নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

DEATH IS BETTER THAN DISGRACE

রসায়ন

রসায়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংকল্প কবিতায় বিজ্ঞান | অনুসন্ধান ও বিজ্ঞান পোস্ট

১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২০


সংকল্প

কাজী নজরুল ইসলাম

থাকব না'ক বদ্ধ ঘরে 
দেখব এবার জগৎটাকে 
কেমন করে ঘুরছে মানুষ 
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে। 
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে 
ছুটছে তারা কেমন করে, 
কিসের নেশায় কেমন করে 
মরছে যে বীর লাখে লাখে। 
কিসের আশায় করছে তারা 
বরণ মরণ যন্ত্রণাকে। 

কেমন করে বীর ডুবুরি 
সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে, 
কেমন করে দুঃসাহসী 
চলছে উড়ে স্বর্গপানে। 
হাউই চড়ে চায় যেতে কে 
চন্দ্রলোকের অচিনপুরে, 
শুনব আমি, ইঙ্গিতে কোন 
মঙ্গল হতে আসছে উড়ে। 
পাতাল ফেড়ে নামব আমি 
উঠব আমি আকাশ ফুঁড়ে, 
বিশ্বজগৎ দেখব আমি 
আপন হাতের মুঠোয় পুরে। 



কাজী নজরুল ইসলামের এই বিজ্ঞানময় কবিতাটি লিখেন আজ থেকে প্রায় ৯০ থেকে ১০০ বছর আগে যখন মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান এত ছিলোনা ! উনি ১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন ফলে আর কবিতা লিখতে পারেন নি তিনি। কিন্তু তার এই কবিতার পরতে পরতে আছে বিজ্ঞান । এই কবিতা জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনের মতো ।

আসুন বিশ্লেষণ করি,

"থাকব না'ক বদ্ধ ঘরে 
দেখব এবার জগৎটাকে"


এই অংশটুকুর সাথে বর্তমান বিশ্বের মিল পাওয়া যায় ।
স্যাটেলাইট , সাবমেরিন ক্যাবল , মাইক্রোওয়েভ , ওয়াইফাই এরকম নানা যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে আজ বিশ্ব একটি উন্মোচিত জিনিস । যেকোনো দেশে বসেই পৃথিবীর ওপর প্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে ।

"কেমন করে ঘুরছে মানুষ 
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে"


এর দ্বারা তিনি বুঝিয়েছেন যে, মানুষ মেডিকেল সাইন্সের উন্নতি করে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করতে পারবে ফলে মানুষের অনেক দিন বেঁচে থাকা সম্ভব হবে আগের তুলনায় । অর্থাৎ বহু যুগ(এক যুগ মানে ১২ বছর) মানুষ দেখতে পাবে ।

"দেশ হতে দেশ দেশান্তরে 
ছুটছে তারা কেমন করে"


এই লাইনের দ্বারা তিনি আসলে বর্তমান যুগের হাইস্পিড রেল এবং এয়ারক্রাফটের কথাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। হাইস্পিড রেল ও এয়ারক্রাফটে চড়ে মানুষ এখন দেশ থেকে দেশে ছুটে বেড়াচ্ছে দ্রুত গতিতে।  

"কিসের নেশায় কেমন করে 
মরছে যে বীর লাখে লাখে। 
কিসের আশায় করছে তারা 
বরণ মরণ যন্ত্রণাকে"


এই লাইনের দ্বারা তিনি ভবিষ্যতে অর্থাৎ বর্তমানে আবিস্কার করার তাড়নায় মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন । এখন আমরা দেখছি অনেক মানুষ মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে অথচ ওখানে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু হবে প্রতিকূল পরিবেশে । এছাড়া মানুষ নিজের উপর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে । আজকের সাইন্স যা দেখাচ্ছে তিনি তা প্রায় ১০০ বছর আগেই বলে গেছেন । এর দ্বারা বোঝা যায় তিনি কতটা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন।


