নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীকে একটি পঁচিশ পয়সার আকারে সংকুচিত করতে পারলে এটি একটি ব্ল্যাকহোলে পরিণত হবে ।
আরেকটু ভেঙে বললে,
৬৩৭১ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের পৃথিবীকে ব্ল্যাকহোল বানালে এটির ব্যাস হবে মাত্র ৮.৮৭ মিলিমিটার !
ব্ল্যাকহোল হলো মহাবিশ্বের সবচেয়ে আজব আর মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মত জিনিস । এটি হলো সিঙ্গুলারিটি বা এককত্বের আধার । ব্ল্যাকহোলে কোন পদার্থ পড়লে আর সেটি মহাবিশ্বের পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র মানে না । ইভেন ব্ল্যাকহোলে কোন পদার্থ পড়লে সেটা কি জিনিসে পরিণত হয় বা ব্ল্যাকহোলের ঘনত্ব কতো সেটা বের করাও এই পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের দ্বারা সম্ভব হয়নি আর হবে কিনা আদৌ তাও নিশ্চিত না ।
ব্ল্যাকহোল হলো মহাবিশ্বের সবচেয়ে ঘনবস্তু এবং অভিকর্ষ বলের আধার । এটা এতোটাই ঘন যে এর গ্রাভিটি সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার গতিতে চলমান ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বা তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গকে(যেমন দৃশম্যান আলো, এক্সরে, আল্ট্রা ভায়োলেট রে, গামা রে, রেডিও ওয়েভ) পর্যন্ত আটকে রেখে দিতে পারে ।
আমরা জানি যে পরমাণুর ৯৯.৯৯ % স্থানই ফাঁকা, কিন্তু ব্ল্যাকহোলের ক্ষেত্রে কোন ফাঁকা স্থান নেই তাই এটি অসীম ঘনত্বের আর অভিকর্ষ বলের আধার ।
ব্ল্যাকহোল তৈরি হয় ম্যাসিভ বা দানবাকৃতি তারা থেকে । আমরা জানি স্টার বা তারার কেন্দ্রে বাইরের লেয়ারের প্রেসারে নিউক্লিয়ার ফিউশন(গঠন) বিক্রিয়া সংগঠিত হয় এতে করে হাইড্রোজেন পরমাণু হিলিয়াম ও অন্যান্য ভারী মৌলতে পরিণত হতে থাকে । তারার বাইরের লেয়ার তারার কেন্দ্রের আকর্ষনের তথা গ্রাভিটির কারণে কেন্দ্রে সংকুচিত হতে চায় অন্যদিকে সেই তারারই কেন্দ্রে সংগঠিত নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া কেন্দ্রের পদার্থকে বাইরের দিকে ঠেলতে থাকে । এই পরস্পর বিপরীত মুখী দুটি বল তারার ভেতরে কাজ করে । এরা যতক্ষণ সাম্যাবস্থায় থাকে ততক্ষণই একটা তারা বেঁচে থাকে । তারার জ্বালানি তথা হাইড্রোজেন যখন শেষ হয়ে যায় তখন হাইড্রোজেন থেকে উৎপন্ন হিলিয়াম পরমাণুর ফিউশন আরম্ভ হয় এবং এটি থেকে অক্সিজেন তৈরি হয় । এরপর হিলিয়াম শেষ হয়ে গেলে অক্সিজেন পরমাণুর ফিউশন শুরু।হয় এবং কার্বনে পরিণত হতে শুরু করে । এভাবে ক্রমাগত ভারী মৌল তৈরি হতে শুরু করে । একসময় যখন লোহা তৈরি হতে শুরু করে তখন এটিকে আর ফিউশন করা সম্ভব হয় না, ফলে তারার কেন্দ্রের ফিউশন বন্ধ হয়ে যায় , আর ফিউশন বন্ধ হওয়ার অর্থ বাইরের লেয়ারকে কেন্দ্রে পুঞ্জীভূত হওয়ার থেকে ঠেকিয়ে রাখা বলটি আর নেই তার মানে তারার সাম্যাবস্থা শেষ । আর তাই ফিউশন বন্ধ হওয়ার মিলি সেকেন্ডের মধ্যে বাইরের লেয়ারটি কেন্দ্রে আছড়ে পরে আর ঘটে সুপারনোভা বিস্ফোরণ । সুপারনোভায় বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপাদন হয় । এই শক্তি সূর্যের সারাজীবনে দেয়া সম্মিলিত শক্তির চাইতেও বেশি । সুপারনোভা বিস্ফোরণ এর কারণে কেন্দ্রে তৈরি নানা মৌল ছড়িয়ে পরে দূর দুরান্তে । আমাদের পৃথিবী, চারপাশের যত মৌল , আমাদের শরীর সবই কোন না কোন তারার সুপারনোভা বিস্ফোরণ থেকে আগত ।
প্রতিটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে রয়েছে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল । কোন তারার পরিণতি ব্ল্যাকহোল হবে কিনা সেটা নির্ভর করছে তার মিনিমাম ১৮ সৌরভরের অর্থাৎ সূর্যের চাইতে ১৮ গুন ভারী তারার পক্ষে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটার পর তার কেন্দ্র ব্ল্যাকহোলে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এর চেয়ে কম ভরের তারা নিউট্রন স্টার নয়তো হোয়াইট ডর্ফ(সাদা বামন) বা রেড ডর্ফে পরিণত হবে । যেমন আমাদের সূর্যই এর জ্বালানি শেষ হলে ব্ল্যাকহোল হয়ে যাবে না, এটি পরিণত হবে হোয়াইট ডর্ফে ।
