নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলে আমার মস্ত মানুষ,মস্ত অফিসার
মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার।
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী
সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি।
ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম।।
আমার ব্যবহারের সেই আলমারি আর আয়না
ওসব নাকি বেশ পুরনো,
ফ্ল্যাটে রাখা যায় না।
ওর বাবার ছবি,ঘড়ি-ছড়ি,বিদেয় হলো তাড়াতাড়ি
ছেড়ে দিলো, কাকে খেলো, পোষা বুড়ো ময়না।
স্বামী-স্ত্রী আর এলসেশিয়ান-জায়গা বড়ই কম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম....।।
নচিকেতার এই গানটি শুনলেই আমাদের হয়ত মনে পড়ে যায় ষাটোর্ধ কোন বয়স্ক বা বয়স্কার চিত্র
যিনি বার্ধক্যের বাঁধনে আটকে পড়ার পূর্ব পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছেন একটি পরিবার তথা রাস্ট্রের
ক্ষুদ্রতম একক কে । হয়ত কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন একটি স্বপ্নকে(সন্তান) এই আশা নিয়ে যে ,
তাকেও একসময় অনুরূপ ভাবে সহযোগীতা করবে । অথচ তাঁর সেই স্বপ্ন আজ তাঁর বার্ধক্যের ভার বহন
করতে নারাজ !
ফল স্বরূপ তাকে রেখে আসা হল কোন এক Old home এ । সোজা বাংলায় বলতে গেলে বৃদ্ধাশ্রমে ।
হয়তবা বছরে দু একবার খোঁজ নেয়া বা কিছু অর্থ সহায়তা দিয়েই তারা এই দায়িত্ব
থেকে মুক্তি পেয়ে যেতে যায় । বর্তমান শিল্প সমাজে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে গঠিত হচ্ছে একক
পরিবার । কিন্তু রক্তের বাঁধনকে ছিঁড়ে ফেলা কি এতই সহজ !!!
দশমাস পর যখন সন্তান পৃথিবীর আলোয় প্রথম আলোকিত হয় তখন সেই সন্তানের মা গর্ভকালীন
সময়ে সব কষ্ট ভুলে যান চোখের পলকেই । যখন একটি সন্তান জন্ম নেয় তখন তার বাবা মা'র যে উচ্ছাস
থাকে , স্বপ্ন থাকে সেটি অনির্বচনীয় ।কতভাবে তাকে হাসিখুশি রাখা যায় তখন সে চিন্তায় নিজের জীবনের
হাসি কান্নাও বাবা মা বিজর্সন দিতে একটুও কার্পণ্য করেন না । দুনিয়ার সবাই তাকে পরিত্যাগ করলেও
বাবা মায়ের
কাছে সে চোখের মনি হিসেবেই থাকে ।
একজন শিশু তার দরকারি সকল আর্থিক ও মানসিক সাপোর্ট পরিবার থেকেই লাভ করে । ইতিহাস
থেকে আমরা দেখতে পাই মোঘল সম্রাট বাবর তার পুত্র হুমায়ুনের আরোগ্যের জন্য নিজের জীবন স্রস্টার
কাছে নিবেদন করেছিলেন । এমন ঘটনা বর্তমানেও বিরল নয় ।
কয়েক বছর আগে প্রয়াত কণ্ঠশিল্পি খালিদ হাসান মিলুর একটি গান শুনেছিলাম যার প্রথম কয়েকটা লাইন
ছিল
বিদেশ ঘুরে দেশে এলে
দশ গেরামের সোনার ছেলে
ভাই-বন্ধু সবাই বলে,
আরে জামা কাপড় আনছো নি ?
আর মা বলে,
আমার জাদু ফিরে আইছো নি....?
গানতো শুনলেন বস...,এবার আসি আসল কথায়, আপনার মাথায় যদি একান্তই জৈব সার(গোবর)
না থাকে তবে আপনি নিশ্চয়ই বলবেন না যে পশ্চিমা সভ্যতায় তো OLD HOME ই
চলছে তো এদেশে আমরা এটার প্রচলন বা অভ্যস্ত
হলে সমস্যাটা কি অথবা আমরা কি পশ্চিমা সভ্যাতার চেয়ে বেশী বুঝি না কি !
