নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচাইতে নিরাপদ আর দ্রুততম পরিবহন ব্যবস্থা হলো বিমান । বিমান তৈরি করা হয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা এবং এর চালকরা হয় অনেক প্রশিক্ষিত সেজন্য প্রতি দশ লাখ ফ্লাইটে মাত্র একটি ক্রাশ করার সম্ভাবনা নিয়ে এয়ার ট্র্যাভেল হলো বিশ্বের সবচেয়ে সেফেস্ট পরিবহন ব্যবস্থা । এজন্য অন্যান্য যানবাহন এর চেয়ে বিমানের দাম অনেক বেশী । যেমন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাবল ইঞ্জিন প্যাসেঞ্জার জেট বিমান আমেরিকার বোয়িং কোম্পানির তৈরি BOEING 777-300 ER এর দাম প্রায় দুই হাজার সাতশ কোটি টাকা । এরকম দশটা বিমান দিয়ে একটা পদ্মা সেতুর দাম হয়ে যাবে । বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লিটে এরকম চারটি বিমান আছে যাদের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার :
S2-AFO
S2-AHM
S2-AFP
S2-AHN
এখন কথা হলো বিমানের ভাড়া এত কেন ???
ধরা যাক ঢাকা টু চট্টগ্রাম এর কথা । সড়কপথে দূরত্ব এখানে ২৬৫ কিঃমিঃ আর আকাশপথে দূরত্ব ২১১ কিঃমিঃ। বাংলাদেশে ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে যেসব বিমান চলে সেরকম কিছু হলো
ইউএসএ'র তৈরি BOEING
BOEING 737-800 ER
BOEING 777-300 ER
(*ER means Extended Range)
ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ফ্রান্সের তৈরি) AIRBUS
AIRBUS A310-300
ফ্রান্সের ও ইতালির তৈরি ATR
ATR-72
কানাডার তৈরি BOMBARDIER
BOMBARDIER DASH-8 Q400
এবার আসা যাক মূল দিকে । বিমানের জ্বালানি খরচ :
এভারেজ প্রতিটা প্লেন প্রতি একশ কিঃমিঃ ফ্লাইটে প্রতি সিটে জ্বালানি ব্যবহার করে গড়ে ৩ লিটার । তার মানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে মোট জ্বালানি লাগে ৬ লিটার প্ৰতি সিটে !!! বিমানের জ্বালানি হলো কেরোসিন যা জেট এ১ গ্রেড এর দাম প্রতি লিটার ৬০ টাকার মত ।
অর্থাৎ একজন যাত্রীর পিছনে জ্বালানি খরচ মোটামুটি ৩৬০ টাকা !!!
কিন্তু ইকোনমি ক্লাস একজন যাত্রীর বিমান ভাড়া হলো ৩০০০/৩৫০০(বিমান) , ৩৫০০(অন্যান্য)
কাজেই এত টাকা বেশি কেন ভাড়া ????
বিমানের ভাড়াটা শুধু জ্বালানির উপরেই নয়।
আসুন দেখি বাকি টাকা কই যায় :
প্রতিটি বিমানকে এয়ারপোর্টে উঠানামার সময় এয়ারপোর্ট অথরিটিকে অর্থ দিতে হয় ।
বিমানের সব সিটেই যাত্রী থাকে না , অনেক সিট খালি যায় ।
বিমানের পাইলট , ইঞ্জিনিয়ার , কেবিন ক্রু , ক্যাটারিং এবং স্টাফদের মোটা বেতন । এছাড়া পাইলট ও কেবিন ক্রুদের আবাসন।
বিমানের জন্য প্রতি বছর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইন্স্যুরেন্স করতে হয় ।
মেরামতে ও ওভারহলিং ব্যয়
বিশাল সরকারের ট্যাক্স(যেমন এই ঢাকা - চট্টগ্রাম রুটে ইকোনমি ক্লাস প্রতি সিটের বিপরীতে ট্যাক্স হলো ৫২৫ টাকা !!! )
গ্রাউন্ডেড থাকা অবস্থায় ক্ষতি
বিজ্ঞাপন ও অফার
লাইসেন্স
বিমানের মূল্য অনেক বেশি যা শুধু তেলের দামে বিমান চালিয়ে উসুল করা সম্ভব নয় এজন্য বিমানের গড়ে বিশ বছরের লাইফ সাইকেলে প্রতি ফ্লাইটের ভাড়ায় বিমানের দামের টাকা ইনক্লুডেড থাকে
সব মিলিয়ে একটা এয়ারলাইন্স খুব কমই লাভ করতে পারে । তার মানে তিন কি চার হাজার টাকা যে লাগছে এটা কিন্তু মোটেও বেশি না । দ্রুততা , নিরাপত্তা , নিরাপদ যাত্রা এসব বিবেচনা করলে ভাড়া অনেক লিমিটেড ।
বিমানের কি তাহলে লাভ হয় না ????
হুম তা হবে না কেন !!!
একটা এয়ারলাইন্সের মূল লাভের দিকটি হলো এর বিজনেস এবং ফার্স্ট ক্লাস আসন গুলো। যেমন এই সমান রুটেই বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ৭৫০০-৮৫০০ (বিমান) , ৮৫০০(অন্য) । বিজনেস ক্লাসের আসন গুলো থেকেই বিমান কোম্পানি গুলোর আসল লাভটা হয় । এজন্যই ধারণ ক্ষমতা কমে গেলেও এয়ারলাইন্স গুলো তাদের বিমানে বিজনেস ক্লাস এবং ফার্স্টক্লাস আসন গুলো রাখে । যেমন BOEING 777-300 ER এ যদি সব গুলোকেই ইকোনমি ক্লাস আসন বসানো যায় তবে এর যাত্রী ধারণ ক্ষমতা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে চারশ জনে কিন্তু এতে বিজনেস ক্লাস যোগ করলে সেটি নেমে দাঁড়ায় ৪১৯(৩৫ বিজনেস + ৩৮৫ ইকোনমি) (বাংলাদেশ বিমানের আসন বিন্যাস )।
হ্যাপি ফ্লাইং
©somewhere in net ltd.