরিণত হয় একটি অর্থ উপার্জনের কলে। স্কুলে-কলেজে তাকে নৈতিকতার কোন শিক্ষা দেওয়া হয় না। যখন সে প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় টাকা কামাইয়ের যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, ছোট বেলায় বাবা-মায়ের কাছে পাওয়া নৈতিকতার শিক্ষাটুকু তখন আর মনে থাকে না। সমাজের কোথাও সে নৈতিকতার শিক্ষা পায় না। আত্মিক, নৈতিক শিক্ষা তথা আল্লাহর নিত্য-উপস্থিতির ধারণা এদের ব্যক্তি জীবনে নেই বলে এদের নিজেদের লোভ, হিংসা অহংকার ইত্যাদির উপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এগুলোর যা কিছু নিয়ন্ত্রণে থাকে তা শুধু শাস্তির ভয়ে। কাজেই অসৎ উপায়ে অর্জিত কালো টাকার মালিক হয়ে এরা লাগামহীনভাবে জীবন উপভোগ করে। সুযোগ পেলেই সে পরিণত হয় দুরাচারী মানবেতর জীবে, হয়ে ওঠে দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, নিজের স্বার্থে দেশের বা মানুষের বিরাট ক্ষতি সাধন করতেও তাদের আত্মা কাঁপে না।
যে ধর্মের দায়িত্ব ছিলো মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনা করা, সেই ধর্মও আজ মানুষকে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ। কারণ ব্রিটিশরা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে আমাদেরকে তাদের তৈরি একটি বিকৃত বিপরীতমুখী এসলাম শিখিয়ে গেছে। ধর্মও এখন একটি লাভজনক বৃত্তি বা বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি ধর্মেই আল্লাহ এবং মানুষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী একটি শ্রেণি ধর্মের ধারক-বাহক, আলেম, আচার্য সেজে টাকার বিনিময়ে ওয়াজ নসিহত করছে, মসজিদে, চার্চে, মঠে, মন্দিরে মানুষকে দিয়ে উপাসনা, প্রার্থনা করাচ্ছে। টাকা ছাড়া তারা কোনো একটি কাজও করেন না, এমন কি জানাজার নামাজ পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে পড়ান। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পুরোহিত শ্রেণির সঙ্গে অর্থের লেনদেন ঘটে।
বর্তমানে আমরা আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি দিকে চূড়ান্ত অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছি। সুগভীর চক্রান্তের মাধ্যমে আমাদের ইতিহাস আমাদের থেকে আড়াল করে রাখা হয়েছে, আমাদের মধ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে নিজ জাতি সম্পর্কে সীমাহীন হীনমন্যতা এবং পাশ্চাত্যের প্রতি গোলামির মানসিকতা। যে জাতি নিজেদের অতীত গৌরব জানে না, তাদের ভবিষ্যতও অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজ ঐতিহাসিক গবেষক মনীষী স্যার জন সিলির কথা এখানে উদ্ধৃত করে দিতে চাই। তিনি বলেছেন, ইতিহাস হলো রাষ্ট্রনীতির মূল এবং রাষ্ট্রনীতি হলো ইতিহাসের পরিণতি।
Politics without history has no root.
History without politics has no fruit.
ইতিহাস ছাড়া রাজনীতির কোন শিকড় নাই।
রাজনীতি ছাড়া ইতিহাসের কোন ফল নাই।
সুতরাং ভবিষ্যৎ পথ চলা নির্ধারণ করতে হলে আগে জানতে হবে আমাদের সঠিক ইতিহাস। তাহলে ভবিষ্যতের দিকে আমাদের চলার পথ হবে উন্মুক্ত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.