না বস...! এখানে কোন কম বা বেশী বোঝা অথবা আধুনিকতার কোন প্রশ্ন নেই ।
এখানে আমার আপনার বাবা মা'র প্রতি আন্তরিকতা , কর্তব্য সবচেয়ে বড় কারণ
আপনার আমার সবার মহাবস , বারাক ওবামা যার গোলাম , ভ্লাদিমির পুতিন যার হুকুম
ছাড়া একটা মাংসের টুকরা ব্যাতিত কিছু নয় , প্রশান্ত মহাসাগরের প্রতিটা প্রাণ ও
জলবিন্দু সার্বক্ষণিক যার তাসবিহ পাঠ করছে , আসমান ও ভূমণ্ডলের অধিকর্তা সেই
সুমহান
মহাপবিত্র সৃস্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে প্রত্যেকটা মুসলিমকে তার
বাবা মার হক নির্ধারণ ও তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন । অতএব যদি আপনার
মাঝে কুরআনের আলো থেকে থাকে তবে আপনি কখনোই এ থেকে পিছু হটতে পারবেন
না । আর তা না করলে হাশরের মাঠে জাহান্নামের আগুনের ফেরেশতাদের কাছে এরেস্ট
হতে হবে !
বাবা মা বার্ধ্যকের ভারে নুজ্ব্য.....!
কেমনে কি করবেন ? কিছু তো করতে হবেই নাহলে তো আপনাকে জাহান্নামের
আগুনে জ্বলতে হবে ।
জাহান্নামের শাস্তির কথা শুনে কলিজার পানি শুকিয়ে গিয়েছে ???
আরে বস, পটেটো চিপস নিয়ে বসেন আর ঘটনা শোনেন তারপর আপনি নিজেই
বাবা মার সেবা করার জন্য দৌড়ে কূল পাবেন না...!
হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলতেন । তো একদিন
তিঁনি আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন , হে আল্লাহ ! আমিতো তোমার একজন
একনিষ্ঠ ইবাদাতকারি এবং রাসূল । এখন ইনশাল্লাহ নবী ও রাসূলদের প্রতি তোমার
ওয়াদা মোতাবেক আমিতো জান্নাতে যাবো , কিন্তু জান্নাতে কোন লোক আমার
সাথে থাকবে ???
তখন আল্লাহ হযরত মুসা (আঃ) কে বললেন ওমুক এলাকায় একজন মাংস
বিক্রেতা বা কসাই আছেন । উনি তোমার সাথে জান্নাতে থাকবেন ।হযরত মুসা (আঃ)
তো টাস্কি খেলেন । উনি মনে মনে ভাবলেন ঐ কসাই তাহলে কত ইবাদত
করে যে জান্নাতে আমার সাথেই যাবে..... :p
তো হযরত মুসা (আঃ) পরদিন ঐ এলাকায় যেয়ে আল্লাহর বর্ণনার মত সেই
কসাইকে খুঁজে পেলেন । উঁনি কসাইকে ফলো করলেন । লোকটা ভালোই , ইবাদাত
যা আছে তা ঠিকমতই পালন করছে তবে আহামরি কোন নেক আমল হযরত মুসা (আঃ)
চোখে পড়লনা । সন্ধ্যাবেলা মাংস বিক্রেতা একটি পুটলিতে বেশ খানিকটা মাংস
নিয়ে বাসায় ফিরে চললেন । মুসা (আঃ) তার পিছু পিছু চললেন ।ঐ কসাই সারাদিন
ব্যাপী এত কষ্ট করে বাসায় যেয়েও আবার সেই
মাংসটুকু নিজেই কেটেকুটে রান্না করলেন । তখন মুসা আঃ খেয়াল করলেন ঐ
কসাইটা একটা দোলনার মত বিছানা থেকে একজন বৃদ্ধাকে(কসাইয়ের মা) অত্যন্ত
সতর্কতার সাথে কোলে করে নামিয়ে বিছানায় বসিয়ে সেই মাংস রুটি খাওয়ালেন
এবং নিজেও খেলেন । অতঃপর ঐ বৃদ্ধা আল্লাহর কাছে সবিনয়ে ফরিয়াদ জানালো ,
হে প্রভু ! আমার ছেলেটা সারাদিন এত খাটুনির পরও আমাকে কত কস্ট
করে রান্না করে খাওয়ালো... এই জামানায়
হযরত মুসা (আঃ) নামে একজন রাসূল আছেন । আমার এই নেক সন্তানকে তুমি হযরত
মুসা (আঃ) সাথে জান্নাতে রেখো...... !