ব্ল্যাকহোলও কিন্তু শেষ না, এটিও একসময়ে আবার হকিংস রেডিয়েশন এর মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে । এই প্রক্রিয়া এতটাই ধীর যে একে স্থগিত বললেও বলা যায় । যেমন সূর্যের সমভরের কোন ব্ল্যাকহোলকে হকিংস রেডিয়েশন এর মাধ্যমে পুরোপুরি মিলিয়ে যেতে সময় লাগবে প্রায় ১০^৬৭ বছর । অর্থাৎ ১০ এর উপরে ৬৭ পাওয়ার বসালে যত বছর হয় তত ! আর মহাবিশ্বের জ্ঞাত সবচেয়ে বড় ব্ল্যাকহোলটি হকিংস রেডিয়েশন এর মাধ্যমে মিলিয়ে যেতে সময় নিবে প্রায় ১০^১০০ বছর । তার মানে ১ এর পর ১০১ টা শূন্য বসালে যত বছর আসে তত বছর লাগবে এই মহাবিশ্ব পুরোপুরি মিলিয়ে যেতে !
এরপর ????
হয়তো তখন আবার ম্যাটার আর এন্টি ম্যাটার তৈরি হবে বিভিন্ন পার্টিকেল থেকে, সেখান থেকে জন্ম নেবে মৌল আর তৈরি হবে অভিকর্ষ । আবার ঘটবে নতুন করে বিগ ব্যাংগ ! আসলে এগুলো ধারণা মাত্র । মহাবিশ্ব এতোটাই বিশাল ব্যাপার যে এগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত মন্তব্য করা বিজ্ঞানের সাধ্যে নেই , অন্ততঃ এই যুগে ।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৯
রসায়ন বলেছেন: আপনার কথা ঠিক আছে । আর সেজন্যই ব্ল্যাকহোলে ফিজিক্সের ল খাটে না আর এর ভিতরের বস্তু কি জিনিস সেটাও জানার উপায় নেই । তাই এর নাম অসীমতার একক বা ইউনিট অফ সিঙ্গুলারিটি ।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৮
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: Supernova,Hypernova আরও কত কি
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫০
রসায়ন বলেছেন: হ্যা, মহাজাগতিক অনেক ঘটনা আছে । সামনে দেখি লিখবো সেসব নিয়ে ।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৪
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: আঙুল চুষি মহা বিশ্বের এক অনুপরিমাণ বস্তু আমি!
তথ্যবহুল আলোচনা বটে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৫
রসায়ন বলেছেন: অণুপরিমাণও না ভাই
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩০
শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: আলোর বেগে যদি কোন মহাকাশযান বানানো হয় ,তাহলে সেটা কি ব্ল্যাকহোল থেকে বের হয়ে আসতে পারবে ?
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৬
রসায়ন বলেছেন: আলোর বেগে একমাত্র আলো ছাড়া আর কোন জিনিসই চলতে পারে না । আলোর বেগে অন্য কোন বস্তুর চলা অসম্ভব ।
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৮
শাহারিয়ার ইমন বলেছেন: তাতো জানি ,বাট ধরেন বানানো হল তখন?
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৭
রসায়ন বলেছেন: বানানো সম্ভব না যদিও । ধরে নিলাম বানানো।হলো, সেক্ষেত্রে সেটিও যদি ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হোরাইজন এর ভিতরে পরে যায় যায় তাহলে সেটিও আর বের হতে পারবেনা । চিরতরে শেষ ।
৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:২৩
নূর আলম হিরণ বলেছেন: আলোর চেয়ে বেশি গতি সম্পূর্ণ কোন কিছু পাওয়া গেলে ব্ল্যাকহোলের রহস্য জানা সম্ভব হতে পারে।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৮
রসায়ন বলেছেন: হ্যা । কিন্তু পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না ।
৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মহাবিশ্বের পরিণতি সম্পর্কে একটা ধারনা পাওয়া গেল, যদিও একেবারে আক্ষরিকভাবে এসব ঘটনা ঘটবে বলে মনে হয় না।
ধন্যবাদ ভাই রসায়ন।
৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৭
পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: বিশাল আলোচনা।
পরমানুর মধ্যে ফাঁকা না থাকলে তার অস্তিত্ব থাকার কথা নয়। কালোগর্ত(ব্ল্যাকহোল) যে কীভাবে তৈরী হয় মস্তিষ্কে ঢোকে না।