"কেমন করে বীর ডুবুরি 
সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে"

এখানে তিনি সিন্ধু শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহার করছেন যার দ্বারা তিনি আসলে সমগ্র জলরাশির আধার বা সাগরকেই বুঝিয়েছেন। মুক্তা মানে হলো ঝিনুকের থেকে উৎপাদিত এমন একটি রত্ন যা জ্বলজ্বল করে আলো প্রতিফলিত করে। এটিও রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছিল যে একটু গবেষণা করলেই বুঝা যায়। ঝিনুক আসলে জীবদেহের অবশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে আর মুক্তার জ্বলজ্বলে বৈশিষ্টের সাথে মিল পাওয়া যায় জ্বালানি তেলের । এগুলোও দাহ্য যা জ্বলজ্বল করে জ্বলে । আজ থেকে লক্ষ লক্ষ বছর আগে গাছ ও প্রাণী মাটির নিচে চাপা পড়ে ধীরে ধীরে হাইড্রোকার্বনে পরিণত হয়েছে যার থেকেই আমরা বড় বড় মেশিনারি দিয়ে অয়েল রিগ বানিয়ে জ্বালানি তেল রিফাইন করে বের করেছি আজকে !


"কেমন করে দুঃসাহসী 
চলছে উড়ে স্বর্গপানে"


এই লাইনটি মানুষের নভোযান এর কথা ব্যক্ত করেছে । আজকের বিজ্ঞান যে নভোযান আবিস্কার করেছে যেটি ব্যবহার করে মানুষ আজকে মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সেটির কথা কাজী নজরুল ইসলাম সেই কবেই বলে গেছেন ।


"হাউই চড়ে চায় যেতে কে 
চন্দ্রলোকের অচিনপুরে"

অশেষ বিজ্ঞানময় দুটো লাইন । ১৯৫৭ সালে মানুষ চাঁদে গিয়েছিল এপোলো নভোযানে করে অথচ সে কথা নজরুল আগেই বলে দিয়েছেন । মূলত আমেরিকার নাসার বিজ্ঞানীরা এই কবিতার লাইনটি নিয়ে গবেষণা করে এই চন্দ্রবিজয় অভিযানটি পরিচালনা করে ।

"শুনব আমি, ইঙ্গিতে কোন 
মঙ্গল হতে আসছে উড়ে"


মঙ্গল গ্রহে মানুষের তৈরি অনেক অরবিটার আছে এমনকি গ্রাউন্ড এক্সপ্লোরেশন ভেহিকেলও আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত মঙ্গলগ্রহ নিয়ে নানা তথ্য উপাত্ত ছবি সিগন্যাল পাঠাচ্ছে আমাদের কাছে । এর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীতে বসেই মঙ্গলগ্রহের ঘটনাবলী জানতে ও গবেষণা করতে পারছি । এসব করছি তার বয়স বেশিদিন না হলেও সংকল্প কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম এটা ১০০ বছর আগেই বলে গেছেন।

"পাতাল ফেড়ে নামব আমি 
উঠব আমি আকাশ ফুঁড়ে"


এখানে মাটির নিচে খনি ও টানেলের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে আর পরের লাইনে রকেটের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় অনেক সাহায্য নিয়েছেন এসব লাইন থেকে ।

"বিশ্বজগৎ দেখব আমি 
আপন হাতের মুঠোয় পুরে"


এমন ভবিষ্যতবাণী কে করতে পারে মহান কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছাড়া !
এখানে স্মার্টফোন এর কথা বলে দেয়া হয়েছে । স্মার্টফোনে গুগল আর্থ বা অন্যান্য এপসের ও ইন্টারনেট সংযোগ এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বটা আজ আমাদের হাতের মুঠোয় ! এই লাইনদ্বয় নিয়ে বিশ্বের বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে অবশেষে স্মার্টফোন আবিষ্কার করতে সক্ষম হোন । প্রথমে তারা ফিচার ফোন অর্থ্যাৎ যেগুলোর ইন্টারনেট চলে না(যেমন নোকিয়া ১১০০) এসব আবিষ্কার করেন কিন্তু সেটা কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতার সাথে না মেলায় তারা আরো গবেষণায় মনোনিবেশ করেন । অতঃপর তারা আধুনিক স্মার্টফোন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন !

