![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন.।.।।।
একাকী একটি ছেলে
জামাল মিয়ার শরীরটার অবস্থা বেশি ভাল না উঠানের এক কোনায় মাচার উপরে একটা ছেড়া কাথা দিয়ে শুয়ে আছে।শরীরের দোষ দিয়া লাভ কি বয়স তো অনেক হল আর কত চলবে এই জীবন গাড়ি?মনটা বেশ খারাপ একটা বিষয় কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না। গতকাল চায়ের দোকানের একটা পত্রিকায় দেখল রাজাকারের জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বিষয়টা প্রথমে সে বিশ্বাস করতে পারল না পরে জানাজা নামাজের ছবি দেখে বুঝতে পারল ঘটনা সত্যি। আরেকটা খবর দেখল রাজাকারের এ্যাম্বুলেন্সে জুতা নিক্ষেপ। জামাল সাহেবের মনে অনেক প্রশ্ন জাগে কিন্তু কিছু করার নাই কাকে প্রশ্ন করবে সবাই আছে দল নিয়ে বাস্তব কি কেউ জানে না জানতে চায় ও না। সে কোন পত্রিকার খবরই বিশ্বাস করে না কারণ এখন আর এই গুলো গণমাধ্যম নাই এইগুলো এখন হয়ে গেছে বিভিন্ন দলের দালাল। . জামাল সাহেবের মনে পরে যায় সেই ১৯৭১ সালের কথা। কত গল্প কত কষ্ট কত দুঃখ যে আছে তার মনে সেটা সেই জানে এক মাত্র। কিন্তু সেই মুক্তি যুদ্ধ এখন নাকি স্বার্থে ব্যাবহার হয়। কথাটা প্রথমে সে বিশ্বাস করে নাই যে একটা যুদ্ধ আবার কিভাবে স্বার্থে ব্যাবহার হয়। তবে সেটা বুঝতে পারল একদিন তাও নিজের চোখে দেখল। . কয়েক বছর আগে কে জানি আইসা খবর দিল মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিবে শুনে গর্বে বুকটা ভরে গেল এত দিনে সরকার একটা কাজের মত কাজ করছে। শেষ ফলাফল হল ১ সপ্তাহ ঘুরে শূন্য হাতে ফিরল জামাল মিয়া কাজের কাজ কিছু হল না তার নামি নাকি নাই লিস্টে।যাই হোক জামাল মিয়া মন খারাপ করেন নাই লিস্টে নাই তাই হয়ত পায় নাই অন্যরা তো পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মানেই তো ত্যাগ স্বীকার। মাস কয় পরেই জামাল মিয়ার মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল পাশের পাড়ার করিম মিয়া নাকি মুক্তি যোদ্ধাভাতা পাইছে। . অথচ জামাল মিয়ার স্পষ্ট মনে আছে সে যখন মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিতে যায় তখন করিম ধানের গোলায় লুকিয়ে ছিল সেই করিম ক্যামনে মুক্তি যোদ্ধা হয় সেইটা কিছুতেই জামাল মিয়ার মাথায় ঢুকে না। পরে একদিন করিম কে জিজ্ঞেস করেছিল তুই ক্যামনে পাইলি এই ভাতা। উত্তরে করিম বলেছিল আরে ব্যাটা মুক্তিযোদ্ধা হতে যুদ্ধ করা লাগে না ঠিক যায়গায় তেল দিতে হয় আর দল করতে হয় আরে কত লোক দল করে রাজাকার থেকে মুক্তি যোদ্ধা হয়ে গেল আর আমি তো সাধারন পাবলিক। জামাল মিয়া হ্যাঁ করে তাকিয়ে ছিল করিমের মুখের দিকে কিছু বলতে পারে নাই। . জামাল মিয়া সেলুনে গিয়া মাঝে মাঝেই রাজাকারের বিচার হচ্ছে এত দিন পরে সেইটা নিয়া গর্ব করে বলত। একদিন এক তরুণ তাকে একটা প্রশ্ন করেছিল যে চাচা রাজাকার কি কি শুধু একটা দলেই আছে নাকি সব দলেই আছে? জামাল মিয়া কিছুটা ঘাবড়ে গেছে কারণ এই টাইপের প্রশ্ন কেউ তাকে করতে পারে বলে সে মনে করে নাই কারণ সবাই কম বেশি জানে ১৯৭১ সালে সে যুদ্ধ করেছে। করিম মিয়া আমতা-আমতা করে বলে সব দলেই কম বেশি আছে। . তাহলে কি সবার বিচার করা উচিৎ না? নাকি শুধু বেছে বেছে একটা দলেরই করবে?এই বিচার কি রাজনীতির স্বার্থে করা হচ্ছে না?জামাল মিয়া কোন জবাব দিতে পারল না কারণ কিছু প্রশ্নের জবাব দেওয়া যায় না পাশ কাটিয়ে যেতে হয়। কিন্তু জামাল মিয়ার বুকটা মোচর দিয়ে উঠল কারণ এই প্রশ্নটা শুধু এই তরুণের না কোটি তরুণের প্রশ্ন।জামাল মিয়া তারা তারি সেলুন থেকে বের হয়ে গেল কারণ প্রশ্ন গুলোর উত্তর না দিতে পারায় এক ধরণের অসস্থিতে ভুগছে। . বের হতে হতে শুনল সেলুনের লোকটা বলছে যান সে কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তরুণটি জিজ্ঞেস করল কি রকম মুক্তি যোদ্ধা বাস্তবিক নাকি সার্টিফিকেট ধারি কোনটা? কথাটায় টিটকারির সুর পুরাই স্পষ্ট ছিল। .
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮
খেলাঘর বলেছেন:
শেখ সাহেব ও তাজুদ্দিন সাহেবের ভুলের ফলে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের স্বপ্নের দেশ গড়ার সুযোগ পাননি।