এইসব শোনার পর হযরত মুসা (আঃ) বুঝলেন কাহিনী কি !
আল্লাহ সেই মায়ের দুআ কে কবুল করেছেন ।
আল্লাহ মজলুম, মুসাফির আর পিতা মাতা সন্তানের প্রতি যে দুআ করে তা কবুল
করে নেন ।
প্রিয় ব্লগারগন ,
আমি আপনি কেউই কিন্তু বার্ধক্য বা মৃত্যুর উর্ধ্বে নই । আমাদেরকেও একসময় বৃদ্ধ
হতে হবে তারপর মরতে হবে । আপনি সেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার স্থলে একটু
নিজেকে ভাবুনতো independent টিভির "তালাশের" মত ঠিক চার মিনিট ।
মন খারাপ হয়ে গিয়েছে....?
হওয়াটাই স্বাভাবিক !
আপনি যেখানেই থাকেন না কেন হতে পারে লুঙ্গিপট্টি(বারিধারা )ভেড়ামারা ,
গলাচিপা , ভূতের গলি , ধানমণ্ডি নাহলে ধরলাম USA লসএঞ্জেলস ই থাকেন ,
এবং আপনি যে চালেরই ভাত খান না কেন অথবা যে ব্র্যাণ্ডের প্রসাধনী মাখেন
না কেন আপনার শেষ ঠিকানা কিন্তু গাছতলা , বটতলা , কেওড়াতলা , শশ্মানঘাট
ইত্যাদি......!
লাক্স ঘষে ঘষে ফেয়ার এণ্ড লাভলি মেখে মেখে ফটোগ্রাফ দিতে দিতে অস্থির
হয়েছেন তো কি হয়েছে....? মৃত্যুর পর আপনার ঐ চামড়া মাটির কীটের আহার
হয়ে যাবে ।
তখন you are eaten by parasite প্যাসিভ ভয়েসের বাস্তব উদাহরণ দেখতে পারবেন
।
যাইহোক "আসেন ভাই আমার এই পোস্টের নিকট দেখুন কবরের আলামত গুলো"
এইবলে আপ্নাদের আর বিরক্ত করতে চাচ্ছি না ।
মহানবী (সাঃ) বলছেন , যে ব্যাক্তি তার পিতা মাতা যেকোন একজন
অথবা উভয়কে জীবিত অবস্থায় পেয়েছিল অথচ জান্নাতে প্রবেশ
করতে পারলো না ,তার মত হতভাগ্য আর কেউই নেই ।
অতএব আপনি টাইম থাকতে পিওর হন । ফ্রুটিকা জুস খেয়ে পিওর হবেন আবার
পরক্ষণেই এটম গাম খেয়ে চাপাবাজি করবেন তা হতে পারে না ।
কোন মুসলিমের পিতামাতা যাতে সন্তানের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত
হয়ে বৃদ্ধাশ্রমে না থাকতে হয় সেইজন্য আমরা নিজেদের পরিবার থেকেই
দৃঢ়চেতা হয়ে যাব । কোরআন ও হাদিস মোতাবেক বাবা মায়ের প্রতি অর্পিত কর্তব্য
সূচারূরুপে পালন করবো । আল্লাহ আমাদেরকে সত্পথে চলার তৌফিক দান করুন ।
কি ভাইয়া আপ্পিরা আপনাদের চিপস খাওয়া শেষ হয়েছো তো .... ?
আপনাদেরও চিপস খাওয়া শেষ এবং আমারো পোস্ট শেষ ....!
২| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
রসায়ন বলেছেন: হ্যাঁ ভাই , গানটা আমাদের অনেক কিছুই স্মরণ করিয়ে দেয় !
৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৩
শাহিন বলেছেন: গানটি শুনলে চোখে পানি চলে আসে । সুন্দর পোষ্টের জন্য শুভেচ্ছা ।
৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৫
হাসান বায়জিদ বলেছেন: ভাল লাগা,রেখে গেলাম সাথে আন্তরিক ধন্যবাদ ।
৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৭
ফয়েজ উল্লাহ রবি বলেছেন: দারুণ!
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৫৬
খেয়া ঘাট বলেছেন: গানটি নচিকেতার এক অনন্য সৃষ্টি। আর পুরো পোস্টটাই দারুন।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।