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২৪

সনেট কবি বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

রসায়ন বলেছেন: ধইন্যা

২| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:২৮

মৌরি হক দোলা বলেছেন: দারুণ ব্যাখ্যা! :)

এত গভীর চিন্তাশক্তি! অতি চমৎকার :) :)

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

রসায়ন বলেছেন: জাকির নায়েকের থেকে শিখেছি ।

৩| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

ঢাকার লোক বলেছেন: " নজরুলের এ কবিতা পড়েই নাসার বিজ্ঞানীরা চাঁদে - মঙ্গলে অভিযান চালনা করতে পেরেছেন আর বর্তমান স্মার্টফোন আবিষ্কার করতে পেরেছেন !"
আপনার আবিষ্কারও মন্দ না !!

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

রসায়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৪৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর শেয়ার।+

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

রসায়ন বলেছেন: থ্যাংকু

৫| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৮:৫০

সাহিদা সুলতানা শাহী বলেছেন: ভাল বিশ্লেষণ করেছেন।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২

রসায়ন বলেছেন: এই একটু চেষ্টা করলাম আরকি

৬| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:২২

মো:হাবিবুর রহমান(হাবিব) বলেছেন: ভালো ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন ভালো কথা, কিন্তু ভুল ব্যাখ্যার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে। আচ্ছা নাসার .. চন্দ্রবিজয়. . অভিযান পরিচালনা করেন. এইসব তথ্যের সূত্র কি??

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

রসায়ন বলেছেন: আপনি কি নজরুলের জ্ঞানে অবিশ্বাস করেন !

৭| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:২৯

টুনটুনি০৪ বলেছেন: এই কবিতাটির মূলভাব খুবিই সরল ভবে বিশ্লেষণ করেছেন। পোষ্টটি খুব ভালো লেগেছে।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

রসায়ন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ

৮| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৪০

এম ডি মুসা বলেছেন: কবির ভাবনার কবিতার অধুনানিক ছুঁয়ে গেছে।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

রসায়ন বলেছেন: একদম রাইট ।

৯| ১৫ ই মে, ২০১৮ রাত ১১:৪২

এম ডি মুসা বলেছেন: পৃথিবীটা চেয়েছেন হাতের মুঠোয় আনবে।
এসেছে মোবাইলে এখন পৃথিবীর হাতের মুঠোয় ।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৪

রসায়ন বলেছেন: ঠিক তাই ।

১০| ১৬ ই মে, ২০১৮ রাত ১:৪৪

অর্ক বলেছেন: হা হা হা... না, আমার এরকম মনে হয় না। তিনি অনুসন্ধিতসু কৌতূহলী মনের ভাব ব্যক্ত করেছেন। স্বগতোক্তি’র মতো, নিজেকেই নিজে বলেছেন। কবি মন মানেই কৌতূহলী, জিজ্ঞাসু, ভ্রমণবিলাসী। তাই ব্যক্ত করেছেন কবিতায়। তাঁর সমসাময়িক আরও বিষয়আশয় এসেছে। বিজ্ঞান এখানে আদৌ নেই খুব সম্ভবত! এটা আমার মত! চূড়ান্ত সত্য দাবী করছি না!

ধন্যবাদ।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬

রসায়ন বলেছেন: উনার এই কবিতাটি উনার প্রজ্ঞার পরিচয় বহন করে

১১| ১৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

১৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

রসায়ন বলেছেন: ধইন্যা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.